Mystery of the buried Owl: সোনার পেঁচা লুকিয়ে আছে! ১১ ধাঁধা মেলাতে পারলেই আপনার হাতে কোটি টাকার গুপ্তধন
ম্যাক্স ঘোষণা করেছিলেন, যে ব্যক্তি এই মূর্তিটি খুঁজে পাবেন, তাঁকে একই মাপের সোনা, রুপো, রুবি এবং হিরেখচিত একটি পেঁচার মূর্তি উপহার দেওয়া হবে।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ২২ মে ২০২২ ১০:২১
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৭
১৯৯৩ সালের ২৩ এপ্রিল। ভোররাত সাড়ে ৩টে। ফ্রান্সের এক গোপন জায়গা। সেই জায়গায় বুটের মধ্যে লুকিয়ে রাখা একটা কিছু পুঁতে দেওয়ার জন্য প্রাণপণে মাটি খুঁড়ছিলেন এক ব্যক্তি। মাটি খুঁড়তে খুঁড়তে হাত থেকে রক্ত বেরিয়ে গেলেও সেই দিকে হুঁশ নেই তাঁর।
০২১৭
কাজ শেষে গাড়ি চালিয়ে একটি ক্যাফেতে যান ওই ব্যক্তি। সারা গায়ে মাটি। সেই অবস্থাতেই কফির কাপে চুমুক দেন।
০৩১৭
এই ব্যক্তিকে গোটা ফ্রান্স চেনে ম্যাক্স ভ্যালেনটিন নামে। যে জিনিসটি মাটির নীচে তিনি পুঁতেছিলেন, তা ব্রোঞ্জ দিয়ে তৈরি পেঁচার একটি ছোট মূর্তি।
০৪১৭
কিন্তু কেন এত গোপনে পোঁতা হয়েছিল এই ছোট মূর্তিটি?
০৫১৭
ম্যাক্স ঘোষণা করেছিলেন, যে এই মূর্তিটি খুঁজে পাবেন তাঁকে একই মাপের সোনা, রুপো, রুবি এবং হিরেখচিত একটি পেঁচার মূর্তি উপহার দেওয়া হবে। যার বর্তমান মূল্য প্রায় সওয়া এক কোটি টাকা।
০৬১৭
ম্যাক্সের আসল নাম রেগিস হাউসার। এক সময়ের বিপণন পরামর্শদাতা ম্যাক্স, শিল্পী মিশেল বেকারের সহযোগিতায় এক পেঁচার মূর্তি তৈরি করেছিলেন। ধাঁধাগুলির নকশা তৈরিতেও মিশেল সাহায্য করেছিলেন ম্যাক্সকে।
০৭১৭
ম্যাক্সের এই ঘোষণার পর রাতারাতি ওই মূর্তি খুঁজতে লেগে পড়েন হাজারো মানুষ।
০৮১৭
তবে ওই গুপ্তধনের হদিস পাওয়া অত সহজ ছিল না। ১১টি ধাঁধার সমাধান করলে তবেই খুঁজে পাওয়া যাবে এই গুপ্তধন। একাধিক ভাষা, গাণিতিক, ঐতিহাসিক এবং মানচিত্রিক ধাঁধা মিলিয়ে এই ১১টি ধাঁধা তৈরি করেন ম্যাক্স।
০৯১৭
২০০৯ সালে ম্যাক্স মারা যান। কিন্তু এখনও পর্যন্ত এই পেঁচার মূর্তির খোঁজ কেউ পাননি। কিন্তু এই মূর্তি খুঁজে পাওয়া অনেক মানুষের কাছেই নেশার মতো হয়ে গিয়েছে।
১০১৭
ফ্রান্সে এমন কিছু মানুষ রয়েছেন যাঁরা এখনও এই মূর্তিটির খোঁজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এমনকি, বেশ কিছু মানুষ এই মূর্তি অনুসন্ধানকারীদের নিয়ে একটি দলও তৈরি করেছেন। তাঁরা সারা বছরের যাবতীয় খোঁজ নিয়ে কথা বলতে একটি বার্ষিক বৈঠকও করেন।
১১১৭
ব্রিটিশ চিত্রগ্রাহক এমিলি গ্রাহাম মূর্তি খুঁজে পেতে উৎসাহী বেশ কিছু মানুষের সঙ্গে তাঁদের অভিযানে সঙ্গ দেন। তিনি জানান, এই মূর্তি খুঁজে পেতে কিছু মানুষ যে পরিমাণ উদ্দীপনা দেখিয়েছেন তিনি তা অন্য কোনও কিছুতে কোনও দিন দেখেননি।
১২১৭
অনেকে আবার এই মূর্তির খোঁজে চাকরি-বাড়ি ছেড়ে ১১টি ধাঁধা সমাধানেই লেগে গিয়েছেন। ৭৮ বছর বয়সি অবসরপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার যুভান ক্রোলেট শেষ ২০ বছর ধরে এই ধাঁধাগুলি সমাধানে মগ্ন।
১৩১৭
ক্রোলেটের দাবি, তিনি এই ধাঁধাগুলি সমাধান করে নির্দিষ্ট ওই জায়গাটি খুঁজে পেয়েছেন। এই জায়গাটি ড্রোমের লুস-লা-ক্রোইক্স-হাউটের একটি পাহাড়ের ধারে বলে দাবি তাঁর। কিন্তু সেখানে অনেক খোঁজাখুজি করেও খালি হাতে ফিরতে হয়েছিল ক্রোলেটকে।
১৪১৭
এর পরই ক্রোলেট দাবি করেন, পেঁচা খোঁজার পুরো বিষয়টিই ভাঁওতা। ২০১৮ সালে তিনি ম্যাক্সের পরিবারের বিরুদ্ধে আইনি অভিযোগ দায়ের করে পেঁচা-রহস্যের সমাধান প্রকাশ্যে আনার কথা বলেন। সেই মামলা এখনও চলছে।
১৫১৭
ক্রোলেটের মতো আরও বহু মানুষ রয়েছেন, যাঁরা মনে করেন আসলে কখনও কোনও মূর্তি পুঁতেই রাখেননি ম্যাক্স।
১৬১৭
অনেকে আবার এ-ও দাবি করেন, ম্যাক্স এক জন বিকৃত মানসিকতার মানুষ ছিলেন। অনেক মানুষকে বিপদে ফেলার জন্য তিনি এই ফাঁদ পেতেছিলেন বলেও অনেকের দাবি।
১৭১৭
তবে ২০১৪ সালে এক বার এই মূর্তি নিলামে তুলে বিক্রি করে দেওয়ার চেষ্টা করেন ফ্রাঙ্ক বেকার। এ-ও ঘোষণা করেন, তাঁর মৃত্যুর পর এই মূর্তি খুঁজে পাওয়ার চুক্তি বাতিল হয়ে যাবে। তবুও এখনও মূর্তির খোঁজে প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছেন বেশ কিছু উৎসাহী।