Who is Amit Nakesh, whom Turkish Media identified as Killer of Ismail Haniyeh dgtl
Ismail Haniyeh Assassination
হামাস প্রধানকে হত্যার নেপথ্যে ভারতীয় বংশোদ্ভূত গুপ্তচর, দাবি করল তুরস্ক! কে এই অমিত নাকেশ?
হানিয়াকে হত্যা করতে যে রিমোট কন্ট্রোল বোমাটি ব্যবহার করা হয়েছিল, তা ওই গেস্ট হাউসে কে রেখেছিলেন? এই প্রশ্ন ঘিরে যখন সারা বিশ্বে কৌতূহল, তখন তুর্কি সংবাদমাধ্যমের দৌলতে প্রকাশ্যে আসে একটি নাম— অমিত নাকেশ।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০২৪ ০৯:১৯
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২১
গত ৩১ জুলাই ইরানের রাজধানী তেহরানে খুন হয়েছেন স্বাধীনতাপন্থী প্যালেস্টাইনি গোষ্ঠী হামাসের সর্বেসর্বা ইসমাইল হানিয়া। হামাসের একটি বিবৃতিতেই ঘটনাটির কথা প্রকাশ্যে আসে। ইরানের রেভলিউশনারি গার্ডও পরে হানিয়ার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে।
০২২১
হামাস এবং ইরান সেনার বিবৃতিতে দাবি করা হয়, ‘জিয়োনিস্ট’রা হানিয়ার বাড়িতে ঢুকে হামলা চালিয়েছে। উল্লেখ্য, ইরানের নয়া প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজ়েশকিয়ানের শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতেই তেহরান গিয়েছিলেন হানিয়া। এর পরেই বিশ্ব জু়ড়ে হইচই পড়ে।
০৩২১
এর পর দাবি ওঠে, হানিয়াকে খুন করা হয়েছে রিমোট কন্ট্রোল বোমার সাহায্যে। তাঁকে খুন করতে নাকি অন্তত দু’মাস আগে ইরানের রাজধানী তেহরানের সেই গেস্ট হাউসে দূর নিয়ন্ত্রক বোমা বসিয়েছিল ইজ়রায়েলি গুপ্তচর সংস্থা মোসাদ! ইরান সেনার ‘এলিট রেভলিউশনারি গার্ড’ বাহিনীর কয়েক জন আধিকারিকের সূত্র উদ্ধৃত করে এ খবর জানিয়েছে আমেরিকার সংবাদপত্র নিউ ইয়র্ক টাইমস।
০৪২১
পেজ়েশকিয়ানের শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মঙ্গলবার তেহরানে গিয়ে গেস্ট হাউসের যে অংশে হানিয়া ছিলেন, সেখানেই বসানো হয়েছিল বোমাটি। গভীর রাতে রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
০৫২১
ইরান প্রশাসনের অন্দরে ইজ়রায়েলি গুপ্তচর সংস্থার ‘জাল’ কতটা বিস্তৃত, হানিয়া হত্যার ঘটনা তারই প্রমাণ বলে আমেরিকার সংবাদমাধ্যমটির দাবি।
০৬২১
‘রেভলিউশনারি গার্ড’ বাহিনীর দু’জন আধিকারিক জানিয়েছেন, ২০২০ সালে ইরানি পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফাকরিহজাদেহকে নিখুঁত ভাবে রিমোট কন্ট্রোল মেশিনগানের সাহায্যে হত্যা করেছিল মোসাদ। একই পদ্ধতিতে খুন হয়েছেন হানিয়াও। তবে রিমোট কন্ট্রোল মেশিনগানের বদলে তাঁকে খুন করা হয়েছে রিমোট কন্ট্রোল বোমার সাহায্যে।
০৭২১
ইরান এই হামলার জন্য ইজ়রায়েলকে দায়ী করে প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছে।
০৮২১
এর পরেই প্রশ্ন উঠতে থাকে, রিমোট কন্ট্রোল বোমাটি ওই গেস্ট হাউসে রেখেছিল কারা?
০৯২১
যখন এই প্রশ্ন ঘিরে সারা বিশ্বে কৌতূহল, তখন তুর্কি সংবাদমাধ্যমের দৌলতে প্রকাশ্যে আসে একটি নাম— অমিত নাকেশ। নাম শুনেই বোঝা যায় এই লোক ভারতীয় বা ভারতীয় বংশোদ্ভূত।
১০২১
তুরস্কের সংবাদমাধ্যমগুলিও তেমনই দাবি করেছিল। তাদের দাবি ছিল, অমিত ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক ইজ়রায়েলি, যিনি কাজ করেন ইজ়রায়েলি গুপ্তচর সংস্থা মোসাদের হয়ে।
১১২১
তুরস্কের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয় যে, হানিয়াকে মারতে অমিতকে কাজে লাগিয়েছিল ইজ়রায়েল।
১২২১
ইজ়রায়েল এবং ইরানের মধ্যে উত্তেজনা যখন তুঙ্গে, তখন তুর্কি সংবাদমাধ্যম ‘আকদেনিজ গেরেক গেজেটেসি’, ‘গুনেইডোগু এক্সপ্রেস’ এবং ‘হ্যাবার গ্লোবাল’-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, মোসাদের নির্দেশে তিনিই গিয়ে উত্তর তেহরানের ওই গেস্ট হাউসে বোমা লাগিয়ে এসেছিলেন, যেখানে হানিয়া থাকছিলেন।
১৩২১
তুরস্কের নিউজ় ওয়েবসাইট ‘উসাক ওলে’ তো জল্পনার উপর ভিত্তি করে অমিতকে নিয়ে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদনও ছেপে ফেলেছিল। সেখানে লেখা ছিল, হানিয়ার ‘আততায়ী’র নাম অমিত হওয়ার কারণে স্পষ্ট যে, তিনি এক জন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ইজ়রায়েলি।
১৪২১
তুরস্কের দেখাদেখি আরও বেশ কয়েকটি দেশের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, হানিয়া হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে ছিলেন অমিতই।
১৫২১
এই নিয়ে যখন হইচইয়ের মাত্রা বৃদ্ধি পেতেই প্রকাশ্যে আসে সত্য। আসলে অমিত নাকেশ নামে কোনও ব্যক্তির অস্তিত্বই নেই। ভাষার আবর্তে পড়ে মস্ত বড় ভুল করে বসেছেন তারা।
১৬২১
আসলে ‘অমিত নাকেশ’ শব্দটি হিব্রু শব্দ ‘হ্যামিটনাকেশ’-এর অনুরূপ শোনায়। হিব্রুতে ‘হ্যামিটনাকেশ’-এর অর্থ হত্যাকারী।
১৭২১
হানিয়া হত্যার পরেই ইনস্টাগ্রামে বেশ কয়েকটি পোস্ট ভাইরাল হয়। যেখানে হানিয়াকে হত্যার জন্য ‘হ্যামিটনাকেশ’কে ধন্যবাদ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কালেচক্রে ‘হ্যামিটনাকেশ’ হয়ে যায় ‘অমিত নাকেশ’।
১৮২১
‘অমিত নাকেশ’-এর একটি প্যারোডি অ্যাকাউন্টও সোশ্যাল মিডিয়ায় খোলা হয়েছিল। সেই সব জালে পড়েই একটি কাল্পনিক চরিত্রের উপর ভিত্তি করে গল্প ফেঁদে বসে তুর্কি সংবাদমাধ্যমগুলি।
১৯২১
‘টাইমস অফ ইজ়রায়েল’ এবং ‘জেরুসালেম পোস্ট’ বিষয়টি প্রথম প্রকাশ্যে এনে সত্য প্রকাশ করে। মুখ পোড়ে তুরস্কের। প্রতিবেদনগুলির জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন সংবাদমাধ্যমগুলি।
২০২১
হামাস প্রধানকে খুনের জন্য ইরান ইজ়রায়েলকে দোষারোপ করলেও তেল আভিভ এখনও এই অভিযোগ সম্পর্কে নীরব।
২১২১
যদিও বিশেষজ্ঞদের মতে, নিজেদের দিকে সাময়িক দৃষ্টি ঘোরাতে ইচ্ছা করেই সমাজমাধ্যমে ‘অমিত নাকেশ’-এর জাল ফেলে ইজ়রায়েল।