১৬০০ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তৈরি হয়। তার আট বছরের মধ্যেই ভারতের পশ্চিম উপকূল সুরাতে তারা প্রথম শিল্পের পত্তন করে এবং দশ বছরের মধ্যে বাণিজ্যিক কেন্দ্র গড়ে তোলে। এর পর তারা সে সময়ের মাদ্রাজ (১৬৩৯), বোম্বাই (১৬৬৮) এবং কলকাতায় (১৬৯০) তাদের ব্যবসার বিস্তার ঘটায়। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতে বণিক হয়ে এলেও তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল ভারতের খনিজ সম্পদ আহরণ। বিভিন্ন পর্যটকদের লেখা পড়ে তারা আগেই জেনেছিল ভারতের খনিজ সম্পদের বিপুল ভান্ডার সম্বন্ধে। খ্রিস্টজন্মের চারশো বছর আগে গ্রিক চিকিৎসক টিজ়িয়াস বিভিন্ন পর্যটকদের কাহিনি সম্বলিত বই ‘ইন্ডিকা’য় ভারতকে ‘হিরের স্বর্গরাজ্য’ বলে উল্লেখ করেছেন। ভূপর্যটক মার্কো পোলো থেকে তাভার্নিয়েরের লেখায় ভারতের মধ্যপ্রদেশ এবং অন্ধ্রপ্রদেশে হিরের খনিতে হাজার হাজার লোকের কাজ করার কথা উল্লেখ আছে। ভারতে লোহার খনি থেকে অতি উত্তম মানের লোহা নিষ্কাশনের পদ্ধতি ছ’হাজার বছর আগেই জানা ছিল। সোনার সন্ধানও ভারতে খুব প্রাচীন; পুরাণ এবং মহাকাব্যে সোনার অলঙ্কারের উল্লেখ আছে। রুপো, তামা, দস্তা, সিসা আবিষ্কারও খুব পুরনো। রাজস্থানের জাওয়ারে পাথর থেকে গলন পদ্ধতিতে দস্তা নিষ্কাশন করা হয়েছিল খ্রিস্টের জন্মের বারোশো বছর আগে। কয়লার ব্যবহার তো এ সবের আরও অনেক আগে থেকেই চলে আসছে।
ভারতের দুই উপকূলে থিতু হয়ে বসার পর কোম্পানি তাদের দেশ থেকে সামরিক ব্যক্তিদের সঙ্গে কিছু মেধাবী লোক, যেমন প্রকৃতিবিজ্ঞানী, ভূবিজ্ঞানী, প্রযুক্তিবিদ, চিকিৎসক বাছাই করে নানা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে এ দেশে পাঠাতে শুরু করে। স্পষ্ট নির্দেশ ছিল, যেখানে যা নজরে আসবে সব সবিস্তারে লিখে, ছবি এঁকে তাদের পাঠাতে, বিশেষ করে পাথর ও খনিজ পদার্থ। শুধু তা-ই নয়, বহুভাষী এবং বিচিত্র সংস্কৃতিসম্পন্ন আঞ্চলিক গোষ্ঠীর ভারত সম্পর্কেও তাদের সম্যক ধারণা ছিল, তাই যথাসম্ভব স্থানীয় ভাষা শেখা এবং সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় করাটাও ছিল তাদের কাজ। এ ভাবেই তারা ক্রমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে।

প্রতিষ্ঠাতা টমাস ওল্ডহ্যাম। —ফাইল চিত্র।
ভারতের খনিজের খবর ব্রিটিশ সরকারের কাছে থাকলেও এ বিষয়ে সুসংবদ্ধ কোনও দলিল ছিল না। সে কারণে তারা বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের জন্য ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে দায়িত্ব দেয়। ইংল্যান্ডে প্রথমে অনিয়ন্ত্রিত খনিজ নমুনা সংগ্রহ এবং খনি অঞ্চলগুলোকে চিহ্নিত করা, পরে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে নমুনা পরীক্ষা, পাথরের চরিত্র পাঠ, ভূতাত্ত্বিক মানচিত্র গঠন করে অনুরূপ এলাকায় সমচরিত্রের পাথরে খনিজ পদার্থের অনুসন্ধানের ফলে একটা নিয়ন্ত্রণ আসে। সেই অভিজ্ঞতা তারা ভারতে খনিজ অনুসন্ধানে প্রয়োগ করে।
উনিশ শতকের শুরুতেই ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বুঝেছিল, ভারতে কয়লার চাহিদা প্রচণ্ড। তখন ব্রিটেন থেকে কয়লা আসত জাহাজে। তাই যে সব ভূবিজ্ঞানীকে এ দেশে পাঠানো হয়েছিল, তাঁরা এসেই কয়লার খোঁজে দেশের নানা প্রান্তে বেরিয়ে পড়তেন। অনুসন্ধানের প্রধান কার্যালয় ছিল কলকাতায়। নদী ও সমুদ্রপথে স্টিমার-জাহাজ ও স্থলপথে রেল চলাচল শুরু করার জন্য প্রধানত কয়লা ব্যবহৃত হত। পূর্ব ভারতে বেশ কয়েকটি উচ্চমানের কয়লাখনির খোঁজ পাওয়া যায়। কয়লা অনুসন্ধান ছাড়াও রেল ও সড়কপথ এবং টেলিফোন লাইন বসানোর জন্যও ভূবিজ্ঞানীদের কাজে লাগানো হয়। তাঁরা ভারতে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে এখান থেকে জাহাজে করে কয়লা দেশে নিয়ে যেতেন।
১৮৪৬ সালে উইলিয়ামস নামে এক ব্রিটিশ ভূবিজ্ঞানী কলকাতায় এসে রানিগঞ্জ ও কাইমুর অঞ্চলে কয়লা অনুসন্ধানে দু’বছর কাটান এবং ১৮৪৮ সালের ১৫ নভেম্বর হাজারিবাগে প্রচণ্ড জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এর আগে ১৮২৩ সালে আর এক চিকিৎসক-ভূবিজ্ঞানী হেনরি ওয়েস্টলি ভয়েসি দক্ষিণ ভারতে কাজ করার সময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায়, তাঁকে পালকিতে করে হায়দরাবাদ থেকে কলকাতা নিয়ে আসার সময়, পথেই তাঁর মৃত্যু হয়। ভয়েসি ভারতে প্রথম ত্রিকোণমিতি সমীক্ষার সাহায্যে কয়লা অনুসন্ধান চালিয়েছিলেন।

সংস্থার প্রথম ভারতীয় কর্ণধার এম এস কৃষ্ণন —ফাইল চিত্র।
উনিশ শতকের প্রথমার্ধে বেশ কয়েক জন ব্রিটিশ ভূবিজ্ঞানী ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে ও হিমালয়ে প্রশংসনীয় কাজ করেন। ১৮৫১ সালে ব্রিটিশ জিয়োলজিক্যাল সার্ভে টমাস ওল্ডহ্যাম নামে এক আইরিশ ভূবিজ্ঞানী এবং ট্রিনিটি কলেজের অধ্যাপককে জিয়োলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া-র (জিএসআই) প্রধান করে ভারতে পাঠায়। দুটো বাক্স নিয়ে তিনি ৪ মার্চ কলকাতা আসেন এবং ৫ মার্চ থেকে জিয়োলজিক্যাল সার্ভের প্রধান হয়ে কাজ শুরু করেন। সেই হিসাব মতো এই বছর জিয়োলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া ১৭৫ বছরে পদার্পণ করল।
ওল্ডহ্যাম প্রথম চার বছর বনে-জঙ্গলে ঘুরে অনুসন্ধানের কাজ করার পর ১৮৫৫ সালে ১ নং হেস্টিংস স্ট্রিটে প্রথম জিএসআই অফিস থেকে কাজ পরিচালনা করেন। সেই সময় আরও কয়েক জন প্রতিষ্ঠিত ভূবিজ্ঞানী ভারতে আসেন এবং পুরোমাত্রায় অনুসন্ধানের কাজ শুরু হয়ে যায়। তখন কাজের পরিধি ছিল আফগানিস্তান থেকে বর্মা পর্যন্ত। শীত পড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাতির পিঠে তাঁবু-সহ অন্যান্য মালপত্র চাপিয়ে ঘোড়ায় চেপে এঁরা বেরিয়ে পড়তেন দেশের নানা প্রান্তে। হাতি ও ঘোড়ার জন্য হাতিশালা, ঘোড়ার আস্তাবল ছিল। মরু এলাকায় উট আর জলপথে নৌকা বাহন হিসেবে ব্যবহার করা হত। শুঁড় দিয়ে পাথর ভেঙে তার নমুনা পিঠে বসা ভূবিজ্ঞানীকে তুলে দেওয়ার মতো প্রশিক্ষণ দেওয়া হত হাতিদের। অনেক বিপদের মধ্যে তাঁদের কাজ করতে হত, আর জীবনেরও ঝুঁকি ছিল। সঙ্গে ছিল ম্যালেরিয়া কলেরা সমেত নানা অসুখ, যার প্রকোপেও অনেক ভূবিজ্ঞানীরও প্রাণ যায়। সাপের উপদ্রবও কম ছিল না। কর্মক্ষেত্রে বিজ্ঞানীদের গড় আয়ু ছিল মাত্র ন’বছর। এমন অবস্থা হয়েছিল যে, বিমা কোম্পানি ভূবিজ্ঞানীদের জীবন বিমা করতে অস্বীকার করত।
প্রথম দিকে প্রাপ্ত নমুনা এশিয়াটিক সোসাইটিতে ইকনমিক জিয়োলজির মিউজ়িয়মে রাখা হত, এবং সেখানেই ছিল পরীক্ষাগার। পরে ওল্ডহ্যামের তৎপরতায় এই প্রতিষ্ঠানের দ্রুত উন্নতি হয়। ১৮৫৮-র অগস্টে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ব্রিটিশ রাজের অধীনে আসে এবং ভাইসরয় লর্ড ক্যানিং, ওল্ডহ্যামকে জিএসআই-এর সর্বময় অধিকর্তা নিযুক্ত করেন। গবেষণার জন্য মিউজ়িয়মে বিদেশ থেকে উল্কাপিণ্ড, খনিজ পদার্থ ও জীবাশ্মের নমুনা আনা হয়। ওল্ডহ্যামের উদ্যোগে চৌরঙ্গি রোডে ইন্ডিয়ান মিউজ়িয়ম তৈরি হয় ১৮৭৪ সালে, এবং ১৮৭৭ সালের ১ জানুয়ারি জিএসআই-এর অফিস ও এশিয়াটিক সোসাইটিতে রাখা সব নমুনা সেখানে স্থানান্তরিত হয়। সেই বছরই ভারত ও সংলগ্ন রাষ্ট্রগুলোর ভূতাত্ত্বিক মানচিত্র প্রকাশিত হয়।
ভূপৃষ্ঠের গঠন, পাথর এবং জীবাশ্মের ছবি আঁকার পাশে পাশে কাজের ফাঁকে মন উৎফুল্ল রাখতে ভূবিজ্ঞানীরা তাঁবু ও ব্যবহৃত জীবজন্তু, স্থানীয় লোক ও তাদের পোশাক গয়না পাগড়ি ইত্যাদির ছবিও আঁকতেন। পাথর ভেঙে কয়লা ও লোহার আকর সংগ্রহের ছবিও এঁকেছেন। শিকারেও তাঁরা ছিলেন পটু। হিউগস নামে এক ভূবিজ্ঞানী একশোর বেশি বাঘ শিকার করেছেন বলে জানা যায়। অবশ্য শিকারের সময় তাঁর একটি চোখও নষ্ট হয়। তিনি এক সময় ঘোষণা করেছিলেন, ভালুকের খোঁজ দিলে দু’টাকা আর কয়লার সন্ধান দিলে এক টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। স্থানীয় লোকেদের সঙ্গে মিশে তাদের কাছ থেকে খনিজের খোঁজ নিতেন। ভূবিজ্ঞানীদের হিন্দুস্তানি ও স্থানীয় ভাষা জানা আবশ্যক ছিল, এবং লোকেদের থেকে নাম শুনে তার বিকৃত উচ্চারণ তাঁরা বলতেন ও লিখতেন। এর জন্যে স্থানীয় নামের বিকৃত উচ্চারণ ও বানান দেখা যেত মানচিত্রে ও লেখায়।
কয়লা প্রধান হলেও তামা, দস্তা, লোহা, অ্যালুমিনিয়াম, সিসা ইত্যাদির খোঁজও চলত। আর সঙ্গে চলত জীবাশ্ম পরীক্ষা ও সংগ্রহ। খনিজ অনুসন্ধানের সঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় ভূকম্পন পাঠ এবং ইতিহাসে লিপিবদ্ধ ভূকম্পনের খবর জেনে প্রথম ভূকম্পন মানচিত্র ও ক্যাটালগ প্রকাশ হয় ১৮৮৩ সালে। ১৮৯০ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজে ভূবিজ্ঞান পড়ানো শুরু হয়। সেই বছরই প্রথম খনিজ তেলের সন্ধান পাওয়া যায় বালুচিস্তানে। এর সাত বছর পর ২৭ চৌরঙ্গি রোডে জিএসআই নিজের অফিস পায় এবং স্থানান্তরিত হয়। আজও এই ঠিকানাই সর্বভারতীয় প্রধান কার্যালয়। রাম সিংহ প্রথম ভারতীয় শিক্ষানবিশ হয়ে যোগ দেন ১৮৭৩-এ, এবং সাত বছর পর প্রমথনাথ বসু হলেন প্রথম ভারতীয় অফিসার। তাঁর লৌহ খনিজ আবিষ্কার পরবর্তী কালে টাটা স্টিল প্ল্যান্টের জন্ম দেয়।
প্রথম অর্ধশতক ভারতকে বিশ্বের অন্যতম ভূতাত্ত্বিক ক্ষেত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন প্রখ্যাত ইউরোপিয়ান ভূবিজ্ঞানীরা। পরের শতকের অর্ধভাগ সেই কর্মযজ্ঞ অব্যাহত থাকে। তখনই শুরু হয় বিদেশি ভূবিজ্ঞানীদের সঙ্গে ভারতীয় ভূবিজ্ঞানীদের মিলেমিশে কাজ। তৈরি হয় গবেষণার জন্য একাধিক জায়গায় নানা পরীক্ষাগার, পাঠাগার।
সিপাহি বিদ্রোহের সময় হিমালয় ছাড়া বাকি অঞ্চলে কিছু বাধা আসে, কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ আতঙ্কে ফেলে দেয় কলকাতার অফিসকে। বহু বই ও গবেষণা সামগ্রী কলকাতা থেকে সরিয়ে ফেলা হয় বিভিন্ন রাজ্যে। সেখানে তৈরি হয় নতুন কার্যালয়।
ভারতে আধুনিক সভ্যতার অগ্রগতির জন্য জিএসআই-এর ভূমিকা অনস্বীকার্য, কারণ অগ্রগতির জন্য প্রয়োজন ধাতু ও খনিজ দ্রব্য। প্রাকৃতিক গ্যাস, তেল, ভূগর্ভস্থ জল, ভূতাত্ত্বিক সমীক্ষা এ সবের খোঁজ দেয়। খনিজ উত্তোলনের জন্য জন্ম হয় একাধিক সংস্থার। ভূমিকম্প, ধস, অগ্ন্যুৎপাত, হিমবাহ, এ সবের পাঠও শুরু হয়। এ ছাড়াও পৃথিবী বিবর্তনের ইতিহাস পাঠে ভারতের ভূতত্ত্ব ও তার ভূগাঠনিক বিবর্তন জানা যায়।
স্বাধীনতার পর ভারতে কাজের সীমাবদ্ধতা ভূ-রাজনৈতিক সীমানার মধ্যেই থাকে। এম এস কৃষ্ণন সংস্থার প্রথম ভারতীয় কর্ণধার হন ১৮৫১ সালে। দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও প্রয়োজনীয় শিল্পের চাহিদা মেটাতে জিএসআই নিরবচ্ছিন্ন কাজ করে যাচ্ছে। পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা অনুসারে নির্দিষ্ট হয় তার বার্ষিক পরিকল্পনা। কাজের গতির পাশাপাশি বাড়ে কর্মক্ষেত্রের প্রসার ও পরিধি। জনকল্যাণমূলক একাধিক পরিকল্পনা নেওয়া হয়, যার মধ্যে ছিল নানা ভূ-পরিবেশগত কাজও।
গ্রামোন্নয়ন, শহর ও সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকা এবং খনি অঞ্চলের ভূ-পরিবেশগত উন্নয়ন নিয়ে গবেষণা বহমান। অ্যান্টার্কটিক অভিযান, আর্কটিক এবং সমুদ্র বিষয়ক গবেষণা, মাইক্রোসিজ়মিক নিয়ে বিস্তারিত সমীক্ষার কাজ চলছে। বর্তমান শতকের ডিজিটাল পদ্ধতি অবলম্বন করে শুরু হয়েছে একাধিক আধুনিক প্রকল্প, সীমানাহীন ভূতাত্ত্বিক ও খনিজ মানচিত্র যার অন্যতম। দেশকে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে স্বনির্ভর করতে ও জনসাধারণের কল্যাণমূলক কাজে জিএসআই-এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আজও অমলিন।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)