স্বরলিপিকার: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ডান দিকে, ‘বীণাবাদিনী’ পত্রিকার ১৩০৪ বঙ্গাব্দের কার্তিক সংখ্যায় তাঁর স্বনামে প্রকাশিত ‘বঁধু মিছে রাগ কোরো না’ গানের স্বরলিপি।
১৯৩১ সাল। পঁচিশে বৈশাখ। শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথের সত্তরতম জন্মদিনটি পালিত হওয়ার সময়ে বলেছিলেন, “বিধাতা যদি আমার আয়ু দীর্ঘ না করতেন, সত্তর বৎসরে পৌঁছবার অবকাশ না দিতেন, তা হলে নিজের সম্বন্ধে স্পষ্ট ধারণা করবার অবকাশ পেতাম না।” জন্মোৎসবের পরই কবির পারস্যে যাওয়ার কথা। কিন্তু শরীর বেঁকে বসল। হেমন্তবালা দেবীকে চিঠিতে লিখেছিলেন, একটু জ্বর রক্তে লুকোচুরি করে বেড়াচ্ছে। এর পর ডাক্তারের পরামর্শে যাত্রা বাতিল করতে হল। কবিকে নিয়ে রথীন্দ্রনাথ চললেন দার্জিলিং।
ময়মনসিংহের জমিদার ব্রজেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর কন্যা ও নাটোরের মহারাজা জগদীন্দ্রনাথ রায়ের বোন শরৎকুমারী দেবীর পুত্রবধু হেমন্তবালা। ১৯৩১-এ কবির তাঁর পত্রালাপের শুরু। দীর্ঘ দশ বছর তাঁদের পত্রবিনিময় চলে। হেমন্তবালার কন্যা বাসন্তী দেবী রবীন্দ্রনাথের একুশ বছর আগের লেখা ‘জীবনে যত পূজা হল না সারা’ গানটির স্বরলিপি সংক্রান্ত কৌতূহল সে বার কবির কাছে প্রকাশ করেছিলেন। দার্জিলিং থেকে ২৭ জুন তার উত্তরে কবি লিখেছিলেন, “এর স্বরলিপি কোথায় প্রকাশিত হয়েছে এখান থেকে নিশ্চিত বলতে পারচি নে। কলকাতায় ফিরে গিয়ে সন্ধান করে তোমাকে জানাব।” এর পরেই লিখেছিলেন, “আমি সুর রচনা করি, সুর ভুলি, স্বরলিপি করতে জানি নে।” কবি স্বরলিপি করতে জানেন না এই স্বীকারোক্তিকে বিনয় বলা চলে। তার আগে দেখা যাক কবির সুর রচনা ও সুর ভুলে যাওয়ার বিষয়টি।
রবীন্দ্রনাথ তখন সপরিবার জোড়াসাঁকোতে। দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জনের বোন অমলা দাশ প্রায়ই সেখানে আসতেন, মৃণালিনী দেবীর সঙ্গে তাঁর সখ্য ছিল। এক দিন কবি একটি গান রচনা করেই উচ্চকণ্ঠে বললেন, “অমলা, ও অমলা, শিগগির এসে শিখে নাও, এক্ষুণি ভুলে যাব কিন্তু।” রবীন্দ্রনাথের আকুতি শুনে মৃণালিনী দেবী হেসে অমলা দাশকে বলেছিলেন, “এমন মানুষ আর দেখেছ অমলা, নিজের দেওয়া সুর নিজেই ভুলে যায়।” কবিও হাসিমুখে স্ত্রীকে বলেছিলেন, “অসাধারণ মানুষদের সবই অসাধারণ হয়, ছোট বউ চিনলে না তো!”
কবিকন্যা মীরার ভাষায়, “বাবা নতুন নতুন গান তৈরি করে তখনই দিনুকে (দিনেন্দ্রনাথ) ডেকে পাঠাতেন, পাছে সুর ভুলে যান।” জ্যোতিরিন্দ্রনাথের কাছে কবি স্বীকার করেছিলেন, “আমার মুশকিল এই যে সুর দিয়ে আমি সব ভুলে যাই। দিনু কাছে থাকলে তাকে শিখিয়ে দিয়ে নিশ্চিন্ত মনে ভুলতে পারি।” অমল হোম, প্রমথনাথ বিশী, তেজেশচন্দ্র সেনের স্মৃতিচারণেও এমন ঘটনার অনুরণন আছে।
ইন্দিরা দেবীর ১৭ মার্চ ১৯৫০ তারিখের এক চিঠি থেকে জানা যায় “কবির শ্রীমুখনিঃসৃত প্রথম আদি শুদ্ধ সুর তাঁর জীবিতকালে নিজে রক্ষা করবার অর্থাৎ লিখিত রূপ দেবার সামর্থ্য তাঁর ছিল না। কারণ তাঁর মনেও থাকত না, স্বরলিপি করবার অভ্যাসও ছিল না।” স্বরলিপি করার অভ্যাস না থাকার কারণে বার বার তাঁকে পরনির্ভরশীল হতে হয়েছে— এ কথা যেমন সত্য, পাশাপাশি ইতিহাস এও বলছে, রবীন্দ্রনাথ স্বরলিপি নিজে হাতে করেছেন, স্বরলিপি করতে জানতেন। তবে অভ্যাস কখনও করেননি।
কোনও গীতিকার তাঁর গানের স্বরলিপি স্বয়ং করে থাকলে তার যুক্তিগ্রাহ্য প্রমাণ সম্পর্কে ভাবীকালের সংশয় থাকে না, কারণ যিনি গান লিখছেন, তিনিই সুর করছেন, স্বরলিপিও তাঁর করা। কিন্তু রবীন্দ্রনাথের গানের ক্ষেত্রে তা হয়নি বললেই চলে। এ ক্ষেত্রে স্বরলিপিকাররা যে হেতু স্বয়ং গন্ধর্বের কাছে গান কানে শুনে শিখেছেন তাই সেই শ্রুতিই এখানে প্রামাণ্য, লিপি ততটা নয়।
দীর্ঘ জীবনে রবীন্দ্রনাথ দুই সহস্রাধিক গান লিখেছেন। অথচ বিভিন্ন খণ্ডের স্বরবিতান বলে, কবির গানের স্বরলিপির সংখ্যা আঠেরোশোর আশপাশে। এর মধ্যে ৩৫ নং স্বরবিতানে ‘একি সত্য সকলি সত্য’ এই একটিমাত্র গানেরই কবিকৃত স্বরলিপি আছে। কবির প্রয়াণের পর এই স্বরলিপি প্রসঙ্গে ‘বিশ্বভারতী’ পত্রিকার ১ম বর্ষ ২য় সংখ্যায় ইন্দিরা দেবীর স্মৃতিচারণ স্মর্তব্য: “পূজনীয় রবীন্দ্রনাথের স্বহস্তে লিখিত এই স্বরলিপিটি আমার কাছে এতদিন ছিল। আজ লোকচক্ষু সমক্ষে তাকে বার করলুম এইজন্য যে আমার বিশ্বাস, এইটি তাঁর করা একমাত্র স্বরলিপি।” এই দাবির স্বপক্ষে বললেন, “অন্যান্য যেসব পুরনো গানের বইয়ে স্বরলিপিকার বলে তাঁর নাম রয়েছে দেখতে পাই, সেগুলি তাঁর নিজের হাতে করা কিনা সেই বিষয়ে আমার বিশেষ সন্দেহ আছে।” এই সন্দেহের পিছনে তাঁর যুক্তি, “অন্তত কলকাতা বাসকালে আমরা তাঁকে কখনো স্বরলিপি করতে দেখেছি বলে তো মনে পড়ে না। শান্তিনিকেতনের অধিবাসীরাও বোধহয় এ সম্বন্ধে অনুরূপ সাক্ষ্যই দেবেন।” ইন্দিরা দেবীর কাছে কবিকৃত স্বরলিপির সন-তারিখ ছিল না, যদিও তিনি এর বিশেষ আবশ্যকতা আছে বলেও মনে করেননি। তবে পাশাপাশি জানিয়েছেন কাগজটি বহু দিনের এবং এর মলিনতা ও দুরবস্থা তার প্রমাণ। সেই বয়ানে এ কথাও আছে, “আধুনিক স্বরলিপিজ্ঞগণ দেখে কৌতুক বোধ করতে পারেন যে কবি মামুলি আকারমাত্রিক স্বরলিপির সংকেত মেনে চলেননি।” তাঁর মতে সেটি কবির স্বভাবসিদ্ধ স্বকীয়তাবশত অথবা তখন আকারমাত্রিক পদ্ধতির শৈশব অবস্থা ছিল বলেই ঘটেছে।
ইন্দিরা দেবীর কাছ থেকে পাওয়া এই একটিমাত্র গানের স্বরলিপিই যে কবিকৃত, তা নিয়ে দ্বিমত নেই। প্রশ্ন, সত্যিই কি কবি তাঁর একটিমাত্র গানেরই স্বরলিপি লিখেছিলেন? দেখে নেওয়া যাক ‘একি সত্য’ গানটি রচনার প্রেক্ষাপট। ১৮৯৭, সেপ্টেম্বর। রবীন্দ্রনাথ শিলাইদহে। ২১ থেকে ২৮ তারিখে নদী ও রেলপথে ১৪টি গান লিখেছিলেন। পতিসর থেকে ২৮ তারিখ রেলপথে কলকাতা রওনা হন, সে দিনই রেলপথে ‘একি সত্য সকলি সত্য’ গান লেখা। এই যাত্রাকালেই জানা যায়, ১৪টি গানের মধ্যে ২৫ সেপ্টেম্বর (১০ আশ্বিন, ১৩০৪) লেখা অন্যতম গান ‘বঁধু মিছে রাগ কোরো না’। এই গানটি জ্যোতিরিন্দ্রনাথ সম্পাদিত ‘বীণাবাদিনী’র ১৩০৪ সনের কার্তিক সংখ্যায় স্বরলিপি-সহ মুদ্রিত হয়। আশ্চর্যের বিষয়, পত্রিকায় গানটির স্বরলিপিকারের নাম রবীন্দ্রনাথ। ‘বীণাবাদিনী’র কার্তিক সংখ্যাতেই রবীন্দ্রনাথের আরও একটি গান স্বরলিপি-সহ ছাপা হল, ‘অয়ি ভুবন-মনোমোহিনী’। সে গানের স্বরলিপি ছাপা হল অবশ্য সরলা দেবীর নামে।
জানা যায়, জ্যোতিরিন্দ্রনাথের সম্পাদনায় ১৩০৪ ও ১৩০৫, এই দু’টি বছর ‘বীণাবাদিনী’ মাসিক পত্রিকা তৎকালীন বিখ্যাত সঙ্গীতযন্ত্র বিক্রেতা সংস্থা ডোয়ার্কিন অ্যান্ড সন্স-এর পৃষ্ঠপোষকতায় প্রকাশিত হয়েছিল। এ দিকে উনিশ শতকের শেষার্ধে দ্বিজেন্দ্রনাথ ও জ্যোতিরিন্দ্রনাথ প্রবর্তিত আকারমাত্রিক রীতির স্বরলিপির সাহায্যে সঙ্গীত সংরক্ষণ চালু হয়েছিল। আকারমাত্রিক স্বরলিপি প্রচলনের তখন শৈশ। হতেই পারে, এই নতুন পদ্ধতির স্বরলিপিতে রবীন্দ্রনাথ ইচ্ছে করেই শিক্ষানবিশির ভূমিকা পালন করতে প্রবাসে লেখা গানটির স্বরলিপি লিখেছিলেন। এই পত্রিকায় রবীন্দ্রনাথের লেখা তিরিশের বেশি গান স্বরলিপি-সহ ছাপা হয়। ‘বীণাবাদিনী’-তে প্রকাশিত বিভিন্ন গানের স্বরলিপিতে দেখা যায় আকারমাত্রিক স্বরলিপির সঙ্কেত কিছু গানের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত, কিছু গানের ক্ষেত্রে বর্জিত। রবীন্দ্রগানগুলির ক্ষেত্রেও এই তারতম্যের ব্যতিক্রম ঘটেনি।
‘বঁধু মিছে রাগ কোরো না’ গানটির স্বরলিপি কি সত্যিই রবীন্দ্রনাথ করেছিলেন? তার ঠিক দু’দিন পর ২৮ সেপ্টেম্বর লেখা ‘একি সত্য সকলি সত্য’ গানটির স্বরলিপিকার রবীন্দ্রনাথ, দাবি ইন্দিরা দেবীর। লক্ষ করলে বোঝা যায়, এই দু’টি গানের স্বরলিপি লেখার ধরনে অদ্ভুত মিল, যতিচিহ্নের ব্যবহার হুবহু এক। অর্থাৎ দু’টি গানের স্বরলিপিতেই গানের ছন্দোরীতি বজায়ের স্বার্থে বার বার ‘কমা’র ব্যবহার করা হয়েছে। যদিও ‘বীণাবাদিনী’তে প্রকাশিত অন্যান্য গানের কয়েকটি স্বরলিপিতেও এটা দেখা গিয়েছে। এখানে মনে রাখার বিষয় এই, কবি কিন্তু তখনও শান্তিনিকেতনে ব্রহ্মচর্যাশ্রম শুরু করেননি। পরবর্তী সময়ে শান্তিনিকেতনে সঙ্গীতভবন প্রতিষ্ঠার পর নানা গুণিজনের কাছে আবেদন করেছেন স্বরলিপি লেখার পদ্ধতি নিতে। তাই শান্তিনিকেতন-পর্বে দিনেন্দ্রনাথ থেকে অনাদিকুমার দস্তিদার, রমা কর মজুমদার, সুধীর কর, সুশীলকুমার মজুমদার, শান্তিদেব ঘোষ, শৈলজারঞ্জন মজুমদার প্রমুখের উপর স্বরলিপি রচনার ভার দিয়ে তিনি গান রচনায় মগ্ন থাকতে পেরেছিলেন। আবার কলকাতায় থাকাকালীন গান রচনা পূর্ণোদ্যমে করতে পেরেছিলেন জ্যোতিরিন্দ্রনাথ, প্রতিভা দেবী, সরলা দেবী, ইন্দিরা দেবী, দিনেন্দ্রনাথ, কাঙালিচরণ সেন, সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর স্বরলিপি করার দায়িত্ব দিয়ে। কলকাতা ও শান্তিনিকেতনে কবিকে স্বরলিপি লিখতে না দেখার এটাও একটা কারণ হতে পারে। কিন্তু উপরে বলা দু’টি গানই যে হেতু শিলাইদহ পর্বে লেখা, মেনে নিতে অসুবিধে হয় না যে তিনি নিজেই আকারমাত্রিক স্বরলিপি দু’টি স্বেচ্ছায় লিখে থাকতে পারেন।
একাধিক পত্রিকায় রবীন্দ্রকৃত স্বরলিপি তাঁর জীবদ্দশায় মুদ্রিত হয়েছিল। যেমন শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সম্পাদিত ‘সঙ্গীত বিজ্ঞান প্রবেশিকা’ পত্রিকা। ১৩৩১-এ পত্রিকার প্রথম সংখ্যায় রবীন্দ্রনাথের ১৩০২ সনে লেখা ঝিঁঝিট রাগে বাঁধা ‘পাদপ্রান্তে রাখ সেবকে’ গানের স্বরলিপি প্রকাশিত হয়। তাতে দেখা যাচ্ছে স্বরলিপিকার স্বয়ং গন্ধর্ব। গানটি কোনও ইংরেজি গানের সুর অবলম্বনে রচিত। এই সংখ্যাতেই রবীন্দ্রনাথের দশটি গানের স্বরলিপি প্রকাশিত হয়, বাকি ন’টি গানের স্বরলিপি কবিকৃত নয়।এ ক্ষেত্রে বলার: রবীন্দ্রনাথ নিশ্চয়ই তাঁর নামে প্রকাশিত স্বরলিপিগুলো সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিলেন, বিশেষ করে নামী পত্রিকার ক্ষেত্রে তো বটেই। যদি তা সত্য না হয় তবে এ সব জেনেও তিনি কখনও প্রতিবাদ করেননি, তা অবিশ্বাস্য।
এ ছাড়া ‘রবীন্দ্রসংগীত-স্বরলিপি: প্রকাশনা ও সম্পাদনার ইতিবৃত্ত’ শীর্ষক রচনায় প্রফুল্লকুমার দাস জানিয়েছেন, আদি ব্রাহ্মসমাজের সঙ্গীতাচার্য সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়কে রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতনে ডেকে নিয়েছিলেন। দ্রুত স্বরলিপি লিখতে জানেন শুনে কবি সুরেন্দ্রনাথকে বলেছিলেন, তিনি গাইবেন আর সুরেন্দ্রনাথ শুনে যেন কাগজে স্বরলিপি লেখেন। এও বলেছিলেন, “আমি যে গানটা গাইব এই কাগজে তার কথাগুলোর উপর অনেকগুলো স্বর লিখে এগিয়ে রেখেছি।” সে দিন কবির দশ-বারোটি গানের স্বরলিপি এ ভাবে তৈরি করেন সুরেন্দ্রনাথ। এখানে লক্ষণীয়, ‘কথাগুলোর উপর স্বর লিখে’ রাখার ক্ষমতা তাঁর দখলেই ছিল। এমন ভাবে স্বর লিখে রাখার কথাও জানা যায় স্বরবিতান ৩২ খণ্ডে। ‘ওহে সুন্দর মম’ গানের স্বরবিন্যাস রবীন্দ্রকৃত বলে উল্লিখিত।
যদিও জীবনের নানা সময়ে ভ্রমণকালে বা প্রবাসে অনেক গানই লিখেছিলেন, সুর করেছিলেন, কিন্তু সুর করে সুর ভুলে যাওয়ার প্রবণতা থাকা সত্ত্বেও সেই সব গানের স্বরলিপি কী ভাবে লেখা হয়েছিল তার প্রামাণ্য তথ্য নেই। হতে পারে তিনি গানের স্বরবিন্যাস করে রাখতেন।
রবীন্দ্রনাথ যে ‘নোটেশন’ করতে জানতেন, সে তথ্যের সন্ধান মেলে মোহনলাল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘গগনেন্দ্রনাথ’ গ্রন্থেও। ১৯০৪-এর ১৩ মার্চ জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে গগনেন্দ্র-পুত্র গেহেন্দ্রের বিয়েতে মহাধুমধাম হয়। নানা বাদ্যির ব্যবস্থা করেন গগনেন্দ্র। তখনকার দিনের প্রখ্যাত পতুর্গিজ সাহেব লোবোর ব্যান্ড এসেছিল বাজাতে। লোবোকে ডেকে গগনঠাকুর জিজ্ঞেস করেছিলেন, রবিঠাকুরের গান বাদ্যযন্ত্রে বাজাতে পারবেন কি না। লোবো বলেছিলেন, নোটেশন করে দিলেই বাজানো যাবে। ভাইপো গগন ধরেন রবিকাকাকে, রবীন্দ্রনাথ সব শুনে খানিক ভেবে “এই দুটো গান নাও তো। এর নোটেশন আমিই লিখে দেব” বলে, ‘শান্ত হ রে মম চিত্ত নিরাকুল’ ও ‘শান্তি করো বরিষণ নীরব ধারে’ বেছে দেন। তবে শুধু নোটেশন লিখে দিলেই তো হবে না, নানা যন্ত্রের মাধ্যমে বাজাতে দরকার তাকে হারমোনাইজ় করাও। রবীন্দ্রনাথ নোটেশন লেখার পর সে দিন ইন্দিরা দেবী সেগুলি হারমোনাইজ় করেছিলেন। পরে লোবোর দল গেহেন্দ্রের বিয়েতে নানা বাদ্যযন্ত্রে বাজিয়েছিল গান দু’টি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy