Advertisement
E-Paper

ভক্তির আতিশয্যে বিপন্ন পুরাতত্ত্ব

তেল-জল-নারকেল ফাটানোর চোটে প্রায় পাঁচ ফুটের শিবলিঙ্গ এখন এক ফুটে।সাতশো বছরের পুরনো স্থাপত্য, কিন্তু সংরক্ষণ নেই।

পুরাতাত্ত্বিক: বাংলা শিলালিপির উপর তেল-সিঁদুরের ত্রিশূল।

পুরাতাত্ত্বিক: বাংলা শিলালিপির উপর তেল-সিঁদুরের ত্রিশূল। ছবি: পাপন চৌধুরী

সুশান্ত বণিক

শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০২১ ০৭:৩৫
Share
Save
বরাকরের সিদ্ধেশ্বর মন্দির ও তার ভেঙে পড়া চুড়ো।

বরাকরের সিদ্ধেশ্বর মন্দির ও তার ভেঙে পড়া চুড়ো।

এই মন্দিরগুলিকে ‘হেরিটেজ’ ঘোষণা করেছে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগ প্রায় অর্ধ শতক আগে। মন্দির চত্বরে পুরাতত্ত্ব বিভাগের নীল বোর্ডে বাংলা ও ইংরেজি হরফে সে কথা লেখা। এ কথাও উল্লেখ করা হয়েছে, এই মন্দিরের ক্ষতি সাধন করার চেষ্টা হলে জেল কিংবা জরিমানা, অথবা দুই-ই হবে। মন্দিরগুলি নিয়ে গর্বের শেষ নেই ঝাড়খণ্ড লাগোয়া বাংলা সীমান্তের শহর বরাকরের বাসিন্দাদের। কিন্তু রাজ্যের অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহাসিক এই স্থাপত্যগুলি হেরিটেজ ঘোষণার পরও উপযুক্ত রক্ষণাবেক্ষণ হচ্ছে না। মন্দিরের দেওয়ালে গাঁথা নকশা ও মূর্তিগুলি খসে খসে পড়তে দেখে সামান্য কিছু রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিয়েছেন স্থানীয়রা। কিন্তু শহরবাসীর একাংশের অজ্ঞতা সেই চেষ্টাতেও জল ঢেলে দিচ্ছে।

পশ্চিম বর্ধমান জেলার ঝাড়খণ্ড লাগোয়া পশ্চিম সীমান্তের শহর বরাকর। বেগুনিয়া মোড় থেকে স্টেশন রোড ধরে একশো মিটার এগোলে বাঁ দিকে একটি ঢালু পথ মিলবে। সেই পথে ১৫ মিটার গড়িয়ে, গোটা কয়েক চওড়া সিঁড়ি ডিঙোলেই প্রায় চতুষ্কোণ মন্দির চত্বরের মাঠ। মাঠের কিছুটা অংশ কচ্ছপের পিঠের মতো। সেখানে সামনের দিকে পর পর দু’টি দেউল আকৃতির মন্দির। পুরাতত্ত্ব বিভাগের ঘোষণা অনুযায়ী, মন্দির দু’টি ১৪৬১ সালে তৈরি। প্রায় ১০ মিটার পিছনে পর পর আরও দু’টি মন্দির আছে, যেগুলি অষ্টম বা নবম শতকে তৈরি। অতীতে এই স্থাপত্যগুলি নিয়ে বহু গবেষণা হয়েছে। মন্দিরগুলির গঠনশৈলী বিষয়েও গবেষকদের লেখায় নানা অভিমত উঠে এসেছে। কলকাতা সংগ্রহশালায় বরাকরের এই মন্দিরগুলির প্রতিরূপ রেখে কিছু কিছু ব্যাখ্যাও দেওয়া হয়েছে। পরাধীন ভারতে ব্রিটিশ সরকারের আর্কিয়োলজিক্যাল বিভাগে কর্মরত মার্কিন ইঞ্জিনিয়ার জোসেফ ডেভিড ফ্রিডন মেলিক বেগলার এই মন্দিরগুলি নিয়ে বিশদে গবেষণা করেছেন। তাঁর লেখা বই ‘রিপোর্ট অব এ ট্যুর থ্রু দ্য বেঙ্গল প্রভিন্সেস’-এ মন্দিরগুলি সম্পর্কে গবেষণালব্ধ বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন ডেভিড সাহেব। ১৮৭২-৭৩ সালে ভারতীয় আর্কিয়োলজিকাল বিভাগ এই বইটি প্রকাশ করে।

ডেভিড সাহেবের গবেষণার উপর ভিত্তি করে পুরাতত্ত্ব বিভাগ উল্লেখ করেছে, মন্দিরগুলির প্রাচীন নাম বেগুনিয়া মন্দির। গবেষকদের দেওয়া তথ্য থেকে জানা যায়, মন্দিরগুলি দেখতে বেগুনের মতো, তাই। স্থানীয়দের কাছে এগুলি সিদ্ধেশ্বর মন্দির নামেও পরিচিত। তবে বরাকরকে স্থানীয়রা বেগুনিয়া নামে ডাকেন বলে, বেগুনিয়া মন্দির বললেও বুঝতে সমস্যা হয় না। এ ক্ষেত্রে ডেভিড সাহেবের তথ্যের ভিত্তিতে একটি কথা অবশ্যই জানিয়ে রাখা দরকার, চারটি মন্দিরের একেবারে পিছনেরটিই শুধুমাত্র সিদ্ধেশ্বর মন্দির। তাঁর দাবি, এই মন্দিরটি পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম প্রাচীন দেউল আকৃতির মন্দির। এগুলির গঠনশৈলী ও কারুকাজ ওড়িশা, গুজরাত ও রাজস্থানের মন্দিরগুলির সঙ্গে মেলে। মন্দিরগুলিতে যে সব মূর্তি রয়েছে, সেগুলি মন্দির প্রতিষ্ঠার সময়েরই কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত কোনও তথ্য তিনি দেননি। অষ্টাদশ শতকে তিনি তাঁর লেখায় উল্লেখ করেছেন, এই মন্দিরে চার ফুট সাত ইঞ্চি উচ্চতার একটি শিবলিঙ্গ আছে। কিন্তু এখন সেখানে গেলে দেখতে পাওয়া যায় মাথার অংশ ক্ষয়ে শিবলিঙ্গটি প্রায় এক ফুট উচ্চতায় এসে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয়রা নিয়মিত জল ঢেলে, চন্দন লেপে পুজো করে শিবলিঙ্গটিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। ডেভিডের লেখায় আছে, এই মন্দিরটির উচ্চতা প্রায় সাড়ে ৩৬ ফুট, চওড়ায় প্রায় সাত ফুট।

মন্দির চত্বরে ঢোকার মুখে পাশাপাশি দু’টি মন্দিরের প্রতিষ্ঠাকাল ১৪৬১ খ্রিস্টাব্দ। এ বিষয়ে ডেভিড সাহেব লিখেছেন, বাঁ দিকের মন্দিরটির দরজার দু’দিকের পাথরের থামে প্রাচীন বাংলা হরফের শিলালিপি থেকে অনুমান করা হয়, হরিশ্চন্দ্র নামে কোনও রাজা ১৩৮২ সালে এই মন্দির নির্মাণ করেছেন। তিনি তাঁর স্ত্রী হরিপ্রিয়ার অনুরোধে এগুলি তৈরি করিয়েছিলেন। পরবর্তী কালে নন্দ নামের এক ব্রাহ্মণ রাজা ১৪৬৪ সালে মন্দিরগুলির সংস্কার করিয়েছিলেন। পরবর্তী গবেষকেরা উল্লেখ করেন, মন্দির প্রতিষ্ঠার সময়ে বাংলা ছিল সেন ও পাল রাজবংশের হাতে। তাঁরা জেনেছেন, রাজা হরিশ্চন্দ্র পাল রাজাদের অধীন এক সামন্ত রাজা ছিলেন। এ ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য, ব্রিটিশ আমলে বাংলায় জেসিকে পিটারসন নামে এক ম্যাজিস্ট্রেট বরাকরের এই মন্দিরগুলির প্রতিষ্ঠাকাল নিয়ে গবেষণা করেছিলেন। ১৯১০ সালে ‘বেঙ্গল ডিস্ট্রিক্ট গেজেটিয়ার্স, বর্ধমান’ প্রকাশ করে তিনি মন্দির প্রতিষ্ঠার সময় কাল বিষয়ে ডেভিড সাহেবের সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন।

চারটি মন্দিরই বেলেপাথরের তৈরি। বাইরের দেওয়াল ও শিখরের কারুকাজগুলিও বেলেপাথর খোদাই করে তৈরি। গবেষকেরা উল্লেখ করেছেন, পুরীর জগন্নাথ মন্দির ও ভুবনেশ্বরের লিঙ্গরাজ মন্দিরের সঙ্গে বরাকরের এই মন্দিরগুলির খুব মিল আছে। কোনও গবেষকের মতে, ইলোরার কৈলাস মন্দিরের সঙ্গেও বরাকরের মন্দিরগুলোর অনেক মিল। পারিপার্শ্বিক ভৌগোলিক অবস্থান বিচার করে গবেষকদের অনুমান, পাথরগুলি বরাকরের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কাটা হয়েছে।

বরাকরের স্থাপত্যগুলি নিয়ে ভবিষ্যতেও গবেষণা চলবে। নানা ধরনের তথ্য উপস্থাপিত হবে, তা নিয়ে আলোচনাও হবে। কিন্তু এখন যা অতি গুরুত্বপূর্ণ তা হল মন্দিরগুলির সংরক্ষণ। গত কয়েক শতক ধরে একটু একটু করে ক্ষয়ে যাচ্ছে মন্দিরগুলি। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বছর চল্লিশেক আগে শেষের মন্দিরটির চুড়োর একটি বড় অংশ বজ্রপাতের ফলে ভেঙে পড়ে। এটি দেখতে অনেকটা হাতে চালানো রোড রোলারের মতো। কিন্তু ওই টুকরোটি সংরক্ষণ করা হয়নি। উল্টে এলাকার ক’জন কিশোরকে সেটি খেলার মাঠ সমতল করার কাজে ব্যবহার করতে দেখা গিয়েছে। এখনও সেটি মন্দির চত্বরের মাঠে অবহেলায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। অতি সম্প্রতি আবারও এক বজ্রপাতের ঘটনায় একটি মন্দিরের দেওয়ালে উৎকীর্ণ সিংহের মুখ খসে পড়েছে। সেটি অবশ্য যত্ন করে তুলে রেখেছেন স্থানীয়রা।

সেখানে গেলে দেখা যাবে, প্রতিটি মন্দিরের বাইরের দেওয়ালের গা বেয়ে গজিয়ে উঠেছে বট, অশ্বত্থ, আরও নানা জংলি গাছ। সে সব পরিষ্কার করার ব্যবস্থা নেই। বছরের পর বছর ধরে গাছগুলির শিকড়বাকড় ছড়িয়ে পড়েছে মন্দিরময়। ফলে স্থাপত্যে ফাটল ধরেছে। চত্বরে ঢোকার মুখে প্রথম সারির বাঁ দিকের মন্দিরটির দরজার দু’পাশের পাথরের থামে যে প্রাচীন বাংলা হরফের শিলালিপি আছে, তা স্থানীয়দের অজ্ঞতায় মুছে যেতে বসেছে। মন্দিরে পুজো করতে আসা ভক্তের দল দরজার থামে তেল-সিঁদুর লেপে দিয়েছেন। কেউ আবার ধাতব পদার্থ দিয়ে লিপির উপরেই আঁকিবুঁকি কেটেছেন। ফলত ক্রমশ অস্পষ্ট হয়ে উঠছে লিপিগুলি। স্থানীয়দের আক্ষেপ, মন্দিরগুলি যে হেতু ঘিরে রাখা হয়নি, তাই যে কেউ, যে কোনও সময়ে মন্দিরের মধ্যে প্রবেশ করে যা ইচ্ছে তা-ই করছেন। গর্ভগৃহের মূর্তিগুলি দেখলেই বোঝা যায় সেগুলি কয়েক শতকের প্রাচীন। কোনও বাধানিষেধ নেই বলে সকাল-সন্ধ্যা সারা ক্ষণই দল বেঁধে ভক্তরা মূর্তিগুলিতে দুধ-জল ঢালছেন, তেল-সিঁদুর লেপে পুজো করছেন। ক্রমশ বদলে যাচ্ছে মূর্তিগুলির প্রকৃত রূপ।

স্থানীয়রা জানালেন, প্রায় দিনই মন্দিরের ভিতর ও বাইরের দেওয়ালের পলেস্তারা খসে পড়ছে। খসে পড়ছে মন্দিরের বাইরের দেওয়ালে খোদিত মূর্তিগুলি। তবে স্থানীয়রাই সে সব খসে পড়া মূর্তি বা টুকরোগুলি সযত্নে তুলে রাখছেন। একেবারে শেষের সিদ্ধেশ্বর মন্দিরটির অবস্থা আরও করুণ। নিয়মিত হাজার হাজার ভক্ত শিবলিঙ্গে দুধ-জল ঢেলে নারকেল ফাটিয়ে পুজোআচ্চা করছেন। শিবলিঙ্গটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার এটিও অন্যতম কারণ। সিদ্ধেশ্বর মন্দিরের পুরোহিত শিবশঙ্কর অধিকারী গত চল্লিশ বছর ধরে পুজো করছেন। তাঁর দাবি, কাশীপুর রাজাদের মাধ্যমে তাঁর পূর্বপুরুষরা এই মন্দিরে পুজো করার অধিকার পেয়েছেন। বংশ পরম্পরায় তিনি এখন সিদ্ধেশ্বর মন্দিরের পুরোহিত। তিনি জানিয়েছেন, প্রত্যেক বছর শ্রাবণ ও চৈত্র মাস জুড়ে দৈনিক গড়ে প্রায় পাঁচ হাজার ভক্ত এই মন্দিরে পুজো করতে আসেন। পুরোহিতের সঙ্গে আলাপচারিতার মাঝে হঠাৎ দেখা গেল, মন্দিরের গা বেয়ে গলগল করে কালো ধোঁয়া বেরোচ্ছে। ঠিক আগুন লাগলে যেমন হয়। কিসের ধোঁয়া, পুরোহিতকে প্রশ্ন করে জানা গেল ভোগ রান্না হবে। মন্দিরের ভিতরেই ছোট এক ফালি জায়গায় কাঠকয়লার আগুন ধরিয়ে ভোগ রান্নার ব্যবস্থা। আশ্চর্যের বিষয়, ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগের ঘোষিত ঐতিহাসিক ও ঐতিহ্যবাহী কয়েক শতকের প্রাচীন এই স্থাপত্যগুলি স্পর্শবিহীন রাখার কথা। সে সব তো হচ্ছেই না, উল্টে মন্দির চত্বরে দিনের পর দিন আগুন ধরিয়ে তার ধোঁয়ায় এগুলি ক্ষতিগ্রস্ত করার প্রক্রিয়া চলছে। স্থানীয়রাই জানালেন, প্রত্যেকটি মন্দিরের চাতাল বেশ কয়েক বছর আগে পর্যন্ত ভূপৃষ্ঠ থেকে অন্তত সাত ফুট উচ্চতায় ছিল। বর্তমানে সেই উচ্চতা কমে দু’ফুটে নেমে এসেছে। জানা গেল, প্রতি বর্ষায় মন্দির চত্বরে হু হু করে আশপাশের এলাকার জল ঢোকে। পলি জমে জমে মন্দিরের চাতালের উচ্চতা কমে গিয়েছে। এর ফলে মন্দিরগুলির ভিতরেও হাঁটুজল জমে যায়। স্থানীয়রা এসে জল বার করার কাজে লাগেন। দিনের পর দিন এ সব কারণে মন্দিরের একাধিক মূর্তি নষ্ট হয়ে গিয়েছে।

এই মন্দিরগুচ্ছের গবেষকরা বার বার উল্লেখ করেছেন, বরাকরে বহু প্রাচীন ঐতিহাসিক স্থাপত্য রয়েছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এগুলিকে গুরুত্ব সহকারে সংরক্ষণ করতে হবে। এগুলির সঠিক গবেষণা হলে ভারতের হাজার বছরের প্রাচীন সংস্কৃতি, শিল্পকলা ও নাগরিক সভ্যতা সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা পাওয়া যাবে। এই গবেষকদের কথা সমর্থন করে বরাকর-সহ পশ্চিম বর্ধমান জেলার সংবেদনশীল নাগরিকরাও মন্দিরগুলির উপযুক্ত সংরক্ষণের দাবি তুলেছেন।

temple Archeology

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।