Vande Bharat express to start its journey in Bengal, here is what you need to know before you board the train dgtl
Vande Bharat
রাজ্যে চালু হচ্ছে বন্দে ভারত, সপ্তাহে ক’দিন, কত ভাড়া, গতিবেগই বা কত? রইল খুঁটিনাটি
রাজ্যের প্রথম বন্দে ভারত এক্সপ্রেস পাহাড় আর সমতলের দূরত্ব কমাচ্ছে। এই ট্রেনে যাত্রা শুরুর আগে রইল ভার্চুয়াল সফরের সুযোগ।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২২ ১৭:৪১
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২২
অনুশীলন শেষ। বাংলায় বন্দে ভারত এক্সপ্রেস এ বার ‘ফাইনাল’ ম্যাচে নামছে। সব ঠিক থাকলে হয়তো আগামী শুক্রবার, ৩০ ডিসেম্বরই শুরু হচ্ছে দেশের দ্রুততম ট্রেন বন্দে ভারতের বাংলা সফর। সে ক্ষেত্রে ওই দিনই হাওড়া থেকে নিউ জলপাইগুড়ির উদ্দেশে রওনা হবে আপ ২২৩০১ হাওড়া-নিউ জলপাইগুড়ি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস। কিন্তু সে তো উদ্বোধন! আম জনতা কবে থেকে সওয়ার হতে পারবেন এই দ্রুতগামী ট্রেনে? কী কী সুবিধা থাকছে তাঁদের জন্য? ভাড়াই বা কত? বন্দে ভারতকে নিয়ে এমন আরও অজস্র কৌতূহল মেটালেন পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ।
০২২২
কত ক্ষণের সফর? দ্রুতগামী ট্রেন বন্দে ভারত সমতলের সঙ্গে পাহাড়কে জুড়বে সাড়ে ৭ ঘণ্টায়। হাওড়া থেকে নিউ জলপাইগুড়ির রেলপথের দূরত্ব ৫৫৬ কিলোমিটার। শতাব্দী এক্সপ্রেসে এই একই দূরত্ব অতিক্রম করতে সময় লাগে ৮ ঘণ্টা ২০ মিনিট। বন্দে ভারত সেই দূরত্ব কমিয়ে আনবে আরও ৫০ মিনিট।
০৩২২
কখন ছাড়বে ট্রেন? এখনও পর্যন্ত যা ঠিক আছে, সেই অনুযায়ী, আপ ২২৩০১ বন্দে ভারত এক্সপ্রেস হাওড়া থেকে নিউ জলপাইগুড়ির উদ্দেশে ছাড়বে ভোর ৫টা ৫০ মিনিটে। নিউ জলপাইগুড়ি পৌঁছবে দুপুর ১টা ২০ মিনিটে। জলপাইগুড়িতে নেমে দার্জিলিং-সহ পাহাড়ের বিভিন্ন জায়গায় যেতে হলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বিকেলের আগেই গন্তব্যে পৌঁছবেন পর্যটকেরা।
০৪২২
আবার ডাউন ২২৩০২ বন্দে ভারত এক্সপ্রেস নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে ছাড়বে দুপুর ২টো ৫০ মিনিটে। অর্থাৎ দার্জিলিঙের হোটেল থেকে সকাল ১০টায় চেক আউট করে এই ট্রেনে উঠে পড়তে পারবেন ভ্রমণার্থীরা। সেই ট্রেন হাওড়ায় আসবে রাত ১০টা ২০ মিনিটে। সে ক্ষেত্রে সকালে দার্জিলিঙের হোটেল থেকে বেরিয়ে শহর বা মফস্সলের বাসিন্দারা রাত ১২টার মধ্যেই ঢুকে পড়তে পারবেন বাড়িতে। তবে এই সময়সূচি সম্ভাব্য। চূড়ান্ত নয়। রেল সূত্রে খবর শীঘ্রই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
০৫২২
ট্রেনের গতিবেগ কত? খাতায় কলমে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের গতি ঘণ্টায় সর্বাধিক ১৮০ কিলোমিটার। কিন্তু হাওড়া-নিউ জলপাইগুড়ি রুটে বন্দে ভারতের সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটারের সীমা পেরোবে না। বস্তুত, এই গতিবেগও সর্বত্র এক রকম থাকবে না। রেল জানাচ্ছে, ডানকুনি থেকে খানা জংশনের মধ্যে বন্দে ভারতের সর্বাধিক গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার। তার পর রেললাইনের স্বাস্থ্যের কারণেই গতি আর বাড়ানো যাবে না। এমনকি ১০০ কিলোমিটার গতিবেগেও চালানো যাবে না ট্রেন। যাত্রাপথের বাকি অংশে বন্দে ভারতের গতি থাকবে ঘণ্টায় ৭০ থেকে ৯০ কিলোমিটারে। যা এই ট্রেনের গড় গতিবেগকে কমিয়ে আনবে ঘণ্টায় ৭২ কিলোমিটারে।
০৬২২
কোন কোন স্টেশনে থামবে? হাওড়া থেকে নিউ জলপাইগুড়ির মধ্যে আপাতত একটি স্টেশনেই থামার কথা জানিয়েছে রেল। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, কেবলমাত্র মালদহ টাউন স্টেশনেই দাঁড়াবে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস। তবে সময়সূচির মতো এই সিদ্ধান্তও চূড়ান্ত নয়।
০৭২২
সাড়ে সাত ঘণ্টার যাত্রাপথ, ভোরের ট্রেন। সেই ট্রেন দাঁড়াবে কেবল একটি স্টেশনে। সে ক্ষেত্রে যাত্রীদের খাবার, জলের জোগান আসবে কোথা থেকে? রেল সূত্রে খবর, বন্দে ভারতে খাবার দেওয়া হবে। আপ ট্রেনে প্রাতঃরাশ এবং দুপুরের খাবার দেওয়া হবে যাত্রীদের। সঙ্গে থাকবে চা এবং কফি। আবার জলপাইগুড়ি থেকে হাওড়া ফেরার পথেও ডাউন ট্রেনে সন্ধ্যার জলখাবার দেওয়া হবে। চা ও কফি ছাড়াও ব্যবস্থা থাকবে নৈশ আহারেরও।
০৮২২
গতিবেগ ছাড়া দুরন্ত বা শতাব্দীর মতো ট্রেনের থেকে আলাদা কী সুবিধা থাকছে বন্দে ভারতে? রেল জানাচ্ছে, অন্য দ্রুতগতি ট্রেনগুলির থেকে বন্দে ভারতের কামরা এবং ইঞ্জিনের ধরন আলাদা।
০৯২২
বন্দে ভারতের কামরা কি ভিস্তা ডোমের মতো? বন্দে ভারত কোচ ভিস্তা ডোমের মতো নয়। এই ট্রেনের কামরা তৈরি করেছে চেন্নাইয়ের ইন্টিগ্র্যাল কোচ ফ্যাক্টরি। ভিস্তার মতো কামরার মাথায় কাচের আবরণ না থাকলেও জানলাগুলি বড়, কাচগুলোও টানা। ফলে এই ট্রেনে দু’পাশের দৃশ্য আরও ভাল ভাবে উপভোগ করতে পারবেন যাত্রীরা।
১০২২
তবে ভিস্তা ডোমের সঙ্গে সামান্য মিলও রয়েছে বন্দে ভারতের। এই ট্রেনেও বসার আসনগুলি ইচ্ছেমতো জানলার দিকে ঘুরিয়ে নেওয়া যায়।
১১২২
বন্দে ভারতে থাকবে অত্যাধুনিক স্লাইডিং ডোর। যাতে থাকবে অটো লক সিস্টেম। স্টেশনে ঢোকার পর এবং স্টেশন ছেড়ে বেরোনোর আগে নির্দিষ্ট সময়ে খুলবে। বন্ধও হয়ে যাবে এই দরজা। সবেরই নিয়ন্ত্রণ থাকবে চালকের হাতে।
১২২২
বন্দে ভারতের শৌচালয়টিও অত্যাধুনিক বায়ো টয়লেট প্রযুক্তিতে বানানো। রয়েছে স্লাইডিং ডোর। ফলে যাত্রীরা শৌচাগারে জায়গা পাবেন বেশি।
১৩২২
বন্দে ভারতে কোন কোন শ্রেণির কোচ থাকছে? সাধারণত যে সমস্ত ট্রেনে যাত্রীকে রাত কাটাতে হয় না, সেখানে চেয়ার কারের বন্দোবস্ত থাকে। বন্দে ভারতেও চেয়ার কারেরই ব্যবস্থা থাকছে। তবে দু’রকম কামরা থাকবে। একটি এসি চেয়ার কার এবং আর একটি এগ্জিকিউটিভ চেয়ার কার।
১৪২২
ভাড়া কত? বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের ভাড়া এখনও অবধি ঠিক হয়নি। রেল সূত্রে খবর, এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হতে পারে বন্দে ভারতের প্রথম সফরের আগেই। তার পরই জানা যাবে ভাড়ার অঙ্ক।
১৫২২
তবে রেলের ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, ৫৫১ থেকে ৫৬০ কিলোমিটার পথ যাওয়ার জন্য বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের নির্ধারিত ভাড়া এসি চেয়ার কারের জন্য ১,০২৩ টাকা এবং এগ্কিউটিভ ক্লাসের জন্য ২,১১৩ টাকা। তবে এই ভাড়ার সঙ্গে সম্ভবত রেলের অন্যান্য পরিষেবার এবং ক্যাটারিংয়ের মূল্য ধরা নেই।
১৬২২
তবে পরিষেবা কর এবং অন্যান্য মূল্য বাদ দিয়েও বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের এই ভাড়া কিলোমিটারের বিচারে দেশের অন্য সমস্ত দ্রুতগামী এবং বিশেষ সুবিধাযুক্ত দূরপাল্লার ট্রেনের থেকে বেশি। এ ব্যাপারে দুরন্ত, তেজস, গতিমান, শতাব্দী, জন শতাব্দী, এমনকি, রাজধানী এক্সপ্রেসের ভাড়াকেও টেক্কা দিচ্ছে বন্দে ভারত।
১৭২২
৩০ তারিখ থেকে যদি ট্রেনের যাত্রা শুরু হয়, তবে যাত্রীরা টিকিট সংরক্ষণ করতে পারবেন কবে থেকে? রেল জানিয়েছে, ভাড়া, সময়সূচি এবং স্টপেজ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হলেই টিকিট কাটতে পারবেন যাত্রীরা। সে ক্ষেত্রে যে দিনই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হোক তার ২৪ ঘণ্টা পর থেকেই টিকিট কাটতে পারবেন যাত্রীরা।
১৮২২
সপ্তাহে কত দিন চলবে বন্দে ভারত? রবিবার বাদে সপ্তাহের বাকি ৬ দিনই চলবে বন্দে ভারত। ৬ দিনই একই সময়ে চলবে এই ট্রেন।
১৯২২
সোমবার অর্থাৎ ২৬ ডিসেম্বর ট্রায়াল রান হল বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের। সকাল ৬টা নাগাদ হাওড়ার ২২ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে যাত্রা শুরু করে ট্রেনটি।
২০২২
রাজ্যের প্রথম বন্দে ভারত ট্রেন এটি। তবে সারা দেশের হিসাবে বাংলার বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ষষ্ঠ।
২১২২
২৫ ডিসেম্বর, বড়দিনেই হাওড়ায় এসে পৌঁছয় এ রাজ্যের বন্দে ভারতের রেক। লিলুয়ার সর্টিং ইয়ার্ডে রাখা ছিল। এর পর সোমবার সকালেই হাওড়া থেকে শুরু হয় ট্রেনটির ট্রায়াল রান।
২২২২
নীল-সাদা রঙের এই অত্যাধুনিক দ্রুত গতির ট্রেনটির উদ্বোধন করার কথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। সব ঠিক থাকলে শুক্রবার অর্থাৎ ৩০ ডিসেম্বরই হাওড়া থেকে যাত্রা শুরু হবে বন্দে ভারতের।