What is lateral entry into bureaucracy and what is debate regarding it dgtl
UPSC Exam
ইউপিএসসি পাশ না করে কী ভাবে আমলা হওয়া যায়? আমলাতন্ত্রে পার্শ্বীয় প্রবেশ কী? বিতর্কই বা কিসের?
সরকার পক্ষের যুক্তি, আমলাতন্ত্রে পার্শ্বীয় প্রবেশের উদ্দেশ্য হল বাহ্যিক দক্ষতা ব্যবহার করে জটিল শাসন ও নীতি বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করা।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০২৪ ১৫:৩২
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৮
আমলাতন্ত্রে পার্শ্বীয় প্রবেশ নিয়েই গত কয়েক দিন ধরেই সরগরম দেশের রাজনীতি। একে অপরকে আক্রমণ করে চলেছে সরকার এবং বিরোধী পক্ষ। বিরোধীদের দাবি, আমলাতন্ত্রে পার্শ্বীয় প্রবেশের জন্য চাপ সৃষ্টি করছে সরকার।
০২১৮
কিন্তু যে আমলাতন্ত্রে পার্শ্বীয় প্রবেশ নিয়ে এত হইচই, তা আসলে কী? আমলাতন্ত্রে পার্শ্বীয় প্রবেশের অর্থ মধ্য ও উচ্চপদস্থ আমলাদের পদ পূরণের জন্য সরকারের বাইরে থেকে বিভিন্ন যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগ। এই নিয়োগ হয় ইউপিএসসি পরীক্ষা না দিয়েই, চুক্তির ভিত্তিতে।
০৩১৮
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমলেই আমলাতন্ত্রে পার্শ্বীয় প্রবেশ আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হয়েছিল। ২০১৮ সালে প্রথম শূন্যপদ ঘোষণা করা হয়েছিল।
০৪১৮
প্রার্থীদের সাধারণত তিন থেকে পাঁচ বছরের চুক্তিতে নিয়োগ করা হয়। কর্মক্ষমতার উপর ভিত্তি করে মেয়াদবৃদ্ধিও হতে পারে।
০৫১৮
সরকার পক্ষের যুক্তি, আমলাতন্ত্রে পার্শ্বীয় প্রবেশের উদ্দেশ্য হল বাহ্যিক দক্ষতা ব্যবহার করে জটিল শাসন ও নীতি বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করা।
০৬১৮
রাহুল গান্ধী-সহ অন্য বিরোধী নেতারা বিজেপি সরকারের এই পদক্ষেপের সমালোচনা করলেও আমলাতন্ত্রে পার্শ্বীয় প্রবেশের ইতিহাস কিন্তু অন্য কথা বলছে।
০৭১৮
প্রাথমিক ভাবে ২০০৫ সালে কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকারের আমলে প্রতিষ্ঠিত দ্বিতীয় প্রশাসনিক সংস্কার কমিশন আমলাতন্ত্রে পার্শ্বীয় প্রবেশের সুপারিশ করেছিল।
০৮১৮
ওই কমিশনের মাথায় ছিলেন বীরাপ্পা মইলি। রিপোর্টে বলা হয়, মাঝেমধ্যে প্রশাসন চালাতে এমন জ্ঞানের প্রয়োজন হয় যা সরকারি আধিকারিকদের কাছে থাকে না। আর জন্যই পার্শ্বীয় প্রবেশের সুপারিশ করা হয়েছিল।
০৯১৮
নীতি বাস্তবায়ন এবং শাসন ব্যবস্থার উন্নতির জন্য বেসরকারি খাত, শিক্ষাক্ষেত্র এবং পিএসইউ থেকে পেশাদারদের নিয়োগের উপর জোর দিয়েছিল সেই রিপোর্ট।
১০১৮
সেই আমলাতন্ত্রে পার্শ্বীয় প্রবেশ নিয়েই আবার হইচই শুরু হয়েছে দেশে। গত শনিবার, কেন্দ্রীয় সরকারের ২৪টি মন্ত্রকে যুগ্ম সচিব, পরিচালক এবং উপসচিব-সহ ৪৫টি উচ্চ পদে পার্শ্বীয় নিয়োগের জন্য বিজ্ঞাপন জারি করে।
১১১৮
২৪ মন্ত্রকের বিভিন্ন বিভাগের প্রধান হিসাবে এই নিয়োগগুলি দেওয়া হবে। বিভিন্ন রাজ্য, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল, পিএসইউ, বেসরকারি সংস্থা, গবেষণা প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যোগ্য এবং অভিজ্ঞ প্রার্থীরা এই পদের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
১২১৮
তবে যে হেতু প্রতিটি বিভাগে এক জন করেই নিয়োগ করা হবে, তাই এ ক্ষেত্রে কোনও সংরক্ষণ থাকবে না বলে জানিয়েছে ‘ডিপার্টমেন্ট অফ পার্সোনেল অ্যান্ড ট্রেনিং (ডিওপিটি)’। পুরোটাই হবে যোগ্যতার ভিত্তিতে।
১৩১৮
ডিওপিটির প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ এ-ও জানিয়েছেন, গত পাঁচ বছরে পার্শ্বীয় প্রবেশের মাধ্যমে মোট ৬৩ জনকে নিয়োগ দিয়েছে। এই পদ্ধতিতে নিয়োগ হয়েছে, এমন ৫৭ জন বিভিন্ন মন্ত্রকে বা বিভাগীয় পদে রয়েছেন।
১৪১৮
অন্য দিকে বিরোধী নেতাদের যুক্তি যে, বিশেষ প্রতিভা এবং দক্ষতার কথা বলে আমলাতন্ত্রে পার্শ্বীয় প্রবেশের নিয়োগে সংরক্ষণ থাকছে না। ফলে তফসিলি জাতি-উপজাতি এবং অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির অধিকার কাড়া হচ্ছে।
১৫১৮
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এই নিয়োগের সমালোচনা করেছেন এবং পুরো বিষয়টিকে মোদী সরকার এবং আরএসএস অনুগতদের নিয়োগের পন্থা বলে অভিযোগ করেছেন। এক্স হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার) রাহুল লিখেছেন, ‘‘পার্শ্বীয় প্রবেশ দলিত, ওবিসি এবং আদিবাসীদের উপর আক্রমণ। বিজেপির রাম রাজ্যের বিকৃত সংস্করণ সংবিধানকে ধ্বংস করতে এবং বহুজনদের কাছ থেকে সংরক্ষণ ছিনিয়ে নিতে চাইছে।’’
১৬১৮
কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের অভিযোগ, আমলাতন্ত্রে পার্শ্বীয় প্রবেশ আদতে প্রান্তিক জনজাতিগুলিকে সরকারি চাকরি থেকে বাদ দেওয়ার ‘সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র’।
১৭১৮
নেতা তথা লালু-পুত্র তেজস্বী যাদব এবং উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতীও এই পদক্ষেপের নিন্দা করেছেন।
১৮১৮
যদিও বিজেপি সরকারের দাবি, আমলাতন্ত্রে পার্শ্বীয় প্রবেশের সিদ্ধান্তের বীজ বপন হয়েছিল কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকারের আমলেই। রাহুল গান্ধীর মন্তব্যের জবাবে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব টুইট করেছেন, ‘‘আমলাতন্ত্রে পার্শ্বীয় প্রবেশ নিয়ে কংগ্রেসের ভণ্ডামি স্পষ্ট। তৎকালীন ইউপিএ সরকার এই ধারণা দিয়েছিল। দ্বিতীয় অ্যাডমিন রিফর্মস কমিশন (এআরসি) ২০০৫ সালে ইউপিএ-র অধীনে তৈরি হয়েছিল।’’