পাহাড়ি আবহাওয়া না চালকদের প্রশিক্ষণের অভাব! কেন বার বার বিমান দুর্ঘটনা হয় নেপালে
নেপালে বিমান দুর্ঘটনা প্রথম নয়। বার বার সেখানে দুর্ঘটনার মুখে পড়ে বিমান। ২০১৮ সালে এএফপি জানিয়েছিল, গত তিন দশকে ২৭টি বিমান দুর্ঘটনা হয়েছে সে দেশে। কিন্তু কেন বার বার হয় এমন?
সংবাদ সংস্থা
কাঠমান্ডু (নেপাল) শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০২৩ ১৭:৪৯
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
কাঠমান্ডু থেকে পোখরা যাচ্ছিল বিমানটি। ওড়ার ২০ মিনিটের মাথায় মাটিতে আছড়ে পড়ে ইয়েতি এয়ারলাইনসের বিমানটি। সওয়ার ছিলেন ৭২ জন। প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৬৭ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করেছে সংবাদ মাধ্যম। নেপালে বিমান দুর্ঘটনা প্রথম নয়। বার বার সেখানে দুর্ঘটনার মুখে পড়ে বিমান। ২০১৮ সালে এএফপি জানিয়েছিল, গত তিন দশকে ২৭টি বিমান দুর্ঘটনা হয়েছে সে দেশে। কিন্তু কেন বার বার হয় এমন?
০২১৬
গড়ে বছরে একটি বিমান নেপালে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। বেশির ভাগই ছোট বিমান। বার বার এই দুর্ঘটনার জন্য বিমান রক্ষণাবেক্ষণ এবং প্রশিক্ষণের অভাবকেই দায়ী করা হয়।
০৩১৬
২০২২ সালের ২৯ মে তারা এয়ারের একটি বিমান দুর্ঘটনার মুখে পড়ে নেপালে। সওয়ার ছিলেন ২২ জন। সকলেরই মৃত্যু হয়েছিল।
০৪১৬
২০১৯ সালে কাঠমান্ডু ফিরছিল এয়ার ডায়নাস্টি সংস্থার একটি হেলিকপ্টার। পাহাড়ে ধাক্কা খেয়ে পড়ে যায় বিমানটি। তাতে ছিলেন সাত জন। যাত্রীদের মধ্যে ছিলেন নেপালের পর্যটন মন্ত্রী রবীন্দ্র অধিকারী এবং শিল্পপতি আং চিরিং শেরপা। সকল সওয়ারিরই মৃত্যু হয়েছে।
০৫১৬
২০১৮ সালের ১২ মার্চ নেপালের ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামার সময় ভেঙে পড়ে বম্বার্ডিয়ার কিউ৪০০ বিমান। তাতে সওয়ার ৫১ জনেরই মৃত্যু হয়েছিল। ৭৬ আসনের বিমানটি ছিল বাংলাদেশের একটি বেসরকারি সংস্থার।
০৬১৬
২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে পোখরা থেকে জমসম যাচ্ছিল ছোট একটি বিমান। ওড়ার আট মিনিটের মাথায় নিখোঁজ হয়ে যায় বিমানটি। পরে পাহাড়ি জেলা মিয়াগরিতে মেলে সেই বিমানের ভগ্নাংশ। সওয়ার ছিলেন ২৩ জন। সকলেরই মৃত্যু হয়েছিল।
০৭১৬
২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে দু্র্ঘটনার মুখে পড়ে সীতা এয়ার সংস্থার একটি বিমান। মাঝ আকাশে যান্ত্রিক গোলযোগ হয়েছিল বিমানটিতে। তড়িঘড়ি কাঠমান্ডু বিমানবন্দরে অবতরণ করছিল সেটি। তখনই ভেঙে পড়ে। সওয়ার ১৯ জনের মৃত্যু হয়।
০৮১৬
২০১২ সালের শুরুতে পোখরা থেকে জমসম যাওয়ার পথে দুর্ঘটনার মুখে পড়ে বেসরকারি সংস্থার একটি বিমান। সওয়ার ছিলেন ২১ জন। ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
০৯১৬
২০১১ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর ললিতপুরের কাছে ভেঙে পড়ে বু্দ্ধ এয়ারের একটি বিমান। সওয়ার ২২ জনেরই মৃত্যু হয়। মৃতদের মধ্যে ছিলেন ভারতীয়ও।
১০১৬
২০১০ সালের ডিসেম্বরে তারা এয়ার সংস্থার আরও একটি বিমান ভেঙে পড়ে। লামিডান্ডা থেকে কাঠমান্ডু যাচ্ছিল বিমানটি। তিন কর্মী-সহ ২২ জন সওয়ারির মৃত্যু হয়।
১১১৬
২০১০ সালেই অগ্নি এয়ারের একটি বিমান নিখোঁজ হয়ে যায়। কাঠমান্ডু থেকে লুকলা যাচ্ছিল সেটি। ১৪ জন সওয়ারিরই মৃত্যু হয়।
১২১৬
১৯৯২ সালে পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনসের একটি বিমান ভেঙে পড়ে। তাতে সওয়ার ছিলেন ১৬৭ জন। সকলেরই মৃত্যু হয়। কাঠমান্ডু বিমানবন্দরে অবতরণের কিছু ক্ষণ আগে হয়েছিল দুর্ঘটনা।
১৩১৬
কেন বার বার হয় এই দুর্ঘটনা? সংবাদ সংস্থা ‘দ্য প্রিন্ট’-এর রিপোর্ট জানিয়েছে, নেপালের কাঠমান্ডুতে যে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, তা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১,৩৩৮ মিটার উঁচুতে রয়েছে। অপ্রশস্থ এক উপত্যকার উপর গড়ে উঠেছে। ফলে ঘোরার জন্য খুব বেশি জায়গা পায় না বিমানগুলি। সে কারণেই ঘটে দুর্ঘটনা।
১৪১৬
নেপালে বার বার দুর্ঘটনার আরও একটি কারণ হল আবহাওয়া। পাহাড়ে খুব দ্রুত আবহাওয়ার পরিবর্তন হয়। ফলে বিমান দুর্ঘটনার মুখে পড়ে।
১৫১৬
নেপালে র্যাডার প্রযুক্তির হাল খুবই খারাপ। তাই অনেক ক্ষেত্রেই চরম আবহাওয়া আর কঠিন ভূমিরূপের উপর দিয়ে উড়ে যাওয়ার সময় বিমানচালককে নিজের দৃষ্টির উপরেই নির্ভর করতে হয়।
১৬১৬
বিশেষজ্ঞরা আরও জানিয়েছেন, নেপালে বিমানচালক এবং কর্মীদের যথেষ্ট প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেই। ফলে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলার সময় বিপাকে পড়েন তাঁরা। তাছাড়া কম বাজেটের কারণে যথেষ্ট সংখ্যক বিমানচালক নিয়োগ করা হয় না। প্রায় সময়ই পরিশ্রান্ত থাকেন বিমানচালক। ফলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ে।