Why India Is Building Asia’s longest Tunnel in Himalaya dgtl
Zoji-la Tunnel
কাশ্মীর-লাদাখ সীমান্তে তৈরি হচ্ছে এশিয়ার দীর্ঘতম সুড়ঙ্গপথ! কী ভাবে, কোন কাজে লাগবে এই পথ?
জোজি-লা টানেল তৈরি হলে অনেক কিছুই সহজ হয়ে যাবে ভারতের। যে লাদাখ থেকে জম্মু-কাশ্মীরে আসতে এখন সাড়ে ৩ ঘণ্টা সময় লাগে, সুড়ঙ্গ তৈরি হলে তা কমে আসবে মাত্র ২০ মিনিটে। এ ছাড়াও অনেক সুবিধা হবে।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:০৭
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২৪
যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সীমান্তে একটি সুড়ঙ্গ বানাচ্ছে ভারত। নাম জোজি-লা টানেল।
০২২৪
হিমালয়ের বুক চিরে সেই সুড়ঙ্গপথ তৈরি হচ্ছে জোজি-লার ঠিক নীচে। যা জুড়বে লাদাখের কার্গিল এবং কাশ্মীরের গন্দেরবালকে।
০৩২৪
তৈরি হয়ে গেলে ভারতের তো বটেই, এই সুড়ঙ্গপথ এশিয়ারও দীর্ঘতম হবে। তবে তার আগে সুড়ঙ্গটি তৈরি করতে বহু প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে ভারতকে।
০৪২৪
এই সুড়ঙ্গের পরিকল্পিত দৈর্ঘ্য ১৪.২ কিলোমিটার। পাহাড় ফাটিয়ে ওই দীর্ঘ সুড়ঙ্গপথ তৈরি করতে কোটি কোটি ডলার খরচ হচ্ছে।
০৫২৪
ঘোড়ার নালের আকৃতির দু’টি সুড়ঙ্গপথ পাশাপাশি তৈরি করার কাজ চলছে। সুড়ঙ্গ বানানোর জন্য কার্গিল এবং গন্দেরবালে তৈরি হয়েছে আলাদা বসতি।
০৬২৪
দু’দিক থেকে সুড়ঙ্গ কাটতে কাটতে এগোচ্ছে দু’টি দল। কাজ শেষ হলে তাদের মুখোমুখি দেখা হবে। তবে সেই সাক্ষাতে এখনও বহু দেরি।
০৭২৪
আপাতত প্রতি দিন ১০ ফুট করে গভীরে প্রবেশ করার লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে।
০৮২৪
রোজ ১০ ফুট পাহাড় কাটা মুখের কথা নয়। সাড়ে চার কোটি বছরের পুরনো পাথরকে টলাতে হবে। কাজটা যেমন কঠিন, তেমনই জীবনের ঝুঁকিও আছে প্রতি মুহূর্তে।
০৯২৪
জোজি-লা টানেলের এক শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলেছিল এক সংবাদ সংস্থা। তিনি জানিয়েছেন, প্রতি দিনই ডিনামাইট দিয়ে পাথর ফাটানো হয়। এতে বিপদ কতটা, তা সতর্কতার ব্যবস্থা দেখলেই মালুম হয়।
১০২৪
ডিনামাইট ফাটানোর সময় শ্রমিকদের চলে যেতে হয় টানেল থেকে অন্তত ৭০০-৮০০ মিটার দূরে। কাছেই দাঁড়িয়ে থাকে অ্যাম্বুল্যান্স, ছোটখাটো চিকিৎসা করার একটি ভ্যানও।
১১২৪
তবে এতে চিকিৎসা সম্ভব না হলে বিপদ এড়ানো মুশকিল। কারণ এই এলাকা থেকে হাসপাতাল অন্তত ২৪ কিমি দূরে।
১২২৪
রাস্তা খারাপ হওয়ায় সেই হাসপাতালে সহজে পৌঁছনো সম্ভব নয়। ঝুঁকি আছে জেনেই এখানে কাজ করতে এসেছেন হাজারখানেক শ্রমিক।
১৩২৪
তাদের জন্য তৈরি বসতিতে রয়েছে সরকার পরিচালিত কমিউনিটি কিচেন। সেখানে বিনামূল্যে চার বেলা খাবার খান শ্রমিকেরা। ভাত-রুটি-ডাল-সব্জির পাশাপাশি নান-পরোটা-পুরী-ছোলের মতো মুখরোচক খাবারও রান্না হয় শ্রমিকদের জন্য।
১৪২৪
জোজি-লা টানেলের ওই শ্রমিক জানিয়েছেন, পরিবার ছেড়ে এখানে থাকেন তাঁরা। মাঝেমধ্যে বাড়ির কথা মনে পড়ে না তা নয়। কিন্তু এখন কাজ শেষ করাটা নেশার মতো হয়ে গিয়েছে।
১৫২৪
দিনে ১২ ঘণ্টার কাজ, পাথর খাদানের অমানবিক শ্রম, জীবনের ঝুঁকি আছে জেনেও তাই প্রতি দিন ১০ ফুট করে পাথর খুঁড়ে চলেন তাঁরা।
১৬২৪
ঝুঁকির কথা মনে করিয়ে দিলে তাঁরা বলেন, ‘‘এখান থেকে কবে ফিরতে পারব বা আদৌ ফিরতে পারব কি না জানি না। আর সত্যি বলতে এখন আর এ নিয়ে ভাবিও না। এখন শুধু একটাই লক্ষ্য, কাজ সম্পূর্ণ করা।’’
১৭২৪
জোজি-লা টানেল তৈরি হলে অনেক কিছুই সহজ হয়ে যাবে। যে লাদাখ থেকে জম্মু-কাশ্মীরে আসতে এখন সাড়ে ৩ ঘণ্টা সময় লাগে, সুড়ঙ্গ তৈরি হলে তা কমে আসবে মাত্র ২০ মিনিটে।
১৮২৪
এখন যে পথে এই যাতায়াত হয়, তা ঠান্ডায় বরফ জমে বন্ধ থাকে বছরের অনেকটা সময়। আবার কখনও সেখানে নামে ধস। যেমন এই মুহূর্তে গত ছ’মাস টানা বন্ধ রয়েছে রাস্তাটি।
১৯২৪
জোজি-লা টানেলে অবশ্য সারা বছর যে কোনও সময়ে যাতায়াত করতে পারবে যানবাহন। তাতে ভারতের আরও একটি সুবিধা হবে।
২০২৪
লাদাখের সীমানা নিয়ে চিন এবং ভারত দু’পক্ষই সমাধানসূত্র খুঁজে পেতে আপাতত ব্যর্থ। এই পরিস্থিতিতে যে কোনও সময় সীমান্তে আবার সংঘর্ষ বাধার ঝুঁকি রয়েছে। সে ক্ষেত্রে জোজি-লা টানেল তৈরি হলে অল্প সময়েই সেনাবাহিনীকে পৌঁছে দেওয়া যাবে লাদাখ সীমান্তের কাছাকাছি।
২১২৪
ততটাই সহজ হবে তাদের কাছে জোগান পৌঁছে দেওয়ার কাজও। এ ছাড়া পরিবহণ সহজ হলে তার প্রভাব পড়বে কাশ্মীর এবং লাদাখের অর্থনীতিতে। প্রভাব পড়বে পর্যটনেও।
২২২৪
তাই ঝুঁকি নিয়ে হলেও হিমালয়ের বুকে এই সুড়ঙ্গপথ তৈরির জন্য যা যা করার প্রয়োজন, তার সবটুকু করছে ভারত সরকার। সীমান্তে মোট ৩১টি সুড়ঙ্গ তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে ভারতের। তার মধ্যে একটি এই জোজি-লা টানেল। সব ক’টি সুড়ঙ্গের মধ্যে দীর্ঘতম হতে চলেছে এই সুড়ঙ্গপথটিই।
২৩২৪
জোজি-লা টানেলে থাকবে বিবিধ আধুনিক ব্যবস্থা। অস্ট্রিয়ায় ব্যবহৃত সুড়ঙ্গ খননের আধুনিক প্রক্রিয়া যা ‘নিউ অস্ট্রিয়ান টানেলিং মেথড’ নামে পরিচিত, তার সাহায্যেই তৈরি করা হবে এই সুড়ঙ্গ। ভিতরে থাকবে সিসিটিভি নজরদারি, সর্ব ক্ষণের বিদ্যুৎ সংযোগ, বেতার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, এবং বাতাস চলাচলের সুব্যবস্থা।
২৪২৪
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১১ হাজার ৫৭৫ ফুট উঁচুতে তৈরি হচ্ছে এই সুড়ঙ্গ। যার কাজ প্রায় অর্ধেক শেষের পথে। সব ঠিক থাকলে ২০২৬ সালে শেষ হবে এই সুড়ঙ্গ তৈরির কাজ। তবে তার আগে এখনও বহু পরীক্ষা দেওয়া বাকি।