Advertisement
৩০ জুন ২০২৫
US New Zealand Relation

পবিত্র ভূমিতে গণবিধ্বংসী হাতিয়ার নয়, মুখের উপর আমেরিকাকে না বলে দেয় কিউয়িরা! তার পর...

পরমাণু হাতিয়ারের ঘোর বিরোধী হওয়ায় একটা সময়ে আমেরিকার সঙ্গে নিউ জ়িল্যান্ডের সম্পর্কে ঠেকেছিল তলানিতে। যুক্তরাষ্ট্রের রণতরীকে সটান না বলে দেয় কিউয়ি সরকার।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৮:০২
Share: Save:
০১ ২০
পরমাণু অস্ত্র নীতি নিয়ে দুই বন্ধুর সম্পর্কে ধরে চিড়! ফাটল এতটাই চও়ড়া হয়েছিল যে, এক সময়ে প্রায় বন্ধ হয়ে যায় মুখ-দেখাদেখি! শুধু তা-ই নয়, সামরিক দিক থেকে ধারে ও ভারে অনেকটা পিছিয়ে থেকেও মুখের উপর ‘সুপার পাওয়ার’ বন্ধুকে না বলার দুঃসাহস দেখায় অপর জন। তার নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকার দৃষ্টান্ত দেখে রীতিমতো চমকে গিয়েছিল গোটা বিশ্ব।

পরমাণু অস্ত্র নীতি নিয়ে দুই বন্ধুর সম্পর্কে ধরে চিড়! ফাটল এতটাই চও়ড়া হয়েছিল যে, এক সময়ে প্রায় বন্ধ হয়ে যায় মুখ-দেখাদেখি! শুধু তা-ই নয়, সামরিক দিক থেকে ধারে ও ভারে অনেকটা পিছিয়ে থেকেও মুখের উপর ‘সুপার পাওয়ার’ বন্ধুকে না বলার দুঃসাহস দেখায় অপর জন। তার নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকার দৃষ্টান্ত দেখে রীতিমতো চমকে গিয়েছিল গোটা বিশ্ব।

০২ ২০
আমেরিকা ও নিউ জ়িল্যান্ড। বর্তমানে দৃঢ় ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে দুই দেশের কৌশলগত অংশীদারি। কিন্তু বছর ৪০ আগে পরিস্থিতি ছিল ঠিক উল্টো। গত শতাব্দীতে পরমাণু হাতিয়ার বহনকারী মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ‘ইউএসএস বুকানন’-কে কেন্দ্র করে ওয়াশিংটন ও ওয়েলিংটনের মধ্যে শুরু হয় দ্বন্দ্ব। পরবর্তী দশকগুলিতে এর জেরেই দুই দেশের সম্পর্ক একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছিল।

আমেরিকা ও নিউ জ়িল্যান্ড। বর্তমানে দৃঢ় ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে দুই দেশের কৌশলগত অংশীদারি। কিন্তু বছর ৪০ আগে পরিস্থিতি ছিল ঠিক উল্টো। গত শতাব্দীতে পরমাণু হাতিয়ার বহনকারী মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ‘ইউএসএস বুকানন’-কে কেন্দ্র করে ওয়াশিংটন ও ওয়েলিংটনের মধ্যে শুরু হয় দ্বন্দ্ব। পরবর্তী দশকগুলিতে এর জেরেই দুই দেশের সম্পর্ক একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছিল।

০৩ ২০
১৯৫৫ সালে ‘নতুন চেহারা’ নীতি কার্যকর করেন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোয়াইট ডি আইজ়েনহাওয়ার। এতে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে কৌশলগত পরমাণু হাতিয়ার মোতায়েনের উপর জোর দেয় মার্কিন নৌসেনা। কারণ, তত দিনে সোভিয়েত রাশিয়ার সঙ্গে ‘ঠান্ডা লড়াই’য়ে জড়িয়ে পড়েছে আমেরিকা।

১৯৫৫ সালে ‘নতুন চেহারা’ নীতি কার্যকর করেন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোয়াইট ডি আইজ়েনহাওয়ার। এতে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে কৌশলগত পরমাণু হাতিয়ার মোতায়েনের উপর জোর দেয় মার্কিন নৌসেনা। কারণ, তত দিনে সোভিয়েত রাশিয়ার সঙ্গে ‘ঠান্ডা লড়াই’য়ে জড়িয়ে পড়েছে আমেরিকা।

০৪ ২০
‘ঠান্ডা লড়াই’য়ের সময়ে মস্কোর উপর চাপ বাড়াতে ক্রমাগত নৌশক্তি বৃদ্ধি করতে থাকে ওয়াশিংটন। প্রশান্ত হোক বা আটলান্টিক— সমস্ত মহাসাগরেই তখন চষে বেড়াত আমেরিকার রণতরী ও ডুবোজাহাজ। সেগুলির অধিকাংশই ছিল পরমাণু হাতিয়ারে সজ্জিত। এই তালিকায় বিমানবাহী যুদ্ধপোত ছাড়াও ছিল ক্রুজ়ার এবং ডেস্ট্রয়ার শ্রেণির যুদ্ধজাহাজ। রণতরীগুলির অস্ত্রাগারে ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র রেখেছিলেন মার্কিন নৌ কম্যান্ডারেরা।

‘ঠান্ডা লড়াই’য়ের সময়ে মস্কোর উপর চাপ বাড়াতে ক্রমাগত নৌশক্তি বৃদ্ধি করতে থাকে ওয়াশিংটন। প্রশান্ত হোক বা আটলান্টিক— সমস্ত মহাসাগরেই তখন চষে বেড়াত আমেরিকার রণতরী ও ডুবোজাহাজ। সেগুলির অধিকাংশই ছিল পরমাণু হাতিয়ারে সজ্জিত। এই তালিকায় বিমানবাহী যুদ্ধপোত ছাড়াও ছিল ক্রুজ়ার এবং ডেস্ট্রয়ার শ্রেণির যুদ্ধজাহাজ। রণতরীগুলির অস্ত্রাগারে ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র রেখেছিলেন মার্কিন নৌ কম্যান্ডারেরা।

০৫ ২০
এর পাশাপাশি সোভিয়েত রাশিয়াকে চক্রব্যূহের মতো ঘিরে ফেলতে ‘বন্ধু’র সংখ্যা বৃদ্ধির দিকে মন দিয়েছিল ওয়াশিংটন। শর্ত একটাই, পরমাণু হাতিয়ার মোতায়েনের সুযোগ পাবে আমেরিকার ফৌজ। আর ঠিক এই ইস্যুতেই নিউ জ়িল্যান্ডের সঙ্গে বাধে গোল। যুক্তরাষ্ট্রের নীতি মেনে নেয়নি কিউয়িরা।

এর পাশাপাশি সোভিয়েত রাশিয়াকে চক্রব্যূহের মতো ঘিরে ফেলতে ‘বন্ধু’র সংখ্যা বৃদ্ধির দিকে মন দিয়েছিল ওয়াশিংটন। শর্ত একটাই, পরমাণু হাতিয়ার মোতায়েনের সুযোগ পাবে আমেরিকার ফৌজ। আর ঠিক এই ইস্যুতেই নিউ জ়িল্যান্ডের সঙ্গে বাধে গোল। যুক্তরাষ্ট্রের নীতি মেনে নেয়নি কিউয়িরা।

০৬ ২০
স্নায়ুযুদ্ধের সময়ে দক্ষিণ গোলার্ধেই দুই প্রতিবেশী অস্ট্রেলিয়া এবং নিউ জ়িল্যান্ডের সঙ্গে নিরাপত্তা চুক্তি করে ওয়াশিংটন। সালটা ছিল ১৯৫১। চুক্তিটির নাম দেওয়া হয় আনজ়ুস বা অস্ট্রেলিয়া, নিউ জ়িল্যান্ড অ্যান্ড ইউনাইটেড স্টেটস সিকিউরিটি ট্রিটি। এর কিছু দিনের মাথায় ‘ইউএসএস বুকানন’কে কিউয়ি মুলুকে পাঠিয়ে দেয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সদর দফতর পেন্টাগন। কিন্তু নিরাপত্তা চুক্তি থাকা সত্ত্বেও মার্কিন রণতরীকে নিজেদের জলসীমায় প্রবেশের অধিকার দেয়নি ওয়েলিংটন প্রশাসন।

স্নায়ুযুদ্ধের সময়ে দক্ষিণ গোলার্ধেই দুই প্রতিবেশী অস্ট্রেলিয়া এবং নিউ জ়িল্যান্ডের সঙ্গে নিরাপত্তা চুক্তি করে ওয়াশিংটন। সালটা ছিল ১৯৫১। চুক্তিটির নাম দেওয়া হয় আনজ়ুস বা অস্ট্রেলিয়া, নিউ জ়িল্যান্ড অ্যান্ড ইউনাইটেড স্টেটস সিকিউরিটি ট্রিটি। এর কিছু দিনের মাথায় ‘ইউএসএস বুকানন’কে কিউয়ি মুলুকে পাঠিয়ে দেয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সদর দফতর পেন্টাগন। কিন্তু নিরাপত্তা চুক্তি থাকা সত্ত্বেও মার্কিন রণতরীকে নিজেদের জলসীমায় প্রবেশের অধিকার দেয়নি ওয়েলিংটন প্রশাসন।

০৭ ২০
নিউ জ়িল্যান্ডের সরকার নীতিগত ভাবে পরমাণু হাতিয়ারের বিরোধী। ‘ইউএসএস বুকানন’কে দেশের জলসীমায় প্রবেশ করতে না দেওয়ার ক্ষেত্রে এই যুক্তিই দেখিয়েছিল কিউয়ি প্রশাসন। ফলে বাধ্য হয়ে অন্য রাস্তা ধরতে হয় পরমাণু হাতিয়ারে সজ্জিত মার্কিন রণতরীকে। এই অপমান হজম করতে বেশ কষ্ট হয়েছিল ওয়াশিংটনের।

নিউ জ়িল্যান্ডের সরকার নীতিগত ভাবে পরমাণু হাতিয়ারের বিরোধী। ‘ইউএসএস বুকানন’কে দেশের জলসীমায় প্রবেশ করতে না দেওয়ার ক্ষেত্রে এই যুক্তিই দেখিয়েছিল কিউয়ি প্রশাসন। ফলে বাধ্য হয়ে অন্য রাস্তা ধরতে হয় পরমাণু হাতিয়ারে সজ্জিত মার্কিন রণতরীকে। এই অপমান হজম করতে বেশ কষ্ট হয়েছিল ওয়াশিংটনের।

০৮ ২০
১৯৬০ এবং ১৯৭০-এর দশকে পশ্চিমের দেশগুলি প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় লাগাতার আণবিক বোমার পরীক্ষা চালিয়েছিল। নিউ জ়িল্যান্ড ছিল এর প্রবল বিরোধী। রাষ্ট্রপুঞ্জে এই নিয়ে কিউয়িদের বার বার প্রতিবাদ করতে দেখা গিয়েছে। ১৯৮৪ সালে নিউ জ়িল্যান্ডকে ‘পরমাণু অস্ত্রমুক্ত’ দেশ বলে ঘোষণা করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড রাসেল ল্যাঞ্জ।

১৯৬০ এবং ১৯৭০-এর দশকে পশ্চিমের দেশগুলি প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় লাগাতার আণবিক বোমার পরীক্ষা চালিয়েছিল। নিউ জ়িল্যান্ড ছিল এর প্রবল বিরোধী। রাষ্ট্রপুঞ্জে এই নিয়ে কিউয়িদের বার বার প্রতিবাদ করতে দেখা গিয়েছে। ১৯৮৪ সালে নিউ জ়িল্যান্ডকে ‘পরমাণু অস্ত্রমুক্ত’ দেশ বলে ঘোষণা করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড রাসেল ল্যাঞ্জ।

০৯ ২০
এর ঠিক পরের বছরই গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্রে সজ্জিত ডেস্ট্রয়ার শ্রেণির মার্কিন রণতরী ‘ইউএসএস বুকানন’ কিউয়িভূমির জলসীমায় প্রবেশের অনুমতি চায়। ১৯৬২ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর ব্যবহৃত ওই রণতরীতে কোনও রকমের পরমাণু অস্ত্র রয়েছে কি না, তা জানতে চেয়েছিল ওয়েলিংটন। পেন্টাগন এই তথ্য দিতে অস্বীকার করায় যুদ্ধজাহাজটির প্রবেশাধিকার রদ করে ল্যাঞ্জ সরকার।

এর ঠিক পরের বছরই গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্রে সজ্জিত ডেস্ট্রয়ার শ্রেণির মার্কিন রণতরী ‘ইউএসএস বুকানন’ কিউয়িভূমির জলসীমায় প্রবেশের অনুমতি চায়। ১৯৬২ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর ব্যবহৃত ওই রণতরীতে কোনও রকমের পরমাণু অস্ত্র রয়েছে কি না, তা জানতে চেয়েছিল ওয়েলিংটন। পেন্টাগন এই তথ্য দিতে অস্বীকার করায় যুদ্ধজাহাজটির প্রবেশাধিকার রদ করে ল্যাঞ্জ সরকার।

১০ ২০
নিউ জ়িল্যান্ডের এ হেন দুঃসাহস একেবারই মেনে নিতে পারেনি আমেরিকা। কিছু দিনের মধ্যেই দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকে। রাতারাতি ওয়েলিংটনকে সামরিক এবং গোয়েন্দা তথ্য দেওয়া বন্ধ করে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। পাশাপাশি তৎকালীন মার্কিন বিদেশসচিব জর্জ শুল্টজ় ঘোষণা করে দেন, কিউয়িভূমির নিরাপত্তার দায়িত্ব আর নেবে না ওয়াশিংটন।

নিউ জ়িল্যান্ডের এ হেন দুঃসাহস একেবারই মেনে নিতে পারেনি আমেরিকা। কিছু দিনের মধ্যেই দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকে। রাতারাতি ওয়েলিংটনকে সামরিক এবং গোয়েন্দা তথ্য দেওয়া বন্ধ করে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। পাশাপাশি তৎকালীন মার্কিন বিদেশসচিব জর্জ শুল্টজ় ঘোষণা করে দেন, কিউয়িভূমির নিরাপত্তার দায়িত্ব আর নেবে না ওয়াশিংটন।

১১ ২০
প্রায় একই সুর শোনা গিয়েছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগনের গলাতেও। নিউ জ়িল্যান্ডের সঙ্গে যৌথ সামরিক মহড়া বা অন্য কোনও কূটনৈতিক সম্পর্ক আর বজায় রাখা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি। বিশ্লেষকদের একাংশের দাবি, কিউয়ি দেশটি সোভিয়েত রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে পারে বলেও যুক্তরাষ্ট্রের কর্তাব্যক্তিদের মনে ছিল ভয়।

প্রায় একই সুর শোনা গিয়েছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগনের গলাতেও। নিউ জ়িল্যান্ডের সঙ্গে যৌথ সামরিক মহড়া বা অন্য কোনও কূটনৈতিক সম্পর্ক আর বজায় রাখা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি। বিশ্লেষকদের একাংশের দাবি, কিউয়ি দেশটি সোভিয়েত রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে পারে বলেও যুক্তরাষ্ট্রের কর্তাব্যক্তিদের মনে ছিল ভয়।

১২ ২০
কিন্তু সবাইকে চমকে দিয়ে ১৯৮৭ সালে পরমাণুমুক্ত অঞ্চল, নিরস্ত্রীকরণ এবং অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন গ্রহণ করে নিউ জ়িল্যান্ড। ওয়েলিংটন ঘোষণা করে তারা আণবিক অস্ত্রের ঘোর বিরোধী, আমেরিকার নয়। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত রাশিয়া ভেঙে গেলে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে বদলাতে শুরু করে।

কিন্তু সবাইকে চমকে দিয়ে ১৯৮৭ সালে পরমাণুমুক্ত অঞ্চল, নিরস্ত্রীকরণ এবং অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন গ্রহণ করে নিউ জ়িল্যান্ড। ওয়েলিংটন ঘোষণা করে তারা আণবিক অস্ত্রের ঘোর বিরোধী, আমেরিকার নয়। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত রাশিয়া ভেঙে গেলে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে বদলাতে শুরু করে।

১৩ ২০
গত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশকের গোড়ায় পরমাণু হাতিয়ার নিয়ে বড় ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচডব্লু বুশ। টিভিতে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, ‘‘যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী একতরফা ভাবে অ-কৌশলগত আণবিক হাতিয়ারগুলিকে সরিয়ে ফেলবে। এর সিংহভাগই ফেরানো হবে দেশ এবং এর মধ্যে কিছু পরমাণু অস্ত্র নষ্ট করা হবে।’’

গত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশকের গোড়ায় পরমাণু হাতিয়ার নিয়ে বড় ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচডব্লু বুশ। টিভিতে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, ‘‘যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী একতরফা ভাবে অ-কৌশলগত আণবিক হাতিয়ারগুলিকে সরিয়ে ফেলবে। এর সিংহভাগই ফেরানো হবে দেশ এবং এর মধ্যে কিছু পরমাণু অস্ত্র নষ্ট করা হবে।’’

১৪ ২০
বুশ-পরবর্তী জমানায় ক্লিন্টনও এই নীতি কিছুটা মেনে চলেছিলেন। ওয়াশিংটনের ওই সিদ্ধান্তে ধীরে ধীরে নিউ জ়িল্যান্ডের মন গলতে শুরু করে। শেষে ২০০০ সালে গিয়ে ফের অনেকটা মজবুত হয় দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক। ২০০১ সালে মার্কিন ফৌজ আফগানিস্তান দখল করলে সেখানে সেনা মোতায়েনে রাজি হয় ওয়েলিংটন।

বুশ-পরবর্তী জমানায় ক্লিন্টনও এই নীতি কিছুটা মেনে চলেছিলেন। ওয়াশিংটনের ওই সিদ্ধান্তে ধীরে ধীরে নিউ জ়িল্যান্ডের মন গলতে শুরু করে। শেষে ২০০০ সালে গিয়ে ফের অনেকটা মজবুত হয় দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক। ২০০১ সালে মার্কিন ফৌজ আফগানিস্তান দখল করলে সেখানে সেনা মোতায়েনে রাজি হয় ওয়েলিংটন।

১৫ ২০
২০০৩ সালে ইরাকে অভিযান চালায় যুক্তরাষ্ট্রের সেনা। পশ্চিম এশিয়ার ওই যুদ্ধেও নিউ জ়িল্যান্ডের কিছু ভূমিকা ছিল। ওই সময়ে ইঞ্জিনিয়ারদের একটি দল পাঠিয়ে মার্কিন বাহিনীকে সাহায্য করে কিউয়ি সরকার। তবে ওয়েলিংটনের ‘মানভঞ্জনে’ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক হুসেন ওবামা।

২০০৩ সালে ইরাকে অভিযান চালায় যুক্তরাষ্ট্রের সেনা। পশ্চিম এশিয়ার ওই যুদ্ধেও নিউ জ়িল্যান্ডের কিছু ভূমিকা ছিল। ওই সময়ে ইঞ্জিনিয়ারদের একটি দল পাঠিয়ে মার্কিন বাহিনীকে সাহায্য করে কিউয়ি সরকার। তবে ওয়েলিংটনের ‘মানভঞ্জনে’ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক হুসেন ওবামা।

১৬ ২০
ওবামার শাসনকালে নিউ জ়িল্যান্ড সফরে যান তৎকালীন মার্কিন বিদেশ সচিব হিলারি ক্লিন্টন। এতে দুই দেশের বরফ অনেকটাই গলেছিল। প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকার দেশগুলির সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করা এবং সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে নতুন নীতি গ্রহণ করেন প্রেসিডেন্ট ওবামা। এতে আখেরে লাভবান হয়েছিল ওয়াশিংটন।

ওবামার শাসনকালে নিউ জ়িল্যান্ড সফরে যান তৎকালীন মার্কিন বিদেশ সচিব হিলারি ক্লিন্টন। এতে দুই দেশের বরফ অনেকটাই গলেছিল। প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকার দেশগুলির সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করা এবং সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে নতুন নীতি গ্রহণ করেন প্রেসিডেন্ট ওবামা। এতে আখেরে লাভবান হয়েছিল ওয়াশিংটন।

১৭ ২০
২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ওয়েলিংটন ঘোষণাপত্র সই করে নিউ জ়িল্যান্ড। এতে আরও কাছাকাছি আসে দুই দেশ। ২০১৪ সালে মার্কিন নৌবাহিনীর সঙ্গে যৌথ মহড়ার অংশ দিনে হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের পার্ল হারবারে নোঙর করে কিউয়ি যুদ্ধজাহাজ ‘এইচএমএনজেডএস ক্যান্টারবেরি’। একে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের দ্বিতীয় অধ্যায় বলে উল্লেখ করে থাকেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞেরা।

২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ওয়েলিংটন ঘোষণাপত্র সই করে নিউ জ়িল্যান্ড। এতে আরও কাছাকাছি আসে দুই দেশ। ২০১৪ সালে মার্কিন নৌবাহিনীর সঙ্গে যৌথ মহড়ার অংশ দিনে হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের পার্ল হারবারে নোঙর করে কিউয়ি যুদ্ধজাহাজ ‘এইচএমএনজেডএস ক্যান্টারবেরি’। একে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের দ্বিতীয় অধ্যায় বলে উল্লেখ করে থাকেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞেরা।

১৮ ২০
তবে ২০১৬ সালের আগে কোনও মার্কিন যুদ্ধজাহাজ নিউ জ়িল্যান্ডের জলসীমায় প্রবেশ করেনি। ওই বছরের নভেম্বর ৭৫ বছরে পা দেয় কিউয়িদের রয়্যাল নেভি। দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে একটি জমকালো অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ওয়েলিংটন। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রকে একটি রণতরী পাঠাতে অনুরোধ জানিয়েছিল ওই দ্বীপরাষ্ট্র।

তবে ২০১৬ সালের আগে কোনও মার্কিন যুদ্ধজাহাজ নিউ জ়িল্যান্ডের জলসীমায় প্রবেশ করেনি। ওই বছরের নভেম্বর ৭৫ বছরে পা দেয় কিউয়িদের রয়্যাল নেভি। দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে একটি জমকালো অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ওয়েলিংটন। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রকে একটি রণতরী পাঠাতে অনুরোধ জানিয়েছিল ওই দ্বীপরাষ্ট্র।

১৯ ২০
পরমাণু হাতিয়ার নিরস্ত্রীকরণ নীতি থেকে কোনও দিনই সরে আসেনি নিউ জ়িল্যান্ড। সোভিয়েত রাশিয়ার পতনের পর থেকে রণতরীতে আণবিক অস্ত্র মোতায়েন করা প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে মার্কিন নৌসেনা। ফলে ২০১৬ সালে ওয়েলিংটনের পক্ষে তাঁদের অনুরোধ করার কাজটা অনেক সহজ হয়ে গিয়েছিল।

পরমাণু হাতিয়ার নিরস্ত্রীকরণ নীতি থেকে কোনও দিনই সরে আসেনি নিউ জ়িল্যান্ড। সোভিয়েত রাশিয়ার পতনের পর থেকে রণতরীতে আণবিক অস্ত্র মোতায়েন করা প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে মার্কিন নৌসেনা। ফলে ২০১৬ সালে ওয়েলিংটনের পক্ষে তাঁদের অনুরোধ করার কাজটা অনেক সহজ হয়ে গিয়েছিল।

২০ ২০
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ও নিউ জ়িল্যান্ডের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কে আর টানাপড়েন নেই। কিউয়ি বিদেশ মন্ত্রকের দাবি, ওয়াশিংটনের সঙ্গে তাঁদের দীর্ঘস্থায়ী ঘনিষ্ঠ অংশীদারি রয়েছে। নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে সেখানে এতে কোনও বদল আসে কি না, সেটাই এখন দেখার।

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ও নিউ জ়িল্যান্ডের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কে আর টানাপড়েন নেই। কিউয়ি বিদেশ মন্ত্রকের দাবি, ওয়াশিংটনের সঙ্গে তাঁদের দীর্ঘস্থায়ী ঘনিষ্ঠ অংশীদারি রয়েছে। নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে সেখানে এতে কোনও বদল আসে কি না, সেটাই এখন দেখার।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy