Who Is Akash Anand, the nephew of Mayawati, who will be her successor in BSP dgtl
Akash Anand
কে এই ভাইপো আকাশ? বয়স ২৮, ছ’বছর আগে দেশে ফেরেন, মায়াবতীর উত্তরাধিকারীকে চিনুন
নাম আকাশ আনন্দ। বয়স সবে ২৮। রাজনীতিতে তাঁর অভিজ্ঞতা মেরে কেটে বছর ছ’য়েকের। তার আগে দীর্ঘদিন দেশেই ছিলেন না তিনি। তবে বিএসপি সূত্রে খবর, ভাইপো আকাশকে রাজনীতিতে আনার প্রস্তুতি দীর্ঘদিন ধরেই নিচ্ছিলেন মায়া।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৯:৪০
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২৩
লোকসভা ভোটের দোরগোরায় নিজের উত্তরাধিকারী ঘোষণা করেছেন বহুজন সমাজ পার্টি(বিএসপি)র প্রধান মায়াবতী। জানিয়েছেন, তাঁর পরে দলের হাল ধরবেন তাঁরই আপন ভাইপো। আগামী দিনে তিনিই হবেন মায়াবতীর উত্তরসূরী। অর্থাৎ বিএসপির সর্বেসর্বা।
০২২৩
একদা উত্তরপ্রদেশ শাসন করেছে বিএসপি। দলের সর্বময় নেত্রী মায়া রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও হয়েছেন বার চারেক। ইদানীং জনসমর্থন কমলেও এখনও লোকসভায় ১২টি আসন রয়েছে বিএসপির হাতে। সেই বিএসপিই ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের ছ’মাস আগে ঘোষণা করল দলের ভাবী সর্বময় নেতার নাম।
০৩২৩
নাম আকাশ আনন্দ। বয়স সবে ২৮। রাজনীতিতে তাঁর অভিজ্ঞতা মেরে কেটে বছর ছ’য়েকের। তার আগে দীর্ঘদিন দেশেই ছিলেন না তিনি। তবে বিএসপি সূত্রে খবর, ভাইপো আকাশকে রাজনীতিতে আনার প্রস্তুতি দীর্ঘদিন ধরেই নিচ্ছিলেন মায়া।
০৪২৩
আকাশের রাজনৈতিক অভিষেক হয়েছিল পিসি মায়াবতীর হাত ধরেই। বিএসপি নেতাদের কথায়, ছ’ বছর আগে হঠাৎই একদিন আকাশকে নিয়ে দলের এক কর্মসূচিতে এসে হাজির হয়েছিলেন মায়াবতী।
০৫২৩
তখন আকাশ ২২ বছরের এক তরুণ। সবে লন্ডন থেকে পড়াশোনা শেষ করে দেশে ফিরেছেন। আকাশের সঙ্গে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন মায়া।
০৬২৩
সেটা ২০১৭ সাল। দলীয় সূত্রে খবর, মায়াবতী বলেছিলেন, ‘‘এ হল আমার ভাইপো আকাশ। ও লন্ডন থেকে এমবিএতে স্নাতক পাশ করে এসেছে। আর এখন থেকে দলের কাজও করবে।’’
০৭২৩
তখন উত্তরপ্রদেশে ‘বুয়া-বাবুয়া’ জোট চলছে। সামনে বিধানসভা ভোট। কংগ্রেস এবং বিজেপিকে আটকাতে হাত মিলিয়েছিল স্থানীয় দুই দল বিএসপি এবং সমাজবাদী পার্টি। অখিলেশ যাদবের সঙ্গে এক মঞ্চে দেখা যাচ্ছিল মায়াবতীকে।
০৮২৩
শাহারানপুরে তেমনই এক সভায় আকাশের রাজনীতিতে হাতেখড়ি। পিসি মায়বতী নির্দেশে খুব শীঘ্রই দলের নানা কাজে ছোট খাট দায়িত্ব পেতে শুরু করেন আকাশ। তখন থেকেই দলের ভিতরে তাকে ঘিরে শুরু হয়েছিল জল্পনা।
০৯২৩
বিএসপি নেত্রী নিজে বিয়ে করেননি। তবে ভাই আনন্দ কুমারের সন্তানকে তিনি পুত্রসম স্নেহ করেন, তা জানতেন বহুজন সমাজ পার্টির সকলেই।
১০২৩
২০১৯ সালে আকাশ তাঁর প্রথম জনসভা করেন উত্তরপ্রদেশের আগরায়। ওই বছরেই লোকসভা ভোটের প্রচারের দায়িত্বও দেওয়া হয় মায়াবতীর ভাইপোকে।
১১২৩
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচন ছিল রাজনৈতিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বিজেপির দেশ শাসনের ‘রেজাল্ট’। উত্তরপ্রদেশের লোকসভা আসনে ৮০ টি আসনে ভোট। বিজেপির হাতে রাম মন্দিরের মত জীবন্ত ইস্যু। আর সেই আবহে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ যোগী আদিত্যনাথ। বিজেপির পক্ষে ছিল অনেক কিছুই।
১২২৩
সেখানে বিএসপি ওই ভোটে লড়েছিল ফাঁকা হাতে। ২০১৪ সালের লোকসভায় একেবারে শূন্য হয়ে গিয়েছিল বিএসপি। তাই ২০১৯ সালের লোকসভা ভোট ছিল মায়াবতীর দলের কাছে অগ্নিপরীক্ষা।
১৩২৩
সেই পরীক্ষায় ভাইপো আকাশের উপরই বাজি ধরেছিলেন মায়াবতী। ২০১৯এর লোকসভা নির্বাচনে বিএসপির প্রচারের রণকৌশল ঠিক করার ভার দেওয়া হয়েছিল আকাশকে। তরুণ নেতা নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করেছিলেন ওই ভোটে।
১৪২৩
লোকসভায় শূন্য হয়ে যাওয়া বিএসপিকে টেনে ১২টি আসনে ফিরিয়েছিল আকাশের ঠিক করে দেওয়া প্রচারের রণকৌশল।
১৫২৩
পরে দলের রণকৌশল সংক্রান্ত দায়িত্বে থাকাকালীনই সমাজবাদী পার্টির হাত ছাড়ার সিদ্ধান্তও নেন মায়া। বিএসপি নেতাদের অনেকে মনে করেন মায়াবতীর একলা চলার সিদ্ধান্তের নেপথ্যে রয়েছে এই আকাশেরই পরামর্শ।
১৬২৩
উত্তরপ্রদেশ ছাড়াও আরও বহু রাজ্যে ভোটে লড়ে মায়াবতীর দল। দেখা যায় ২০২২ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে আবার দলের মধ্যে আকাশের উত্তরণ হয়েছে। ওই বছরেই হিমাচল প্রদেশের বিধানসভা ভোটে তারকা প্রচারকারী হিসাবে দ্বিতীয় স্থানে নাম উঠে আসে আকাশের।
১৭২৩
ধীরে ধীরে দলের সর্বভারতীয় স্তরে দায়িত্বে আকাশকে আনতে শুরু করেন মায়া। ২০২২ সালেই দেশের যে সমস্ত রাজ্যে বিএসপি রয়েছে সেখানকার পার্টি ক্যাডারদের সংগঠিত করার দায়িত্ব দেওয়া হয় আকাশকে।
১৮২৩
তার পর এক বছর কেটে গিয়েছে। বিএসপি সূত্রে খবর, এই এক বছরে বিএসপির বিভিন্ন রাজ্যের সংগঠন হাতের তালুতে এনে ফেলেছেন আকাশ।
১৯২৩
ম্যানেজমেন্টের ছাত্র আকাশের সম্পর্কে বিএসপি নেতাদের জিজ্ঞাসা করা হলে তাঁরা বলেছেন, কম কথা বলেন, বেশি কাজ করেন। আর খুব ভাল শ্রোতা। পার্টির অনেকেই মনে করেন ভাল নেতা হওয়ার গুণ রয়েছে আকাশের।
২০২৩
এ বছরের বিধানসভা ভোটেও আকাশের দায়িত্বে থাকা রাজ্যগুলিতে খারাপ ফল করেনি বিএসপি। রাজস্থানে বিএসপি দু’টি আসন দখল করেছে। অন্য রাজ্যগুলিতে নিজের ভোট শতাংশও যত দূর সম্ভব অটুট রেখেছে বিএসপি। যার কৃতিত্ব দলের অনেকেই আকাশকে দেন।
২১২৩
রাজস্থানে আকাশ বিএসপির চেনা কৌশল বদলে এ বছরের শুরুতে ‘স্বাভিমান সঙ্কল্প যাত্রা’ করেছিল। তাতে সাড়াও মিলেছিল ভালই।
২২২৩
দলের অনেকেই মনে করেন আকাশকে নিজের উত্তরসুরী হিসাবে অনেক আগে থেকেই ভেবে রেখেছিলেন মায়াবতী। সেই ভাবনাকে মাথায় রেখেই ধীরে ধীরে নিজে হাতে আকাশকে গড়ে পিটে নিয়েছেন তিনি।
২৩২৩
ফলে, দলনেতা হিসাবে তাঁর অভিষেক যে স্রেফ সময়ের অপেক্ষা, তা বুঝতে পেরেছিলেন মায়াবতীর অনুগামীরা। অবশেষে রবিবার এল সেই মাহেন্দ্র ক্ষণ!