ছবি: পিয়ালী বালা
পূর্বানুবৃত্তি: হৃষিতা জানায়, সে রৌনকের অনলাইন গান শেখানোর ক্লাসে ভর্তি হয়েছে, নিজের আসল নাম ও ছবি প্রোফাইলে দেয়নি। হৃষিতা আরও জানায়, তার একটা বিয়ে হয়েছিল, কিন্তু বিয়েটা টেকেনি। রৌনকের মতো সেও আসলে জীবন নিয়ে বিভ্রান্ত। দু’জনে গিটার বাজিয়ে গান গাইতে থাকে। মলয় আর সমীরণ প্রিয়তোষের ফ্ল্যাটে এসে তাঁকে নিজেদের দলে টানার চেষ্টা করে।
প্রিয়তোষ অবাক হয়েছিলেন, ‘‘হন্টেড! মানে? আমি তো একাই থাকি। কোনও দিন তো ভূতের কোনও অস্তিত্ব টের পেলাম না!’’
শ্রীতমাও অবাক হয়ে বলেছিল, ‘‘আপনি নাকি এর আগে তিন বার ভাড়া দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কোনও ভাড়াটেই দু’সপ্তাহের বেশি থাকতে পারেনি। কি নাকি একটা আত্মহত্যার ব্যাপার হয়েছিল!’’
‘‘কোথাও বোধহয় কিছু ভুল হচ্ছে। আমি আগে কখনও ভাড়াই দিইনি। আত্মহত্যার প্রশ্নই ওঠে না।’’
সমর্থন করেছিল শ্রীতমা, ‘‘আমারও শুনে তাই মনে হয়েছিল। ভীষণ জুভেনাইল যুক্তি। এক বার বলছিল আত্মহত্যা, এক বার বলছিল বাস্তুর গন্ডগোল। আসলে এই সব বাড়িভাড়া নিয়ে দালালরা এত পলিটিক্স করে! কিন্তু নীলেশকে কে বোঝাবে বলুন? ওর ভীষণ ভূতের ভয়। আমাদের তো শিফট আলাদা। আমার নাইট থাকলে ওকে বাড়িতে একা থাকতে হয়। লাইট, টিভি, সব চালিয়ে শোয়। আপনাকে জানিয়ে রাখলাম আংকল। কারা এ সব রটাচ্ছে, একটু খোঁজ রাখবেন।’’
‘‘কিছু ভাবলেন?’’ প্রিয়তোষের তন্ময়তা ভেঙে দিয়ে মলয় জিজ্ঞেস করল।
অন্যমনস্কতা কাটিয়ে প্রিয়তোষ পালটা জিজ্ঞেস করলেন, ‘‘কী ব্যাপারে?’’
‘‘আপনি ঠিক ডিসিশন নিয়েছেন দাদা। নীহার সরখেল, সোমনাথ বিশ্বাসের গ্রুপ থেকে বেরিয়ে এসেছেন। কী আরম্ভ করেছে বলুন তো ওরা? এমনিতে নীহার সরখেল আমার ভায়রাভাই। ফ্যামিলি রিলেশনে কোনও প্রবলেম নেই। কিন্তু নীহারদা যা আরম্ভ করেছে, সেটা আমার আদর্শের সঙ্গে মিলছে না। আমি স্পষ্ট কথা বলি।’’
প্রিয়তোষ এখনও আন্দাজ করতে পারছেন না, মানিকজোড় ঠিক কী উদ্দেশ্য নিয়ে এসেছে। এদের একসঙ্গে ঘুরতে দেখলেও এক শ্রীতমার কাছে ছাড়া এদের কথা কোথাও শোনেননি। ঝর্নার কাজ শেষ করে চলে যাওয়ার সময় হয়ে আসছে।
এই সময় চা করতে বললে বিরক্ত হয়। তবু বাড়িতে অতিথি এসেছে বলে এটুকুই অনুরোধের গলায় বললেন, ‘‘ঝর্না, একটু চা দিয়ে যাস।’’
প্রিয়তোষ চা খাওয়াতে চাইছেন দেখে মলয় মনে মনে ভাবল, অঙ্ক মিলে গিয়েছে। প্রিয়তোষ চাটুজ্যে জমিয়ে সব শুনতে চাইছে। আয়েশ করে সোফায় হেলান দিয়ে বলতে শুরু করল, ‘‘নীহারদা কাদের নিয়ে গ্রুপ করেছে দেখুন। সোমনাথ বিশ্বাস, অতনু পাল, হিমাংশু ঘোষ— এদের নিয়ে। শুনেছি আপনাকেও দলে টানার চেষ্টা করেছিল। আপনি কেটে বেরিয়ে এসেছেন। ওদের মধ্যে পালের গোদা কে জানেন, সোমনাথ বিশ্বাস। সব সময় বলে, সে নাকি অফিসে রাজনীতি-করা লোক। ও ওই রাজনীতিটাই করে। কাজ কী করে করতে হয় জানে না। তা ছাড়া চারটে বাঙালির মাথা এক হলে ওই রাজনীতিটাই হয়। পলিটিকাল পার্টির পতাকা ওড়ে। কাজের কাজ কিছু হয় না। আপনি-আমি কি আর ওই সাতে-পাঁচে থাকতে চাই দাদা? চাই না। আমরা চাই শান্তিতে থাকতে। সেটাই আর হচ্ছে না।’’
মলয় একটু দম নিতে থামল। প্রিয়তোষ উসখুস করে বলে উঠলেন, ‘‘নতুন কিছু সমস্যা হয়েছে কি?’’
‘‘সমস্যা কি একটা দাদা? সমস্যা লেগেই আছে। এই লেটেস্টটাই দেখুন না। তীর্থদার ওইটুকু মেয়েটাকে নিয়ে কী কাণ্ডটাই না চলছে। জানেন নিশ্চয়ই সব।’’
প্রিয়তোষ আজকাল এখানকার সব খবরাখবর এড়িয়ে চলেন। আগ্রহও নেই। বললেন, ‘‘না, জানি না।’’
ঝর্না তিন কাপ চা ঠকাস করে সেন্টার টেবিলে এনে রাখতেই মলয় ঝর্নার দিকে তাকিয়ে বলল, ‘‘এই তো, একে জিজ্ঞেস করুন না! এরাও সবাই জানে। কি গো, কাকাবাবুকে বলোনি টুইটির কেসটা?’’
ঝর্না মুখের ওপর বলে দিল, ‘‘এ সব আপনাদের বড়লোকদের ব্যাপার। আমাদের মুখে কেন শুনতে চাইছেন?’’
মলয়ের প্রবৃত্তি দেখে প্রিয়তোষ প্রচণ্ড বিরক্ত হলেন। কিছু অতিথি চা-জল পাওয়ারও যোগ্য নয়। ব্যস্ততার ভান করে বললেন, ‘‘আমার আজ এক জায়গায় যাওয়ার আছে।’’
সমীরণ এত ক্ষণ চুপ করে বসেছিল। ইঙ্গিতটা বুঝে বলল, ‘‘আসল ব্যাপারটা বলো না!’’
‘‘বলছি। আগে তীর্থদার মেয়ের ব্যাপারটা শেষ করে নিই।’’
মলয় স্বভাবমত ডিশে অর্ধেকটা চা ঢেলে লম্বা চুমুক দিয়ে শুরু করল, ‘‘তীর্থদা ছোড়নেওয়ালা পার্টি নয়। বলেছে কেস করবে। উকিল কী শার্প বুদ্ধি বার করেছে দেখুন। যেহেতু এখানে কোথাও ‘দিস প্লেস ইজ আন্ডার সিসিটিভি সার্ভেইলেন্স’ লেখা নেই, ফেলেছে আইনের জব্বর প্যাঁচে। সম্পূর্ণ বেআইনি ভাবে একটা মেয়ের লুকিয়ে ছবি তোলা হয়েছে। বুঝেছেন দাদা, কোথায় খাপ খুলেছে শিবাজি? এ তো আর পানিপথ নয়!’’
সমীরণ প্রিয়তোষের মুখ দেখে বুঝতে পারল, প্রিয়তোষ শিবাজির সঙ্গে পানিপথের সম্পর্কের বিন্দুবিসর্গ বুঝতে পারছেন না। মলয়কে চাপা গলায় তাড়া দিল, ‘‘পার্টনার, আসল ব্যাপারটা বলো!’’
‘‘বলছি। এইখান থেকেই আসল ব্যাপারটা আসছে। আইনকানুন মেনে সব ঠিকঠাক হচ্ছে কি না, সব সমস্যা মেটানো হচ্ছে কি না, এ সব কে দেখবে? প্রত্যেক টাওয়ারে এক জন করে প্রপার রিপ্রেজেন্টেটিভ চাই। বি আর সি টাওয়ারে সমীরণ আর আমাকে কাজটা দেখতে বলছে তীর্থদা আর প্রদীপ বর্মন। আমাদের সবার ইচ্ছে, এ-টাওয়ারের দায়িত্ব আপনি যেমন ওদের হয়ে নিতে চেয়েছিলেন, সে রকমই আমাদের হয়ে নিন।’’
‘‘কিছুতেই নয়। আমি এ সবের মধ্যে আর নেই।’’ প্রিয়তোষের গলা আপনা থেকেই চড়ে গেল।
মলয় ঝুঁকে বলল, ‘‘কেন নয় দাদা? এই তো আপনার এখানে আসার আগে কাঞ্জিলালের কাছে ঘুরে এলাম। কাঞ্জিলাল বলছিল, একমাত্র আপনিই নাকি ওর পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। কাজ হয়েছিল দাদা। কিছু দিন গানবাজনা বন্ধ ছিল। এখন আবার শুরু হয়েছে। কাঞ্জিলালের বসার ঘরের দেওয়ালে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে। এই তো শুনে এলাম ছেলেটা গাইছে, পেয়ার হুয়া, ইকরার হুয়া। আর ছেলেটা থামলেই মেয়েটা গায়ে পড়ে চিল্লিয়ে চিল্লিয়ে গাইছে, মালুম নহী হ্যায়, কহাঁ মঞ্জিল, কহাঁ মঞ্জিল।’’
মলয়ের মোবাইলটা বেজে উঠল। সিএলআই দেখে মুখটা ছোট করে বলল, ‘‘এক মিনিট দাদা।’’ তার পর গলার সুরটা একেবারে মোলায়েম করে বলল, ‘‘হ্যাঁ বলো... কী কুটকুটে ওল দিয়েছে... না না বিশ্বাস করো, আমি লিটনকে থোড় বলেছিলাম... মাইরি বলছি তোমার লিস্ট পড়ে বলেছি… হ্যাঁ... এই তো সেলুনে... আর দু’জনের পরেই... তার মধ্যে এক জনের মাথায় টাক, বেশি ক্ষণ লাগবে না…’’
প্রিয়তোষ আনমনা হয়ে পড়লেন। রাজ কপূর, নার্গিস, বৃষ্টি, একটা ছাতা, অপেক্ষা।
সাদা-কালো সেই দৃশ্যেও একটা লোক ছিল। লুকিয়ে থেকে মলয়ের মতোই ডিশে ঢেলে চা খেতে খেতে ওদের দেখছিল। তাতে কিছু এসে গিয়েছিল কি, রাজ কপূর বা নার্গিসের?
২৩
লিফটের জন্য বোতাম টিপে অপেক্ষা করছিলেন প্রিয়তোষ। নিচ থেকে লিফটটা ওপরে উঠে দরজা খুলতেই ভেতরে দেখলেন রৌনক আর হৃষিতাকে। দু’জনেই মুখে অল্প হাসি ফুটিয়ে বলল, ‘‘গুড মর্নিং। ভাল আছেন?’’
‘‘মর্নিং। তোমরা ভাল তো?’’
‘‘খুব ভাল। আপনি কোন ফ্লোরে যাবেন?’’
‘‘গ্রাউন্ডে।’’
রৌনক বলল, ‘‘এই রে। আমরা তো টপ ফ্লোরে যাচ্ছি। তা হলে ওপরে উঠে আপনাকে নামতে হবে।’’
প্রিয়তোষ বললেন, ‘‘ঠিক আছে। আমিই বোধহয় ভুল করে ওপরে যাওয়ার বোতামটা টিপেছিলাম।’’
এলইডি প্যানেলে সংখ্যাগুলো বদলে বদলে যাচ্ছে। দশ, এগারো, বারো... প্রিয়তোষের মনে হল, সময় খুব অল্প। আধ মিনিটও নয়। এই সুযোগ আর দ্বিতীয় বার আসবে না। ওদের কাছে এক বার রেস্তরাঁয় ক্ষমা চেয়েছেন। আর একটু ব্যাখ্যা করে না বলা পর্যন্ত ভিতরের অস্বস্তিটা কাটবে না। ইতস্ততা কাটিয়ে বললেন, ‘‘তোমাদের দু’জনের সঙ্গে আমার একটু কথা ছিল। আমি ভেবেওছিলাম তোমার ফ্ল্যাটে এক বার যাব।’’
রৌনক বলল, ‘‘আসুন না। রবিবার সকালে আমি বাড়িতেই থাকি।’’
হৃষিতাও বলল, ‘‘আমিও আপনার সঙ্গে একটু কথা বলব ভাবছিলাম। বুঝতে পারছিলাম না কখন আপনার সঙ্গে দেখা করতে যাব।’’
লিফটটা একেবারে উঁচু তলায় উঠে দরজাটা খুলে গেল। ওদের নামতে দিতে প্রিয়তোষ বেরিয়ে এসে বললেন, ‘‘আমি প্রায় সব সময় বাড়ি আছি। যে কোনও দিন, যে কোনও সময় চলে এস। খুব খুশি হব।’’
‘‘আজ হতে পারে? আপনি কখন ফিরবেন?’’
‘‘আমি তো ওই শপিং মলের কাছে যাব, কয়েকটা খবরের কাগজ কিনেই চলে আসব।’’
রৌনক একটু অবাক হল, ‘‘কেন? আপনার বাড়িতে কাগজওয়ালা কাগজ দিয়ে যায় না?’’
উত্তর দিতে গিয়ে একটু থেমে গেলেন প্রিয়তোষ। সত্যি কথাটা এদের কী ভাবে বলবেন? বাড়িতে রোজ যে বাংলা কাগজটা দেয়, সেটাই দেয়। আরও অনেক বাংলা কাগজ আছে। সবাই রবিবারে গল্প বার করে। প্রিয়তোষ সেখানে এক জনের গল্প বেরল কি না খোঁজ করতে যান। কাগজওয়ালা ছেলেটা ভাল। দেখতে দেয়। অবশ্য ওকে সন্তুষ্ট রাখতে দু’একটা কাগজ কিনেও নেন। বাড়ি ফিরে অনেক সময় তার পাট ভাঙা হয় না।
অন্যমনস্কতায় প্রিয়তোষকে বাইরে রেখেই লিফটের দরজাটা বন্ধ হয়ে গেল। রৌনক ব্যস্ত হয়ে বোতাম টেপাটিপি করেও লিফটটাকে ফিরিয়ে আনতে পারল না। এর মধ্যে রৌনকের প্রশ্নটাও হারিয়ে গেল। লিফট ফিরে না আসা পর্যন্ত ওদের ভদ্রতার খাতিরে অপেক্ষা করতে দেখে বললেন, ‘‘তোমরা এগোও। আমি কোনও জরুরি কাজে যাচ্ছিলাম না। আধ ঘণ্টার মধ্যে ফিরে আসব। তার পর এস আমার ফ্ল্যাটে।’’
রৌনক বলল, ‘‘আমরাও জরুরি কোনও কাজে আসিনি। ছাদটা দেখতে এসেছিলাম। আপনি দেখেছেন ছাদটা?’’
‘‘না।’’
‘‘আসুন না, দেখবেন। যদি আপনার তাড়া না থাকে। এখন তো ছাদে আসা নিয়ে খুব কড়াকড়ি। কে কে ছাদে আসছে, খাতায় এন্ট্রি করতে হচ্ছে। সে সব করে সিকিয়োরিটিকে বলে খুলিয়েছি। দুম করে ছাদ দেখতে আসতে পারবেন না।’’
প্রিয়তোষ রাজি হয়ে গেলেন। অল্প হেঁটে প্যাসেজ পেরিয়ে আর এক দফা সিঁড়ি ভেঙে ছাদে পৌঁছতে হয়। দরজাটা খোলা। ছাদে এসে মনটা ভাল হয়ে গেল প্রিয়তোষের। এত উঁচু ছাদ! শীতকালের রোদ্দুর। মাথার ওপর ঝকঝকে, নীল আকাশ।
হৃষিতা ঘুরে ঘুরে ছাদটা দেখতে থাকল। রৌনক এক পাশে পাঁচিলে ঠেস দিয়ে দাঁড়াল। প্রিয়তোষ রৌনকের সামনেই দাঁড়িয়ে থাকলেন। মনে হল, যে কথাগুলো ওদের ফ্ল্যাটে গিয়ে বলবেন ভেবেছিলেন, হৃষিতা ফিরে এলে সেটা এখানেই বলে নেওয়া যায়। এই আচমকা লিফটের মধ্যে দেখা হয়ে যাওয়াটা হয়তো ঈশ্বরেরই ইচ্ছে।
তবে হৃষিতা ফিরে আসার পর সেটা আর বলার সুযোগ হল না। হৃষিতা বলতে শুরু করল, ‘‘রৌনক, আইডিয়াল প্লেস। বেলা বাড়লেও শ্যাফট রুমের ওই দিকটায় বেশ কিছু ক্ষণ অনেকটা ছায়া থাকবে।’’
প্রিয়তোষ কিছুই বুঝতে পারছিলেন না। সেটা লক্ষ করে রৌনক বলল, ‘‘ওঁকে একটু খুলে বলো। এটা বলার জন্যই তো ওঁর ফ্ল্যাটে যেতাম আমরা।’’
প্রিয়তোষ বলে উঠলেন, ‘‘এস না আমার ফ্ল্যাটে!’’
হৃষিতা বলল, ‘‘ব্যাপারটা এই ছাদ নিয়েই। এখানেই আপনাকে বলতে শুরু করি? পরে নাহয় আপনার ফ্ল্যাটে যাব!’’
‘‘বেশ।’’
‘‘কাল সকালে এখানে যদি আমরা সবাই মিলে একটা অন্য রকম ক্রিসমাস পার্টি করি, কেমন হবে?’’
‘‘ভাল তো। কিন্তু আমাকে জিজ্ঞেস করছ কেন?’’
‘‘আপনি তো এই টাওয়ারের রিপ্রেজেন্টেটিভ হবেন?’’
প্রিয়তোষ একটু চুপ করে থেকে বললেন, ‘‘তোমরা হয়তো জানো, এখানে দু’টো বিবদমান গোষ্ঠী আছে। দু’পক্ষই আমাকে প্রস্তাব দিয়েছে। আমি না বলে দিয়েছি তোমার বাবা ডক্টর বাগচীর মতো।’’
হৃষিতা এক বার রৌনকের মুখের দিকে তাকিয়ে বলল, ‘‘জানতাম না। কিন্তু না বলে দিলেন কেন?’’
‘‘এই সব রাজনীতি সবার দ্বারা হবে না। আমি এখনও জানি না এরা আমাকেই কেন চায়।’’
হৃষিতা আবার কিছু ক্ষণ চুপ করে থেকে বলল, ‘‘আমার বাবাও একই কথা বলেছে। আর কোনও কিছুতে ইনভলভ্ডও হতে চায় না। কিন্তু সবাই যদি এ ভাবে রাজনীতির কাছে হেরে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তা হলে এখানে আমরা যারা আছি, ভাল থাকব কী ভাবে? সোসাইটির কমিটি মানে কি শুধু এই তিনটে টাওয়ারের বাইরের দেওয়ালগুলো চকচকে থাকল কি না দেখা? মাসে মাসে মেনটেনেন্সের টাকা নেওয়া? সিকিয়োরিটি আর মালিদের মাইনে মেটানো? এর বাইরে কি আমরা কিছু ভাবতে পারি না, যাতে এখানে যারা থাকবে তাদের মন ভাল থাকবে? সেটা টাওয়ারের রিপ্রেজেন্টেটিভ না হয়েও তো আপনি করতে পারেন।’’
ক্রমশ
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy