যত্ন করে বানানো যে কোনও খাবারই খেতে ভালবাসেন অম্বরীশ ভট্টাচার্য। —ফাইল চিত্র।
পুজোর খাবার বা প্রিয় খাবার বলে আলাদা কিছু নেই অম্বরীশ ভট্টাচার্যের জীবনে। তিনি খেতে ভালবাসেন। যত্ন করে বানিয়ে দেওয়া যে কোনও পদই তাঁর কাছে অমৃতসমান। অম্বরীশের কথায়, ‘‘তা সে নিম-বেগুন ভাজা হলেও তৃপ্তি করে খেয়ে নেব। কোনও অসুবিধা নেই!’’ তা বলে পুজোতে তেতো! পাত পেড়ে চার দিন স্পেশ্যাল খাওয়াদাওয়া হবে না? আনন্দবাজার অনলাইনের প্রশ্ন শুনে অম্বরীশের উত্তর— ‘‘হবে না কেন! হওয়ালেই হয়। পুজোর সময়ে কিছু অনুষ্ঠানে যাওয়ার থাকে। বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গেও দেখাসাক্ষাৎ হয়। তাই আলাদা করে প্ল্যান না করলেও ভাল খাওয়াদাওয়া হয়েই যায়।’’ কিন্তু তাঁকেই যদি দেওয়া হয় মেনু কার্ড বানানোর দায়িত্ব? ধরুন যদি অষ্টমীর সকাল থেকে রাতের জমকালো খাওয়াদাওয়ার পরিকল্পনা করতে হল! তা হলে কী কী থাকবে অম্বরীশের মেনুতে? খানিক ভেবে একটু একটু করে অষ্টমীর খাওয়াদাওয়ার মানস ভ্রমণ করালেন ব্যোমকেশের ‘অজিত’।
অম্বরীশ উত্তর কলকাতায় বড় হয়েছেন। লুচিপ্রেমী বাঙালি। পুজোর সকাল ‘ফুলকো লুচি’ ছাড়া ভাবতেই পারেন না। তবে সঙ্গের তরকারিটি হবে অন্য রকম। আলুর দম বা আলুর সাদা তরকারি নয়। অম্বরীশ বলছেন, ‘‘ওটা হবে ফুলকপি আর আলু দিয়ে রসা রসা করা একটা তরকারি। পুজোর সময় ফুলকপি যে খুব বেশি পাওয়া যায় তা নয়, কিন্তু পুজোয় ফুলকপিটা খেতেই হবে। সঙ্গে একটু টম্যাটো থাকবে আর কড়াইশুঁটি।’’ তবে অষ্টমীর জলখাবার এখানেই শেষ নয়। লুচির সঙ্গে পাতে বেগুনভাজাও দরকার। যেমন-তেমন বেগুনভাজা নয়। অম্বরীশের চাই, ‘‘লম্বা ফালি করে কাটা বেগুনভাজা, তার উপরে একটু পোস্ত ছড়ানো।’’ আর শেষে ‘নানা রকম মিষ্টান্ন’ তো থাকবেই।
বাইরে না বেরোনোর থাকলে বাড়িতে বসে পুজোবার্ষিকী পড়েই পুজোর ছুটি কাটান অম্বরীশ। এক-একটি পুজোর বই দু’-তিন দিনেই শেষ করতে পারেন। পাড়ার পুজো হয় ঠিকই। তবে এখন আর মণ্ডপে তেমন যান না। নিজের ঘরের চেনা আরামে ব্যস্ততাহীন একটা দিনে পুজোবার্ষিকী পড়তে পড়তে ছোট বেলায় ফিরে যাওয়াটাই অম্বরীশের কাছে পুজোর সেরা মুহূর্ত। তাঁর পুজো রোমন্থনের। উত্তর কলকাতার পাড়ায় ছোটবেলার নাটক, তার মহড়া আর অবশ্যই ছোটবেলার পুজোর খাওয়াদাওয়া। তবে অষ্টমী বললেই অম্বরীশের মনে পড়ে বারোয়ারি পুজোয় লাইন দিয়ে নেওয়া ভোগের খিচুড়ি। অম্বরীশ বলছেন, ‘‘বছরের অন্যান্য সময়ের খিচুড়ি এক আর ভোগের খিচুড়ি আর এক। ওই স্বাদ, ওই গন্ধ ওই একই রাঁধুনি অন্য সময় রাঁধলেও আনতে পারে না।’’ তবে অম্বরীশের পছন্দের খিচুড়ি ‘ট্যালট্যালে’ হবে না। হবে মাখোমাখো। তাতে থাকবে সব্জি আর বড় বড় আলু। অষ্টমীর মেনুতে ভোগের খিচুড়ির সঙ্গে অম্বরীশ রেখেছেন লাবড়া। তবে মূল আকর্ষণ হবে দু’টি, ‘‘পাতলা বেসনে মচমচে করে ভাজা লম্বা বেগুনি। যার উপর সামান্য একটু চাট মশলা ছড়ানো থাকবে। আর তার পরে শুকনো আলুরদম।’’ শেষ পাতে খেজুর আর আমসত্ত্বের চাটনিও দরকার। তবে অম্বরীশের ‘টিপ্স’, ‘‘খাওয়ার আগে ওতে একটু পাতি লেবুর রস ছড়িয়ে নেবেন।’’
অষ্টমীর রাতে আর নিরামিষ নয়! সকাল আর দুপুরে মোটামুটি হালকা খাওয়ার পরে একটু কব্জি ডুবিয়ে আমিষ খেতে চান যাঁরা, তাঁদের জন্য অম্বরীশের পরামর্শ, ‘‘পাঁঠার কষা মাংস আর কাজু-কিশমিশ ছড়ানো বাঙালি পোলাও। ব্যস। আর কিচ্ছু না।’’ তবে যাঁরা নিরামষ খেতে চান, তাঁরা পোলাওয়ের সঙ্গে খেয়ে দেখতে পারেন ছানার ঝাল-মিষ্টি কালিয়া বা এঁচোড়ের কোফতা। শেষপাতে মিষ্টি থাকবে না, তা কি হয়! অম্বরীশ বলছেন, ‘‘মটন থাকলে মিষ্টির জায়গা থাকবে না।’’ তবে নিতান্তই মিষ্টি খেতে চাইলে এর সঙ্গে ঠান্ডা রাবড়ি রাখতে পারেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy