What is Kavach System in Trains and why it is being discussed after Coromandel Express Derailment in Odisha dgtl
Kavach System
দুর্ঘটনা রুখতে ‘বাহুবলী’, কী এই কবচ? করমণ্ডল এক্সপ্রেসে কি ধাক্কা খেল রেলের প্রযুক্তি?
বালেশ্বরের কাছে চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনায় ২৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই দুর্ঘটনার পরেই প্রশ্নের মুখে রেলের ‘কবচ’ প্রযুক্তি।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০২৩ ১১:১২
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
রেল দুর্ঘটনা এড়াতে সুরক্ষাকবচ এনেছিল রেল। গত বছর থেকে ঘটা করে তার প্রচার করা হয়েছিল। স্বয়ং রেলমন্ত্রী ওই প্রযুক্তির ট্রেনে চেপে পরীক্ষামূলক ভ্রমণও করেছিলেন।
ছবি: পিটিআই।
০২২০
কিন্তু শুক্রবার সন্ধ্যায় ‘কবচ’ নিয়ে রেলের যাবতীয় অহঙ্কার মাটিতে মিশে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। এক ধাক্কায় অজস্র প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছে এই প্রযুক্তি।
ছবি: পিটিআই।
০৩২০
শুক্রবার বালেশ্বরের কাছে বাহানগা বাজারে লাইনচ্যুত হয় চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ১৫টি বগি। একই সঙ্গে দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয় বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপার ফাস্ট এক্সপ্রেস এবং একটি মালগাড়িও।
ছবি: পিটিআই।
০৪২০
এই তিন ট্রেনের দুর্ঘটনায় বালেশ্বর এখন মৃত্যুপুরী। রেল জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ২৩৮, আহত প্রায় ৬৫০ জন। পিটিআইয়ের তথ্য অনুযায়ী, মৃতের সংখ্যা ২৩৩, আহত ৯০০-র বেশি।
ছবি: পিটিআই।
০৫২০
এই দুর্ঘটনার পর থেকেই ‘কবচ’ নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছে, যার উত্তর খুঁজছে গোটা দেশ। রেলের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি আদৌ এই দুই ট্রেন এবং মালগাড়িতে ছিল না।
ছবি: পিটিআই।
০৬২০
২০১২ সাল থেকে ‘কবচ’-এর নির্মাণপ্রক্রিয়া চলছে। ২০১৪ সালে প্রথম এই প্রযুক্তির পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হয়। এর মাধ্যমে রেল দুর্ঘটনার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে আসবে বলে দাবি করেছিল রেল।
ছবি: পিটিআই।
০৭২০
‘কবচ’ হল মূলত একটি সংঘর্ষবিরোধী প্রযুক্তি। দু’টি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ এর মাধ্যমে এড়ানো যায়। রেলের দাবি, এই প্রযুক্তি দুর্ঘটনাশূন্য রেল পরিষেবার জন্ম দেবে। এর ফলে দুর্ঘটনার হার হবে ১০ বছরে মাত্র এক বার।
ছবি: পিটিআই।
০৮২০
শরীরে ‘কবচ’ ধারণ করলে বিপদ-আপদ কেটে যায় বলে অনেকে বিশ্বাস করেন। তেমনই বড় কোনও দুর্ঘটনা থেকে এই স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা ট্রেনযাত্রীদের রক্ষা করবে বলে বিশ্বাস করে মোদী সরকার। তা-ই এমন নাম।
ছবি: পিটিআই।
০৯২০
২০২০ সালে ‘কবচ’কে জাতীয় স্বয়ংক্রিয় ট্রেন সুরক্ষা ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সর্বোচ্চ সুরক্ষা স্তরের পরীক্ষাতেও সবুজ সংকেত পায় এই প্রযুক্তি। তবে যাত্রিবাহী ট্রেন ছাড়া মালবাহী ট্রেনে ‘কবচ’ পদ্ধতি ব্যবহার করা হবে, এমন কোনও পরিকল্পনাও এখনও রেলের নেই।
ছবি: পিটিআই।
১০২০
রেল জানিয়েছে, ‘কবচ’ প্রযুক্তিতে রয়েছে মাইক্রো প্রসেসর, গ্লোবাল পজ়িশনিং সিস্টেম এবং রেডিয়ো সংযোগব্যবস্থা। যাবতীয় আধুনিক প্রযুক্তি ‘কবচ’-এ ব্যবহার করা হয়েছে।
ছবি: পিটিআই।
১১২০
কী করে এই ‘কবচ’? মূলত, একই লাইনের উপর দু’টি ট্রেনের উপস্থিতি নির্দিষ্ট দূরত্ব থেকেই বুঝতে পারে ‘কবচ’। সেই অনুযায়ী সে আগেভাগে ট্রেনের চালককে সতর্ক করে দেয়।
ছবি: পিটিআই।
১২২০
দু’টি ট্রেন একই লাইনে চলে এলে ইঞ্জিনে বসানো একটি যন্ত্রের মাধ্যমে অনবরত সিগন্যাল দিতে থাকে ‘কবচ’। যা চালকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করেন তিনি।
ছবি: পিটিআই।
১৩২০
রেল জানিয়েছে, ‘কবচ’ শুধু সতর্কই করে না। এই প্রযুক্তি স্বয়ংক্রিয় ভাবে ট্রেনের গতিবেগ কমিয়ে দেয় এবং এর ফলে চালকের হস্তক্ষেপ ছাড়াই ট্রেনের ব্রেক কার্যকর হয়। এই পদ্ধতির আর একটি সুবিধা হল, নেটওয়ার্ক পদ্ধতিতে ট্রেন চলাচলের গতিবিধির উপর সরাসরি নজর রাখা যায়।
ছবি: পিটিআই।
১৪২০
২০২২ সালের মার্চ মাসে ‘কবচ’ ট্রেনকে দুর্ঘটনা থেকে বাঁচাতে পারে কি না, তার পরীক্ষা চলছিল। সেই পরীক্ষামূলক যাত্রায় একটি ট্রেনে ছিলেন স্বয়ং রেলমন্ত্রী। দু’টি লোকো একই লাইনে পরস্পরের দিকে ছুটে যায়। কিন্তু তাদের অব্যর্থ পরিত্রাণ দিয়েছিল ‘কবচ’। ধাক্কা লাগার আগেই একটি ইঞ্জিন অপরটির চেয়ে ৩৮০ মিটার দূরত্বে থেমে গিয়েছিল। কোনও দুর্ঘটনা ঘটেনি। তার ভিডিয়ো টুইটারে পোস্ট করেন রেলমন্ত্রী বৈষ্ণব। জানান, পরীক্ষা ১০০ শতাংশ সফল।
ফাইল চিত্র।
১৫২০
অর্থাৎ, রেলের দাবি অনুযায়ী, দুর্ঘটনা এড়াতে ‘কবচ’ একপ্রকার ‘বাহুবলী’র ভূমিকা পালন করে থাকে। এখন প্রশ্ন হল, রেলের কাছে এত উন্নত, ঝুঁকিহীন প্রযুক্তি থাকা সত্ত্বেও কেন শুক্রবার এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনা দেখতে হল দেশকে?
ছবি: পিটিআই।
১৬২০
করমণ্ডল এক্সপ্রেস কিংবা বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপার ফাস্ট এক্সপ্রেসে ‘কবচ’ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়নি। যদি এই প্রযুক্তি থাকত, তা হলে হয়তো বিপদ এড়ানো যেত।
ছবি: পিটিআই।
১৭২০
হাওড়া থেকে দক্ষিণভারতগামী ট্রেনগুলির মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ করমণ্ডল এক্সপ্রেস। দক্ষিণ ভারতে চিকিৎসার জন্য হোক কিংবা নিছক পর্যটন, বহু মানুষ এই ট্রেনের উপর ভরসা করে থাকেন।
ছবি: পিটিআই।
১৮২০
গুরুত্বপূর্ণ এই ট্রেনে ‘কবচ’ প্রযুক্তি থাকাই স্বাভাবিক। কিন্তু রেল এখনও নতুন এই প্রযুক্তি দেশের সমস্ত ট্রেনে ব্যবহার করে উঠতে পারেনি।
ছবি: পিটিআই।
১৯২০
দুর্ঘটনাগ্রস্ত দু’টি ট্রেনেই আধুনিক এবং নিরাপদ এইচএলবি কোচ ব্যবহার করা হয়েছিল। এই ধরনের কোচ লাইনচ্যুত হলে কাপলিং আলগা হয়ে দু’পাশে ছড়িয়ে পড়ে। শুক্রবারের দুর্ঘটনায় সেই বৈশিষ্ট্যই মারাত্মক হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন অনেকে।
ছবি: পিটিআই।
২০২০
এইচএলবি কোচ লাইনচ্যুত হলে চালকের অন্যান্য় ট্রেনে সেই খবর পৌঁছে দেওয়ার কথা। তার জন্য চালকদের কাছে দশটি করে ডেটোনেটর এবং দু’টি করে বারুদযুক্ত রং মশাল দেওয়া থাকে। তবে এ সব ব্যবহারের সময় দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনের চালক পেয়েছিলেন কি না, তা স্পষ্ট নয়।