কোভিড আমাদের বিজ্ঞান-প্রযুক্তির প্রতি অতি নির্ভরশীল করে তুললেও, কুসংস্কারের প্রশ্নে এই ১৩০ কোটির দেশ একাই একশো। আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় লিখেছেন, “আমি ক্লাসে এত করিয়া ছাত্রদের পড়াইলাম যে পৃথিবীর ছায়া চাঁদের উপরে পড়িয়া চন্দ্রগ্রহণ হয়। তাহারা তা পড়িল, লিখিল, নম্বর পাইল, পাস করিল। কিন্তু মজার ব্যাপার হইল যখন আবার সত্যি সত্যি চন্দ্রগ্রহণ হইল তখন চন্দ্রকে রাহু গ্রাস করিয়াছে বলিয়া তাহারা ঢোল, করতাল, শঙ্খ লইয়া রাস্তায় বাহির হইয়া পড়িল, ইহা এক আশ্চর্য ভারতবর্ষ।” সেই পরম্পরায় আমরা কোভিড নিরাময়ের জন্য থালাও বাজিয়েছি, আবার একই সঙ্গে অনলাইন পেমেন্ট, অনলাইন মার্কেটিং, মিটিং, স্কুলিং করে সমান্তরাল বিশ্বও চালিয়েছি। রাতারাতি এত প্রযুক্তির উন্নতি হল কেন?
মনে রাখতে হবে, রাম মন্দিরের জৌলুসময় নির্মাণের মাঝেই কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের আন্তরিক প্রচেষ্টায় ৬০০০ কোটি বরাদ্দ হয়েছে, আগামী সাত বছরের মধ্যে ১০০ কিউবিট সমৃদ্ধ কোয়ান্টাম কম্পিউটার সৃষ্টির লক্ষ্যে। কিন্তু গরিব দেশে এত অর্থ বরাদ্দ হওয়ার কারণ? আসলে প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গেই তথ্যবিকৃতি, নানা অপরাধের মাত্রাও দ্রুতহারে বাড়ছে। তাই আগেকার মানি অর্ডার, টেলিগ্রাম, চিঠি সবই আর্থিক ও সময়ের মাপকাঠিতে অচল। চাই সুরক্ষিত মাধ্যম। কিন্তু সাঙ্কেতিক বার্তালাপ দ্বারা সুরক্ষার ধারণা মোটেই নতুন নয়। ধরুন, সকালে বাজারে গিয়ে এক বন্ধু আপনাকে বলল, “পিকীপিরে, পিকেপিমপিন পিয়াপিছিপিস?” আপনি অবাক! আপনার বন্ধু আশ্বস্ত করে বললেন, “কী রে, কেমন আছিস?” খালি ‘পি’ সরিয়ে দিলেই পরিষ্কার। সাহিত্যে বহু নিশ্চিত উদাহরণ আছে। ‘রয়্যাল বেঙ্গল রহস্য’-এর সেই বিখ্যাত সঙ্কেত ভাবুন, ‘মুড়ো হয় বুড়ো গাছ/ হাত গোন ভাত পাঁচ/ দিক পাও ঠিক ঠিক জবাবে।’
স্যর আর্থার কোনান ডয়েল থেকে শরদিন্দুর ব্যোমকেশ, সকলেই সঙ্কেতের সমাধান করেছেন বইয়ের পাতায়। এডগার অ্যালান পো-ও তাঁর গল্পে এনেছিলেন গোল্ড-বাগ ক্রিপ্টোগ্রাফি। বাস্তবে বহুকাল থেকেই গ্রিক, চৈনিক সঙ্কেতের উদাহরণ মিললেও জুলিয়াস সিজ়ারের রাজদরবারে প্রচলিত সাইফারের ব্যবহার তুমুল জনপ্রিয়। সুরক্ষা মজবুত করতে ধীরে ধীরে হিল সাইফার, ভিগনার সাইফারের যাত্রা পেরিয়ে বিশ্বযুদ্ধের সময়ে আবির্ভূত আর্থার শারবিয়াসের সৃষ্ট এনিগমা, তাকে জব্দ করার জন্য আবার ট্যুরিং সাহেবের যুগান্তকারী আবিষ্কার।
ক্রিপ্টোগ্রাফি (গুপ্ত সঙ্কেতের চর্চা) আদতে কী? ধরা যাক, বিলাসবাবু একটি বাক্সে মূল্যবান কোনও বস্তু ভরে তা কৈলাসবাবুকে পাঠাবেন। কিন্তু বাক্সে তালা লাগিয়ে চাবি নিজের কাছে রেখে তিনি অপরিচিত সুমনের মাধ্যমে বাক্স পাঠালেন। এ বার কৈলাসবাবু বাক্স পেয়ে খুলতে পারলেন না, তাই নিজে আর একটি তালা লাগিয়ে চাবি নিজের জিম্মায় রেখে, বাক্স বিলাসবাবুকে ফেরত পাঠিয়ে দিলেন। এদিকে বিলাসবাবু বাক্সে কৈলাসবাবুর তালা দেখে আশ্বস্ত হয়ে নিজের তালা খুলে নিলেন, তার পর আবার সুমনের হাত দিয়ে বাক্সটি পাঠিয়ে দিলেন। শেষমেশ কৈলাসবাবু বাক্স ফেরত পেয়ে ব্যক্তিগত চাবি দিয়ে তালা খুললেন, বস্তুটি পেলেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে তৃতীয় ব্যক্তির পাবলিক চাবির মাধ্যমে তথ্য বিকৃতির আশঙ্কা, প্রেরক ও প্রাপকের ব্যক্তিগত চাবির ব্যবহার বাস্তবে কতটা সুরক্ষিত, সেটাই মূল প্রশ্ন।
এই পাবলিক চাবি মূলত কিছু জটিল অঙ্কের উপর দাঁড়িয়ে আছে, যা সাধারণ কম্পিউটারের পক্ষে সমাধান করা অতীব কঠিন। বৃহদাকার কম্পিউটার থেকে আজকের মাইক্রোচিপ, অ্যাবাকাস থেকে ব্যাবেজের ইঞ্জিন, অনেক উত্থান-পতনের সাক্ষী প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান। কালের নিয়মে আজ আমরা কোয়ান্টাম অধীশ্বরের রাজত্ব পরখ করতে চলেছি খুব শিগগিরই। কোয়ান্টাম কম্পিউটার তৈরির নেপথ্যে কোয়ান্টাম বলবিদ্যা, যা কিনা ক্যাপ্টেন স্পার্কের মতোই হেঁয়ালি ভালবাসে। বিজ্ঞানী রিচার্ড ফেইনম্যান কোয়ান্টাম কম্পিউটার আবির্ভাবের সম্ভাবনা উল্লেখ করে বলেছিলেন যে, কোয়ান্টাম বলবিদ্যা বিষয়টি বোঝা মোটেই সহজ নয়।
সাধারণ কম্পিউটারের ক্ষেত্রে বাইনারি বিট হল তথ্যের মৌলিক একক, আর কোয়ান্টামে কিউবিট হল মূল একক। কোনও মুদ্রা টস করলে হেড অথবা টেল পড়বে। তেমনই বাস্তবে সাধারণ কম্পিউটারের বাইনারি বিটও শুধুমাত্র ০ অথবা ১ যে কোনও একটি মান ধারণ করতে পারে ভোল্টেজ তারতম্যের ভিত্তিতে। কিন্তু কোয়ান্টাম কম্পিউটারে ব্যবহৃত কিউবিটের মান ০, ১ বা তাদের সম্মিলিত অবস্থাকেও নির্দেশ করতে পারে। সাধারণ কম্পিউটার বা সুপারকম্পিউটার বহু জটিল গণনায় পারদর্শী হলেও কিছু ক্ষেত্রে সে ব্যর্থ। ১৯৭৬ সালে হুইটফিল্ড ডিফি ও মার্টিন হেলম্যান যুগান্তকারী এক ধারণার জন্ম দিয়েছিলেন, যার সঙ্গে ডিসক্রিট লগারিদম প্রবলেম-এর মতো সমস্যা জড়িয়ে আছে। ধরুন, আপনি রেস্তরাঁয় গিয়ে কোনও নতুন পদ খেয়ে খুবই তৃপ্ত হলেন। কিন্তু অচেনা আইটেম আস্বাদন করেই উপকরণ বা রন্ধনপ্রণালী বোঝা কি সহজ? এই লগারিদম প্রবলেম-এর ক্ষেত্রেও খানিকটা একই সমস্যা। যেমন ২-এর ঘনফল ৮ হয়, কিন্তু ২ এর কোন সূচকের মান ২০৪৮ হবে? এ ক্ষেত্রে লগারিদম-এর ব্যবহার করে কিছু বিশ্লেষণ করা হয়ে থাকে। ডিফি ও হেলম্যান তাঁদের কাজে দেখিয়েছেন যে কোনও সুরক্ষিত বার্তালাপে আদতে সীমাবদ্ধ ফিল্ডের মৌলিক সংখ্যা যদি ১০০০ বিটের কোনও নম্বর হয়, তবে একমাত্র আড়ি পাতা দুষ্টু লোক কর্তৃক তথ্যবিকৃতি আটকানো সম্ভব।
রোনাল্ড রিভেস্ট, আদি শামির ও লিওনার্ড অ্যাডলম্যান ১৯৭৮ নাগাদ সংখ্যাতত্ত্ব-ভিত্তিক পদ্ধতির আবিষ্কার করেন, যা তাঁদের পদবির আদ্যক্ষর অনুযায়ী ‘আরএসএ প্রক্রিয়া’ নামে পরিচিত। দু’টি মৌলিক সংখ্যা দেওয়া থাকলে তাদের গুণফল নির্ণয় কষ্টসাধ্য কাজ নয়। কিন্তু যদি দুটি বড় মৌলিক সংখ্যার গুণফল থেকে সংখ্যা দুটিকে নির্ণয় করতে হয়, তবে সেটি সহজসাধ্য নয়। যেখানে ২০৪৮ বিটের কোনও বড় গুণফল থেকে আসল উৎপাদককে খুঁজতে সাধারণ কম্পিউটারের দশ লক্ষ বছর লাগবে, সেখানেই শক্তিশালী কোয়ান্টাম কম্পিউটারের জয়, তার কিউবিটের বিচিত্র চরিত্রের জন্য।
এ বার তবে কোয়ান্টাম বিটের বৈশিষ্ট্য জেনে নেওয়া যাক। অফিসে কাজ করা আর বাড়িতে চা খাওয়া একই সঙ্গে সম্ভব না হলেও কোয়ান্টাম দুনিয়ায় এই ঘটনাই উপরিপাত বা সুপারপজ়িশন নামে পরিচিত। এর পর আসি এনট্যাঙ্গলমেন্ট-এর কথায়। দুটি এনট্যাঙ্গেলড (বিজড়িত) কণার নিবিড় বন্ধুত্বের জন্য তাদের মধ্যে প্রত্যক্ষ যোগাযোগ না থাকলেও এক জন অন্য জনকে প্রভাবিত করে। বাহ্যিক বলপ্রয়োগে একটি কণার সামান্য স্থানচ্যুতি অন্য জনকে ব্যথিত করে, সেও তৎক্ষণাৎ স্থান পরিবর্তন করে বিপরীতে ঘুরতে শুরু করে। একেই বলা হয় কোয়ান্টাম টেলিপোর্টেশন। মাধ্যম ছাড়াই এই সব কিউবিট নিমেষে স্থান কাল পরিবর্তন করে, দেওয়াল ভেদ করে, বন্ধ দরজার মধ্য দিয়েও সম্ভব এদের ভৌতিক চলাচল। এই ভৌতিক কার্যকলাপকে বলা হয় কোয়ান্টাম টানেলিং।
কোয়ান্টাম ক্রিপ্টোগ্রাফিক শাখায় হাইজ়েনবার্গের অনিশ্চয়তা তত্ত্ব ও ফোটনের মেরু প্রবণতা হল মূল ভিত্তি। ফোটনের পোলারাইজ়েশন অনুযায়ী, ফোটন আলোর গতিতে চলাচল করে। কিন্তু হঠাৎ যখন তারা কোনও কিছুতে ধাক্কা খায়, সেই সময়ে নির্দিষ্ট কোনও অভিমুখে অগ্রসর হয় অথবা কোনও নির্দিষ্ট অক্ষের সাপেক্ষে ঘুরতে শুরু করে। ১৯৭০ সালে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিফেন উইসনার ক্রিপ্টোগ্রাফির জন্য কোয়ান্টাম কোডিংয়ের ধারণা দিয়েছিলেন, সেই গবেষণাপত্রটি বহু দিন পরে ১৯৮৩ সালে প্রকাশিত হয়। ১৯৮৪ সালে বেঙ্গালুরুতে চার্লস বেনেট ও ব্রাসার্ড তাঁদের প্রবর্তিত ‘কোয়ান্টাম কি ডিস্ট্রিবিউশন’ সংক্রান্ত প্রোটোকল উপস্থাপন করার সুযোগ পান, যা গবেষণার মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। ধরা যাক, প্রেরক ক কোয়ান্টাম মাধ্যমে প্রাপক খ-কে বার্তা পাঠানোর চেষ্টা করছেন। কোনও সন্দেহজনক ব্যক্তি গ-এর অনধিকার প্রবেশ সত্ত্বেও ক ও খ কিউবিটের সম্ভাব্য অবস্থা নির্ণয় করে প্রত্যুত্তর দিতেই পারেন ও তথ্যবিকৃতি যাচাই করতে পারেন। ‘নো-ক্লোনিং থিয়োরি’ অনুযায়ী কেউ যদি কোনও কোয়ান্টাম সিস্টেমকে পুরোপুরি কপি করে নেয়, তবু সে তা অসৎ উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে পারবে না এবং কোনও আড়িপাতা ব্যক্তির উপস্থিতি সহজেই টের পাওয়া সম্ভব হবে।
তবে যত দিন গেছে, বিভিন্ন রকমের আধুনিক কোয়ান্টাম কি পরিবহণের নীতি প্রবর্তিত হয়েছে। জরুরি হয়ে পড়েছে সুরক্ষিত ফাইবার অপটিক মাধ্যমের খোঁজ চালানোও। কোয়ান্টাম কম্পিউটারের বৃহৎ আকৃতিগত সমস্যা যন্ত্রের বড় সীমাবদ্ধতা। কিউবিটের এনট্যাঙ্গেলমেন্ট-এর ক্ষেত্রে বাহ্যিক পরিবেশ, পরিমাপের ত্রুটিগত সমস্যার জন্য ইদানীং কোয়ান্টাম কম্পিউটিং হার্ডওয়্যার নির্মাণ ও ত্রুটি সংশোধনের উপর প্রভূত গুরুত্ব আরোপ করা হচ্ছে। সাধারণত ফোটনকে কিউবিট রূপে ব্যবহার করলে বাহ্যিক কম্পন, শব্দের প্রভাব থেকে কিছু মুক্তি পাওয়া যায়। সম্প্রতি জার্মানির লিবনিৎজ়, নেদারল্যান্ডসের টোয়েন্টে ইউনিভার্সিটি ও কুইক্স কোয়ান্টাম কোম্পানির গবেষকরা যৌথ গবেষণায় পৃথিবীর প্রথম স্বয়ংসম্পূর্ণ কোয়ান্টাম ফোটোনিক উৎস আবিষ্কার করেছেন, যেখানে বং কানেকশন হিসেবে রয়েছে রক্তিম হালদারের মতো বঙ্গসন্তানের উজ্জ্বল উপস্থিতি।
অতি ক্ষুদ্র ফোটোনিক চিপটি বহনযোগ্য, ঘরের সাধারণ তাপমাত্রায় সম্পূর্ণ কার্যকরী। অতিসূক্ষ্ম রেসোনেটর ও অপটিক্যাল ফাইবার সম্বলিত সোর্সটি যে কোনও কয়েনের উপর অনায়াসে রাখা যায়। আর এক বঙ্গসন্তান, কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অভীক দত্ত প্রথম বারের জন্য সিলিকন নাইট্রাইড ও সিলিকার চিপে কোয়ান্টাম আলো সৃষ্টিতে সাফল্য পেয়েছেন।
এত ক্ষণ এই আলোচনায় কিছু পাঠক যদি অধৈর্য হয়ে জিজ্ঞেস করেন যে, কবে এ সব হাতে আসবে, তখন বলতেই হবে ‘সবুরে মেওয়া ফলে’। অনেকে ভাবছেন, এ সব কোয়ান্টামের গল্প জেনে কী লাভ? কাল অফিসে প্রোমোশন হবে? না কি ব্যাঙ্কের ফিক্সড ডিপোজ়িটে সুদ বেড়ে যাবে? না, এগুলোর কোনোটাই হবে না। তবে কোয়ান্টাম প্রযুক্তির কিছু সূদুরপ্রসারী প্রয়োজনীয়তা জানলে সকলেই আশ্বস্ত হবেন। ফাইভ-জি টেকনোলজির ব্যাপক প্রসার থেকে কসমোলজিক্যাল গবেষণার উপযোগী ঘড়ি, জিপিএস সিগনালের জন্য কার্যকরী নেভিগেশন ডিভাইস-সহ আরও নানা রকম সুবিধা পাওয়া যেতে পারে কোয়ান্টাম কম্পিউটারের মাধ্যমে। চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিভিন্ন স্ক্যান, ক্যানসার কোষের রেডিয়েশনের জন্য কোয়ান্টাম এমআরআই খুবই উপযোগী হতে পারে। আবহাওয়ার আগাম পূর্বাভাস থেকে শেয়ার মার্কেটিং ভবিষ্যদ্বাণী, বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের আদি অনন্ত কিংবা অ্যালঝাইমার্সের চিকিৎসা— বহু ক্ষেত্রে কোয়ান্টাম প্রযুক্তির অবদানের অপেক্ষায় আমরা থাকতেই পারি।
আইনস্টাইন এক সময় কোয়ান্টাম প্রযুক্তিকে ভূতুড়ে কাণ্ড বলে অভিহিত করলেও মেঘনাদ সাহা, সত্যেন্দ্রনাথ বসুর উত্তরসূরি ভারতীয় বিজ্ঞানীরা আজ কোয়ান্টাম গবেষণায় একেবারে সামনের সারিতে। ইতিমধ্যেই এ দেশে বহু আইআইটি, আইএসআই কলকাতা, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি টিসিজি গ্রুপ-এর মতো কিছু বেসরকারি গবেষণা সংস্থার বিজ্ঞানীরা নানা পরীক্ষা চালাচ্ছেন।
কোয়ান্টাম কম্পিউটারের সঠিক আবিষ্কার ও ব্যবহার ঘটলে নিমেষেই ব্যাঙ্কের পাসওয়ার্ড থেকে কোনও দেশের প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত জরুরি তথ্য নিমেষে হাতিয়ে নেওয়া সম্ভব, তাই সকলকে সাবধানে পা ফেলতে হবে। বিজ্ঞান শেষে আবারও আশীর্বাদ না হয়ে ভুল পদক্ষেপে অভিশাপ হয়েও দাঁড়াতে পারে। এর জন্য ক্লাসিক্যাল ও কোয়ান্টাম দুনিয়ার সঙ্গে ভারসাম্য রেখে বিশ্বব্যাপী বহু গবেষক পোস্ট-কোয়ান্টাম ক্রিপ্টোগ্রাফি নিয়ে গবেষণারত।
তথ্যপ্রযুক্তির ভয়ঙ্কর উন্নতির আবহে আমাদের আরও স্মার্ট হতে হবে। শুধু পাসওয়ার্ড, ওটিপি গোপন রাখলেই দায়িত্ব শেষ নয়। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাইবার নিরাপত্তা, কোয়ান্টাম ক্রিপ্টোগ্রাফি সংক্রান্ত বাধ্যতামূলক কোর্স চালু করতে হবে। সময় এসেছে বর্তমান ছাত্রসমাজকে সাইবার নিরাপত্তা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং সম্পর্কে প্রেরণা জোগানোর, নির্দিষ্ট দিশা দেখানোর। কিন্তু বেড়ালের গলায় প্রথম ঘণ্টা বাঁধবে কে? এমনিতেই আমরা সমাজমাধ্যমে স্টেটাস দেওয়ার লোভী আগ্রাসনে ‘প্রাইভেসি’ কথাটার অর্থই ভুলে গেছি। তথ্যের নিরাপত্তা, গোপনীয়তা নিয়ে ভাবার সময় কোথায় আমাদের!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy