স্মরণে: ফেদেরিকো গার্সিয়া লোরকা (ছবি: উইকিমিডিয়া কমনস); গোবিন্দ নিহালনির ‘রুক্মাবতী কী হাভেলি’ ছবির দৃশ্য। ডান দিকে, নির্ণয় নাট্যদলের নাটক ‘ইয়েরমা’-র দৃশ্য (ছবি সৌজন্য: অংশুমান ভৌমিক)
তাই বলেছিলেন বুঝি? কে জানে! মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে ‘আমি মরব না’ বলতে সাহসের থেকেও আরও বেশি কিছু লাগে: কবি, নাট্যকার বলেই, শিল্পী বলেই যে তা থাকবে এক জন মানুষের, তার কী মানে আছে! ১৯৩৬-এর স্পেনে একনায়ক ফ্রান্সিসকে ফ্রাঙ্কোর ‘ডেথ স্কোয়াড’-এর হাতে তাঁর মৃত্যুটুকু ঐতিহাসিক সত্য, মৃত্যু-উত্তর তাঁর কিংবদন্তিপ্রতিম উচ্চতা লাভ আরওই সত্য, কিন্তু স্পেনের সবচেয়ে বিখ্যাত নাট্যকার-কবি ফেদেরিকো গার্সিয়া লোরকার মৃত্যুমুহূর্তটি ঠিক কেমন ছিল, তা জানার উপায় নেই। হিটলারের নাৎসি বাহিনী তাদের খুন-জখম-হত্যার বিশদ বিবরণী লিখে রাখা শুরু করবে লোরকা-হত্যার ক’বছরের মধ্যেই, এ দিকে লোরকার মৃতদেহটুকু পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। গ্রানাদার বাইরে কোন পাহাড়ি জায়গায় পুঁতে ফেলা হয়েছিল তাঁর শরীর, অজানা। প্রত্নতাত্ত্বিক ও বিজ্ঞানীরা একত্রে খোঁজাখুঁজি করেছেন বিস্তর, এই সে দিনও, ২০০৯ সালেও— লাভ হয়নি।
আমাদের তাই সান্ত্বনা পেতে হয় লোরকাভূম থেকে বহু দূরে, এই বাংলার আর এক কবির কলমে। সেই কবিতায় খসখসে সবুজ উর্দি-পরা, জিভ-কাটা সেপাই রাইফেল হাতে কবিকে টানতে টানতে নিয়ে যায় ফসলকাটা মাঠের বধ্যভূমিতে, যেখানে হাজার হাজার নারীপুরুষ ভিড় করে দেখতে এসেছে ‘কবির মৃত্যু’: “কেউ এসেছে বহু দূরের অড়হর ক্ষেত থেকে পায়ে হেঁটে/ কেউ এসেছে পাটকলে ছুটির বাঁশী আগে বাজিয়ে/ কেউ এসেছে ঘড়ির দোকানে ঝাঁপ ফেলে/ কেউ এসেছে ক্যামেরায় নতুন ফিল্ম ভরে/ কেউ এসেছে অন্ধের লাঠি ছুঁয়ে ছুঁয়ে/ জননী শিশুকে বাড়িতে রেখে আসেননি/ যুবক এনেছে তার যুবতীকে/ বৃদ্ধ ছুঁয়ে আছে বৃদ্ধতরের কাঁধ...” বন্দি কবি আর কিছু বলেন না স্রেফ ওঁর হাতের শৃঙ্খল খুলে দেওয়া ছাড়া, বৈজ্ঞানিক কসাই আদার ব্যাপারি এমএলএ ভিখিরি বাদামওয়ালা চাষি পকেটমার শিক্ষিকা জনমজুরে ভরা জনতার ভিড় ছাড়িয়ে তাঁর চোখ চলে যায় অরণ্যের দিকে, যেখানে ছেলেবেলার বাতাবিলেবু গাছের সঙ্গে মিশে যায় হেমন্তদিনের শেষ আলো, আর ‘অস্ফুট হৃষ্টতায়’ নড়ে ওঠে তাঁর ঠোঁট: “বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক! মিলিত মানুষ ও/ প্রত্যেক মানুষের নিজস্ব বিপ্লব।” প্রথম গুলিটা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়, দ্বিতীয়তে তাঁর বুক ফুটো হয়ে যায়, একে একে কণ্ঠ, কপাল, বুকের উপরে রাখা ডান হাত ছিন্নভিন্ন, সে হাতের দিকে তাকিয়ে তিনি শান্ত ভাবে বলেন, “বলেছিলুম কিনা, আমার হাত শিকলে বাঁধা থাকবে না!”
এমনটা যে হয়নি, কবির মৃত্যু না দেখেও, সেই সময়ে না থেকেও জানি আমরা। গ্রানাদার যে খামারবাড়ি হয়ে উঠেছিল লোরকা পরিবারের নিয়মিত গ্রীষ্মাবাস, স্পেনে গণতন্ত্রী রিপাবলিকান আর দক্ষিণপন্থী জাতীয়তাবাদী ফ্রাঙ্কোর দলবলের মধ্যে ঘনিয়ে ওঠা গৃহযুদ্ধ থেকে ‘বাঁচতে’ মাদ্রিদ ছেড়ে সেই বাড়িতেই চলে আসেন লোরকা। বাঁচতে পারেননি, এক পড়শির বাড়িতে আশ্রয় নেওয়ার পরেও না। কারা তাঁকে ধরে নিয়ে যেতে এসেছিল, লেখা আছে ইতিহাসে। কেউকেটা কেউ নয়, বরং পাড়ার চেনা লোক সব, এমনকি আত্মীয়ও কেউ কেউ। এমনই তো হয় কালবেলায়। যে লোকটা আমার মতের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না, যার প্রতি আমার অন্য ব্যক্তিগত ঘেন্নাও দগদগে, ধরো তাকে। মারো, শেষ করে ফেলো। আজও তো চার দিকে হয়ে চলেছে একই ঘটনা। ‘ট্র্যাজেডি’ আর ‘পেথস’ এক জিনিস নয়, লোরকার মৃত্যুর পূর্বাপর খতিয়ে দেখলে তা ‘ট্র্যাজিক’ নয়, ‘প্যাথেটিক’ বলেই মনে হয়। এ প্রশ্নও জাগে, যে মানুষটা আগাম সঙ্কেত পাচ্ছিলেন যে তাঁর স্বদেশে গণতন্ত্রী আর ফ্যাসিস্টদের গৃহযুদ্ধে দ্বিতীয়টিরই ছায়া ঘনাচ্ছে তাঁর চার দিকে, তখন তিনি অন্য কোথাও চলে গেলেন না কেন? অল্প কিছু দিনের বসবাসেই যে নিউ ইয়র্কের হারলেম তাঁর মনকে আরাম দিয়েছিল, সেই আমেরিকায় তো চলে যেতে পারতেন তিনি! কিংবা তাঁর বন্ধুু সালভাদর দালির প্রাণের শহর প্যারিসে, বা অন্তত আর্জেন্টিনায়, কিউবায়— যেখানে তাঁর নাটক আর কবিতার কদর হয়েছিল খুব, যেখানে পাওয়া যেত সমমন, সহমানসিকতা?
হতে পারে, সময়টা যে এত তাড়াতাড়ি ঘোরালো হয়ে উঠবে, তা তাঁর কল্পনায় আসেনি। হতে পারে দ্বিতীয় স্প্যানিশ রিপাবলিকে তাঁর বিশ্বাস তাঁকে বুঝিয়েছিল, গণতন্ত্র ফ্যাসিজ়মকে রুখতে পারবে। এগুলো সব বাস্তববাদী অনুমান। আর রোম্যান্টিক অনুমান বলে, তাঁর প্রাণের স্পেন, গ্রানাদা, আন্দালুসিয়া ছেড়ে যেতে পারেননি তিনি। সাধ্য ছিল না যাওয়ার। এ যেন দেশভাগের সামনে পড়েও ভিটেমাটি ছেড়ে যেতে না পারার মতো। লক্ষ লক্ষ মানুষের কাঁটাতার পেরোনো যেমন সত্য, তেমনই অশেষ দুঃখ এমনকি প্রাণসংশয় সয়েও কিছু মানুষের স্বভূমে থেকে যাওয়াটাও সত্য। ইতিহাস শরণার্থীদের যন্ত্রণার কথা যত লেখে, মাটি কামড়ে পড়ে থাকা মানুষগুলোর কথা বলে না তত। ফেদেরিকো গার্সিয়া লোরকার ক্ষেত্রে অবশ্য বিস্মৃতির অভিশাপ খাটেনি। স্বদেশে থেকে যাওয়া, এবং দক্ষিণপন্থী জাতীয়তাবাদীদের হাতে মৃত্যু তাঁকে করে তুলেছে একই সঙ্গে কিংবদন্তি ও আইকন।
জাত লেখকের প্রমাণ দেশ-কাল নির্বিশেষে তাঁর সৃষ্টির ছড়িয়ে পড়া, ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতির মাটিতে তার ফুটে ওঠা। যে কারণে শেক্সপিয়র বা ব্রেশট অভিনীত হয় আজও, কোথায় কে আজও গেয়ে ওঠে উপনিষদ বা ‘মৈমনসিংহ-গীতিকা’। সংস্কৃতি-সচেতন বাঙালি তথা ভারতীয় এ ভাবেই আপন করে নিয়েছেন লোরকাকেও— থিয়েটারে, সিনেমায়। গোবিন্দ নিহালনির ‘তমস’, ‘অঙ্কুর’, ‘আক্রোশ’ নিয়ে যত আলোচনা হয়, তার সিকিভাগও হয় কি ১৯৯১-এর ছবি ‘রুক্মাবতী কী হাভেলি’ নিয়ে? ইউটিউবে আছে গোটা ছবিটা, দেখেছি ক’জন? দেখলেও মনে কি রেখেছি তার শিকড়— লোরকার লেখা ‘বের্নার্দা আলবার বাড়ি’ নাটকটা? গ্রামের এক বাড়িতে পাঁচ মেয়ে আর পরিচারিকা নিয়ে থাকে দোর্দণ্ডপ্রতাপ, রক্ষণশীল এক মা। মেয়েরা সোমত্ত হয়েছে, তবু বিয়ে দেয় না। কড়া শাসনে রাখে, স্বামীর মৃত্যুর পর কয়েক বছরের বাধ্যতামূলক শোকপালন চাপিয়ে দেয় তাদের উপর। এ বাড়িতে তাঁর কথাই শেষ কথা। সত্যিই কি তা-ই? ছোট মেয়ে বিদ্রোহ করে, প্রেম করাই তার বিদ্রোহ। দমন ও অবদমনের, শাসন ও দ্রোহের টানাপড়েনে সম্ভাবনাময় জীবনের কোন পরিণতি হয়, তুলে ধরে এ নাটক। গোবিন্দ নিহালনির ছবিতে স্পেন হয়ে ওঠে আমাদের রাজস্থান, মরুগ্রামের পাথুরে বাড়ির চার দেওয়ালের মধ্যে এনে ফেলেন তিনি লোরকার নাটককে। বের্নার্দা আলবা হয়ে ওঠে রুক্মাবতী, পাঁচ বোন আঙ্গুস্তিয়াস-মাগদালেনা-মার্তিরিও-আমেলিয়া-আদেলাকে সাবিত্রী-দময়ন্তী-মুমল-চন্দ্রা-পদ্মা (দু’ক্ষেত্রেই নামের নিহিতার্থ লক্ষণীয়) বলে ভাবতে অসুবিধে হয় না বিন্দুমাত্র। উত্তরা বাওকর, ইলা অরুণ, পল্লবী জোশী, জ্যোতি সুভাষদের অভিনয় দেখতে দেখতে মনে হয় কোথায় লোরকার স্পেন, এ তো আমার, আমাদের দেশের গল্প। আজও। পরিচালকের এক সাক্ষাৎকারেও পড়ছিলাম, স্পেনের এক কলেজে এই ছবিটি দেখানোর পর সেখানকার পড়ুয়াদের মনে হয়েছিল ‘রুক্মাবতী কী হাভেলি’ আদ্যন্ত ভারতের, ভারতীয় ছবি একটি।
এই যে সাত সাগরপারের এক সাহিত্যকৃতিকে নিজের দেশের মাটি আর মানুষের রঙে গন্ধে ঘামে অনায়াসে রূপ দেওয়া যাচ্ছে, সেটাই তো প্রমাণ— মানুষের জীবনের তলতলে নির্যাসটুকু আসলে দেশে দেশে একই। শাসকের শোষণ, শোষিতের জীবনসংগ্রাম, ব্যক্তিমানুষের একাকিত্ব, অসহায়তা বা উত্তরণ নানা ভাষায়, কিন্তু একই ভাবে কথা বলে। সে কারণেই কি বাঙালি থিয়েটারেও লোরকা এত প্রিয়, এত চর্চিত? লোরকা অনেক নাটক লিখেছেন, কিন্তু যে তিনটি নাটকের জন্য তাঁর পরিচিতি বিশ্বময়, সেই ‘রক্তের বিবাহ’, ‘ইয়েরমা’ আর ‘বের্নার্দা আলবার বাড়ি’ বাংলা ও নাট্য-অনুবাদকদের হাত ধরে পৌঁছেছে নাট্যপ্রেমী সাধারণ্যেও। অরুণ মুখোপাধ্যায় থেকে নীলকণ্ঠ সেনগুপ্ত অনুবাদ/রূপান্তর করেছেন লোরকার নাটক, কোভিড-অতিমারি ধেয়ে আসার আগে এই সে দিনও কলকাতায় অভিনীত হয়েছে ‘ইয়েরমা’, সঙ্গীতা পালের নির্দেশনা ও অভিনয়ে, ‘নির্ণয়’ নাট্যগোষ্ঠীর প্রযোজনা। এক বন্ধ্যা নারীর দুঃখকথা ‘ইয়েরমা’ (শব্দটার মানেও তা-ই, বন্ধ্যা)— এক গ্রাম্য চাষির বৌ সে, এমন এক মানুষের ঘরনি যে খেতের ফসল ভালবাসে, গৃহের নয়। ইয়েরমা গুমরে মরে, কিন্তু চরিত্রের দার্ঢ্যে বিপথে পা বাড়ায় না কখনও। তবু তাকে ভুল বোঝে ঘর ও পর, আর নাটকের অন্ত হয় বিয়োগান্তক পরিণামে। কলকাতার ‘পূর্ব পশ্চিম’ নাট্যদল সৌমিত্র মিত্রের নির্দেশনায় মঞ্চে এনেছে রাকেশ ঘোষের লেখা নাটক ‘লোরকা লোরকা’, লোরকা আর দালির জীবন আর সময়ের উথালপাথাল সেখানে, বন্ধুতা ও সমপ্রেমের জটিল সমীকরণও।
১৮৯৮ সালের ৫ জুন জন্ম লোরকার, আগামী কাল তাঁর জন্মের একশো পঁচিশ বছর পূর্ণ হচ্ছে। মাত্র আটত্রিশ বছরের জীবনটা যে কত বর্ণময়, কত বিচিত্র, শিল্পের কতগুলো ধারাকে যে সে জীবন ছুঁয়ে দিয়েছে পরশমণির মতো, লোরকার জীবনটা খুঁটিয়ে পড়লে তা বোঝা যায়। তাঁর জীবনের শুরুতে এসেছে সঙ্গীত: আন্দালুসিয়ার ‘রোমানি’ মানুষের যাযাবর-গান ও লোকগীতি (‘ডিপ সং’), ফ্ল্যামেঙ্কো নাচ, পুতুলনাচ, লোককথা। এসেছে কবিতা: লিরিকে, ব্যালাডে— প্রকৃতি, প্রেম, চাওয়া আর না-পাওয়ার চিরন্তন দ্বন্দ্বে। সেই কবিতার ভাব-ভাষাও পাল্টেছে এক-একটা কাব্যগ্রন্থে, গোড়ার ‘কবিতার বই’ আর পরের ‘নিউ ইয়র্কে এক কবি’-র ভাব-ভাষা আলাদা, কারণ মাঝের সময়ে তো পাল্টে গিয়েছে মানুষটাই! লোরকা ও দালি-র জীবনীকার হিসাবে ইয়ান গিবসন সুবিখ্যাত; বাংলায় লোরকা-বিশেষজ্ঞ বলতে কার নাম উঠে আসবে জানি না, তবে কাঠবিড়ালীর সেতুবন্ধের চেয়ে কিছু বেশি কাজ এ ভাষায় অবশ্যই হয়েছে। অমিতাভ দাশগুপ্ত-কবিতা সিংহের অনুবাদে ‘লোরকার শ্রেষ্ঠ কবিতা’ মনে পড়ে প্রথমেই। শহর কলকাতায় মন দিয়ে স্প্যানিশ সাহিত্য নিয়ে চর্চা করে যাচ্ছেন তরুণ ঘটকের মতো কিছু মানুষ; ‘লোস ইসপানোফিলোস’ দলের জরুরি কাজগুলির কথা না বললেই নয়— মালবিকা ভট্টাচার্যের দিগ্দর্শনে শুক্তি রায়, অর্পিতা মুখোপাধ্যায়, কিংশুক সরকার, শর্বরী গরাই, আরও অনেকে নীরবে করে যাচ্ছেন লোরকার কবিতা, প্রবন্ধ ও নাটকের অনুবাদ, লোরকাকে নিয়ে বই, স্প্যানিশ ও ল্যাটিন আমেরিকান অন্য দিকপালদের কাজও: খুয়ান রামোন খিমেনেস, ওক্তাভিয়ো পাজ়, গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস। অনুবাদকাজকে মৌলিকের ধারেকাছের কদরও দেয় না বঙ্গসাহিত্যসমাজ, সাহিত্যের ছাত্র-শিক্ষকেরাও বড় প্রকাশনার ইংরেজি অনুবাদে কাজ সারেন। কিন্তু এক বার সমান যত্নে অরুণ মুখোপাধ্যায় আর লোস ইসপানোফিলোস-এর বাংলা অনুবাদকে আদরে বসিয়ে, সঙ্গে গোবিন্দ নিহালনি প্রমুখের সহ-ধারার কাজগুলি মন দিয়ে দেখে যে উচ্চাঙ্গের মননসন্ধ্যা কাটাতে পারত কলকাতা, তার সুযোগ প্রতি দিন হেলায় হারাচ্ছে সে।
লোরকাকে জানতে হলে বুঝতে হবে স্পেনের মানচিত্রও, বুঝতে হবে আন্দালুসিয়াকে। রবীন্দ্রনাথ পড়তে গেলে যেমন এখনকার এই শতখণ্ড বাংলার অখণ্ড মানচিত্র আর দর্শনটা জানা দরকার, বোঝা দরকার কোন মাটি আর জীবনের উত্তরাধিকার নিংড়ে একটা মানুষ সাহিত্যজগৎ ফুঁড়ে বেরোচ্ছে তার কলম নিয়ে, তেমনই লোরকা পড়তে জানা দরকার বহু জাতি বহু সংস্কৃতি বহু সুর-বাণী-নাচ-গানের পরম্পরা নিজের মাটিতে মিশিয়ে নেওয়া দক্ষিণ স্পেনের আন্দালুসিয়াকে। কেন এক নাট্যকার সাধারণ জীবন নিয়েই নাটক লেখেন, কী ভাবে সে নাটক ঘরে-বাইরে যে কোনও অপশাসকের রক্তচোখের প্রতিবাদ হয়ে দাঁড়ায়, তার উত্তর পেতে ফেদেরিকো গার্সিয়া লোরকাকে তন্নতন্ন করে পড়া জরুরি। তারও আগে দরকার তাঁকে মনে রাখা। লোরকার বাড়ি মিউজ়িয়ম হয়েছে, গড়ে উঠেছে লাইব্রেরি, আর্কাইভ, প্রেক্ষাগৃহ। সে আর আমরা ক’জন দেখতে পারব! আমাদের বইগুলি, তার নিবিড় নিভৃত পাঠই সই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy