Why Palestine has no army and Hamas fights for it dgtl
Israel Hamas War
কোন চুক্তির গেরোয় নিজস্ব সেনাবাহিনী নেই প্যালেস্টাইনের? কেন তাদের হয়ে যুদ্ধ করে হামাস?
এক মাসেরও বেশি সময় ধরে যুদ্ধ চলছে পশ্চিম এশিয়ায়। ইজ়রায়েলি ফৌজের সঙ্গে যুদ্ধ করছে প্যালেস্টাইনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। কিন্তু সে দেশের নিজস্ব কোনও সেনাবাহিনী নেই।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:২২
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
ইজ়রায়েল, হামাসের দ্বন্দ্বে পশ্চিম এশিয়ায় যুদ্ধের ঘনঘটা। অহরহ বোমা, গুলি, ক্ষেপণাস্ত্রের শব্দে সেখানে কান পাতা দায়। গাজ়া শহরে দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে মৃত্যুমিছিল।
০২১৯
পশ্চিম এশিয়ার এই যুদ্ধ এক মাসের বেশি সময় ধরে চলছে। গত ৭ অক্টোবর ইজ়রায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে হামাস হামলা চালালে প্রত্যাঘাত করে ইজ়রায়েল। প্যালেস্টাইনের সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে তারা।
০৩১৯
ইজ়রায়েলের হামলায় গাজ়ায় এখনও পর্যন্ত ১১ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। রাষ্ট্রপুঞ্জ গাজ়ায় যুদ্ধবিরতির আর্জি জানালেও তাতে কর্ণপাত করেননি ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তিনি জানিয়েছেন, প্যালেস্টাইন থেকে হামাসকে সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন না করা পর্যন্ত যুদ্ধ চলবে।
০৪১৯
এই পরিস্থিতিতে ইজ়রায়েলের বিরোধিতা করছে আরব দেশগুলিও। গাজ়ায় মানবিকতার খাতিরে যুদ্ধ বন্ধ করার দাবি জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মহল। কিন্তু প্যালেস্টাইনের সঙ্গে যুদ্ধ না করে কেন হামাসের সঙ্গে যুদ্ধ করছে ইজ়রায়েল?
০৫১৯
প্যালেস্টাইনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। তারা সরকার-স্বীকৃত নয়। প্যালেস্টাইনে সরকারি ভাবে কোনও সেনাবাহিনীই নেই। হামাসের দাবি, দেশকে বাঁচাতে হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছে তারা।
০৬১৯
প্যালেস্টাইনের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ইয়াসের আরাফৎ ইজ়রায়েলের সঙ্গে একটি শান্তিচুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিলেন। সেই চুক্তির শর্ত অনুযায়ী প্যালেস্টাইন দেশের প্রতিরক্ষার জন্য কোনও সেনাবাহিনী রাখতে পারে না।
০৭১৯
চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, প্যালেস্টাইনে কোনও সশস্ত্র বাহিনী গড়ে উঠলে সেখানকার সরকার নিজেই সেই বাহিনীকে ইজ়রায়েলের হাতে তুলে দেবে। এর অন্যথায় ইজ়রায়েল প্যালেস্টাইন আক্রমণ করবে।
০৮১৯
প্যালেস্টাইন লিবারেশন অরগানাইজেশন বা পিএলও-র অধীনে অতীতে ছিল প্যালেস্টাইন লিবারেশন আর্মি বা পিএলএ। তারাই ছিল দেশের সামরিক বাহিনী। কিন্তু তা ভেঙে দেওয়া হয়।
০৯১৯
১৯৯৩ সালে প্যালেস্টাইন এবং ইজ়রায়েলের মধ্যে যে অস্ত্র চুক্তি হয়, তাতে ইজ়রায়েলের মূল লক্ষ্যই ছিল প্যালেস্টাইনকে নিরস্ত্র করে দেওয়া।
১০১৯
অস্ত্র চুক্তিতে বলা হয়েছিল, প্যালেস্টাইন সরকার তাদের দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে আধা সামরিক বাহিনী গঠন করতে পারবে। কিন্তু পুরোদস্তুর সামরিক বাহিনী তারা রাখতে পারবে না।
১১১৯
নিরাপত্তার স্বার্থে যে আধা সামরিক বাহিনী প্যালেস্টাইন গঠন করবে, তার উপরও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। বাহিনীর পরিসীমা বেঁধে দেয় ইজ়রায়েল। ঠিক হয়, এই বাহিনীর গতিবিধি, অস্ত্রবহন ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করবে ইজ়রায়েলই।
১২১৯
প্যালেস্টাইনের পুলিশ বাহিনীতে কারা নিযুক্ত হবেন, কারা তার মাথায় বসবেন, তা নির্ধারণের ভারও নিজের হাতে নিয়ে নেয় ইজ়রায়েল। ফলে এই বাহিনীও প্রকারান্তরে চলে যায় ইজ়রায়েলের হাতেই।
১৩১৯
প্যালেস্টাইনের পুলিশ বাহিনীর নাম প্রথমে ছিল ন্যাশানাল সিকিউরিটি ফোর্স বা জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনী। পরে নাম বদলে দেওয়া হয় প্যালেস্টিনিয়ান সিকিউরিটি ফোর্স বা প্যালেস্টিনীয় নিরাপত্তা বাহিনীতে। দেশের নিরাপত্তার সঙ্গে যুক্ত সকলেই এই বাহিনীর অন্তর্গত।
১৪১৯
গাজ়ায় সমুদ্র উপকূল পাহারা দেওয়ার জন্য নৌসেনা থেকে শুরু করে দেশের পরিবহণ পরিচালনার জন্য ট্র্যাফিক পুলিশ, এই বাহিনীরই অঙ্গ। ইজ়রায়েলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, চুক্তির শর্তকে কাজে লাগিয়ে এই বাহিনীকে তারা প্যালেস্টাইনের বিরুদ্ধেই ব্যবহার করেছে একাধিক বার।
১৫১৯
২০০৬ সালে প্যালেস্টাইনের নির্বাচনে জয়লাভ করে হামাস। তারা ক্ষমতায় আসার পর তাদের নিজস্ব সরকারি বাহিনী গড়ে তুলেছিল। যার নাম দেওয়া হয়েছিল এগ্জ়িকিউটিভ ফোর্স। পরে হামাস ক্ষমতাচ্যুত হলে এই বাহিনী ভেঙে যায়।
১৬১৯
প্যালেস্টাইনে সক্রিয় একটি সশস্ত্র বাহিনীর নাম ইজ-আদ-দিন-আল-কাসাম ব্রিগেড। এটি মূলত হামাসের সামরিক শাখা। ১৯৯০ সালে এই বাহিনী গড়ে তোলা হয়েছিল। হামাসের শক্তির অন্যতম উৎস এই বাহিনী।
১৭১৯
হামাসের দাবি, প্যালেস্টাইনকে ইহুদি আগ্রাসনমুক্ত করতে কাজ করে তারা। গোপনে সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়ে সদস্যদের লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত করে। তবে ইজ়রায়েল, আমেরিকা-সহ পশ্চিমি দুনিয়া এই সংগঠন এবং তার বাহিনীকে সন্ত্রাসবাদীর তকমা দিয়েছে।
১৮১৯
হামাসকে অর্থনৈতিক দিক থেকে সাহায্য করে ইরান। হামাসের কাছে তারা অস্ত্রশস্ত্র সরবরাহ করে বলেও শোনা যায়। এ ছাড়া, ইজ়রায়েলের অভিযোগ, চিন এবং উত্তর কোরিয়া থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করে হামাস।
১৯১৯
হামাস ছাড়াও প্যালেস্টাইনে ছোট ছোট কিছু সশস্ত্র সংগঠন গড়ে উঠেছে। যারা প্রত্যেকেই প্যালেস্টাইনের ‘স্বাধীনতা’র জন্য কাজ করে। এগুলির সরকারি স্বীকৃতি নেই। তাই প্যালেস্টাইনের সামরিক বাহিনী এদের বলা যায় না।