Advertisement
E-Paper

চুয়ান্ন

এনার সঙ্গে পুঁটির বার বার ব্রেকআপ হওয়ার ঘটনা ওর অজানা নয়। সেই নিয়ে পুঁটিকে নানা কথা শোনায় ও।

ছবি: অমিতাভ চন্দ্র

ছবি: অমিতাভ চন্দ্র

স্মরণজিৎ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০২০ ০০:২৪
Share
Save

পূর্বানুবৃত্তি: পুঁটির অফিস পণ্ডিতিয়া রোডে। লেক প্লেসে ওদের বাড়ি। ওর বাবারা তিন ভাই। ওঁরা তিন জন মিলে তিরিশ বছর আগে শুরু করেছিলেন প্রোজেক্টের ব্যবসা। এখন ব্যবসা ফুলেফেঁপে উঠেছে। সেখানেই পুঁটি কনিষ্ঠ কর্মী। তিন তলা অফিসের একদম উপরতলার এক প্রান্তে ওর বসার জায়গা। ওর সঙ্গে একই ঘরে বসে কাজ করে ওর এক সময়ের সহপাঠী রিজু। এনার সঙ্গে পুঁটির বার বার ব্রেকআপ হওয়ার ঘটনা ওর অজানা নয়। সেই নিয়ে পুঁটিকে নানা কথা শোনায় ও। রিজুর কথায় পাত্তা না দিয়ে নিজের কাজে ডুবে যায় পুঁটি।

বিনয়কাকা অফিসের পিওন। বাবার খাস লোক। অনেক দিন ধরে আছে আমাদের এখানে। আমাকে সেই ছোট্ট থেকে দেখেছে। আমি কাকা বলেই ডাকি।

বিনয়কাকা বলল, ‘‘বাবু, তোমায় দাদা ডাকছে। চলো।’’

বাবা ডাকছে। হ্যাঁ, তা ডাকতেই পারে। দু’টো ফাইল পাঠানো হয়েছে আমার কাছে। ক্লায়েন্টকে কোটেশন পাঠাতে হবে। সেই কারণেই নিশ্চয়ই ডাকছে।

আমি উঠে ঘর থেকে বেরোতে বেরোতে দেখলাম, রিজু খুব মন দিয়ে কম্পিউটার স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে আছে। বুঝলাম নিশ্চয়ই ফেসবুক করছে। কারণ এত মন দিয়ে ও কাজ করে না।

বাবা, জেঠু আর ছোটকার ঘর তিনটে দোতলায়, সিঁড়ি থেকে নেমে করিডরের একদম অন্য দিকে। বাবার ঘরটা রাস্তার পাশে। ভিতরটা সুন্দর করে সাজানো। বোন এসে সাজিয়ে দিয়েছে। বোন মানে তিতি, ছোটকার মেয়ে। ইলেভেনে পড়ে। বাড়িতে বাবার ফেভারিট। আমার চেয়ে এত ছোট একটা মেয়ে, কিন্তু হাবভাব এমন যেন আমার চেয়ে দশ বছরের বড়। আমার বাবা গম্ভীর মানুষ। কিন্তু কী আশ্চর্য! তিতির কাছে একদম সহজ হয়ে থাকে।

বাবা বসেছিল বড় কাঠের টেবিলের ওই দিকে। সামনে একটা খাতা খোলা। পাশে ক্যালকুলেটর। আমায় দেখে মুখ তুলে তাকাল।

আমি একটা চেয়ার ধরে দাঁড়িয়ে রইলাম।

বাবার ভুরু কুঁচকে আছে, ‘‘দাড়ি কামাসনি কেন? এটা তোদের আড্ডাখানা না কি? অফিসের প্রোটোকল নেই কিছু?’’

আমি কিছু না বলে মাথা নামিয়ে নিলাম।

বাবা বলল, ‘‘একটা প্রোজেক্ট এসেছে। ‘মার্চেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজ়’ নামে একটা ব্রিটিশ ফার্ম এসেছে এখানে। ওরা গভর্নমেন্টের থেকে চারটে বড় প্রোজেক্টের কাজ পাচ্ছে। পাওয়ার প্লান্টের। আমাদের বলছে দু’টোর জন্য কোটেশন জমা দিতে। কাজ দেবে, তবে অন্যদের চেয়ে প্রাইস কম হলে। পার্ক স্ট্রিটে বড় অফিস খুলেছে ওরা। কাল তুই যাবি ওখানে। ওদের ভাইস প্রেসিডেন্ট, ওয়ার্কস, মিস্টার বাগালের সঙ্গে দেখা করবি। কিছু পেপার্স দেবেন, উইথ সিডি। নিয়ে আসবি, প্লাস আলাপটাও সেরে আসবি। মাস দুয়েক তো অনেক কিছু শিখলি, এ বার তোকে অ্যাক্টিভলি কাজে ঢুকতে হবে। রিজুকে নিয়ে যাবি। আর দরকারে আমি বা তোর ছোটকা তো আছিই। বুঝলি?’’

আমি মাথা নাড়লাম। তার পর বেরিয়ে যাব বলে পিছন ফিরলাম।

বাবা বলল, ‘‘ঠিক ভাবে যাবি। এ ভাবে জিন্স পরে যাবি না কিন্তু।’’

ঘর থেকে বেরিয়ে আবার নিজের ঘরের দিকে এগোতে গেলাম আর ঠিক তখনই শুনলাম গলাটা, ‘‘পুঁটি, তোকে ফোনে পাচ্ছি না কেন রে? আবার ফোন হারিয়েছিস তুই?’’

আমি নিজের মনে মাথা নেড়ে চোখ বন্ধ করে দাঁড়িয়ে পড়লাম। সর্বনাশ! যা ভয় করছিলাম, সেটাই হয়েছে। নির্ঘাত আমাকে ফোনে না পেয়ে পাগলিটা চলে এসেছে অফিসে!

এখন আমি মনখারাপ করব? কাজ করব? না কি একে সামলাব! বেস্ট হবে ওকে ইগনোর করলে।

আমি মাথা ঘুরিয়ে দেখলাম ইংরেজি ‘টি’ আকারের করিডরের এক প্রান্তে, একতলা থেকে দোতলায় আসার সিঁড়ির মুখে হাতে লাল হেলমেট নিয়ে দাঁড়িয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে সাবু।

সাবু

সেই ফার্স্ট চ্যাপ্টারে আমার স্কুটিটাকে আপনারা দেখলেন লামাদাদুর বাড়িতে, আর এত ক্ষণে আমার কাছে আসার সময় হল আপনাদের? নিশ্চয়ই ওই পাগলটার কথা শুনছিলেন, না? ওর তো কথা শুরু হলে শেষই হতে চায় না! আর এখন তো আবার ডিপ্রেশন মোডে আছে। ফলে আরও বেশি বাজে বকবে।

বাবা বলে, বাবাদের সময়ে এ সব ডিপ্রেশন-টিপ্রেশন মানেই কেউ জানত না। সারা দিন স্কুল-কলেজ, তার পর ফুটবল, আড্ডা, বন্ধুবান্ধব— সব নিয়ে গোটা জীবনটা এমন ব্যস্ত ছিল যে, কেউ ভাবতেই পারত না মন আবার খারাপ হয় কখন!

হ্যাঁ, মনখারাপ যে হত না, তা নয়। রেজ়াল্ট খারাপ করলে, মা কষ্ট পেলে, প্রিয় টিম হারলে বা দুর্গাপুজো শেষ হয়ে গেলে মনখারাপ হত বইকি। কিন্তু সে সব আবার কেটেও যেত। এমন মনের মধ্যে ট্যাটু করে নিয়ে সারা ক্ষণ ঘুরে বেড়ানো মনখারাপটা সেই সময় ছিল না কিন্তু।

এখন দেখি সবার এমন মনখারাপ। পুঁটিরও। আজকাল সারা ক্ষণ মুখটা এমন করে রাখে যে, মনে হয় কেউ মুখের মধ্যে যেন উচ্ছে চাষ করেছে ওর। দেখলেই ইচ্ছে করে মাটিতে ফেলে পেটাই। পিটিয়েই যাই! এনা একটা মেয়ে? বাপের আদুরে মাথা খাওয়া একটা প্রাণী মাত্র। তার জন্য কেউ এমন করে!

‘‘আরে দিদি, ঠিক করে দাঁড়ান না!’’

পিছন থেকে একটা ধাক্কা এসে পড়ায় আমি একটু টলে গিয়েছিলাম। ট্রেনে প্রচণ্ড ভিড়। তার মধ্যে কিছু লোক মধ্যমগ্রামে নামবে বলে সিট ছেড়ে দরজার দিকে যাচ্ছে। সেই জন্য একটা ঠেলাঠেলি হচ্ছে।

আমি প্রাণপণে ব্যাগটাকে সামলে উল্টো দিকের গেটের দিকে সরে গেলাম। ও দিকটা তাও একটু ফাঁকা আছে। আমি নামব দমদম। সেখান থেকে মেট্রো করে এম জি রোড চলে যাব।

আমি গিয়েছিলাম অশোকনগর। সেখানে নেপালদার বাড়ি। নেপালদার মায়ের শরীর খুব খারাপ। তাই দেখতে গিয়েছিলাম। কাকিমা একাই থাকেন ওখানে। বেশ বয়স্ক মহিলা। দেখে কষ্ট হল।

নেপালদা আমাদের ‘ফুড ব্যান্ডিট’ সংস্থার হয়ে কাজ করে। এখন গিয়েছে নর্থ বেঙ্গল, মানে শিলিগুড়ি। তাই মায়ের শরীর খারাপের খবর পেয়ে নেপালদা আমায় বলেছিল যদি কাউকে পাঠানো যায়।

কাকে আবার পাঠাব! আমি নিজেই তাই চলে এসেছি। এমন খবর শোনার পরে নিজে না গেলে আমার শান্তি হত না।

মা রাগ করছিল আমি অশোকনগর ট্রেনে করে যাব শুনে। বলছিল, ‘‘নাও, বনের মোষ তাড়িয়ে বেড়াও! নিজের দিদিকে দেখেও কিছুই শিখলি না! এ সব করে জীবন যাবে তোর?’’

আমি কিছু বলি না মা-কে। কী হবে? আমাদের সফ্টওয়্যার আলাদা। কমপ্যাটিবল নয়। তাই মায়ের সঙ্গে তর্ক করে বেকার ব্যাটারি খরচ করি না আমি। মাকে বোঝানো আর গাজ়া স্ট্রিপের লড়াই থামানো একই রকম কঠিন।

বাবা অবশ্য কিছু বলে না আমায়। আসলে বাবা কাউকেই কিছু বলে না সে ভাবে। নিজের মতো থাকে। নিজের লেখা নিয়ে, বই নিয়ে সময় কাটিয়ে দেয়।

আজ মা বেশ চিৎকার করায়, বাবা আমার কাছে এসে চাপা গলায় বলেছিল, ‘‘সব কথা কি মাকে বলতেই হবে? তুই তো ভাল কাজেই যাচ্ছিস। সেটা না বললেই নয়!’’

আমি লুকোচুরি করতে পারি না। যেটা ঠিক সেটা বলব না কেন? সমস্যা কোথায়? অন্যায় তো কিছু করছি না!

তবে আস্তে আস্তে বুঝতে পারছি, জীবনে সব সময় সব কিছু ঠিক হয় না। কারণ ঠিক-ভুলগুলো মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী পাল্টে পাল্টে যায়।

দিদি খুব ভাল লেখাপড়ায়। ইংল্যান্ড থেকে ইংলিশে পিএইচ ডি করে এসে এখন এখানে কলেজে পড়ায়।

সামনের শীতে ওর বিয়ে। ওর বয়ফ্রেন্ড দীপ্যদা ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কার। বিশাল রোজগার। জাহাজের মতো একটা বড় গাড়ি নিয়ে আসে আমাদের বাড়িতে। আমাদের নর্থ কলকাতার সীতারাম ঘোষ স্ট্রিটের সরু গলিতে ঢোকে না সেই গাড়ি। তবু বড় রাস্তার উপর যখন পার্ক করে গাড়িটা, তখন আশপাশের সব একদা-উজ্জ্বল কিন্তু বর্তমানে-মৃতপ্রায় বাড়িগুলো কিছু ক্ষণের জন্য প্রাণ ফিরে পায়।

দীপ্যদা থাকে সল্ট লেক। ছুটির দিনগুলো আমাদের বাড়িতেই কাটায় বেশির ভাগ সময়। দেখে তো মনে হয়, দিদিকে ভালবাসে খুব। আর দিদিও বোধহয় ভালই বাসে। মানে দিদিকে আমি ঠিক বুঝি না বলেই ‘বোধহয়’ বললাম আর কী।

দীপ্যদা আমার কাজকে খুব অ্যাপ্রিশিয়েট করে। বলে, ‘‘তুমি ঠিক করেছ সাবু। মানুষের জন্য কাজ না করলে কী করে হবে?’’

আমাদের ‘ফুড ব্যান্ডিট’-কে মাঝে মাঝেই ভাল ডোনেশন দেয় দীপ্যদা। তবে দিদিকে লুকিয়ে। যদিও আমার এ সব লুকোচুরি ভাল লাগে না।

আমি বলি, ‘‘কেন লুকোব? তুমি ভাল কাজ করছ তো! তা ছাড়া এ সবের দরকার নেই। আমাদের ভাল অ্যাড আসে।’’

দীপ্যদা হাসে, ‘‘তা হলেও। আমার মনে শান্তি আসে। আর শোনো, মলি এ সব পছন্দ করে না জানো তো! তোমার দিদি যা রাগী! বেকার ঝামেলা করে কী হবে?’’

আমার দিদি যে রাগী, সেটা আমি জানি। তা বলে এত ভয় পাওয়ারও কিছু নেই! কই দিদি তো আমার সঙ্গে লাগতে আসে না! তবে দীপ্যদার সঙ্গে আমি কথা বাড়াই না। ওদের ব্যাপার ওরা বুঝবে।

আমি নিজের পায়ের দিকে তাকালাম। জুতোর স্ট্র্যাপ ছিঁড়ে গিয়েছে। স্টেশনে আসার সময় টোটো থেকে নেমে তাড়াহুড়ো করছিলাম ট্রেনের টাইম হয়ে গিয়েছে বলে। তখনই একটা পাথরে লেগে কাণ্ডটা ঘটেছে।

ছোটবেলাতেও রাস্তায় অনেক মুচি দেখতে পেতাম। এখন আর সে ভাবে পাই না। দমদমে নেমে খুব ঝামেলা হবে বুঝতে পারছি। এ ভাবে পা টেনে টেনে যাওয়া যায়!

‘‘দিদি গো, একটু সরে দাঁড়াবে? ব্যাগটা মাথায় লাগছে!’’

নীচ থেকে কথাটা এল। আমি দেখলাম এক জন মধ্যবয়স্কা দিদি বসে রয়েছেন নীচে। দিদিটির সামনে একটা পোঁটলা।

পাশে সরার সে রকম জায়গা নেই। আর ব্যাগটা যে হেতু আমি সামনে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি তাই ওঁর মাথায় ঘষা খাচ্ছে।

আমি আর না ভেবে মাটিতে ওঁর পাশেই বসে পড়লাম এ বার। দেখলাম ওই দিদি তো বটেই, আশপাশের সবাই কেমন যেন ঘাবড়ে গেল!

আমি পাত্তা দিলাম না। ট্রেনের মেঝেয় যে কেউ বসতে পারে। তা ছাড়া ওই ঠোক্কর খাওয়ার পর থেকে আমার পায়ে ব্যথাও করছে। একটা সিট নেই যে বসব। মেঝেটাই বসার জন্য বেস্ট।

‘‘আরে মাটিতে বসে পড়লে!’’

আমি দেখলাম মহিলার মুখে কেমন একটা অপরাধবোধ।

আমি বললাম, ‘‘আরে তাতে কী! পায়ে ব্যথা করছিল তাই বসে পড়লাম। আর দারুণ হাওয়া আসছে তো দরজা দিয়ে!’’

‘‘ও, না মানে তোমাদের মতো মেয়েরা তো বসে না এ ভাবে মাটিতে... তাই...’’ উনি আমতা আমতা করছেন।

আমি ব্যাপারটা সহজ করতে বললাম, ‘‘আপনি ডেলি প্যাসেঞ্জারি করেন?’’

‘‘হ্যাঁ গো। ফুলের ব্যবসা। তবে আজ যাচ্ছি এনআরএস-এ। স্বামী ভর্তি আছে। তার কাছে।’’

‘‘কী হয়েছে?’’ আমি জিজ্ঞেস করলাম। মহিলার মুখে কেমন একটা মায়া আছে। দেখলেই মনে হয়, আমার ছোটবেলায় হারিয়ে যাওয়া দূর সম্পর্কের পিসিমা যেন! রোদে পোড়া মুখ। গালে হালকা মেচেতার দাগ। কানের কাছে সামান্য পাকা চুল। মুখে পান। হাতে শাঁখা-পলা আর একটা লোহা।

উনি বললেন, ‘‘পাথর গো। পিত্তথলিতে। অপারেশন হয়ে গিয়েছে। ছেড়ে দেবে ক’দিন পরে। আসলে আমাদের আর কেউ নেই তো। আমরা টোনাটুনি। তাই আমাকেই রোজ যেতে হয়!’’

আমি কী বলব বুঝতে পারলাম না।

উনি আবার বললেন, ‘‘একটা ছেলে ছিল, জানো। বারো বছর বয়সে, ভাসানের দিনে নদীতে নেমেছিল ঠাকুরের সঙ্গে। আর ওঠেনি! থাকলে তোমার মতোই হত! তুমি কী করো গো?’’

আমি বললাম, ‘‘ফিজ়িক্সে মাস্টার্স করেছি। তার পর একটা এনজিও-তে কাজ করছি।’’

‘‘ওরে বাবা! অনেক লেখাপড়া তো!’’ মহিলাটি মুখ আলো করে হাসলেন, ‘‘আমার খুব পড়ার ইচ্ছে ছিল, জানো। কিন্তু হয়নি। ছোটবেলায় তো খেতেই পেতাম না ভাল করে। বাবাটা নেশাখোর ছিল। কিছু করত না। মা বাড়ি বাড়ি কাজ করত। তাতে অবশ্য খুব কিছু হত না। কারণ মা মাঝে মাঝেই অসুস্থ হয়ে পড়ত। তাই বাবা আমার ছোট দু’টো ভাইকে ভিক্ষের জন্য ভাড়া দিত। মা বারণ করত। কিন্তু বাবা শুনত না। বরং উল্টে মাকে মারত। আমার দশ বছর বয়স তখন। ভয়ে কাঁপতাম আমি। ভাইগুলোকে দেখলে চোখ ফেটে জল আসত। দুধের শিশু সব। ওদের নিতে লোকজন আসত। তার পর কী সব খাইয়ে অসাড় করে সারা দিন ভিক্ষে করত। ভাবলেই এত কষ্ট হয়! গরিবরা এ দেশে মানুষ নয়, জানো! আমার তো স্পষ্ট মনে আছে, ছোটবেলায় এমন অনেক দিন হয়েছে যে পুকুর থেকে শাকপাতা তুলে এনে তা-ই সেদ্ধ করে খেয়েছি। কারও বাড়ি থেকে লুকিয়ে পেঁপে এনে খেয়েছি সবাই মিলে।’’

Novel Smaranjit Chakraborty

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

ক্যানসেল করতে পারবেন আপনার সুবিধামতো

Best Value
প্রতি বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

প্ল্যানটি সিলেক্ট করে 'Subscribe Now' ক্লিক করুন।শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
প্রতি মাসে

৪২৯

১৬৯

প্ল্যানটি সিলেক্ট করে 'Subscribe Now' ক্লিক করুন।শর্তাবলী প্রযোজ্য।