Who is Vasundhara Oswal and why she is detained in Uganda dgtl
Vasundhara Oswal
উগান্ডায় বন্দি ভারতীয় বংশোদ্ভূত ধনকুবেরের কন্যা, কে এই বসুন্ধরা? কেনই বা জেলে তিনি?
অসওয়াল পরিবারের কর্মচারী মুকেশ মেনারিয়াকে অপহরণ এবং খুনের অভিযোগ সংক্রান্ত মামলায় বসুন্ধরাকে আটক করে উগান্ডার পুলিশ। ব্যক্তিগত বিমান-সহ সারা বিশ্বে অসওয়াল পরিবারের যত বাড়ি রয়েছে, সেগুলির দায়িত্ব ছিল মুকেশের উপর।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০২৪ ১৩:৩১
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে পূর্ব আফ্রিকার দেশ উগান্ডায় বন্দি সুইৎজ়ারল্যান্ডের ভারতীয় বংশোদ্ভূত ধনকুবের পঙ্কজ অসওয়ালের কন্যা বসুন্ধরা অসওয়াল।
০২২০
অসওয়াল পরিবারের কর্মচারী মুকেশ মেনারিয়াকে অপহরণ এবং খুনের অভিযোগ সংক্রান্ত মামলায় তাঁকে আটক করে উগান্ডার পুলিশ। ব্যক্তিগত বিমান-সহ সারা বিশ্বে অসওয়াল পরিবারের যত বাড়ি রয়েছে, সেগুলির দায়িত্ব ছিল মুকেশের উপর।
০৩২০
রাজস্থান থেকে উঠে আসা মুকেশ ২০১৭ সাল থেকে অসওয়াল পরিবারের সঙ্গে কাজ করছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি তাঁদের সম্পর্কে তিক্ততা দেখা দিয়েছিল।
০৪২০
মুকেশ নিখোঁজ হওয়ার পরেই অভিযোগের আঙুল উঠেছে বসুন্ধরার দিকে। অভিযোগ, মুকেশকে নাকি প্রথমে অপহরণ এবং পরে খুন করানো হয়েছে। যদিও অসওয়াল পরিবারের দাবি, মুকেশ জীবিত রয়েছেন এবং বর্তমানে তানজানিয়ায় রয়েছেন।
০৫২০
বসুন্ধরার জন্ম ১৯৯৯ সালে। সুইৎজ়ারল্যান্ডের বিত্তশালী ব্যবসায়ী পঙ্কজ এবং রাধিকা অসওয়ালের কন্যা বসুন্ধরা ‘অসওয়াল গ্রুপ গ্লোবাল’ গোষ্ঠীর গুরুত্বপূর্ণ সদস্য।
০৬২০
বসুন্ধরা সুইৎজ়ারল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ফিনান্স’ নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। অ্যাক্সিস মিনারেলসের এগ্জ়িকিউটিভ ডিরেক্টর বসুন্ধরা নিজেদের গোষ্ঠীর বিভিন্ন সংস্থার বিনিয়োগ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত, আর্থিক তদারকি এবং সরকারি পক্ষের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার দায়িত্বও সামলান।
০৭২০
বসুন্ধরা একটি কার্বন ডাই-অক্সাইড ক্যাপচারিং প্ল্যান্ট তৈরি করিয়েছেন। পাশাপাশি, বিভিন্ন পানীয় প্রস্তুতকারী সংস্থায় পুনর্ব্যবহৃত জল সরবরাহের বিষয়ে উদ্যোগীও হয়েছেন।
০৮২০
বসুন্ধরার পরিবার তাঁদের বিলাসবহুল জীবনযাত্রার জন্য বিখ্যাত। বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, অসওয়াল পরিবারের সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় দু’লক্ষ ৪৭ হাজার কোটি টাকা। সম্প্রতি সুইৎজ়ারল্যান্ডের একটি বিশ্ববিখ্যাত এস্টেট ‘ভিলা হারি’ প্রায় ১,৬৪৯ কোটি টাকায় কিনেছেন তাঁরা।
০৯২০
সেই ধনকুবের পরিবারের কন্যাই বন্দি পূর্ব আফ্রিকার দেশের জেলে। গত তিন বছর ধরে উগান্ডায় তাঁর পরিবারের কারখানার দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন বসুন্ধরা। গত ১ অক্টোবর, তাঁদেরই পরিবারের একটি মদের কারখানা থেকে তাঁকে আটক করে পুলিশ।
১০২০
অসওয়াল পরিবারের অভিযোগ, বসুন্ধরাকে আটক করতে এসেছিলেন ‘অস্ত্রধারী ২০ জন লোক’। ওই সশস্ত্র ব্যক্তিরা নিজেদের উগান্ডার পুলিশ বলে পরিচয় দিয়ে আটক করেন তাঁকে।
১১২০
উগান্ডার পুলিশ বসুন্ধরাকে ফৌজদারি এবং বাণিজ্যিক অপরাধ-সহ বেশ কয়েকটি অভিযোগে আটক করেছে। বসুন্ধরার পরিবারের অভিযোগ, ‘অবৈধ ভাবে’ আটক করা হয়েছে তাঁকে। তাঁর আটককে ‘কর্পোরেট এবং রাজনৈতিক চক্রান্ত’ বলেও দাবি করেছে অসওয়াল পরিবার।
১২২০
অসওয়াল পরিবার আরও দাবি করেছেন, বসুন্ধরার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ আনা হয়েছে সে সব ‘মিথ্যা’। তাঁদের ব্যবসায়িক প্রতিযোগীরা উগান্ডা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে হাত মিলিয়েই নাকি এমনটা করেছেন।
১৩২০
অসওয়ালদের আরও দাবি, যে মুকেশকে খুনের দায়ে বসুন্ধরাকে আটক করা হয়েছে তিনি জীবিত রয়েছেন এবং বর্তমানে তানজানিয়ায় বসবাস করছেন। তা সত্ত্বেও উগান্ডা কর্তৃপক্ষ বসুন্ধরাকে মুক্তি দিতে অস্বীকার করেছে। উগান্ডা কর্তৃপক্ষের দাবি, বসুন্ধরাকে এক জন নিখোঁজ ব্যক্তির মামলায় আটক করা হয়েছে। তার পর থেকে তিন সপ্তাহেরও বেশি জেলবন্দি তিনি।
১৪২০
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, অসওয়ালদের প্রাক্তন কর্মচারী মুকেশকে উগান্ডায় অপহরণ করার পর তানজানিয়ায় পাচার করা হয়। উগান্ডার সীমান্তের কাছে শাকা থানায় নাকি গ্রেফতারও করা হয় মুকেশকে।
১৫২০
অন্য দিকে, ধনকুবের পরিবারের অভিযোগ, বসুন্ধরাকে আটকের পরেই পুলিশ তাঁর ফোন কেড়ে নেয় এবং তাঁকে তাঁর আইনজীবী এবং পরিবারের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়নি।
১৬২০
একই সঙ্গে জেলের মধ্যে তাঁকে খারাপ খাবার দেওয়া হচ্ছে এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকতে বাধ্য করা হচ্ছে বলেও অসওয়ালদের অভিযোগ।
১৭২০
অভিযোগ, জেলের মধ্যে বসুন্ধরাকে নিরামিষ খাবার খেতে দেওয়া হচ্ছে না এবং আগাম নোটিস ছাড়াই এক কারাগার থেকে অন্য কারাগারে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে। বসুন্ধরার ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডল থেকে সম্প্রতি একটি ছবি পোস্ট করা হয়েছিল। সেই ছবিতে দেখা গিয়েছে, বসুন্ধরা জেলের যে কুঠুরিতে বন্দি, তার মেঝেয় রক্ত এবং মল পড়ে রয়েছে।
১৮২০
সেই পোস্টে দাবি করা হয়েছে, বসুন্ধরাকে ৯০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে জুতো ভর্তি রুমে বসতে বাধ্য করা হয়েছিল এবং প্রায় পাঁচ দিন ধরে তাঁকে স্নান করতে বা পোশাক পরিবর্তন করতে দেওয়া হয়নি।
১৯২০
কন্যাকে এই পরিস্থিতি থেকে মুক্ত করতে ইতিমধ্যেই উঠেপড়ে লেগেছেন পঙ্কজ এবং রাধিকা। ‘ইউনাইটেড নেশনস ওয়ার্কিং গ্রুপ অন আরবিট্রারি ডিটেনশন (ডব্লিউজিএডি)’-এর কাছে একটি আবেদনে, পঙ্কজ তাঁর মেয়েকে আটক করার বিষয়ে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
২০২০
রাষ্ট্রপুঞ্জের ওই দফতরে পঙ্কজের পরিবারের অভিযোগ, কোনও আনুষ্ঠানিক অভিযোগ ছাড়াই আটক করা হয়েছিল বসুন্ধরাকে। উল্লেখ্য, বসুন্ধরার পাশাপাশি অসওয়ালদের কোম্পানির অ্যাটর্নি রিটা এনগাবিরকেও হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।