What is the controversy regarding Indian Spices and why countries are banning them dgtl
Indian Spices Banned
মুখ ফেরাচ্ছে একের পর এক দেশ, নজর রাখছে আমেরিকা, ব্রিটেনও! ভারতের মশলায় কিসের এত বিতর্ক?
ভারতের দু’টি নামী মশলার ব্র্যান্ড নিষিদ্ধ করেছে সিঙ্গাপুর, হংকং এবং নেপাল। মশলায় ক্ষতিকর রাসায়নিক ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। নজর রেখেছে আমেরিকা, ব্রিটেনের মতো দেশও।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৮ মে ২০২৪ ০৭:২৫
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৭
প্রাচীন ভারত, তারও আগে ভারত মহাসাগরের পারে যে অংশ জম্বুদ্বীপ নামে পরিচিত ছিল, সেই অংশকে ইউরোপের দেশগুলি চিনত একটাই কারণে। তা হল মশলা। প্রাচীনকাল থেকেই ভারতের মশলার জগৎজোড়া খ্যাতি।
০২১৭
পশ্চিমের দেশগুলি মশলার সূত্রেই ভারতের সঙ্গে একসময় বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তুলেছিল। সমুদ্র পেরিয়ে মশলা কিনতে আসতেন বিদেশি বণিকেরা। ভারতের মশলা জাহাজ বোঝাই হয়ে পাড়ি দিত বিদেশে।
০৩১৭
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভারতের মশলার খ্যাতি বেড়েছে, বেড়েছে বাণিজ্যও। এখনও অধিকাংশ দেশের মশলাপাতি কেনার অন্যতম ঠিকানা ভারত। ভারতের নিজস্ব মশলার ব্র্যান্ড তৈরি হয়েছে একাধিক। তাদের মোড়কেই সেরা মশলা বিদেশে রফতানি করা হয়।
০৪১৭
কিন্তু ভারতের সেই বিখ্যাত মশলার সংস্থাগুলি সম্প্রতি বিতর্কের মুখে। এমডিএইচ, এভারেস্টের মতো ব্র্যান্ডের মশলা নিষিদ্ধ করেছে কিছু দেশ। কোনও কোনও দেশ আবার ভারতীয় মশলার গুণমান নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছে। বিশ্বের বাজারে মশলায় মুখ পুড়েছে নয়াদিল্লির।
০৫১৭
গত মাসেই প্রথমে সিঙ্গাপুর এবং হংকং ভারতের এমডিএইচ গোষ্ঠীর তিনটি এবং এভারেস্টের একটি মশলা নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করে। অভিযোগ, মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক (এথিলিন অক্সাইড) রয়েছে ওই মশলায়, যা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর।
০৬১৭
শুক্রবার ভারতের পড়শি নেপালও এই দুই ব্র্যান্ডের মশলা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। বলা হয়েছে, মশলাগুলি পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। চূড়ান্ত রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত দেশে ওই দুই ব্র্যান্ডের মশলা কেনা, বিক্রি করা বা ব্যবহার করা যাবে না।
০৭১৭
আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং নিউ জ়িল্যান্ডও ভারতীয় মশলা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ব্রিটেন জানিয়েছে, এই বিশেষ দুই ব্র্যান্ডের মশলা নিয়ে তারা বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করছে। ভারতের সমস্ত মশলার উপর নজরদারি চালাচ্ছে তারা।
০৮১৭
ভারতের মশলায় মূল বিতর্ক এথিলিন অক্সাইড নিয়েই। অভিযোগ, এই রাসায়নিক মশলা জীবাণুমুক্ত করার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু মানুষের শরীরের পক্ষে এই মশলা অত্যন্ত ক্ষতিকর। এই মশলা শরীরে বেশি গেলে ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে।
০৯১৭
আগে মশলা পরিশোধনে শুধু ভারত নয়, অন্যান্য দেশও এথিলিন অক্সাইড ব্যবহার করত। পরে এই রাসায়নিকের ক্ষতিকর প্রভাবের কথা জানা যায়। তার পর থেকে বিভিন্ন দেশ এই রাসায়নিক ব্যবহার ধাপে ধাপে তুলে দিয়েছে।
১০১৭
বিদেশে মশলায় নিষেধাজ্ঞা এড়াতে সতর্ক হয়েছে নয়াদিল্লিও। সিঙ্গাপুর এবং হংকংয়ের নিষেধাজ্ঞার পর দেশের মশলা পর্ষদ বা স্পাইস বোর্ড পদক্ষেপ করেছে। রফতানিকারকদের উদ্দেশে জারি করা হয়েছে বিশেষ নির্দেশিকা।
১১১৭
নির্দেশিকায় পর্ষদ জানিয়েছে, রফতানিকারীদের নিশ্চিত করতে হবে, যাতে মশলা শোধন-সহ কোনও ক্ষেত্রেই এথিলিন অক্সাইড ব্যবহার না করা হয়। এ জন্য জলীয় বাষ্প ব্যবহার করার মতো খাদ্য নিয়ন্ত্রক এফএসএসএআই-এর অনুমোদিত বিকল্প পথ ব্যবহার করতে হবে।
১২১৭
এভারেস্ট এবং এমডিএইচ ভারতের প্রধান এবং জনপ্রিয়তম দু’টি মশলা প্রস্তুতকারী সংস্থা। এই ব্র্যান্ডগুলির মশলা বহন, গুদামজাত করা, প্যাকেজিং-এর পণ্য সরবরাহকারীরাও যাতে এথিলিন অক্সাইড ব্যবহার এড়িয়ে চলে, দেখতে বলা হয়েছে পর্ষদের তরফে।
১৩১৭
পর্ষদ আরও জানিয়েছে, মশলার কাঁচামাল থেকে শুরু করে প্যাকেজিং এবং কীটনাশকের উপস্থিতি পরীক্ষা করতে হবে। কোনও সমস্যা হলে তা মেটানোর উপায়ও বার করতে হবে। ভবিষ্যতে যাতে আবার ওই সমস্যা না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া, মশলা বস্তাবন্দি করার সময়ে জল না দেওয়া, পোকামাকড়ের উপদ্রব আটকাতে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে পর্ষদের নির্দেশিকায়।
১৪১৭
যে দুই সংস্থার মশলার বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ, তারা কিন্তু ক্ষতিকর রাসায়নিক ব্যবহার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। এভারেস্ট এবং এমডিএইচের দাবি, তাদের মশলা সম্পূর্ণ নিরাপদ।
১৫১৭
ভারত বিশ্বের বৃহত্তম মশলা রফতানিকারী দেশ। একাধিক দেশ এখানকার নামী ব্র্যান্ডের মশলা কিনে নিয়ে যায়। বিদেশের রান্নায় ভারতের মশলা একপ্রকার অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। বিদেশে প্রবাসী ভারতীয়েরাও এই মশলা ব্যবহার করেন রান্নায়।
১৬১৭
একে একে বিভিন্ন দেশ ভারত থেকে মশলা কেনা বন্ধ করে দিলে, ভারতের বাণিজ্য মহলে তার বিরূপ প্রভাব পড়তে বাধ্য। কারণ, মশলা থেকে প্রতি বছর বিপুল আয় হয় দেশের। ২০২১-২২ অর্থবর্ষে ৪১০ কোটি ডলারের মশলা রফতানি করেছিল ভারত।
১৭১৭
ভারতের মশলার গুণমান নিয়ে প্রশ্ন উঠলে দেশের অর্থনীতিতে তার প্রভাব পড়তে পারে। তাই রাসায়নিক ব্যবহারের অভিযোগ খতিয়ে দেখে অবিলম্বে বিষয়টি নিয়ে সতর্ক হওয়া উচিত নয়াদিল্লির।