পয়লা বৈশাখে ঝালে-ঝোলে-অম্বলে বাঙালিয়ানার উদ্যাপন নতুন নয়। নানা রকম আমিষ ও নিরামিষ রান্না সাজিয়ে পরিবেশনের নিপুণতাও বাঙালির সহজাত। বাঙালিই মনে হয় একমাত্র জাত, যারা সব্জির খোসা থেকে ডগা, কাণ্ড থেকে শিকড়, ফুল থেকে পাতা সব কিছু দিয়ে তৈরি করে ফেলতে পারে নানা ব্যঞ্জন। ঘণ্ট, ছ্যাঁচড়া, ছেঁচকি, চচ্চড়ি, লাবড়ারও এত রকমফের আছে, যা তালিকায় ধরানো মুশকিল। বাংলার বর্ষবরণে বাঙালি ভোজই প্রাধান্য পাবে, সেটা স্বাভাবিক। তেতো জাতীয় পদ দিয়ে খাওয়া শুরু, আর শেষ পাতে চাটনি-মিষ্টি। তবে ইদানীং কালে বাঙালি ‘ফিউশন’ খাবারে মজেছে। সেই চেনা রান্নাই এদিক-ওদিক করে, হাতের গুণে আর পরিবেশনের মু্ন্সিয়ানায় সেজে উঠছে নানা ভাবে।
বৈশাখের প্রথম দিন আত্মীয়-পরিজনের সমাগমে জুঁইফুলের মতো সুন্দর ধবধবে সাদা ভাত সামান্য ঘি সহযোগে থালায় সাজিয়ে দিতেন বাড়ির গৃহিনীরা। পাশে থরে থরে সাজানো নানা পদ। আর নেহাতই ভাতের বদলে পোলাও হলে, হলুদ রঙা বাসন্তী পোলাওয়েরই কদর ছিল বেশি। সে বাঙালি এ পারের হোক বা ও পারের, পয়লা বৈশাখের মধ্যাহ্নভোজ মানে সেখানে ভাত থাকবেই। এখন অবশ্য ভাতের বদলে হোটেল-রেস্তরাঁয় গিয়ে বাঙালি ফ্রায়েড রাইস, বিরিয়ানি বা কাচ্চি বিরিয়ানি খেতেই অভ্যস্ত। তবে যদি বাড়িতেই পয়লা বৈশাখের মহাভোজের আয়োজন করতে হয়, তা হলে বিরিয়ানির বিলাসিতায় যাওয়ার প্রয়োজন নেই, বরং সহজে বানিয়ে নিতে পারেন আনারস-চিংড়ির সহযোগে বাসমতীর বেরেস্তা পোলাও। চিংড়িও রইল, তাতে আনারসের ‘ফিউশন’ হল, আবার ভাতে বাঙালির ঠাটবাটও বজায় রইল।
আনারস-চিংড়ির বাসমতী পোলাও রাঁধা কঠিন নয়। কম সময়ে সহজে রান্নার প্রণালী রইল।
আনারস-চিংড়ির বাসমতী পোলাও
উপকরণ
২৫০ গ্রাম বাসমতী চাল
২০০ গ্রাম চিংড়ি মাছ
আধ কাপের মতো গাজর, বিন্স, বাঁধাকপি কুচি১টি আনারসের কোয়া কুচিয়ে নেওয়া
৪ চা-চামচ সাদা তেল
১ চা-চামচ ঘি
৪টি তেজপাতা
৬টি ছোট এলাচ
৮টি লবঙ্গ
২ ইঞ্চির মতো দারচিনি
১ চা-চামচ আদা বাটা
২ কাপ বেরেস্তা
৫টি কাঁচালঙ্কা
নুন স্বাদমতো

চিংড়ির পোলাওয়ে ফিউশন টাচ। ছবি: ফ্রিপিক।
প্রণালী
চিংড়ি মাছ ছাড়িয়ে ভাল করে ধুয়ে নুন-হলুদ মাখিয়ে রেখে দিন। চাল ধুয়ে আধ ঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে ছেঁকে নিতে হবে। কড়াইয়ে তেল ঘি মিশিয়ে গরম করে তাতে তেজপাতা ও গোটা গরমমশলা ফোড়ন দিতে হবে। সুগন্ধ বার হলে পেঁয়াজকুচি আর চিংড়ি মাছগুলি দিয়ে ভাজতে হবে। পেঁয়াজ-চিংড়ি ভাজা হলে তাতে চাল দিয়ে নুন ও আদা বাটা দিয়ে ভাল করে ভাজতে হবে। চাল ভাজা হয়ে গেলে তাতে চালের দ্বিগুণ গরম জল দিয়ে দিতে হবে। কাঁচালঙ্কা ও এক কাপ বেরেস্তা দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে ঢাকনা দিয়ে রান্না করতে হবে যত ক্ষণ না চাল আর জল সমান সমান হয়। এই পর্যায়ে আরও কাপ কাপ বেরেস্তা ও ঘি ছড়িয়ে আঁচ কমিয়ে দমে বসিয়ে রাখতে হবে যত ক্ষণ না চাল সেদ্ধ হয়।
রান্না হয়ে গেলে উপর থেকে গোলাপ জল ও ঘি ছড়িয়ে দিতে পারেন, তার পর আনারসের টুকরোগুলি মিশিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।
- পয়লা বৈশাখ মানেই বাঙালির বাঙালিত্বের উদ্যাপন। সাদা-লাল শাড়ির ফ্যাশন, বাঙালি খাওয়া-দাওয়া, হালখাতা— এই সবই জাগিয়ে তোলে বাঙালির স্মৃতিমেদুরতাকে।
- বছর ঘুরে আবার আসছে বাংলার নববর্ষ। ১৪৩২ আরও অনেক নতুন কিছু নিয়ে আসবে। নববর্ষকে কী ভাবে স্বাগত জানাবে বাঙালি? তারই হাল হদিস।
-
মননে সাহিত্য-শিল্পের বাঙালিয়ানা, বল্লভপুরের রূপকথা শুনবে ক্যাম্পাস শহর
-
কেউ শাড়ি, কেউ সালোয়ার, সাবেক ও সাম্প্রতিকের যুগলবন্দি নববর্ষে, কেমন সাজলেন টলিসুন্দরীরা
-
কাঁধে এক কাঁদি কলা, চুলে হলুদ-বেগনি ফুল, সমুদ্রতটে আঁচল উড়িয়ে নতুন বছরকে স্বাগত স্বস্তিকার
-
বিশেষ দিনে ভিড় করে স্মৃতিমেদুরতা, বর্তমান প্রজন্মও অতীতে চোখ রাখে, নববর্ষে মনে করালেন সোহম
-
দিনের শেষে মেকআপ তুলে ফেলাও জরুরি, ফেসওয়াশ ফুরিয়ে গেলে কী করবেন?