জীবনচিত্র: রবার্ট ফ্ল্যাহার্টি পরিচালিত ক্লাসিক ‘নানুক অব দ্য নর্থ’ ছবির দৃশ্যে ইনিউইট এস্কিমোদের গৃহস্থালি
কত দিনের না কাটা কাঁচা-পাকা দাড়ি। ফারের মলিন টুপির নীচে কপালে ক্লান্তির রেখা। ছোট-ছোট বরফকুচি আলতো ছুঁয়ে যাচ্ছে মুখ, গাল, অবিন্যস্ত দাড়ি। জোসেফি তখন প্রায় প্রৌঢ়। ‘সি ডি হাওয়ে’ জাহাজের ডেকে দাঁড়িয়ে তার প্রিয় দূরবিনটি চোখ থেকে নামিয়ে রাখল। নতুন আর কিছু দেখার নেই। উত্তর আর্কটিকের আরও উত্তরে বরফ কেটে কেটে এগিয়ে চলেছে তাদের জাহাজটি, এক প্রাণহীন বরফ-সাদা প্রান্তরের দিকে। জোসেফি সেই নরক-দেশকে চেনে না, জানে না সেখানকার জীবনধারণের নিয়ম-নীতি।
এ সব তথ্য জাহাজের আরও ৮৬ জন সহযাত্রীরও অজানা। এরা সবাই ইনিউইট এস্কিমো। শুধু জানে, তারা কানাডার স্বীকৃত নাগরিক, আপাতত অজানা এক কারণে নির্বাসিত। সরকারি পরিষেবায় তাদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কোনও দূর স্থানে, যে নির্জন ভূমিতে তারা দেশের পতাকা ওড়াতে পারবে সেই তল্লাট অবধি, যত দূর দেশের দখল করা সার্বভৌমত্বের দাবি প্রসারিত করা যায়।
জাহাজ চলেছে উত্তর গোলার্ধের শেষ সীমার দিকে। তারা এত দিন ছিল নুনাভিকের ইনুকজুয়াক শহরে। সে ছিল মন্দের ভাল। চিরশুভ্র বরফে ঢাকা। থাকা-খাওয়ার সমস্যাও বিস্তর। গ্রীষ্মেও বরফ-ঝড়, গড় তাপমাত্রা মাইনাস ৩০ ডিগ্রির আশপাশে। তবু সবাই জানত, পৃথিবীর উত্তর সীমার শেষ শহর সেই ইনুকজুয়াক। সেখানেই থিতু হয়েছিল ইনিউইটরা। তবু তাদের আজ নির্বাসনে যেতে হচ্ছে— কেন, কোন দোষে?
দিন-রাত জানে না অসহায় ইনিউইটরা। রেসোলিউট উপসাগর ফেলে, কর্নওয়ালিস দ্বীপ পেরিয়ে, জাহাজ এগিয়ে চলেছে এলমসমেয়ার দ্বীপের গ্রাইস ফোর্ডের দিকে। জোসেফি বুঝতে পারছে, আসলে তারা চলেছে নরকের শেষ প্রান্তে ।
আর্কটিক অঞ্চল চিরকালীন মুক্তাঞ্চল। বহু দেশই ওই অঞ্চলের অংশ দখল করে দেশের সীমানা বাড়িয়ে নিতে চায়। কানাডাও তাই চায়। তাদের দেশের ভৌগোলিক অবস্থানে তারা অনেকের চেয়ে এগিয়ে, তবু। দেশের এই মনোবিকার মেটাতে শুধু তারাই পারে, যাদের কথা ‘নানুক অব দ্য নর্থ’ ছবির শুরুতে রবার্ট ফ্ল্যাহার্টি বলেছেন: ‘মাটির বন্ধ্যাত্ব আর জলবায়ুর প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে কোনও প্রাণী যেখানে টিকতে পারে না, সেখানেই থাকে এস্কিমোরা, বিশ্বের সবচেয়ে হাসিখুশি, প্রাণোচ্ছল, ভালবাসায় ভরপুর মনুষ্যপ্রজাতি...’
গ্রাইস ফোর্ড জায়গাটি নুনাভিক থেকে ১৫০০ মাইল উত্তরে। এখানেই নোঙর ফেলেছিল ‘সি ডি হাওয়ে’ জাহাজটি। সালটা ১৯৫৫। যুদ্ধবন্দি বা পণবন্দিদের মতো হেলাফেলা করে নামিয়ে দিল দেশেরই কয়েক ঘর নাগরিকদের। এখন থেকে এটাই তাদের আস্তানা। ভয়ে, আতঙ্কে চোখের জলও তখন শুকনো। যে দিকে তাকানো যায়, ধূ-ধূ বরফ।
জোসেফির মেয়ে, পাঁচ বছরের মার্থা তখনও জানে না সামনের দিনগুলোয় আরও কত বিভীষিকা অপেক্ষা করে আছে তাদের জন্য। চোখের সামনে পাতলা আস্তরণের বরফের নীচে আদিম অনন্ত নীল সাগরের অজানা পৃথিবীতে হারিয়ে গেল মার্থারই এক তুতো দাদা। তবু বাবা-মায়ের হাত ছাড়েনি ছোট্ট মার্থা। বাবার হাত ধরে সে পেরিয়েছিল অনেকটা পথ, শিকারের সন্ধানে, খাদ্যের অন্বেষণে। প্রান্তরে তবু মিলত কিছু গুল্ম, কিন্তু এখানকার আকাশে পাখি নেই, ভূমিতে প্রাণী বলতে শুধু ভল্লুক বা নেকড়ে। মার্থা ভাবত, এটাই বুঝি এই পৃথিবীতে মানুষের শ্রেষ্ঠ আশ্রয়। এই বৃত্তের বাইরের সবুজ পৃথিবী তার কল্পনারও অতীত।
অনেক দিন পেরিয়ে গিয়েছে। টেলিভিশন ক্যামেরার মুখোমুখি মার্থার অঝোর কান্নায় মিশে গিয়েছে তার ফেলে আসা শৈশব। মার্থা এখন ইনিউইট এস্কিমোদের মানবাধিকার নেত্রী। আবেগ বলতে শৈশবস্মৃতির অংশটুকুই। ছোট্ট মার্থা বাবার হাত ধরে চলার পথে জিজ্ঞেস করেছিল, “বাবা, ওরা যে বলেছিল এটা স্বর্গ… এটাই কি স্বর্গ?” জোসেফি নিরুত্তর ছিলেন। মা সব কষ্ট বুকে চেপে মার্থার মাথায় হাত বুলিয়ে বলতেন, “কিচ্ছু ভয় নেই মা, আমরা তো আছি।’’ এক দিন নির্বাসন উঠে গেল। নানুকভিকের ঘর-শহরে চলে গেল তারা। তার পরের মার্থা আবেগহীন, খরস্রোতা নদীর মতো তর্কযুক্তির পাথর কাটে। ইনিউইটদের দাবি অধিকার পেশ করে কানাডা সরকারের কাছে। কানাডা সরকার এই অনৈতিক নির্বাসনের জন্য অপরাধ স্বীকার করে ক্ষতিপূরণের আশ্বাসও দিয়েছে।
শুধু মাঝের বছরগুলোয় হারিয়ে গেল জোসেফির মতো কয়েকটি মুখ। এঁরা কেউ স্থান পাননি সরকারি নথিপত্রে, জায়গা পাননি ইতিহাসের পাতায়। ‘নানুক অব দ্য নর্থ’ ছবিটি আন্তর্জাতিক মানরেখার সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছে সিনেমাপ্রেমীদের স্বীকৃতি আদায় করেছে। শতবর্ষের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়েও তবু ছবিটির বিষয়বস্তু ইনিউইটরা আজও অভিমানী, পরিচালক রবার্ট ফ্ল্যাহার্টি ব্রাত্য তাঁদের জীবনধারার ইতিহাসে।
একশো বছর পেরিয়ে আরও বছর দশেক আগে, ‘নানুক অব দ্য নর্থ’ ছবি তৈরির আগের কথা। হাডসন উপসাগরের পূর্ব উপকূল জুড়ে কয়লাখনির সন্ধান চালাচ্ছিল স্যর উইলিয়াম ম্যাকেঞ্জির কোম্পানি ট্রান্সকন্টিনেন্টাল রেলওয়ে। এই অভিযানের দায়িত্ব ছিল ভূবিজ্ঞানী ও কার্টোগ্রাফার রবার্ট ফ্ল্যাহার্টির উপর। তার পরের ছ’বছরে মোট চার বার অভিযানে যান ফ্ল্যাহার্টি। উনগাভা উপদ্বীপ থেকে বাফিন ল্যান্ডের দক্ষিণ তীরভূমি, বেলচার দ্বীপ থেকে হাডসন উপসাগর অবধি প্রায় পাঁচ হাজার বর্গ কিলোমিটার জুড়ে ঘুরে বেড়িয়েও অভিযানটি ব্যর্থ হয়েছিল। এই অঞ্চলে অনেক কয়লা মজুত থাকলেও তা ছিল অতি নিম্ন মানের। এই অভিযানগুলোতে ফ্ল্যাহার্টিকে দেওয়া হয়েছিল বেল এন্ড হাওয়েল কোম্পানির স্ট্যান্ডার্ড সিনেম্যাটোগ্রাফ ২৭০৯ হ্যান্ড ক্র্যাঙ্কড ক্যামেরা আর প্রচুর সেলুলয়েড। ম্যাকেঞ্জি সাহেবের ইচ্ছে ছিল অ্যাডভেঞ্চারের দৃশ্য চলচ্চিত্রায়িত করে পরে বিক্রি করা, যাতে কিছু খরচ ওঠে। এই সময়েই ফ্ল্যাহার্টি ইনিউইট এস্কিমোদের সংস্পর্শে আসেন। এলোমেলো ভাবেই তাদের দৈনন্দিন দিনলিপি মুভি ক্যামেরায় তোলা হয়। কিন্তু পরে টরন্টোয় ফ্ল্যাহার্টির ল্যাবরেটরিতে সমস্ত ছবিই পুড়ে যায়।
মনমরা হয়ে পড়েছিলেন ফ্ল্যাহার্টি। ইনিউইট এস্কিমোদের জীবনযুদ্ধ তাঁকে যারপরনাই প্রভাবিত করেছিল। সিনেমা নিয়ে চর্চা শুরু করে দিলেন ফ্ল্যাহার্টি। ভাবলেন এমন একটা ছবি করার কথা, যেটা কিছুটা সাজানো গোছানো হলেও ইনিউইট এস্কিমোদের জীবনযুদ্ধের কথা বলবে, প্রামাণ্যচিত্র হিসেবে ভবিষ্যতের দিশারি হয়ে উঠবে। ‘রেভিলন ফ্রেরেস’ তখনকার বিত্তবান মার্কিন ফার কোম্পানি। তারাই স্পনসর করল ফ্ল্যাহার্টিকে। শুরু হল নতুন অভিযান—‘নানুক অব দ্য নর্থ’।
“আমার সঙ্গী ছিল ৭৫ হাজার ফুট র’ ফিল্ম, হলবার্গের ইলেকট্রিক লাইট, একটা প্রোজেক্টর, দুটো একলে ক্যামেরা আর একটা প্রিন্টার। প্রিন্টার রাখার কারণ, তাৎক্ষণিক প্রিন্ট করে দেখে নেওয়া, চিত্রায়ণে তথ্যবিকৃতি হচ্ছে কি না”— ফ্ল্যাহার্টি পরে বলেছিলেন এক সাক্ষাৎকারে। অবশেষে এল সেই দিন। একশো বছর আগে জুন মাসে, রেভিলন ফ্রেরেস এর জাহাজ ছুটল ফ্ল্যাহার্টিকে নিয়ে ওন্টারিয়োর উত্তরে, রেল ফ্রন্টিয়ার থেকে ৮০০ মাইল পেরিয়ে, গন্তব্য হাডসন উপসাগরের উত্তর-পশ্চিমে ডাফরিন অন্তরীপ। এখানে রেভিলন ফ্রেরেস কোম্পানির একটা পোস্ট রয়েছে। ১৯২০ সালের ১৮ জুন, ক্যানোয় চেপে নদীপথে ধরে জেমস উপসাগরে ফার ফ্যাক্টরি। ফ্যাক্টরির ওই পোস্টেই হয়েছিল ‘নানুক অব দ্য নর্থ’ ছবির চরিত্র নির্বাচন। ইনিউইট মিথ অনুযায়ী, নানুক হলেন মেরুভল্লুকদের প্রভু। শিকারিদের সাফল্য ব্যর্থতা তাঁরই ইচ্ছাধীন। সেখান থেকে নামটি নেওয়া।
নানুকের চরিত্রে ফ্ল্যাহার্টি পছন্দ করলেন আলাকারিয়ালাককে। নায়লা আর কুনাইউ নানুকের দুই স্ত্রী। আর বাকিরা সবাই স্থানীয় ইনিউইট। সবাইকে এবং ছবির সব কিছু বেছে নিলেন ফ্ল্যাহার্টি নিজে।
‘নানুক অব দ্য নর্থ’ ছবির প্রথম শুটিং শুরু ইনিউইটদের সিন্ধুঘোটক শিকার উৎসবের মধ্য দিয়ে। উৎসাহিত নানুক ফ্ল্যাহার্টিকে বলেছিল, কত চাঁদ আগে সে গিয়েছিল সিন্ধুঘোটক দ্বীপে। যাওয়ার দিন বহু ইনিউইট কারণে-অকারণে কায়াক মিছিলের সঙ্গী হল। সমুদ্রতটে ইনিউইট মহিলারা শিশুদের কোলে নিয়ে হাত নেড়ে বিদায় জানিয়েছিল ফ্ল্যাহার্টিদের। ফ্ল্যাহার্টি স্মৃতিতে ধরে রেখেছিলেন সেই ফ্রেম— বহু দিন, বহু দশক।
১৯২২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘নানুক অব দ্য নর্থ’ ছবিটি ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউটের ‘সাইট অ্যান্ড সাউন্ড’ পত্রিকার বিচারে সর্বকালীন সেরা প্রথম দশের একটি। সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক ও নান্দনিক উৎকর্ষের জন্য আমেরিকার লাইব্রেরি অব কংগ্রেসের ন্যাশনাল ফিল্ম রেজিস্টারে সসম্মানে নথিভুক্ত হয় ছবিটি।
কোনও ইটালীয় সমালোচক এক বার ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে ‘অপরাজিত’ ছবিটি ‘গোল্ডেন লায়ন অব সেন্ট মার্ক’ পুরস্কার পাওয়ার পর সত্যজিৎ রায়কে ‘ভারতের রবার্ট ফ্ল্যাহার্টি’ বলে অভিহিত করে একটা প্রতিবেদন লিখেছিলেন। তা নজরে আসে ফ্ল্যাহার্টির আমেরিকা-নিবাসী স্ত্রী ফ্র্যান্সেস-এর। ১৯৫১ সালে মারা গিয়েছিলেন ফ্ল্যাহার্টি। ১৯৫৯-এর গ্রীষ্মে ‘রবার্ট ফ্ল্যাহার্টি স্মারক বক্তৃতা’য় স্বয়ং ফ্র্যান্সেস আমন্ত্রণ জানান সত্যজিৎ রায়কে, প্রথম বিদেশি বক্তা হিসেবে। সত্যজিৎকে দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন ফ্র্যান্সেস। সত্যজিতের জীবনীকার মারি সিটনকে একটি চিঠিতে তিনি লিখেছিলেন, ‘সত্যজিৎ রায় শান্ত, স্বয়ংসম্পূর্ণ আর নির্লিপ্ত। কিন্তু বব (রবার্ট) ছিল চঞ্চল, অত্যুৎসাহী আর তাই উষ্ণ।’ ফ্ল্যাহার্টির এই অতি উৎসাহই তাঁকে ‘নানুক’ ছবিটি করতে হাতছানি দিয়েছিল, আর চাঞ্চল্য পরবর্তী দায়বদ্ধতা থেকে তাঁকে মুক্তি দিয়েছিল।
ফ্ল্যাহার্টি আর কখনও ফিরে যাননি ইনিউইটদের দেশে। এক বছরেরও বেশি সময়ে ইনিউইটদের সঙ্গে থাকাকালীন ছবির দুই অভিনেত্রীর সঙ্গেই বিভিন্ন সময়ে সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছিলেন ফ্ল্যাহার্টি। শৌখিন সাময়িক বিয়েও হয় নায়লার সঙ্গে। কিন্তু নায়লার সে সুখ বড় ক্ষণস্থায়ী। হাডসনের নীল সাগরতটে আর ফিরে আসেনি ফ্ল্যাহার্টির জলযান। কত রাজপথ জনপদ পেরিয়েছে যুবক জোসেফি, ফ্ল্যাহার্টির পরিত্যক্ত সন্তান। অদেখা অচেনা বাবার তখন বিশ্বজোড়া নাম। অভিমানী জোসেফির তাতে কিছু এসে যায়নি। মায়ের অব্যক্ত বেদনার সঙ্গী হয়ে সে অনুভব করেছিল, তাকে বেড়ে উঠতে হবে ইনিউইটদের সঙ্গেই। জোসেফিদের নির্বাসন সভ্যতার বিকৃতিকেই স্পষ্ট করে তোলে। লোকলজ্জার কারণ হবে ভেবে জোসেফি কখনও গলা তোলেনি, নির্বিবাদে নির্বাসিত হয়েছিল দূর আর্কটিকের জনমানবহীন গ্রাইস ফোর্ড-এর প্রান্তে। যদিও নরক, তবুও ছোট্ট মার্থা অসহায় বাবার স্নেহের ছায়াতেই সুখের সন্ধান পেয়েছিল।
১৯৯০ সালে ‘নানুক রিভিজ়িটেড’ তথ্যচিত্রটি নির্মিত হয়েছিল। ছবিতে দেখানো হয়েছিল, ফ্ল্যাহার্টি ‘নানুক অব দ্য নর্থ’ ছবিতে সহজ-সরল ইনিউইটদের জীবনের এমন কিছু খুঁটিনাটির বাণিজ্যিকীকরণ করেছিলেন, যা তথ্যচিত্রের মূল্যবোধকে আঘাত করে। তিনি ইনিউইটদের জীবনের রোমাঞ্চকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে বাস্তবচ্যুত হয়েছিলেন, বহু নাটকীয় মুহূর্ত তৈরি করেছিলেন পরিচালনার সুবিধার্থে। ইনিউইটরা স্বপ্ন দেখেছিলেন, যদি ছবিটি তাঁদের যন্ত্রণাময় জীবনের অজানা কাহিনি মানবজীবনের মূলস্রোতে পৌঁছে দিতে পারে। কিন্তু ছবিটি মুক্তি পাওয়ার পর পরিচালক হিসেবে ফ্ল্যাহার্টি খ্যাতির শিখরে উঠে গিয়েছিলেন, আর ইনিউইট এস্কিমোদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আজকের বিশ্বায়নের পৃথিবীতেও নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। মার্থারা এখনও জীবিত। ইনিউইট এস্কিমোদের সম্মান আর অধিকার রক্ষার জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। চলতি বছরেই কানাডা সরকার ইনিউইটদের কলঙ্কময় নির্বাসনের ক্ষতিপূরণ দেবে। কালের ইতিহাসে নির্বাসনের বছরগুলো হয়তো ক্রমশ মুছে যাবে, কিন্তু অভিমানী ইনিউইটরা রবার্ট ফ্ল্যাহার্টিকে তাঁদের জীবন থেকে ব্রাত্যই করে রাখবেন। হয়তো তত দিন, যত দিন থাকবে রবার্ট ফ্ল্যাহার্টির কালজয়ী ক্লাসিক ‘নানুক অব দ্য নর্থ’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy