Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Indian Currency Coins

স্বাধীনতার দু’বছর পরও বদলায়নি দেশের মুদ্রা

একই চিহ্ন, প্রতীক এবং প্রতিকৃতি বয়ে চলতে হয়েছিল তাকে। এক পিঠে কলকাতার জাতীয় গ্রন্থাগারের প্রধান ফটকের উপরে থাকা বাঘ, অন্য দিকে রাজা ষষ্ঠ জর্জের মুখ— সিকি থেকে এক টাকার এই একই চেহারা। আর ছিল ফুটো পয়সা। তাকে নতুন চেহারা এবং নতুন গণনায় আসতে সময় লেগেছে অনেক, পেরোতে হয়েছে নানা বড়সড় এবং খুচরো অসুবিধেও।

মুদ্রাচিহ্ন: ষষ্ঠ জর্জ থেকে অশোকস্তম্ভ। বাঁ দিকে, এক পয়সায় ঘোড়া ও এক আনায় ষাঁড়ের ছবি নেওয়া হয় অশোকস্তম্ভ থেকেই

মুদ্রাচিহ্ন: ষষ্ঠ জর্জ থেকে অশোকস্তম্ভ। বাঁ দিকে, এক পয়সায় ঘোড়া ও এক আনায় ষাঁড়ের ছবি নেওয়া হয় অশোকস্তম্ভ থেকেই

সুমিত্র বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০২৪ ০৮:৪১
Share: Save:

ভারত স্বাধীন হলেও তিনটি জিনিস বদলাল না ১৯৪৭ সালের পরেও। দেশের গভর্নর জেনারেল রয়ে গেলেন লর্ড মাউন্টব্যাটেন, দেশের ধাতব মুদ্রায় রয়ে গেল রাজা ষষ্ঠ জর্জের ছবি, এমনকি পরের দু’বছরেও সালটিও ১৯৪৭-ই রেখে দেওয়া হল। বদল করা হল না রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নরকে।

এক পিঠে কলকাতার জাতীয় গ্রন্থাগারের প্রধান ফটকের উপরে থাকা বাঘ, অন্য দিকে রাজা ষষ্ঠ জর্জের মুখ— ১/৪ টাকা থেকে এক টাকার প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল এটিই। তার চেয়ে কম দামের মুদ্রায় একটাই ছবি, রাজার মুখ, বাকিটা নকশা। আর ওয়াশারের মতো দেখতে মাঝে ফুটোওয়ালা এক পয়সা, তাতে রাজার পরিবর্তে রাজমুকুট। ১৯৪৭ সালে এমনই ছিল এ দেশের, মানে ব্রিটিশ ভারতের মুদ্রা। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরের দু’বছর এই একই মুদ্রা ছাপা চলল, মায় সালও বদল করা হল না।

লিডিয়া নাকি ভারত— বিশ্বের কোথায় প্রথম মুদ্রার প্রচলন হয়েছিল, তা নিয়ে পণ্ডিতদের মধ্যে বিতর্ক আছে। নানা মুনি, নানা মত। মোটামুটি ২৭০০ বছরের ইতিহাসে মুদ্রারও নানা উত্থান-পতন ও পরিবর্তন হয়েছে। অর্থনৈতিক অবস্থা, ক্ষমতা ও আঞ্চলিক সীমা পরিবর্তন ও নানা দ্বন্দ্ব এই পরিবর্তনের কারণ। স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব ও সাধারণতন্ত্র দিবসের ৭৫ বছরের সঙ্গে সঙ্গে নিঃশব্দে ৭৫-এ পা রেখেছে স্বাধীন ভারতের মুদ্রা, সংগ্রাহকদের পরিভাষায় যাকে বলে ‘রিপাবলিক ইন্ডিয়া কয়েনস অ্যান্ড নোটস’।

দেশ স্বাধীন হওয়ার সময় নতুন সংবিধান, নতুন জাতীয় পতাকার সঙ্গে সঙ্গে নতুন মুদ্রা তৈরির তোড়জোড়ও শুরু হয়ে যায়। দেশভাগের পরে ভারতে রয়ে যায় ব্রিটিশদের তৈরি সবচেয়ে পুরনো কলকাতা টাঁকশাল এবং বম্বে টাঁকশাল। সবচেয়ে নতুন লাহোর টাঁকশাল পায় পাকিস্তান। তবে নোট ছাপানোর জন্য প্রসিদ্ধ নাসিক থেকে যায় ভারতেই। দেশভাগের পরে পাকিস্তানের প্রথম টাকা যেমন এখানে ছাপা হয়েছে, তেমনই বাংলাদেশ তৈরি হওয়ার পরেও নাসিকে তড়িঘড়ি ছাপা হয় তাদের প্রথম নোট। বিস্ময়কর তথ্য হল, স্যর চিন্তামন দ্বারকানাথ দেশমুখ বা সি ডি দেশমুখ এমনই এক ব্যক্তিত্ব, যাঁর সই করা নোট ব্রিটিশ ভারত, বর্মা (কারেন্সি বোর্ড অব বর্মা) ও পাকিস্তানে লিগ্যাল টেন্ডার হিসেবে চালু ছিল। এমন নজির ভারতীয় রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের আর কোনও গভর্নরের নেই।

১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হয়, দেশভাগও হয়। ১৯৪৮ সালে পাকিস্তান নিজস্ব কয়েন চালু করে ইসলামিক চিহ্ন ব্যবহার করে। ভারত অবশ্য চট করে রাজা ষষ্ঠ জর্জের মুখের ছবি বদল করতে পারেনি। স্বাধীনতার পরের দু’বছর তাই সাল বদল না করে ১৯৪৭ সাল লেখা কয়েনই ছাপা হতে থাকে। সঙ্গে তৈরি হয় নতুন নকশা। তখন শিক্ষার হার খুব কম ছিল বলে, ব্রিটিশ ভারতের মুদ্রার আকার-আকৃতি বজায় রাখা হয়। পাই পয়সা বা ১/১২ আনা (সোজা কথায় ১/৩ পয়সা) এবং আধ পয়সা নতুন করে তৈরি না করার সিদ্ধান্ত হয়। কারণ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের জন্য মুদ্রাস্ফীতির জেরে এই দুই মুদ্রার ব্যবহার বন্ধ হয়ে যায়। নতুন মুদ্রায় রাজার নামের বদলে রোমান হরফে ‘গভর্নমেন্ট অব ইন্ডিয়া’ লেখা এবং রাজার মুখের বদলে সারনাথ অশোক স্তম্ভশীর্ষ ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত হয়। কে প্রথম এই চিহ্ন ব্যবহারের প্রস্তাব করেন সে কথা জানা যায় না। তবে বৌদ্ধধর্মের সঙ্গে যুক্ত এই চিহ্নকে ভারতের জাতীয় চিহ্ন করার নেপথ্যে ভীমরাও আম্বেডকরের অবদান রয়েছে বলে কথিত।

মুদ্রার যে দিকে মান বা ডিনোমিনেশন লেখা থাকে না, সেই দিককে বলে ‘রিভার্স’। ‘রিভার্স’ দিক স্থির হয়ে গেল। তা হলে সামনের দিক বা ‘অবভার্স’ কেমন হবে? এ ক্ষেত্রেও সারনাথ অশোক স্তম্ভশীর্ষের বড় ভূমিকা রয়েছে। এই স্তম্ভশীর্ষে সিংহের পায়ের তলায় বেদিতে চারটি ধর্মচক্র ছাড়াও অন্যান্য পশু রয়েছে। সেখান থেকে এক পয়সায় (তখন ইংরেজি PICE বানান লেখা হত) ছুটন্ত ঘোড়া, আধ আনা ও এক আনা ও দু’আনায় ষাঁড়ের ছবি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত হয়। তার উপরে ১/৪ টাকা, ১/২ টাকা ও এক টাকার মুদ্রায় এমন কোনও চিহ্ন ছিল না, বদলে ছিল শস্যের শিস। তাই ১৯৫০ সালের এপ্রিলে চালু হওয়া মুদ্রা সহজেই ব্রিটিশ মুদ্রার সঙ্গে মিশে যায়। ধাতুর অভাবে ব্রিটিশ শাসনের শেষ দিকে এক পয়সাগুলি দেখতে হত ওয়াশারের মতো, এগুলিকে সাধারণ ভাবে ফুটো পয়সা বলা হত। ভারত স্বাধীন হওয়ার পরে নতুন করে ফুটো পয়সা চালু করা হয়নি। এই সময় ৬৪ পয়সা বা ১৬ আনায় এক টাকা। ৪ আনা মানে ১৬ পয়সা, ৮ আনা মানে ৩২ পয়সা।

ইন্টারনেটে অনেকে হয়তো ময়ূরের ছবিওয়ালা দু’আনা দেখেছেন। মনে রাখতে হবে, ১৯৪৯ সালে এমন মুদ্রার নকশা হলেও তা কখনও চালু হয়নি। এই মুদ্রা শুধুমাত্র রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের জাদুঘরে রয়েছে।

সেই সময় মুদ্রা জাল হওয়ায়, দেশ স্বাধীন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ১,০০০ ও ১০,০০০ টাকার নোট বাতিল করে দেওয়া হয়। স্বভাবতই নতুন মুদ্রা দরকার হয়ে পড়ে। তাই ১৯৪৯ সালে তড়িঘড়ি ১,০০০ টাকার নোট ছাপা হয়। সঙ্গে অন্য নোটও। অর্থাৎ নোটের বিচারে ৭৫ বছর চলছে স্বাধীন ভারতের নোটের। এগুলি কিছুটা থিম্যাটিক, অর্থাৎ নির্দিষ্ট থিমের ভিত্তিতে তৈরি। যেমন নতুন ১,০০০ টাকার নোটে ছাপা হল বৃহদীশ্বর মন্দির, যা পুরাকীর্তির অনন্য নিদর্শন। এই মন্দিরের ছবি ভারতের প্রথম ১,০০০ টাকার স্মারক কয়েনেও ছাপা হয়েছে। ১৯৫৪ সালে আবার ১০,০০০ টাকার নোট এবং ওই বছরই প্রথম বার ৫,০০০ টাকার নোট ছাপা হয়। এই সব নোট মূলত বাণিজ্যিক লেনদেনের জন্য ব্যবহার করা হত। পরে এগুলি বাতিলও হয়ে যায়।

এত দিন ঠিকঠাকই চলছিল, গোলমাল শুরু হল ১৯৫৭ সালে। সে বার ভারতে প্রথম দশমিক পদ্ধতিতে (ডেসিম্যাল সিস্টেম) মুদ্রা চালু হল। মানে ১০০ পয়সায় ১ টাকা। রাশিয়ায় ১৭০০ সালে ডেসিম্যাল কয়েন তৈরি হলেও ১৭০৪ সালে সেটি চালু করা হয়। ভারতে ১৯৫৭ সালে দশমিক পদ্ধতিতে নতুন মুদ্রা চালু করে প্রতিটি মুদ্রায় লিখে দেওয়া হয় সেটি ১ টাকার কত অংশ। এই সময় ১ টাকার ধাতব কয়েন তৈরি হয়নি, কাগজের কয়েন তৈরি হয়েছে। তাতে লেখা ‘সও নয়ে পৈসে’, মানে ১০০ নয়া পয়সা।

কাগজের কয়েন। ঠিকই পড়ছেন। অন্যান্য নোট ইস্যু হয় ভারতীয় রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের অধীনে, সই থাকে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নরের, কিন্তু ‘ইন্ডিয়ান কয়েনেজ অ্যাক্ট ১৯৪২’ অনুযায়ী ১ টাকার কাগুজে নোট আসলে কয়েন, তাই এটি ইস্যু করে ভারত সরকার, সই থাকে কেন্দ্রীয় অর্থসচিবের।

নতুন সিস্টেম চালু করা খুব সহজ হয়নি। কারণ সরকারকে বিনিময়ের হার সংক্রান্ত লিফলেট বিলি করতে হয়েছিল। তখন লোকে তেমন লেখাপড়া জানতেন না। ফলে ঠকতে হত খুচরো কেনাকাটায়। নতুন সিস্টেমে ১/৪ টাকা মানে হল ২৫ নয়া পয়সা। পয়সা বানান রোমান হরফে Paisa, বহুবচনে Paise লেখা শুরু হল। বিনিময় তালিকা অনুযায়ী ছ’পয়সা মানে হল পুরনো এক আনা। চার আনা মানে ২৪ পয়সা। অথচ চার আনার বিনিময় রেট ২৫ পয়সা, এখানে ১ পয়সার গরমিল। তখন এক পয়সার বেশ দাম ছিল। কেউ চারটি এক আনা দিয়ে ২৪ পয়সার জিনিস কিনে এক পয়সা ফেরত পাবেন কি না, তা নির্ভর করত বিক্রেতার সদিচ্ছার উপরে। দোকানি অধিকাংশ সময়েই ফেরত দিতেন না। আবার ক্রেতা চারটি এক আনা দিলেও দোকানি অনেক সময় ২৫ পয়সার জিনিস দিতে রাজি হতেন না। আধ আনা মানে দু’পয়সা। তাই দু’টি আধ আনা নিয়ে গেলে ৪ নয়া পয়সার জিনিস পাওয়া যেত, এক আনা নিয়ে গেলে মিলত ছ’পয়সার জিনিস। এখানে লোকসানের মাত্রা আরও বেশি।

এই বন্দোবস্ত অবশ্য বেশি দিন চলেনি। ১৯৬৪ সালে পুরনো পয়সা বিমুদ্রীকরণ করা হয়। তবে টাকা এককের বিমুদ্রীকরণ হয়নি কোনও দিন। আমাদের দেশে বহু বার বিমুদ্রীকরণ হলেও ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর বিমুদ্রীকরণ সংক্রান্ত যে ঘোষণা করা হয়, সেটি নিয়েই সবচেয়ে বেশি হইচই হয়েছে।

নয়া পয়সার যুগ শেষ হওয়ার পরে তিন পয়সা চালু হয় ১৯৬৫ সালে। তাই তিন নয়া পয়সা ছিল না কোনও কালে। তারও পরে ২০ পয়সা চালু হয়, গোল ২০ পয়সা। ১৯৬৯ সালে চালু হয় ১০ টাকার কয়েন, প্রথম বার। রুপোর দাম বেড়ে যাওয়ায় ১৯৭২ সালের পরে আর কোনও দিন এক-ধাতব ১০ টাকার কয়েন মিন্ট করা হয়নি। ২০০৪ সালে পরীক্ষা করে, ২০০৫ সালে দ্বি-ধাতব ১০ টাকার কয়েন ব্যবহারের জন্য বাজারে ছাড়া হয়। বর্তমানে দু’ধরনের দ্বি-ধাতব ২০ টাকার কয়েনও চালু রয়েছে। ১৯৮২ সালে প্রথম দু’টাকা ও ১৯৮৫ সালে প্রথম পাঁচ টাকা চালু হয়। প্রথম পাঁচ টাকার কয়েনটি ছিল ইন্দিরা গান্ধীর স্মারক বা ‘কমেমোরেটিভ কয়েন’।

কোনও বিশেষ ব্যক্তি বা ঘটনার স্মরণে প্রকাশিত মুদ্রাকে স্মারক মুদ্রা বা ‘কমেমোরেটিভ কয়েন’ বলে। সাধারণ যে সব মুদ্রা দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য তৈরি হয়, সেগুলিকে বলে ‘ডেফিনিটিভ’ মুদ্রা, আলাদা কোনও বাংলা না থাকায় এটিকে মানক মুদ্রা বলা যেতে পারে।

স্বাধীন ভারতের নোট বিশ্বের বিভিন্ন দেশে লিগ্যাল টেন্ডার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। নেপাল-ভুটানে এ দেশের নোট চালু থাকার কথা বলছি না, ১৯৫৯ থেকে ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত ভারতের নোট লিগ্যাল টেন্ডার হিসেবে চালু ছিল পারস্য উপসাগরের তীরে কুয়েত, বাহরিন, কাতার, ওমান ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে। এর মধ্যে ওমানে ভারতের নোট চালু ছিল ১৯৭০ সাল পর্যন্ত। এই নোটগুলির নম্বর শুরু হত (প্রিফিক্স) Z দিয়ে। এই সময়ে সৌদি আরবে হজযাত্রীদের জন্যও নোট ছাপানো হত, এগুলির প্রিফিক্স ছিল HA, ভারতে এই দুই সিরিজ়ের নোট লিগ্যাল টেন্ডার ছিল না। নোটের নম্বরের প্রিফিক্স ছাড়া নোটের বাকি ফিচার মোটামুটি একই থাকত।

১৯৫৭ সালে নয়াপয়সার চল শুরু হওয়া ভারতীয় মুদ্রার ইতিহাসে একটি মাইলফলক হলে, ২০১০ সাল আরও একটি মাইলফলক। এই বছর ‘₹’ চিহ্ন মান্যতা পায়। পরের বছর, অর্থাৎ ২০১১ সাল থেকে তৈরি সব মুদ্রায় এই চিহ্ন ছাপা শুরু হয়।

কয়েন ছাপা হয় চারটি টাঁকশালে— কলকাতা, মুম্বই, হায়দরাবাদ ও নয়ডা। প্রতিটি কয়েনের চিহ্ন দেখে বোঝা যায় সেটি কোথায় তৈরি। নোট ছাপা হয় সিকিয়োরিটি প্রেসে। টাঁকশাল ও সিকিয়োরিটি প্রেসগুলিকে ২০০৬ সালে ভারত সরকার একটি ছাতার তলায় এনেছে, তার নাম ‘সিকিয়োরিটি প্রিন্টিং অ্যান্ড মিন্টিং কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া লিমিটেড’ (SPMCIL)। এর বাইরেও একটি সংস্থা নোট ছাপায়, তার নাম ভারতীয় রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক নোট মুদ্রণ প্রাইভেট লিমিটেড (BRBNMPL), শালবনিতে একই শাখা রয়েছে। এটি ১৯৯৫ সালে স্থাপিত হয়।

এখন যে সব নোট চালু আছে, সেগুলিতে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যের স্মারক ছাপা হয়েছে। ১০ টাকার নোটে কোণার্কের সূর্য মন্দিরের চাকা (ত্রয়োদশ শতক, ওড়িশা), ২০ টাকায় ইলোরা (অষ্টম শতক, মহারাষ্ট্র), ৫০ টাকায় হাম্পি (চতুর্দশ শতক, বিজয়নগর, কর্নাটক), ১০০ টাকায় রানি কা ভাও (একাদশ শতক, চালুক্য, গুজরাত), ২০০ টাকায় সাঁচী স্তূপ (খ্রিস্টপূর্ব প্রথম ও দ্বিতীয় শতক, মধ্যপ্রদেশ) এবং ৫০০ টাকায় লালকেল্লা (১৫২৬ খ্রিস্টাব্দ, দিল্লি)। এগুলি বিভিন্ন সময়ে তৈরি হিন্দু, বৌদ্ধ, ইসলামিক ও মিশ্র শৈলীতে তৈরি স্থাপত্যের নিদর্শন। এর আগে প্রকৃতি, কৃষি, উন্নয়ন, মহাকাশ গবেষণা প্রভৃতি বিভিন্ন বিষয় বেছে নেওয়া হলেও, এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ঘটেছে। আরও দু’টি ব্যতিক্রম আমাদের দেশের নোটে আছে। ভারতে ১৯৬৯ সালে গান্ধীজির জন্মশতবর্ষ ছাড়া কখনও কোনও স্মারক নোট প্রকাশিত হয়নি। আর দ্বিতীয় তথ্যটিও চমকপ্রদ। ভারতের নোটে শুধুমাত্র গান্ধীজির মুখের ছবিই ছাপা হয়। বিশ্বে এমন কোনও দেশ সম্ভবত নেই, যেখানে দ্বিতীয় কোনও ব্যক্তির ছবি কখনও ছাপা হয়নি (যদি সেখানে ব্যক্তির ছবি ছাপার চল থাকে)। না, বাংলাদেশও নয়।

২০২১ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ‘আজ়াদি কা অমৃত মহোৎসব’-এর স্মারক বেরিয়েই চলেছে, তা হলে এটি ‘ডেফিনিটিভ’, নাকি ‘কমেমোরেটিভ’? মজা করে এটিকে ‘ডেফিমোরেটিভ’ বলা শুরু হয়েছে। বাংলা কী হবে? স্মারণক মুদ্রা? বলা মুশকিল।

অন্য বিষয়গুলি:

India Independence Day Coins
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy