নায়কের চরিত্রে সানি দুর্দান্ত অভিনয় করলেও চতুর্দিকে তখন শাহরুখের প্রশংসা। খলনায়কের চরিত্রে অভিনয় করেও শাহরুখ যে দর্শকের মন জিতে নিয়েছিলেন, তাতে আপত্তি জানিয়েছিলেন সানি।

সানির দাবি, যশ জেনেবুঝেই খলনায়কের চরিত্র নির্মাণের প্রতি বেশি জোর দিয়েছিলেন, কারণ সেই চরিত্রে শাহরুখের অভিনয় করার কথা ছিল। সানি বলেন, ‘‘আমি বুঝতে পারিনি এক জন খলনায়কের চরিত্র এত জমকালো করে দেখানোর কী প্রয়োজন ছিল। আমি যথেষ্ট খোলা মনে উল্টো দিকে থাকা মানুষগুলোর উপর বিশ্বাস রেখে কাজ করি। এই তার প্রতিদান!’’

বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায়, যশ নাকি চিত্রনাট্যের খসড়া নিয়ে সবার আগে সানির কাছে গিয়েছিলেন। নায়ক এবং খলনায়কের চরিত্রের মধ্যে সানি কোন ভূমিকায় অভিনয় করতে চান তা অভিনেতাকেই পছন্দ করে নিতে বলেছিলেন যশ। সেই সময় নায়কের চরিত্রেই অভিনয় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সানি।

তবে খলনায়কের চরিত্রের জন্য শাহরুখ প্রথম পছন্দ ছিলেন না যশের। বলিপাড়া সূত্রে খবর, প্রথমে আমির খানের কাছে অভিনয়ের প্রস্তাব নিয়ে গিয়েছিলেন যশ। কিন্তু ছবির অন্তিম পর্ব পছন্দ না হওয়ায় পরিচালকের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন আমির।

যশের প্রস্তাব আমির খারিজ করলে পরিচালক সঞ্জয় দত্তকে খলনায়কের চরিত্রের জন্য পছন্দ করেছিলেন। কিন্তু ‘ডর’ ছবির শুটিংয়ের সময় সঞ্জয় জেলবন্দি ছিলেন বলে তালিকা থেকে বাদ রাখতে হয় তাঁকে।

আমির এবং সঞ্জয়ের পর বলি অভিনেতা অজয় দেবগনকে ‘ডর’ ছবির খলনায়কের চরিত্রের জন্য পছন্দ করেন যশ। এমনকি অজয়কে অভিনয়ের প্রস্তাবও দিয়ে ফেলেন পরিচালক। কিন্তু সেই সময় অজয় একের পর এক ছবির শুটিং নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। শুটিংয়ের জন্য কোনও ভাবেই সময় বার করতে না পারায় যশের প্রস্তাব খারিজ করে দেন অজয়।

২০১৩ সালে সম্প্রচারিত ‘মহাভারত’ ধারাবাহিকে মহারাজ দ্রুপদের ভূমিকায় অভিনয় করে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন সুদেশ বেরি। এ ছাড়া ‘ঘায়েল’, ‘বর্ডার’, ‘এলওসি: কার্গিল’-এর মতো একাধিক হিন্দি ছবিতে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করেন সুদেশ।

সেই সুদেশকে ‘ডর’ ছবিতে খলনায়কের চরিত্রের জন্য পছন্দ করেছিলেন যশ। কিন্তু ‘স্ক্রিন টেস্ট’-এর পর বাদ পড়ে যান তিনি।

কোনও উপায় না পেয়ে শেষ পর্যন্ত শাহরুখের সঙ্গে যোগাযোগ করেন যশ। ‘ডর’ ছবিতে খলনায়কের চরিত্রে অভিনয়ের জন্য শাহরুখকে প্রস্তাব দেন যশ। পরিচালকের প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান শাহরুখ।

শাহরুখের সঙ্গে ১৬ বছর কেন কথা বলেননি তা নিয়ে প্রশ্ন করায় সানি বলেন, ‘‘আমি শাহরুখের সঙ্গে কথা বলা কখনওই বন্ধ করিনি। আমি সব কিছু থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রেখেছিলাম। কোথাও বিশেষ যেতামও না। যেখানে শাহরুখের সঙ্গে আমার দেখা হওয়ারই কোনও প্রশ্ন নেই, সেখানে কথা বলা বন্ধ করে দেওয়ার প্রসঙ্গই বা আসে কী করে?’’

ভারতের প্রথম সারির ধনকুবেরদের বাড়িতে বিয়ের কোনও অনুষ্ঠান হলে মাঝেমধ্যেই মঞ্চে নাচের অনুষ্ঠান করতে দেখা যায় শাহরুখকে। এই প্রসঙ্গে সানিকে প্রশ্ন করা হলে সপাটে জবাব দেন তিনি।

সানি বলেন, ‘‘বিয়েতে নাচার জন্য তো আলাদা ভাবে নৃত্যশিল্পীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। অভিনেতা হয়ে সম্মানবোধের খেয়াল রাখাও প্রয়োজন। শুধুমাত্র টাকার জন্য এ কাজ করা আমার ঠিক পছন্দ নয়। বন্ধুবান্ধবদের বিয়েতে নাচ করছি তা আলাদা ব্যাপার। এখন কেউ বলতেই পারেন যে ভিক্ষাবৃত্তির চেয়ে বেশ্যাবৃত্তি করাও ভাল। কিন্তু আমি এ সব ধারণায় বিশ্বাসী নই।’’

‘জওয়ান’ ছবির প্রিভিউ প্রকাশ্যে আসার পর শাহরুখের একটি সংলাপ নিয়ে তাঁর অনুরাগীদের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। শাহরুখের সংলাপে রয়েছে, ‘‘জব মে ভিলেন বনতা হুঁ তো মেরে সামনে কোয়ি ভি হিরো নহি টিকতা’’ (আমি যখন খলনায়ক হই তখন আমার সামনে কোনও নায়ক টিকে থাকতে পারেন না)। শাহরুখ অনুরাগীদের অনুমান, ‘ডর’ ছবির প্রসঙ্গ টেনে সানিকে খোঁচা দেওয়ার জন্যই নাকি শাহরুখের মুখে এই সংলাপ দেওয়া হয়েছে।