What is Unified Pension Scheme and how it differs from National Pension Scheme and Old Pension Scheme dgtl
UPS Vs NPS Vs OPS
ইউপিএস কী? কেন্দ্রের নতুন পেনশন প্রকল্পের সুবিধা পাবেন কারা? এনপিএস, ওপিএসের সঙ্গে ফারাকই বা কী?
নতুন পেনশন প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ইউনিফাইয়েড পেনশন স্কিম’ (ইউপিএস)। এত দিন দেশ জুড়ে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের জন্য ‘ন্যাশনাল পেনশন স্কিম’ (এনপিএস) চালু ছিল। তারও আগে ছিল ‘ওল্ড পেনশন স্কিম (ওপিএস)’।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০২৪ ০৮:০৯
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২৪
চাকরিরতদের জন্য নতুন প্রকল্প চালুর ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। শনিবার নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে নতুন পেনশন প্রকল্পের অনুমোদন মিলেছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন, নতুন প্রকল্প চালু হলে ২৩ লক্ষ কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী উপকৃত হবেন।
০২২৪
নতুন পেনশন প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ইউনিফাইয়েড পেনশন স্কিম’ (ইউপিএস)। এত দিন দেশ জুড়ে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের জন্য ‘ন্যাশনাল পেনশন স্কিম’ (এনপিএস) চালু ছিল। তারও আগে ছিল ‘ওল্ড পেনশেন স্কিম (ওপিএস)’।
০৩২৪
পেনশন প্রকল্প নিয়ে বিতর্ক বহু দিনের। ২০০৪ সালে অটলবিহারী বাজপেয়ী সরকারের আমলেই পুরনো পেনশন প্রকল্পের বদলে নতুন পেনশন প্রকল্প বা এনপিএস চালু হয়েছিল। যা নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন অনেকেই।
০৪২৪
এই প্রকল্পে সরকারি কর্মীদের পেনশনের কোনও নিশ্চয়তা থাকছে না বলে সরব হয়েছিল একাধিক শ্রমিক সংগঠন। এনপিএসের অধীনে অবসর গ্রহণের পর সরকারি কর্মীদের আর্থিক নিরাপত্তা অনিশ্চিত বলে দাবি করেছিল সংগঠনগুলি, দাবি উঠছিল নতুন পেনশন প্রকল্পের।
০৫২৪
তার পর থেকে প্রায় ২০ বছর কেটে গিয়েছে। এ বার পেনশনভোগীদের দাবিতেই সিলমোহর দিয়ে আবার নতুন পেনশন প্রকল্প চালুর ঘোষণা করল কেন্দ্র। আগামী বছর ১ এপ্রিল থেকে চালু হবে ইউপিএস। তবে, সরকারি কর্মীরা এনপিএস বা ইউপিএস— যে কোনও একটি প্রকল্প বেছে নিতে পারবেন।
০৬২৪
শনিবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ইউপিএস (ইউনিফায়েড পেনশন স্কিম) চালু করার পরে অনেক শ্রমিক সংগঠন তাকে স্বাগত জানিয়েছে। আবার কেউ কেউ ইউপিএস খারিজ করে পুরনো পেনশন প্রকল্পই ফেরানোর দাবি তুলেছে।
০৭২৪
এই আবহে অনেকেই বুঝতে চাইছেন ইউপিএস, এনপিএস এবং ওপিএসের মধ্যে ফারাকটা ঠিক কোথায়?
০৮২৪
ইউপিএসে মূলত তিনটি বিষয়ের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। সেগুলি হল— নিশ্চিত পেনশন, নিশ্চিত পারিবারিক পেনশন এবং নিশ্চিত ন্যূনতম পেনশন।
০৯২৪
নিশ্চিত পেনশনের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীরা তাঁদের কর্মজীবনের শেষ এক বছরের গড় মাসিক বেতনের (বেসিক) ৫০ শতাংশ পেনশন হিসাবে পাবেন। তবে এই সুবিধা পেতে এক জন কর্মীকে কমপক্ষে ২৫ বছর চাকরি করতেই হবে। তবেই এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন তিনি।
১০২৪
নিশ্চিত পারিবারিক পেনশনের অধীনে সুবিধা পাবেন সরকারি কর্মচারীদের পরিবার। যদি কোনও পেনশনভোগী মারা যান, তবে তাঁর মৃত্যুর সময় তিনি যে পরিমাণ পেনশন পেতেন তার ৬০ শতাংশ পেনশন হিসাবে পাবেন তাঁর পরিবারের লোকেরা।
১১২৪
পাশাপাশি, নতুন প্রকল্পের অধীনে আরও একটি সুবিধার কথা বলা হয়েছে। তা হল— নিশ্চিত ন্যূনতম পেনশন। এই প্রকল্পের আওতায় যদি কেউ ১০ বছর চাকরি করে ছেড়ে দেন, তবে তিনি প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা করে পেনশন পাবেন।
১২২৪
ইউপিএসে নিশ্চিত পেনশন, নিশ্চিত পারিবারিক পেনশন এবং নিশ্চিত ন্যূনতম পেনশনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হচ্ছে মুদ্রাস্ফীতি সূচক (ইনফ্লেশন ইন্ডেক্সেশন)।
১৩২৪
‘ইনফ্লেশন ইন্ডেক্সেশন’ নিশ্চিত করে যে মুদ্রাস্ফীতি এবং সময়ের সঙ্গে জীবনযাত্রার খরচ পরিবর্তন হলে পেনশনও পরিবর্তিত হবে।
১৪২৪
তবে কেন্দ্র নিশ্চিত করেছে, সরকারি কর্মীরা যেমন গ্র্যাচুইটি পেতেন তেমন পাবেন। ইউপিএসের কোনও প্রভাব তার উপর পড়বে না।
১৫২৪
অন্য দিকে, এনপিএস হল একটি ঐচ্ছিক সঞ্চয় প্রকল্প। এই প্রকল্পে পেনশনের পরিমাণের কোনও নিশ্চয়তা নেই।
১৬২৪
এনপিএস তহবিলে প্রতি মাসে কর্মীদের বেতনের একাংশ জমা পড়ে। টাকা জমা করেন নিয়োগকর্তাও। ৬০ বছর বয়স হয়ে যাওয়ার পরে কর্মীরা এনপিএস তহবিলের ৬০% তুলে নিতে পারেন।
১৭২৪
বাকি ৪০ শতাংশ অর্থ এমন ভাবে লগ্নি করা যায়, যাতে প্রতি মাসে তার থেকে পেনশন মেলে। এতে শেষ বেতনের প্রায় ৩৫% মেলার কথা। অর্থাৎ, অবসর নেওয়ার পরে কর্মীকে নিজের পেনশন তহবিলের একাংশ দিয়ে অ্যানুইটি কিনে সারা জীবনের পেনশনের ব্যবস্থা করতে হয়। যা থেকে নিয়মিত পেনশন পান তিনি।
১৮২৪
এতে পেনশন প্রকল্পের তহবিলে কর্মী তাঁর বেতনের ১০% জমা দেন। সরকার দেয় ১৪%।
১৯২৪
এনপিএসের আওতায় কর্মীরা তাঁদের চাকরি বদলানোর পরেও অ্যাকাউন্ট চালিয়ে নিয়ে যেতে পারেন। এনপিএস নিয়ন্ত্রণ করে পেনশন তহবিল নিয়ন্ত্রক (পিএফআরডিএ)।
২০২৪
আয়কর আইনের ধারা ৮০ সিসিডির অধীনে কর্মীরা এনপিএসে সর্বোচ্চ ১.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করে কর সুবিধাও পেতে পারেন।
২১২৪
২০০৪ পর্যন্ত চালু ছিল ওপিএস। শেষ প্রাপ্ত বেতন এবং মোট চাকরি-বর্ষের উপর ভিত্তি করে ৫০ শতাংশ নিশ্চিত পেনশনের সুবিধা দিত এই ব্যবস্থা। উল্লেখ্য, পুরনো পেনশন প্রকল্পে সরকারই পুরো পেনশনের ব্যবস্থা করত। কর্মীদের টাকা জমা করতে হত না।
২২২৪
২০০৩ সালে এনডিএ সরকারের আমলে তা বন্ধ হয়। ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল থেকে চালু হয় এনপিএস। ২০০৪ সাল থেকে চালু হওয়া নতুন ব্যবস্থায় রাজ্য সরকার একাংশ টাকা দিলেও, কর্মীকে পেনশনের ব্যবস্থা নিজেকেই করতে হয়।
২৩২৪
সেই এনপিএস-ও এ বার বদলে যাচ্ছে। আসতে চলেছে ইউপিএস। কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার জানিয়েছে, ইউপিএস চালু করলেও সরকার পুরোপুরি আর্থিক সংস্কারের পথ থেকে সরে আসেনি। পুরনো পেনশন প্রকল্প বা ওপিএস ফিরিয়ে আনা হয়নি। সেখানে পেনশনের পুরো বোঝাই সরকারের ঘাড়ে চাপত।
২৪২৪
তার বদলে ভারসাম্য রেখে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের জন্য অবসরের সময় মূল বেতনের ৫০ শতাংশ পেনশন নিশ্চিত করা হয়েছে, যা এনপিএসে ছিল না। কিন্তু ইউপিএসে আগের মতোই কর্মীদের মূল বেতনের ১০ শতাংশ জমা করতে হবে। শুধু কেন্দ্র নিজের ভাগ ১৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৮.৫ শতাংশ করবে।