Who are the Pandoles those are present in the car with Cyrus Mistry during accident dgtl
Cyrus Mistry
সাইরাসের গাড়িতে থাকা পান্ডোলে পরিবার দেশকে দিয়েছে ক্রিকেটার, জনপ্রিয় পানীয়
১৮৮৯ সাল থেকে ১৯৯৪ পর্যন্ত রমরমিয়ে চলা ঠান্ডা পানীয় প্রস্তুতকারক সংস্থা ডিউকসের মালিকানা ছিল পান্ডোল পরিবারের হাতে। ১৯৯৪ সালে এই সংস্থা কিনে নেয় পেপসিকো।
সংবাদ সংস্থা
মুম্বইশেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৩:৩১
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
রবিবার দুপুর সওয়া ৩টে নাগাদ নাগাদ মুম্বই থেকে ১৩৫ কিলোমিটার দূরে পালঘরের চারোটি এলাকায় একটি নদীর সেতুর উপর থাকা ডিভাইডারে ধাক্কা মারে টাটা সন্সের প্রাক্তন চেয়ারম্যান সাইরাস মিস্ত্রির গাড়ি। ঘটনাস্থল থেকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় সাইরাসকে। সাইরাস ছাড়াও এই গাড়িতে ছিলেন পান্ডোলে পরিবারের তিন সদস্য। সাইরাসের সঙ্গে গাড়ির পিছনের সিটে বসেছিলেন জহাঙ্গীর পান্ডোলে। সামনে ছিলেন সাইরাসের বন্ধু এবং জহাঙ্গীরের দাদা দারিয়াস পান্ডোলে এবং তাঁর স্ত্রী অনাহিতা পান্ডোলে। গাড়িটি চালাচ্ছিলেন অনাহিতা। কারা এই পান্ডোলে পরিবার?
০২২০
১৮৮৯ সাল থেকে ১৯৯৪ পর্যন্ত রমরমিয়ে চলা ঠান্ডা পানীয় প্রস্তুতকারক সংস্থা ডিউকসের মালিকানা ছিল পান্ডোলে পরিবারের কাছে। ডিউকস কোম্পানির বিভিন্ন স্বাদের ঠান্ডা পানীয়গুলির মধ্যে অন্যতম ছিল ম্যাঙ্গোলা। এক সময় এই পানীয়ের জনপ্রিয়তা শীর্ষে পৌঁছেছিল।
০৩২০
‘ডিউক অ্যান্ড সন্স’ প্রতিষ্ঠা করেন পার্সি বংশোদ্ভূত ভারতীয় ক্রিকেটার দিনশাওজি কুভারজি পান্ডোলে। দিনশাওজি দারিয়াস এবং জহাঙ্গীরের দাদু ছিলেন। ক্রিকেট বল প্রস্তুতকারী কোম্পানি ‘ডিউক অ্যান্ড সন্স’-এর নামে নিজের সংস্থার নাম রাখেন দিনশাওজি।
০৪২০
১৯৯৪ সাল পর্যন্ত এই সংস্থার মালিকানা পান্ডোলে পরিবারের হাতেই ছিল। কিন্তু তার পর পেপসিকোর কাছে বিক্রি হয়ে যায় এই কোম্পানি।
০৫২০
বাজার থেকে প্রতিযোগিতা কমাতেই তড়িঘড়ি এই সংস্থা কিনে নেয় পেপসিকো। বিক্রির সময়ও মুম্বই এবং মহারাষ্ট্রে ডিউকের প্রায় ৫৫ শতাংশ অংশীদারিত্ব ছিল। দারিয়াস এবং জহাঙ্গীরের বাবা দিনশা পান্ডোলেই ডিউক বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
০৬২০
৬০ বছর বয়সি দারিয়াস মুম্বইয়ের ‘জেএম ফিনান্সিয়াল প্রাইভেট ইক্যুইটি’র ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং সিইও ছিলেন। টাটা গ্রুপ ফার্মের অন্যতম ডিরেক্টরও ছিলেন দারিয়াস।
০৭২০
টাটা গোষ্ঠীর যে ক’জন শীর্ষকর্তা সাইরাসকে টাটা সন্সের চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারণের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে দারিয়াস ছিলেন অন্যতম। সাইরাসকে পদ থেকে অপসারণের পর তিনিও টাটা গোষ্ঠী ছেড়ে বেরিয়ে যান।
০৮২০
দারিয়াসের স্ত্রী অনাহিতা মুম্বইয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালের শীর্ষস্থানীয় স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ। মুম্বইয়ের রাস্তা দখল করে থাকা অবৈধ হোর্ডিং সরানোর ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন অনাহিতা। এই নিয়ে তিনি খবরের শিরোনামেও উঠে আসেন।
০৯২০
অনাহিতা ‘জিয়ো পার্সি’ নামক এক সংগঠনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। পার্সি সম্প্রদায়ের মধ্যে জনসংখ্যা হ্রাস রোধ করার উদ্যোগেই এই সংগঠন তৈরি করা হয়েছিল।
১০২০
২০০৪ সালের জানুয়ারি মাসে ‘বোম্বে পার্সি পঞ্চায়েত’-এর সহযোগিতায় ‘বোম্বে পার্সি পঞ্চায়েত ফার্টিলিটি প্রজেক্ট’ শুরু করেন অনাহিতা। যে সব পার্সি দম্পতি সন্তানের জন্ম দিতে অক্ষম তাঁদের অত্যাধুনিক চিকিৎসার মাধ্যমে সাহায্য করাই ছিল এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য।
১১২০
বন্ধ্যাত্ব রোধ, প্রাণের সংশয় থাকা প্রসূতির চিকিৎসা এবং এন্ডোস্কোপি অস্ত্রোপচারে বিশেষ দক্ষতা ছিল অনাহিতার।
১২২০
সম্প্রতি মৃত্যু হয় দারিয়াস এবং জহাঙ্গীরের বাবা দিনশা’র। পান্ডোলে ভাইয়েরা বাবার জন্য প্রার্থনা করতে আমদাবাদের কাছে উদওয়াদায় গিয়েছিলেন। সেখানে পার্সিদের ‘অগ্নি মন্দির’ রয়েছে।
১৩২০
এই ‘অগ্নি মন্দির’ প্রায় ভগ্নদশা অবস্থা থেক শেষ কয়েক বছরে পুনরুদ্ধার করেন সাইরাস এবং তাঁর পরিবার। এই মন্দিরটি নতুন করে তৈরি করতে প্রচুর টাকা খরচ হয়। প্রায় এক বছর আগে এই মন্দিরের দ্বার আবার খুলে দেওয়া হয়।
১৪২০
এই মন্দিরেই দিনশা’র জন্য প্রার্থনা করতে গিয়েছিলেন পান্ডোলে পরিবারের ওই তিন সদস্য। সঙ্গে ছিলেন সাইরাস।
১৫২০
প্রার্থনা করে আমদাবাদ থকে মুম্বই ফেরার পথেই দুর্ঘটনার কবলে প়ড়ে এই গাড়ি। সাইরাস ছাড়া জহাঙ্গীরও এই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে মারা যান ঘটনাস্থলেই।
১৬২০
দারিয়াস এবং অনাহিতা গুরুতর অবস্থায় মুম্বইয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি।
১৭২০
সাইরাস এবং জহাঙ্গীরের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সোমবার মুম্বইয়ের জেজে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলেও সূত্রের খবর।
১৮২০
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পালঘরের চারোটি চেকপোস্ট পেরিয়ে পরের ২০ কিলোমিটার মাত্র ন’মিনিটে অতিক্রম করেছিল টাটা সন্সের প্রাক্তন চেয়ারম্যান সাইরাস মিস্ত্রির গাড়ি। অর্থাৎ দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটির গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় প্রায় ১৩৫ কিলোমিটার।
১৯২০
প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছে, অতিরিক্ত গতির কারণেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন গাড়ির চালক। আর এর ফলেই গাড়িটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।
২০২০
সূত্র মারফত এ-ও জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনার সময় গাড়ির পিছনের সিটে বসে ছিলেন সাইরাস। গাড়ি চলার সময় সিট বেল্টও পরেননি তিনি। প্রাথমিক তদন্ত অনুসারে, দুর্ঘটনার সময় সাইরাস এবং জাহাঙ্গীরের মধ্যে কেউই সিট বেল্ট পরে ছিলেন না।