who is Lucy Letby a nurse of Britain who killed seven newborn children dgtl
Britain
নার্স হতেই চেয়েছিলেন, সেই লুসি কখনও ইনসুলিন, কখনও হাওয়া ভর্তি ইঞ্জেকশন দিয়ে মারলেন নবজাতকদের!
লুসি তাঁর নোটে লেখেন, ‘‘আমি শয়তান। আমিই করেছি এই সব। আমার বেঁচে থাকার কোনও অধিকার নেই। আমি ওদের সঠিক যত্ন নিতে পারিনি, ইচ্ছে করে ওদের মেরে ফেলেছি। খুব খারাপ মানুষ আমি।’’
সংবাদ সংস্থা
লন্ডনশেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২২ ০৯:০৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৭
২০১৫ সালের জানুয়ারি মাস থেকে হঠাৎ করেই ইংল্যান্ডের চেস্টার হাসপাতালের শিশু ও প্রসূতি বিভাগে মারা যেতে থাকে একের পর এক নবজাতক। কিন্তু কী কারণে শিশুগুলির মৃত্যু হচ্ছে, তা বুঝতে পারছিলেন না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
০২১৭
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই ‘রহস্যে’র অনুসন্ধান শুরু করেন। তদন্তে দেখা যায়, প্রতিটি শিশুমৃত্যুর ঘটনাতে মিল একটাই। সব ক্ষেত্রে সে সময় ওই বিভাগে উপস্থিত ছিলেন নার্স লুসি লেটবি।
০৩১৭
কর্তৃপক্ষ প্রথমে দেখেন, বেশ কিছু শিশুর স্বাস্থ্য হঠাৎ করেই খারাপ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ঠিক কী কারণে এমন হচ্ছে তা বুঝে উঠতে পারছিলেন না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
০৪১৭
তদন্ত চলাকালীন অভিযুক্ত নার্স লুসির বাড়ি থেকে তাঁরই হাতে লেখা একটি নোট এসেছিল পুলিশের কাছে। সেই নোট বুধবার ব্রিটেনের একটি আদালতে দাখিল করা হয়। শিশুমৃত্যু সংক্রান্ত আরও গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার হয়েছে লুসির বাড়ি থেকে।
০৫১৭
লুসি সেই নোটে লেখেন, ‘‘আমি শয়তান। আমিই করেছি এই সব।’’ নোটটিতে আরও লেখা হয়, ‘‘আমার বেঁচে থাকার কোনও অধিকার নেই। আমি ওদের সঠিক যত্ন নিতে পারিনি, ইচ্ছে করে ওদের মেরে ফেলেছি। খুব খারাপ মানুষ আমি।’’
০৬১৭
চিকিৎসাবিজ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে কখনও হাওয়া ভরা ইঞ্জেকশন, কখনও আবার অতিরিক্ত ইনসুলিন— বিভিন্ন উপায়ে অন্তত ৭ শিশুকে হত্যার অভিযোগ ওঠে লুসির বিরুদ্ধে।
০৭১৭
এ ছাড়া আরও অন্তত দশ থেকে পনেরোটি শিশুকে হত্যার চেষ্টারও অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। লুসি আদালতে দাঁড়িয়ে অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
০৮১৭
লুসির জন্ম ১৯৯০ সালে। ব্রিটেনেই। স্থানীয় মিডল স্কুলে তাঁর লেখাপড়া শুরু। উচ্চশিক্ষার জন্য তিনি পরে চেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন।
০৯১৭
চেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাস্থ্যবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন লুসি। ২০১১ সালে তিনি স্নাতক হন। তাঁর পরিচিতরা জানাচ্ছেন, ছোট থেকেই তিনি নার্স হতে চাইতেন।
১০১৭
লুসির পরিচিতদের সূত্রে জানা যাচ্ছে, কর্মস্থলেও তিনি খুব কম কথা বলতেন। কোনও দিনই তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে তাঁকে মুখ খুলতে দেখা যায়নি।
১১১৭
অন্তর্মুখী স্বভাবের অবিবাহিত লুসির বাবা, মা, প্রেমিক কিংবা পরিবারের অন্য সদস্যদের সম্পর্কে কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি।
১২১৭
হাসপাতালের তরফে এক আধিকারিক আদালতে জানান, ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত চেস্টার হাসপাতালে শিশুমৃত্যুর সংখ্যা স্বাভাবিকই ছিল। কিন্তু জানুয়ারি মাসের পর অস্বাভাবিক হারে শিশুমৃত্যু হতে থাকে।
১৩১৭
হাসপাতালের তদন্তে দেখা যায়, শিশু বিভাগে লুসি যখন সকালবেলা দায়িত্বে থাকতেন, তখন শিশুগুলির মৃত্যু হয়েছে। আবার লুসি রাতের ডিউটিতে থাকলেও একই জিনিস লক্ষ করা গিয়েছে।
১৪১৭
বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, এক একটি শিশুকে হত্যা করতে প্রায় তিন বার করে চেষ্টা চালিয়েছেন লুসি। ইলসুলিন প্রয়োগ করে যে দু’টি শিশুকে খুন করা হয়েছে, তাদের শরীরেও অন্তত তিন বার সুচ ফোটানো হয়েছে।
১৫১৭
একটি শিশুর ক্ষেত্রে যেমন দেখা গিয়েছে, লুসি দায়িত্বে নেওয়ার পর মাত্র ৯০ মিনিটের মধ্যে তার মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, শিশুটির শরীরে হাওয়া ভর্তি ইঞ্জেকশন প্রয়োগ করে অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক পদ্ধতিতে তাকে মারা হয়েছে।
১৬১৭
এক শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ লক্ষ করেন, শিশুগুলির অস্বাভাবিক মৃত্যুর সময় তাদের আশপাশেই উপস্থিত ছিলেন লুসি। প্রাথমিক ভাবে কাকতালীয় বলে মনে হলেও পরে এই দুটোর মধ্যে একটা যোগসূত্র খুঁজে পান তিনি। পরে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ে ওই হাসপাতালের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেন তিনি।
১৭১৭
লুসির ডায়েরি থেকে জানা গিয়েছে, শিশুদের নিত্যনতুন কোন উপায়ে অল্প প্রয়াসেই মেরে ফেলা যায়, তা নিয়ে রীতিমতো পড়াশোনা করতেন তিনি। আপাতত, বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন এই শিশুঘাতক।