Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ১৬
Bengali Story

হাওয়ার আড়ালে

পুরো হাফ মিনিট ধরে জনার্দনের দিকে তাকিয়ে থাকল আকিঞ্চন। তার পর এক হাতে কালো কোট আর অন্য হাতে ব্রিফকেসটা তুলে নিয়ে বেরিয়ে এল চেম্বার ছেড়ে।

man.

ছবি: পিয়ালী বালা।

অজিতেশ নাগ
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৩ ০৪:৪৯
Share: Save:

পূর্বানুবৃত্তি: সব্য মিশুককে একটা বিগল-শাবক কিনে দেয়। তার নাম দেয় মাফিন। কস্তুরীর অপেক্ষা সার্থক হয়। এক দিন মিশুক তাকে বিকেলে যেতে বলে তার সিরিয়ালের সেটে। অফিস ম্যানেজ করে সেখানে গিয়ে পৌঁছয় কস্তুরী। অন্য দিকে, রাধিয়ার সঙ্গে আর সে ভাবে যোগাযোগ করছে না আকিঞ্চন। মামলার প্রয়োজনে রাধিয়াকে তার শেষ সম্বল সোনার বালাজোড়া বেচে টাকা দিতে বলে সে। সে টাকা নিয়ে যায়। কিন্তু আইনের নানা জটিল কারণে কেস এগোয় না, আটকেই থেকে যায়। আকিঞ্চনের শীতল ব্যবহার কষ্ট দেয় রাধিয়াকে।

রাধিয়ার চোখ চিকচিক করে উঠল। তবু সে আশাবাদী। আদিনাথের সঙ্গে কাটানো সময়টুকুর কথা মনে এলেই মনে হয় এখন সে অনেক ভাল আছে। বালা বিক্রি করে ষাট না হলেও ছাপ্পান্ন পাওয়া গেছে। কুড়ি দিয়েছে আকিঞ্চনকে। হাজার খানেক তার পার্সে রেখেছে। বাকি টাকা মুড়ে ঢুকিয়েছে ব্লাউজ়ের ভিতরে। এত তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে কী হবে? কিন্তু কোথায়ই বা যাবে? রাধিয়া হাত তুলে একটা ট্যাক্সি দাঁড় করাল।

রাধিয়া বেরিয়ে যেতেই সেই ছোকরামতো ছেলেটা জিজ্ঞেস করল, “স্যর, এগুলো কী বললেন? ১০ এ অব ডাইভোর্স অ্যাক্টটা বুঝলাম কিন্তু থার্ড স্টেজ রিট পিটিশন! সে রকম কিছু আছে না কি? ইফ ইউ ডোন্ট মাইন্ড।”

“নাঃ। নেই।”

“তা হলে?”

“তুমি আইনের ছাত্র। অ্যাপ্রেনটিসশিপে এসেছ। বছর দেড়েক হল আছ আমার সঙ্গে। আইন পড়েই তো এসেছ?”

“শিয়োর স্যর। আপনি তো জানেন।”

“আমি যা বললাম বুঝলে?”

“বুঝতে পারলাম না বলেই...”

“তা হলে ক্লায়েন্ট কী বুঝবে? কিছুই না তো? সেটাই উদ্দেশ্য। ডাক্তার যত ভারী ভারী রোগের, ওষুধের, ট্রিটমেন্টের নাম বলে, পেশেন্ট তত খুশি হয়। উকিলের ক্ষেত্রেও তাই। তবে বেশি বুঝে ফেলো না জনার্দন। তোমার জায়গায় আগে যে ছিল সে বেশি বুঝে ফেলেছিল বলে ছেঁটে ফেলতে হয়েছিল। তুমি সে ভুল করবে না আশা করি।”

“শিয়োর স্যার। আর একটা কথা বলি?”

“গো অন।”

“এই কেসটা প্রায় প্রথম থেকে আমি দেখছি। আমার মতে ব্যাপারটাকে একটা মিউচুয়াল কনসেন্টে আনলে... মানে জাস্ট আইডিয়া.. কেমন হবে স্যর?”

“মিউচুয়াল কনসেন্ট! আর ইউ ম্যাড? আদিনাথ শ্রীবাস্তব আর রাধিয়া শ্রীবাস্তবের মধ্যে? এর জন্য এত দিন লড়াই করছি? আমি নিজে...”

“নো স্যর। আদিনাথ শ্রীবাস্তব আর আপনার মধ্যে।”

পুরো হাফ মিনিট ধরে জনার্দনের দিকে তাকিয়ে থাকল আকিঞ্চন। তার পর এক হাতে কালো কোট আর অন্য হাতে ব্রিফকেসটা তুলে নিয়ে বেরিয়ে এল চেম্বার ছেড়ে। পিছন পিছন গুচ্ছের ফাইল আর কাগজ নিয়ে জনার্দন। পার্কিং প্লটে গাড়িতে উঠে স্টার্ট দিয়ে কাচ নামাল। পিছনের সিটে ফাইলপত্রের বোঝা নামিয়ে জানলার পাশে এসে দাঁড়াল জনার্দন। আকিঞ্চন সামান্য হাসল। তার পর বলল, “তোমার হবে জনার্দন, তোমার হবে। ওকে। প্রসিড।”

সাদা গাড়িটা বেরিয়ে যাওয়া আর গেট বন্ধ হওয়ার মাঝের সময়টুকুকে ব্যবহার করে ভিতরে ঢুকে গিয়েছিল কস্তুরী। নিজের বুদ্ধিমত্তার পরিচয়ে নিজেই মজা পেল। কিন্তু এ বার? সামনে বিশাল চওড়া জায়গা। চারটে বড় গাড়ি আর দুটো ছোট গাড়িকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখল সে। বাঁ দিকে সামান্য দূরে একটা বিশাল বাড়ির মতো দেখা যাচ্ছে। ঠিক বাড়ি নয়, দোতলা লম্বা গোডাউনের মতো। কস্তুরীর মনে এল সেই কবে এই রকম দেখেছিল ইন্দ্রপুরীতে। তার মানে বেসিক ব্যাপারটা একই আছে। কিন্তু এখন দেখতে হবে রাঙামাটি-র শুটিং কোথায় হচ্ছে।

সামান্য এগোতেই সে দেখল সামনে রবীন্দ্রনাথের আবক্ষ মূর্তি। তাকে পাশ কাটিয়ে এগোনোর সময় পিছন থেকে কে এক জন বলে উঠল, “কাউকে খুঁজছেন?”

কস্তুরী চমকে তাকিয়ে দেখল একটি অল্পবয়সি মেয়ে। এখানে আসা ইস্তক সে ভেবেছিল, চার দিকে শুধু নায়ক আর নায়িকা মুড়ি-মিছরির মতো ছড়িয়ে থাকবে। এ তো সাধারণ চেহারার এক জন।

“হ্যাঁ। আসলে আমি রিখি সেনের কাছে এসেছি। মানে মিশুকের কাছে। আমি ওর মাসি।”

“রিখি সেন? আচ্ছা, রাঙামাটি। এই কালীমন্দিরের পাশ দিয়ে সোজা গিয়ে বাঁ দিকে টার্ন নিলেই ডান দিকে মেকআপ রুম। ওখানেই মিশুক ম্যাডামকে পেয়ে যাবেন, আই হোপ।”

মেয়েটা চলে গেল। ওর কথামতো কস্তুরী এগিয়ে চলল। সোজা এগিয়ে যেতেই চোখে এল। সার সার দেওয়া ঘর। এগুলোই তবে মেকআপ নেওয়ার ঘর। বাইরে থেকে দেখে তেমন ইম্প্রেশন জমছে না। ভিতরে নিশ্চয়ই জমকালো হবে। কিন্তু এখন? সব ঘরের দরজা বন্ধ। কোন রুমে আছে মিশুক? না বলে দরজা ঠেলা ঠিক হবে না। কিছু ক্ষণ ভেবে প্রথম দরজায় নক করল। কোনও জবাব নেই। দু’-চার বার নক করে ঠেলল। খুলে যাচ্ছে দরজা। ভিতরে উঁকি দিয়ে দেখল, একটা দেওয়াল জুড়ে বিশাল আয়না। তাকে ঘিরে দশ বারোটা বাল্‌ব।

সে পরের ঘরের দরজায় গিয়ে সে একই কাণ্ড করল। এই ঘরেও কেউ নেই। ঘর ঘুটঘুটে অন্ধকার। পরেরটার সামনে আসতেই টের পেল হালকা কথাবার্তা শোনা যাচ্ছে। কস্তুরী টোকা মারল। দু’বার। দরজা খুলে গেল।

এ কী! এ কে সামনে দাঁড়িয়ে! এ যে ‘আনন্দবাগান’ সিরিয়ালের মৃন্ময়! আসল নাম জানে না। কত বার দেখেছে টিভিতে। ভদ্রলোক কিছু ক্ষণ কস্তুরীর মুখের দিকে স্থির তাকিয়ে বললেন, “কাকে চাই?”

“ইয়ে, রিখি সেন মানে মিশুক মুখার্জি কি...”

ভদ্রলোক তাকে কথা শেষ করতে দিলেন না। ‘স্পটে আছে’ বলেই দরজা বন্ধ করে দিলেন দুম করে। ‘স্পটে আছে’ মানে কী? সে কিছু ক্ষণ ভাবল। স্পট মানে হতে পারে শুটিং স্পট।

এক জন আসছিল এ দিকে। তাকেই দাঁড় করিয়ে জেনে নিল রাঙামাটি-র শুটিং কোথায় হচ্ছে। ফের ডান দিক-বাঁ দিক করে একটা জায়গায় গিয়ে পৌঁছল সে। বাঁ দিকে একটা বড় বাড়ি। আচমকা দেখলে মনে হয় রেলস্টেশন। আবার দোতলাটা দেখতে অনেকটা পোস্টাপিসের মতো। এগুলো দিয়েই বোধহয় কাজ চালানো হয় সিরিয়ালে, সিনেমায়। বেশ মজার তো।

ফের একটা উঁচু গলা ভেসে এল। ‘সাইলেন্স!’ চমকে গিয়ে ডান দিকে তাকাল। একটা বাড়ি। পাঁচিল ঘেরা। সামনে উঠোন। উঠোনের মধ্যে একটা তুলসীমঞ্চ। দেখামাত্র মনে মনে লাফিয়ে উঠল কস্তুরী। এই তো! এই তো রিখির বাড়ি! কত বার দেখেছে সিরিয়ালে। বাড়ির সামনে একটা সিমেন্টের রাস্তায় একটা বড় ছাতার নীচে একটা চেয়ার পাতা। তাতে পিছন ফিরে একটি ছোটখাটো মেয়ে বসে। কিন্তু মিশুক কোথায়? কস্তুরী এগিয়ে গেল।

চেয়ারে বসা মেয়েটার সামনে দু’জন পুরুষ দাঁড়িয়ে। তাদের এক জনকে চিনতে পেরেছে কস্তুরী। এই লোকটাই সপ্তাহখানেক আগে রিখির সর্বনাশ করতে গিয়েছিল। দেখলেই রাগ ধরে। আর এক জনকে চিনতে পারল না। কস্তুরীকে এগোতে দেখে দু’জনেই জিজ্ঞাসু চোখে তাকাল। কস্তুরী পাত্তা না দিয়ে মেয়েটার সামনে গিয়ে দাঁড়াল। এই মেয়েটিকেই জিজ্ঞেস করতে হবে, মিশুক কোথায়? মেয়েটির হাতে দু’পাতার কাগজ, খুব মন দিয়ে পড়ছিল, বিকেলের পড়ন্ত রোদে হাতের কাগজে কস্তুরীর ছায়া পড়ায় এ বার মুখ তুলে তাকাল এবং তখনই দারুণ চমকে গেল কস্তুরী। মিশুক!

ও মা! পর্দায় কী বড়-বড় লাগে। সামনাসামনি কী ছোটখাটো লাগছে। আরও মিষ্টি মনে হচ্ছে। রোদের তাপে হালকা ঘামের বিন্দু কপালের উপরে। মেয়েটি আলতো করে সেই ঘামের বিন্দু ছুঁয়ে ভুরু কুঁচকে তাকাল কস্তুরীর দিকে। কস্তুরী প্রথমে কী বলবে ভেবে পেল না, নিজেকে সামলে নিয়ে বলল, “চিনতে পারার কথা নয়, আপনি আসতে বলেছিলেন।”

দু’সেকেন্ড। পরক্ষণেই চেয়ারে কাগজ রেখে হাসিমুখে উঠে দাঁড়াল মিশুক। যেন কত দিনের চেনা, সেই ভাবে কস্তুরীর হাত দুটো নিজের হাতের মধ্যে নিয়ে বলল, “যদি আমি ভুল না করি...কস্তুরী রায়?”

রিখি সেন তার হাত ধরেছে! ও মাই গড!

সেট থেকে কে হাঁক পাড়ল, “এপিসোড-৩০৫, দৃশ্য-৫, রিখি সেন, রিখি সেন।”

মিশুক বলল, “আপনি একটু অপেক্ষা করুন। একটা শট দিয়ে আসছি। এসে কথা হবে।”

তুরতুর করে একটা সদ্য উড়তে শেখা প্রজাপতির মতো উঠোন ছেড়ে সেই বাড়িটার দাওয়ায় গিয়ে উঠল মিশুক। কস্তুরী বেরিয়ে এসে পাঁচিলের উপর দিয়ে উঁকি মেরে দেখতে লাগল।

বহু আকাঙ্ক্ষিত শুটিং বস্তুটি, প্রথম দিন, সব মিলিয়ে খুব যে ইন্টারেস্টিং লাগল, সে কথা জোর দিয়ে বলতে পারল না কস্তুরী। তিনটে ডান্ডার উপরে তিনটে সাদা পর্দা লাগানো। যেখানে মিশুক আর পর্দায় যিনি বাবা সাজেন, তাঁদের সামনে গোল করে একটা রেলের লাইন পাতা হয়েছে। চার দিকে প্রচুর লোকজন কাজ করছে। দু’চার জনের হাতে সাদা কাগজের তাড়া। দুটো ক্যামেরা দু’দিকে লাগানো হয়েছে। আর একটা চলমান গাড়ির মতো, তাতেও একটা বড়সড় ক্যামেরা, ওই রেললাইন ধরে এগিয়ে আসছে অতি ধীরে। এ সব পর্দায় দেখা যায় না! আর একটি ছেলে আবার কস্তুরীর মাথার উপরে ডান্ডার সঙ্গে লাগানো একটা মাউথপিস ধরে ঝুলিয়ে রেখেছে। কী কাণ্ড! এত লোক লাগে? অবাক হয়ে কস্তুরী এ সব দেখছে, এমন সময় এক জন চেঁচিয়ে উঠল ‘লাইট’। অমনি দুম করে চারটে বড় বড় সার্চ লাইট জ্বলে উঠল। চোখ ধাঁধিয়ে গেল কস্তুরীর। ফের আকাশবাণী, ‘সাইলেন্স’। এর পরেই ‘রোল-অন’, ‘ক্যামেরা’, আর ‘অ্যাকশন’।

তার পর আধ ঘণ্টা ধরে যা যা সব চলল, তাতে বিশেষ ইম্প্রেসড হল না কস্তুরী। তবু সে দাঁড়িয়ে ছিল। বাইরের দু’-চার জনকে তো বলতে পারবে। তবে এর মধ্যেই সে অবাক হচ্ছিল মিশুক মেয়েটার অভিনয় দেখে। এই সামান্য আগেই উঠোনে নেমে ঢুকে মেয়েটা কার কথায় যেন খিলখিল করে হেসে ফেলেছিল, অ্যাকশন শব্দটা কানে যেতেই সেই মেয়েরই চোখে জল উপচে পড়ল। কস্তুরী শুনেছে অভিনেতারা নাকি গ্লিসারিন ব্যবহার করে চোখে জল আনতে, কিন্তু কই, মিশুককে তো কিছু লাগাতে দেখল না চোখে। এত স্বাভাবিক অভিনয়? কস্তুরী অবশ্য চোখের সামনে ঘটে চলা কাহিনির সূত্র ধরতে সমস্যা হল। খানিক পরেই বুঝল এটা হয়তো বেশ কয়েকটা দিন পর টেলিকাস্ট হবে, তাই খেই ধরতে সমস্যা হচ্ছে।

শট দিয়ে বেরিয়ে এসে মিশুক কস্তুরীর দিকে তাকিয়ে বলল, “আসুন, মেকআপ রুমে বসি।”

মেকআপ রুম! কস্তুরী ভেবেছিল বাইরে দাঁড়িয়ে দু’চারটে কথা বলে বেরিয়ে যাবে। কস্তুরী পুলকিত হল মনে মনে। সে মিশুকের পিছু-পিছু এসে সেই সারিবদ্ধ ঘরের একটায় দরজা ঠেলে ঢুকে পড়ল। ভিতরটায় এসি চলছে। সেপ্টেম্বরের শুরুতেও এ বছর ভ্যাপসা গরম। ভিতরটা একেবারে চিলড না হলেও আরামপ্রদ। মিশুক বলল, “কই বসুন।”

কস্তুরী বসল। জিজ্ঞেস করল, “আপনার কি শুটিং শেষ?”

মিশুক হাঁ হাঁ করে উঠল, “আমাকে আপনি বলবেন না প্লিজ় আন্টি। আমি অনেক ছোট। তুমি বললে বেশ লাগবে।”

কস্তুরী বলল, “হ্যাঁ, তুমি তো আমার মেয়ের মতো।”

“আপনার মেয়ে আছে?”

“একটি।”

“কী করে? পড়ে?”

“হুঁ। এ বার কলেজে ভর্তি হবে।”

“বাঃ।”

“তোমার?”

“এডুকেশন? সব শেষ। তবে সোশিয়োলজি নিয়ে মাস্টার্স করার ইচ্ছে আছে। আপনি বসুন, আমি হাতটা ধুয়ে আসি।”

কস্তুরী ভেবেছিল মিশুক বাইরে যাবে। কিন্তু অবাক হয়ে দেখল, অপ্রশস্ত ঘরটার এক দিকের একটা ছোট দরজা ধরে টানতেই আর একটা খুপরি ঘর উন্মুক্ত হল চোখের সামনে। সুড়ুত করে তার মধ্যে সেঁধিয়ে গেল মিশুক। বাঃ, বেশ ব্যবস্থা তো।

কস্তুরী চার দিকে তাকিয়ে দেখতে লাগল। এক দিকের দেওয়াল জুড়ে বিশাল আয়না। তার চার দিক ঘিরে মালার মতো উজ্জ্বল বাল্‌ব লাগানো সারি সারি। তার লাগোয়া একটা টেবিলের মতো। তার উপরে মেকআপের জিনিসপত্র। তার সঙ্গে চিরুনি, চুড়ি আরও কত কী লটঘট পাকিয়ে শুয়ে আছে। সিগারেটের একটা প্যাকেটও চোখে পড়ল। ঘরে দুটো চেয়ার রয়েছে। দেওয়ালের কোণে কোণে চার-পাঁচটা ব্যাকপ্যাক। আর এক দিকের দেওয়ালে সারি সারি জামাকাপড় ঝুলছে।

টয়লেট থেকে বেরিয়ে এল মিশুক। ওকে ভাল করে দেখল কস্তুরী। বয়স তার মেয়ের থেকে এক-দু’বছর বেশিই হবে। এই মেয়েটিকে সে সিরিয়ালে দেখছে, তা প্রায় বছর তিনেক হবে। ও বাবা! তার মানে কত অল্প বয়স থেকে টাকা উপার্জন করছে! এত ভাল অ্যাক্ট্রেস। অথচ কথাবার্তা কী পোলাইট। কস্তুরী ভেবেছিল তাকে প্রথমে পাত্তাই দিতে চাইবে না।

মিশুক হালকা হেসে বলল, “হ্যাঁ। বলুন।” উল্টো দিকের ছোট্ট সোফাটায় গা এলিয়ে দিয়ে বসেছে মেয়েটি।

ক্রমশ

অন্য বিষয়গুলি:

Bengali Story story
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy