Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪
ছোটগল্প

আপৎকালীন

যে কথাটা লেখা নেই তা হল, পার্টির ঝান্ডা ধরে টানা সাত বছর বেগার খাটার পরে একটি টাকাও পকেট থেকে বের না করে শিবু এই অ্যাম্বুল্যান্সের মালিক হয়েছে।

ছবি: সৌমেন দাস

ছবি: সৌমেন দাস

ইন্দ্রনীল সান্যাল
শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

কদমতলা সরকারি হাসপাতালের ওয়ার্ড বয় পঞ্চু মোবাইলে অ্যাম্বুল্যান্সের ড্রাইভার শিবু মণ্ডলকে বলল, ‘‘সার্জারি ওয়ার্ডের অজিত পণ্ডার ব্রেনে ক্যানসার। ডাক্তার কলকাতায় রেফার করেছে। অজিতের বউ মিনু গয়না বন্ধক রেখে এক লাখ টাকা জোগাড় করেছে। কলকাতায় যাওয়ায় জন্য অ্যাম্বুল্যান্স লাগবে।’’

শিবু মণ্ডল অ্যাম্বুল্যান্স চালায়। গাড়ির গায়ে বড় বড় করে লেখা রয়েছে, ‘মেম্বার অফ পার্লামেন্ট, মাননীয় শ্রী অশোক তলাপাত্রর আর্থিক আনুকূল্যে এই অ্যাম্বুল্যান্স প্রদান করা হইল।’ লেখা আছে, ‘অক্সিজেনের সুবন্দোবস্ত আছে।’ লেখা আছে, ‘সংক্রামক রোগের জন্য নহে।’ লেখা আছে ‘শীততাপনিয়ন্ত্রিত।’

যে কথাটা লেখা নেই তা হল, পার্টির ঝান্ডা ধরে টানা সাত বছর বেগার খাটার পরে একটি টাকাও পকেট থেকে বের না করে শিবু এই অ্যাম্বুল্যান্সের মালিক হয়েছে।

সদ্য শ্রাবণ মাস পড়েছে। কদমতলা হাসপাতালের পাঁচিলে হালান দিয়ে ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যে বিড়ি টানছিল শিবু। পঞ্চুর ফোন কেটে বিড়ি ফেলে সার্জারি ওয়ার্ডের দিকে এগোল।

শিবুর বয়স চল্লিশ। বাড়িতে দজ্জাল বউ আছে, যার নাম মনোরমা। আছে পাঁচ বছরের মিষ্টি একটা মেয়ে। নাম পরি। শিবুর আদরের পরি। তিন জনের সংসার হলেও শিবুকে চারজনের খোরাকি জোটাতে হয়। স্টেশন রোডের মেয়েপট্টির মালতীর সঙ্গে সপ্তাহে একটা রাত কাটায় সে।

মালতীর কথা মনোরমা জানে। এই নিয়ে বাড়িতে যাচ্ছেতাই অশান্তি লেগেই আছে। থেকে থেকেই সে রাগ করে পরিকে নিয়ে বসিরহাটের বাপের বাড়ি পালায়। গত এক হপ্তা মা-মেয়ে বসিরহাটেই আছে। কবে ফিরবে খোদায় মালুম। ফোন-টোনও করে না। মালতীর কাছে রোজ নাইট ডিউটি দিচ্ছে শিবু। ভালই লাগছে। একটাই খিঁচ। একরত্তি পরির টুলটুলে মুখ, এক ঢাল চুল, টানা-টানা চোখ দেখতে না পেলে মনের মধ্যে আনচান করে। মেয়েটাকে জড়িয়ে ধরে চুমু খাওয়ার সময়ে গা থেকে দুধের গন্ধ আসে। সেইটা নাকে এলে কী যে শান্তি!

দু’টো মেয়েমানুষ পুষতে গেলে পকেটের জোর লাগে। শীতকালে শিবুর অ্যাম্বুল্যান্স ব্যবসা ডাউন থাকে। শীতকালে রোগবালাই কম হয় বলে কদমতলা হাসপাতাল থেকে কলকাতায় রুগি রেফার কম হয়। মাসে দু’টো কি তিনটে। ব্যবসা জমে গ্রীষ্ম আর বর্ষায়। সাপের কামড়, পেট খারাপ থেকে অজানা জ্বর, ডেঙ্গি থেকে বাচ্চার খিঁচুনি...পুরো খাবলাখাবলি কেস!

কদমতলা থেকে কলকাতার দূরত্ব পঞ্চাশ কিলোমিটার। শিবুর রেট ফিক্সড। যাতায়াত মিলে পাঁচ হাজার টাকা। দরাদরির সিন নেই। মরণাপন্ন রুগির বাড়ির লোক দরদামে যায়ও না। হেল্‌থ বিজনেসে এই একটা সুবিধে। যমে মানুষে টানাটানির সময়ে কেউ টাকার চিন্তা করে না। বাড়ি বা গয়না বন্ধক দিয়ে টাকা জোগাড় করে মুরগাগুলো।

সার্জারি ওয়ার্ডের বাইরে পৌঁছে আজকের মুরগাকে দেখতে পেল শিবু। রোগাপাতলা, কেলোকুলো, বছর তিরিশের মিনু মোবাইলে কথা বলছে। চোখেমুখে দুশ্চিন্তা। ঝিরঝিরে বৃষ্টির মধ্যে মিনুর পাশে দাঁড়িয়ে শিবু বলল, ‘‘তোমার নাম মিনু? আমাকে ওয়ার্ড বয় পঞ্চু পাঠাল। অজিত পণ্ডার কী হয়েছে?’’

মিনু ফোন কেটে বলল, ‘‘তুমিই শিবু? অ্যাম্বুল্যান্স ড্রাইভার?’’

‘‘আজ্ঞে হ্যাঁ,’’ হাতজোড় করল শিবু। এই সব কায়দা করে মুরগার বিশ্বাস অর্জন করতে হয়।

মিনু বলল, ‘‘ক’দিন ধরে ওর মাথাব্যথা করছিল। আজ ভোরে অজ্ঞান হয়ে গেল। এখানে ভর্তি করার পরে মাথার ছবি নিয়েছে। সেটা দেখে ডাক্তার বলেছে, কলকাতার হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। এখানে ওই রোগের চিকিচ্ছে হয় না।’’ ‘ওই রোগ’ কথাটা বলার সময়ে ঝরঝর করে কেঁদে ফেলল মিনু।

অজিত এমনিও মরবে, অমনিও মরবে। মরার আগে মিনুকে একগলা জলে ফেলে যাবে। গয়না বন্ধক দিয়ে এক লাখ টাকা তুলেছে। এর পরে বাড়ি আর জমি বন্ধক দিয়ে বাকি টাকার জোগাড় করতে হবে। পাঁচভূতে লুটে নেওয়ার আগে শিবু তার হিস্‌সা বুঝে নিতে চায়। দু’টো মেয়েমানুষ পোষা কি মুখের কথা?

মুরগা জবাই করার আগে কাজের কথাগুলো জেনে নিতে হবে। শিবু জিজ্ঞেস করল, ‘‘তুমি একা কেন? শ্বশুরবাড়ির লোকজন কোথায়?’’

মিনু কাঁদো-কাঁদো গলায় বলল, ‘‘অন্য জাতের সঙ্গে লাভ ম্যারেজ করেছি। আমাদের দু’জনের বাবা-মা’ই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন না।’’

শিবুর যা জানার জানা হয়ে গিয়েছে। সে বলল, ‘‘অ্যাম্বুল্যান্সের রেট পাঁচ হাজার টাকা। যাবে তো বলো।’’

‘‘পাঁচ হাজার!’’ মিনু আঁতকে উঠেছে, ‘‘আমার কাছে অত টাকা নেই।’’

‘‘আমি তা হলে চললাম,’’ উলটো দিকে হাঁটা দিয়েছে শিবু। সে জানে মিনু ডাকবে। ডাকবেই। মুরগা ফাঁসবে। ফাঁসবেই।

‘‘শোনো!’’ মরিয়া আহ্বান মিনুর, ‘‘আমি যাব।’’

‘‘এখানকার ডাক্তারের লিখে দেওয়া সবুজ কাগজটা নিয়ে এমার্জেন্সির সামনে এস। পঞ্চু ট্রলিতে করে অজিতকে আনবে। আমি অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে আসছি।’’

******

ন্যাশনাল হাইওয়ে দিয়ে ছুটছে অ্যাম্বুল্যান্স। এত জোরে বৃষ্টি হচ্ছে যে ওয়াইপার কাজ করছে না। এসি চলছে পুরোদমে। পিছনের সিটে শুয়ে আছে অজ্ঞান অজিত। মিনু তার পাশে বসে। পনেরো কিলোমিটার নিঃশব্দে গাড়ি চালানোর পরে শিবু বলল, ‘‘কদমতলা হাসপাতালের কোন ডাক্তার দেখেছে?’’

মিনু বলল, ‘‘মল্লিক ডাক্তার।’’

মিনুর উত্তর না শুনেই শিবু পেটেন্ট কথাটা বলল, ‘‘ডাক্তারটা মহা ফাঁকিবাজ। সব কেস কলকাতায় রেফার করে দেয়।’’

শিবুর মোবাইল বাজছে। কে ফোন করছে দেখে নিল শিবু। মল্লিকবাজারের ‘জীবনরেখা নার্সিং হোম’-এর মালিক বিনয় গুছাইতের ফোন। কলকাতার আশেপাশের জেলা থেকে যত রুগি কলকাতায় রেফার হয়, তার বেশির ভাগই চলে যায় জীবনরেখায়। নিয়ে যাওয়ার দায়িত্বে শিবু এবং তার মতো কিছু অ্যাম্বুল্যান্স ড্রাইভার, যারা বিনয়ের নিজস্ব বাহিনী হিসেবে কাজ করে। রোগী পৌঁছে দেওয়ার পরে বাকিটা জীবনরেখার কর্মচারীরা বুঝে নেয়। পেশেন্ট গ্যারাজ করার কমিশন পাঁচ হাজার টাকা। কাজেই মুরগা-পিছু শিবুর রোজগার আসলে দশ হাজার টাকা। মনোরমা অবশ্য এই চক্করের কথা জানে না।

কাজটা করতে হয় সাবধানে। কলকাতার সরকারি হাসপাতালে যাওয়ার জন্য যাত্রা শুরু করে হঠাৎ নার্সিং হোমে ঢুকে গেলে রুগির বাড়ির লোক সন্দেহ করবে। মাছ তাই খেলিয়ে তুলতে হয়। শিবুর গেম প্ল্যান ছকা আছে। পঞ্চাশ কিলোমিটার জার্নির প্রথম পনেরো কিলোমিটার সে কোনও কথা বলে না। রুগির বাড়ির লোকেদের কথা শুনে বোঝার চেষ্টা করে এদের পকেটের জোর কদ্দুর, পালের গোদা কে, কতটা পলিটিকাল কানেকশন আছে। পনেরো কিলোমিটার পেরনোর পরে প্রশ্ন করে, ‘‘কদমতলা হাসপাতালের কোন ডাক্তার দেখেছে?’’ ডাক্তারের নাম যাই হোক না কেন, শিবুর উত্তর একটাই, ‘‘ডাক্তারটা মহা ফাঁকিবাজ। সব কেস কলকাতায় রেফার করে দেয়।’’

পরের কুড়ি কিলোমিটার জুড়ে শিবুর সঙ্গে রুগির বাড়ির লোকের প্রাণখোলা কথা হয়। শেষ পনেরো কিলোমিটার আবার শিবু চুপ করে যায়।

এখনও পর্যন্ত সব কিছু প্ল্যানমাফিক এগোচ্ছে। কাজের মধ্যে ফোন এলে খুব বিরক্ত লাগে! কিন্তু এই ফোনটা ধরতেই হবে।

মোবাইল কানে দিয়ে শিবু শুনতে পেল বিনয়ের ঘ্যাড়ঘ্যাড়ে কণ্ঠস্বর, ‘‘এই মাসে তোর কেস কম আসছে। অন্য কোথাও মুরগা পাঠাচ্ছিস না কি?’’

শিবু বলল, ‘‘কী বলছেন স্যর? আপনি ছাড়া আমাদের কে আছে বলুন? এখন ও দিকেই যাচ্ছি।’’

‘‘ভাল কথা। পৌঁছে ফোন করিস।’’ বিনয় লাইন কেটে দিয়েছে।

মিনু বলল, ‘‘কদমতলা হাসপাতালে এই রোগের চিকিচ্ছে হত?’’

‘‘সব কিছুই সব জায়গায় হয়। শুধু ঠিক লোককে ধরতে হয়। না হলে অজিতকে দিনের পর দিনে বেডে ফেলে রেখে দেবে।’’

আবার শিবুর মোবাইল বাজছে। এ বারে ফোন করেছে মনোরমা। দজ্জাল বউটার লাইন কেটে শিবু মুখস্থ করা লাইনগুলো বলল, ‘‘কলাবেড়িয়ার মিশ্রদের চেনো তো? ওদের বাড়ির মেজবউমা গত সপ্তাহে বিষ খেয়েছিল। আমার অ্যাম্বুল্যান্সেই কলকাতার সরকারি হাসপাতালে এল। তিন দিন বিনা চিকিচ্ছেয় পড়ে থেকে মরে গেল।’’

মিনু কাঁদছে।

শিবু বলল, ‘‘তবে সব ডাক্তার ও রকম কসাই নয়। ভাল লোকও আছে। দু’হপ্তা আগে তেঁতুলখালির খাটুয়াদের বড় ছেলেকে কলকাতার জীবনেরেখা নার্সিং হোমে নিয়ে গেলাম। জাতসাপে কেটেছিল। নার্সিং হোমের ডাক্তার ভাল ছিল বলে ছেলেটা বেঁচে গেল। গত কালই ওর সঙ্গে
দেখা হল। আমাকে বলল, ‘দাদা, জীবনরেখায় না গেলে অ্যাদ্দিনে আমার বউটা সাদা শাড়ি পরে নিরিমিষ খেত।’’

কুড়ি কিলোমিটার পেরিয়ে গিয়েছে। শিবুর বক্তব্য শেষ। সে চুপ করে গেল। সিদ্ধান্ত যা নেওয়ার, মিনুকেই নিতে হবে।

মনোরমা আবার ফোন করছে। রাগের চোটে ফোন অফ করে দিল শিবু। এখন কোনও ডিস্টার্বেন্স নয়। মিনুর মধ্যে ভয় পাকাপাকি ভাবে চেপে না বসলে ও সিদ্ধান্ত বদলাবে না।

দ্বিতীয় হুগলি সেতুর টোল প্লাজা পেরনোর পরে মিনু জিজ্ঞেস করল, ‘‘জীবনরেখায় ভর্তি করলে কি অনেক খরচ হবে?’’

‘‘কত খরচ হবে কী করে বলব? তবে তোমার বর বেঁচে ফিরবে।’’

আবার নীরবতা। শিবুর অভিজ্ঞতা বলছে, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল টপকানোর আগেই মিনু সিদ্ধান্ত নেবে। যে, পিজি না জীবনরেখা!

ব্রিজ শেষ। বৃষ্টিতে চারিদিক ঝাপসা। বাঁ-পাশে ভিক্টোরিয়ার পরি চুপটি করে ভিজছে। সামনেই এক্সাইডের ক্রসিং।

মিনু বলল, ‘‘জীবনরেখায় চলো।’’

অ্যাক্সিলারেটার দাবিয়ে পিজি হাসপাতাল পেরিয়ে গেল শিবু।

******

বেকবাগানে এসে মোবাইল অন করল শিবু। বিনয়কে ফোন করে বলল, ‘‘এসে গিয়েছি স্যর। আর পাঁচ মিনিট। পেশেন্ট খুব গরিব। একটু দেখবেন।’’

‘‘তোর হিসেব বুঝে নিয়ে কেটে পড়িস,’’ বলল বিনয়, ‘‘এটা কী কেস?’’

‘‘পেশেন্ট আমাদের ওখানকার নামকরা পুরোহিত। ব্রেনে ক্যানসার হয়েছে।’’

কথা বলতে বলতে শিবু খেয়াল করল মনোরমা আবার ফোন করছে। উফ! কাজের সময় হারামজাদি বউটা কেন যে বিরক্ত করে! পাত্তা দিল না শিবু। বিনয় বলছে, ‘‘এখানে ওই সবের ট্রিটমেন্ট হয় না। পাঁচ দিন আইসিইউতে রেখে হাসপাতালে গ্যারেজ করে দেব। পার্টি পরে বাওয়াল করবে না তো?’’

উফ! আবার মনোরমা ফোন করেছে। শিবু ফোনে ব্যস্ত, তা-ও রিডায়াল করে যাচ্ছে। বউটা মরে না কেন!

শিবু বিনয়কে বলল, ‘‘সে সব নিয়ে চিন্তা করবেন না স্যর। এরা আমার নিজের লোক।’’ তার পর বিনয়ের ফোন কেটে মনোরমাকে ফোন করল।

মনোরমা ফোনে হাহাকার করে উঠল, ‘‘ওগো! তুমি কোথায়? ফোন বন্ধ রেখেছ কেন? পরিকে কালচিতি কামড়েছে। জাতসাপ!’’

‘‘কী বললে?’’ চিৎকার করে ওঠে শিবু, ‘‘কখন হয়েছে? এখন কেমন আছে?’’

“আজ ভোরে কামড়েছে। বসিরহাট হাসপাতালের ডাক্তার বলেছে সাপের বিষের ইঞ্জেকশনে কাজ হচ্ছে না। ওকে ‘ডায়ালিস’ করার জন্য কলকাতায় নিয়ে যেতে হবে।”

পরির ডায়ালিসিস হবে? বর্ষার মরশুমে অজস্র সাপে কাটা রুগিকে শিবু কলকাতার হাসপাতালে নিয়ে আসে। বেশির ভাগের কী পরিণতি হয় তা তার জানা।

‘‘তুমি এখন কোথায়?’’ মোবাইলে চ্যাঁচাচ্ছে শিবু।

‘‘বসিরহাটের এক দাদার অ্যাম্বুল্যান্সে কলকাতায় আসছি। দাদা বলছে হাসপাতালে বেড পাওয়া যাবে না। ওঁর চেনা ভাল নার্সিং হোম আছে। সেখানে যাচ্ছি।’’

‘‘তুমি কোথাও যাবে না। সোজা পিজি হাসপাতালে এস।’’ ফোনে কথা বলতে বলতে শিবু দেখল মল্লিকবাজার এসে গিয়েছে। বাঁ দিকে জীবনরেখা নার্সিংহোম। মুরগা রিসিভ করবে বলে বিনয়ের স্যাঙাতরা ছাতা মাথায় ফুটপাতে দাঁড়িয়ে।

ট্রাফিক পুলিশের চোখরাঙানি অগ্রাহ্য করে ইউ টার্ন নিয়েছে শিবু। দৌড়চ্ছে পিজি হাসপাতালের দিকে। মোবাইলে চ্যাঁচাচ্ছে, ‘‘অ্যাম্বুল্যান্সের ড্রাইভারকে ফোনে কথা বলাও। এক্ষুনি!’’

মনোরমা ফোঁপাচ্ছে আর বলছে, ‘‘দাদা বলছে গাড়ি চালানোর সময়ে কথা বলবে না। ওগো! পরির যে চোখ উলটে যাচ্ছে!’’

রিয়ারভিউ মিররে শিবু দেখতে পাচ্ছে, বিনয়ের স্যাঙাতরা বাইক নিয়ে তার অ্যাম্বুল্যান্সকে ধাওয়া করেছে। মিনু পিছন থেকে বলছে, ‘‘তুমি জীবনরেখায় যাবে না? আমরা তো পেরিয়ে এলাম!’’

শিবুর অ্যাম্বুল্যান্স পিজি হাসপাতালের দিকে দৌড়চ্ছে। ফোন কেটে স্টিয়ারিং-এ কপাল ছোঁয়াল শিবু। ভগবানকে বলল, ‘‘আজ আমি অজিতের জন্য জান লড়িয়ে দেব। তার বদলে পরিকে বাঁচিয়ে দাও ভগবান... দয়া করো... ভগবান!’’

অন্য বিষয়গুলি:

Story Short Story
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy