ছবি: সংগৃহীত
প্রশ্ন: ১৯৭৩-’৭৫ সালে করা একটি গবেষণা। যার জন্য ১৯৯৬ সালে ফিজ়িয়োলজি বা মেডিসিনে নোবেলপ্রাপ্তি। আপনার করা সেই গবেষণার কথা সাম্প্রতিক করোনা-আবহে বার বার উঠে আসছে…
পিটার সি ডোয়ার্টি: আমি আর রলফ জিঙ্কারন্যাজ়েল যে গবেষণাটি করেছিলাম, তাতে শরীরের নিজস্ব প্রতিরোধ ক্ষমতা কী ভাবে কোনও ভাইরাস সংক্রমণের বিরুদ্ধে কাজ করে, তা দেখিয়েছিলাম। শরীরের কোনও কোষ ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হলে কী ভাবে শরীরের নিজস্ব প্রতিরোধ ক্ষমতা সংশ্লিষ্ট ভাইরাস-আক্রান্ত কোষকে মেরে ফেলার কাজ শুরু করে, সেটাই ছিল আমাদের গবেষণার মূল বিষয়। কিন্তু সে-সব তো অনেক আগের কথা। আমরা গবেষণাটি করেছিলাম আজ থেকে প্রায় ৪৫ বছর আগে। করোনা পরিস্থিতিতে শরীরের নিজস্ব প্রতিরোধ ক্ষমতার কথা উঠে আসাতেই হয়তো অনেকে আমাদের গবেষণার প্রসঙ্গ টেনে আনছেন।
প্র: ‘ফর দেয়ার ডিসকভারিজ় কনসার্নিং দ্য স্পেসিফিসিটি অব দ্য সেল মিডিয়েটেড ইমিউন ডিফেন্স’— নোবেল কমিটি আপনাদের গবেষণা নিয়ে এটাই বলেছিল।
উ: হ্যাঁ। শরীরে কোনও ভাইরাস প্রবেশ করলে, টি-সেল (এক বিশেষ ধরনের শ্বেত রক্তকণিকা যা শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরিতে সাহায্য করে) কী ভাবে অনুপ্রবেশকারী ভাইরাস এবং তার দ্বারা সংক্রমিত কোষকে চিহ্নিত করার পরে মেরে ফেলতে পারে, সেটাই দেখিয়েছিলাম আমরা। তবে টি-সেল, যা সংক্রমণজনিত রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মূল যোদ্ধাও বটে, তখনই এই প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে সক্ষম হয়, যখন তারা একই সঙ্গে ‘ফরেন মলিকিউলস’, এ ক্ষেত্রে অনুপ্রবেশকারী ভাইরাস এবং ‘সেল্ফ মলিকিউলস’, অর্থাৎ শরীরের নিজস্ব কোষকে আলাদা ভাবে চিহ্নিত করতে পারে।
প্র: আপনাদের আবিষ্কারকে ভিত্তি করে সংক্রমণজনিত রোগের প্রতিষেধক ও ওষুধ তৈরির ক্ষেত্রে একটা নতুন দিক খুলে গেল! যেমন এই মুহূর্তে সারা বিশ্বে সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের প্রতিষেধক নিয়ে কাজ চলছে।
উ: হ্যাঁ। অনেকেই আজ প্রতিষেধক তৈরির চেষ্টা করছেন। অনেক জায়গায় তো ‘হিউম্যান ট্রায়াল’-এর পরীক্ষা প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপ পর্যন্ত চলে গিয়েছে।
প্র: কিন্তু এত দ্রুত ‘হিউম্যান ট্রায়াল’-এ চলে যাওয়া, এত তাড়াহুড়ো করাটা বড্ড বেশি ঝুঁকির হয়ে যাচ্ছে না? অনেকে তো প্রতিষেধক বাজারে আনার দিনক্ষণও আগাম বলে দিচ্ছেন। এ যেন একটা ইঁদুর-দৌড়…
উ: হুমম। কিন্তু এ ভাবে আগে থেকে দিনক্ষণ বলে প্রতিষেধক বাজারে আনা যায় না। কারণ, প্রতিষেধকের কার্যকারিতা ও সেটা কতটা সুরক্ষিত, বুঝতে কয়েক বছর তো লাগেই। তার আগেও অবশ্য অনেকে প্রতিষেধক তৈরি করতে পারে। কিন্তু ওই যে বললাম, সেটা কতটা কার্যকরী ও সুরক্ষিত, জানতে গেলে সময়ের প্রয়োজন। তবে যে ভাবে সারা বিশ্বের বিজ্ঞানীরা এ নিয়ে কাজ করছেন, আগামী বছরের শুরুর দিকে কিছু জানা যাবে বলে আশা করছি। তবে সব ক্ষেত্রেই প্রতিষেধক পরীক্ষার সমস্ত ধাপ ঠিকঠাক ভাবে মানা প্রয়োজন। সেখানে কোনও ফাঁক রাখলে চলবে না। প্রতিষেধক সংক্রান্ত গবেষণার কোনও ধাপে যদি সামান্যতমও অসুবিধে হয়, তা বন্ধ করে দিতে হবে। তার বিকল্প ভাবতে হবে। তবে আমার নিজস্ব ধারণা, প্রথম দফায় তাড়াহুড়োর মধ্যে প্রতিষেধক বাজারে এলেও পরবর্তী কালে সার্স-কোভ-২ নিয়ে যত গবেষণা হবে, তত উন্নত মানের এবং কার্যকরী প্রতিষেধক পাওয়া সম্ভব হবে।
নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী পিটার সি ডোয়ার্টি।
প্র: বর্তমানে বিশ্বের উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থাও অসহায় সার্স-কোভ-২-এর সামনে। যে কারণে অনেকেই বিজ্ঞান আদতে কতটা এগিয়েছে, সে প্রশ্নও তুলে দিয়েছেন।
উ: প্রতিষেধক বা ওষুধ, যে কোনও আবিষ্কারের ক্ষেত্রেই সময় ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। সেখানে বিজ্ঞানের অগ্রগতি নিয়ে প্রশ্ন তোলাটা যুক্তিহীন। ভাইরাসজনিত রোগ নিয়ে আগের তুলনায় আমরা এখন অনেক কিছুই জানি। কিন্তু তার পরও যেমন ধরুন, ইনফ্লুয়েঞ্জা বা এইচআইভি নিয়ে এত বছর ধরে কাজ করার পরেও এমন অনেক নতুন জিনিস গবেষণায় উঠে আসে, তাতে বিস্মিত হতে হয়। সেখানে সার্স-কোভ-২ একদম নতুন এবং অনেক বেশি জটিল (কমপ্লেক্স) চরিত্রের ভাইরাস। এই ভাইরাসকে বুঝতে গেলে সময়ের প্রয়োজন।
প্র: কিন্তু করোনাভাইরাস আমাদের কাছে একদম অজানা, তা তো নয়। এর আগে সার্স, মার্স— দুটি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হয়েছিল। তার পরেও কেন এতটা দিশেহারা অবস্থা আমাদের?
উ: কারণ, সার্স ও মার্সের তুলনায় সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের সংক্রমণের অস্বাভাবিক ক্ষমতা। আমরা কাজ করতে গিয়ে দেখেছি, ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস (এ) ও সার্স-কোভ-২ ভাইরাস, এই দুটোরই ‘রিপ্রোডাকটিভ নাম্বার’ (অর্থাৎ এক জন আক্রান্তের থেকে সম্ভাব্য কত জন আক্রান্ত হতে পারেন) হল ২.৫। কিন্তু মিসেলস-এর ‘রিপ্রোডাকটিভ নাম্বার’ ১২ বা তারও বেশি। তবে তার পরেও সার্স-কোভ-২ ভাইরাস কেন এতটা সংক্রামক, সেটা নিয়ে গবেষণা চলছে। গবেষণায় যে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে তা হল, এই ভাইরাসের একটি ‘স্ট্রেন’ প্রাণঘাতী না হলেও তার সংক্রমণের ক্ষমতা অনেক বেশি। আর সেটাই যাবতীয় সমস্যার কারণ।
প্র: সার্স ২৮টি ও মার্স ২৭টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল। কিন্তু তার পরেও কোনওটির ক্ষেত্রেই এখনও কোনও প্রতিষেধক পাওয়া যায়নি। এর কারণটা কী? গবেষণায় ফাঁক থাকা, না কি সেই সময়ে বিষয়টিকে যথেষ্ট গুরুত্ব না দেওয়া?
উ: এ ক্ষেত্রে আগের দুটি সংক্রমণের থেকে বর্তমান সংক্রমণের ক্ষমতার পার্থক্যের কথাই বলব। সার্সের ক্ষেত্রে প্রতিষেধক তৈরির গবেষণা ‘মাঙ্কি ট্রায়াল’ পর্যন্ত পৌঁছেছিল বটে, কিন্তু তার পর আর তা হয়নি। কারণ, সার্স বা মার্স কোনওটাই এমন সর্বব্যাপী হয়ে ছড়িয়ে পড়েনি। তারা একটা নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। ফলে গুরুত্বের দিক থেকে পরিস্থিতি একদমই আলাদা। দ্বিতীয়ত, কম সংক্রমণের ক্ষেত্রে প্রতিষেধক তৈরির গবেষণা সচরাচর করা হয় না, যা আগের দুটির ক্ষেত্রে হয়েছিল।
প্র: তা হলে প্রতিষেধক বা ওষুধ না পাওয়া পর্যন্ত শরীরের নিজস্ব প্রতিরোধ ক্ষমতাই মূল ভরসা?
উ: শুধু কোভিড-১৯ কেন, সমস্ত রোগের ক্ষেত্রে এটাই মূল কথা। এ ক্ষেত্রে একটা কথা স্পষ্ট করে বলব। শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা ও সংক্রমণের বিষয়টিকে সমস্ত কিছুর থেকে পৃথক করে দেখা উচিত নয়। সামাজিক শ্রেণিবিন্যাস, দরিদ্র মানুষের সংখ্যা, আক্রান্তকে পৃথক করে রাখার মতো পর্যাপ্ত জায়গা জনসংখ্যার সংখ্যাগরিষ্ঠের রয়েছে কি না, এই সব বিষয়ের সঙ্গে সংক্রমণের হার ওতপ্রোত জড়িত। যেমন আমেরিকার কথাই ধরুন। আর্থিক, সামাজিক ভাবে দুর্বলদেরই কাজে বেরোতে হচ্ছে। তাঁদের সংক্রমণ ও মৃত্যুর হারও সে কারণে বেশি। আসলে আমরা ভুলে যাই যে, শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বিচ্ছিন্ন কোনও বিষয় নয়, এটা পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতির সঙ্গে ওতপ্রোত জড়িত।
প্র: আগের তুলনায় সেই পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতির কতটা বদল হয়েছে বলে মনে হয়?
উ: এখন জুনোটিক রোগের সংখ্যা অনেক বেশি। অর্থাৎ, প্রাণীদের থেকে অনেক বেশি সংখ্যক রোগ বর্তমানে মানবশরীরে ছড়িয়ে পড়ছে। গত ২০ বছরের সময়সীমার মধ্যেই সার্স-কোভ-২ নিয়ে মোট তিন বার করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হয়েছে, যা প্রাণীদের থেকে এসেছে। বাদুড়ের মধ্যে আরও করোনাভাইরাস আছে বলে গবেষণায় উঠে এসেছে।
প্র: জ়ুনোটিক রোগ নিয়ে আপনার কথার সূত্র ধরেই বলি, গবেষণা বলছে, স্তন্যপায়ী প্রাণী ও পাখিদের মধ্যে প্রায় সাড়ে ১০ লক্ষ ভাইরাস প্রজাতি রয়েছে। যার মধ্যে সাত লক্ষ ভাইরাস যে কোনও সময়ে অতিমারি ছড়াতে সক্ষম।
উ: ঠিকই। আর এটাই খুব বিপজ্জনক। সমস্যার বিষয়টি হল, প্রতিষেধক বা ওষুধ তৈরিতে আমরা যতটা সময় ব্যয় করছি, ততটা আমরা প্রাণিজগৎ সংক্রান্ত গবেষণায় করছি না। এ রকম হলে গবেষণা অসম্পূর্ণ থেকে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। প্রাণীদের থেকে আরও কী কী রোগ ছড়াতে পারে, তা নিয়ে সুনির্দিষ্ট গবেষণা দরকার। না হলে ভবিষ্যতেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে।
প্র: একটু আলাদা প্রসঙ্গে আসি। একটা অভিযোগ উঠছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা উল্লিখিত আক্রান্তের সংখ্যার তুলনায় বাস্তবের সংখ্যা আরও অনেক বেশি। কারণ, অনেক দেশই সঠিক তথ্য দিচ্ছে না। আবার অনেক জায়গায় পর্যাপ্ত পরীক্ষাও হচ্ছে না বলে অনেকে অভিযোগ করছেন।
উ: হ্যাঁ। এটা আমারও মনে হয়। যত ক্ষণ না বৃহত্তর আঙ্গিকে সেরোলজিক্যাল পরীক্ষা (যে পরীক্ষার মাধ্যমে শরীরে নির্দিষ্ট প্যাথোজেনের উপস্থিতি বোঝা যায়) করা হবে, তত ক্ষণ আক্রান্তের আসল সংখ্যা জানা যাবে না। কারণ, কোভিড-১৯’এর ক্ষেত্রে উপসর্গহীন রোগীদের সংখ্যা একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ফলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আক্রান্তের যে সংখ্যা বলছে, তার থেকে প্রকৃত আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৫-১০ গুণ বেশি হলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই! এখনও পর্যন্ত সংক্রমণ হারের তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, এই মুহূর্তে বিশ্বের ৯৮ শতাংশ মানুষেরই সার্স-কোভ-২ ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাঁরা ভীষণ ভাবে ‘ভালনারেবল’! আর বিষয়টা এমন নয় যে কালই সার্স-কোভ-২ চলে গেল। ফলে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কাও থেকে যাচ্ছে।
প্র: স্প্যানিশ ফ্লু-র শতবর্ষে, অর্থাৎ ২০১৮ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নিজেদের রিপোর্টে জানিয়েছিল, ২০১১-১৭ সালের মধ্যে বিশ্বের ১৭২টি দেশে মোট ১৩০৭ বার মহামারির ঘটনা ঘটেছে। ভবিষ্যতেও ঘটবে। কোভিড-১৯’এর পুনরাবৃত্তি ঠেকানো কী ভাবে সম্ভব বলে আপনার মনে হয়?
উ: ভবিষ্যতে আবার কোভিড-১৯ হতেই পারে। সে ক্ষেত্রে সংক্রমণ ঠেকাতে গেলে একটা সুনির্দিষ্ট আন্তর্জাতিক নীতি থাকা প্রয়োজন। কোভিড-১৯ থেকে আমাদের সেই শিক্ষাই নিতে হবে। সংক্রমণ আটকাতে অন্তর্দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিমানযাত্রার ক্ষেত্রে প্রয়োজনভিত্তিক বিধিনিষেধ এবং বিমানবন্দরের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় আরও সতর্ক হতে হবে। বন্দর এলাকার ক্ষেত্রেও এই নীতি প্রযোজ্য। দুটি করোনাভাইরাসের সংক্রমণের পরেও সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের সামনে সারা বিশ্বকে অসহায় লাগার প্রধান কারণই হল, সবাই এটাই ভেবেছিল, এটিও আগের দুটি সংক্রমণের মতো একটি নির্দিষ্ট অঞ্চল বা কয়েকটি দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। কিন্তু এখন ২১৩টি দেশে অতিমারি ছড়িয়ে পড়ার পরে বোঝা যাচ্ছে, ‘ওটা শুধু ওদের সমস্যা’— এই চিন্তা, এই নীতি থেকে বেরিয়ে আসা খুবই প্রয়োজন। কারণ, একটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে, ভাইরাস নিজে-নিজে কোথাও যেতে পারে না। এর যাতায়াতের জন্য ‘হোস্ট’-এর প্রয়োজন হয়। এক জন বিমানযাত্রীর মাধ্যমে একটি সংক্রমণ বর্তমানে মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এক মহাদেশ থেকে অন্য মহাদেশে ছড়িয়ে পড়তে পারে। ফলে বিশ্বের যে কোনও প্রান্তেই সংক্রমণের খবর পাওয়া মাত্র বিমানযাত্রা, জাহাজযাত্রা-সহ সমস্ত ক্ষেত্রেই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এ বিষয়ে একটি অভিন্ন নীতির প্রয়োজন কি না তা ভেবে দেখতে হবে বলে মনে করি। সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ, ‘এটা ওদের সমস্যা, আমাদের নয়’— এই নীতি যে চলবে না, সার্স-কোভ-২ তা বুঝিয়ে দিয়েছে। বরং এটাই মাথায় রাখতে হবে, ‘নো ওয়ান ইজ় সেফ আনটিল এভরিওয়ান ইজ় সেফ’। সকলে সুরক্ষিত না হওয়া পর্যন্ত কেউই সুরক্ষিত নন!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy