Unofficial election result to IPL update decide on phalodi’s betting market dgtl
Phalodi’s Betting Market
কে জিতবে লোকসভায়? আইপিএলের মুকুট উঠবে কার মাথায়? ফলোদী সাট্টা বাজার মিলিয়ে দিয়েছে অনেক ফল
বুথফেরত সমীক্ষার মতোই সাট্টা বাজারের পূর্বাভাস কখনও মেলে, আবার কখনও মেলে না। এই বাজারের ফলাফলের কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তিও নেই। এই বাজারের ফলাফলের সঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনের কোনও সম্পর্ক নেই।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ২৮ মে ২০২৪ ০৮:০১
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
দেশে কারা সরকার গড়বে? সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে আলোচিত প্রশ্ন এটাই। রাস্তাঘাট, বাস, ট্রেন থেকে শুরু করে চায়ের দোকানের আড্ডা বা কফিশপ— লোকসভা নির্বাচনে কী ফল হতে পারে তা নিয়ে জল্পনা চলছে। কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে সে সব আলোচনার কথা।
০২১৯
কেউ বলছেন নরেন্দ্র মোদীই আবার সরকার গড়বেন, কেউ আবার বিজেপি-বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র পক্ষে সওয়াল করছেন। কোন রাজ্যে কেমন ফল হবে তা নিয়ে মানুষের মনে কৌতূহলের সীমা নেই। বুথফেরত হিসাব এখনও মেলেনি। ১ জুন ভোটপর্ব মিটলে তা পাওয়া যাবে। কিন্তু একটা জায়গা এখন ফলাফল নিয়ে ব্যস্ত।
০৩১৯
সাট্টা বাজারের কথা অনেকেই জানেন। নিয়মকানুনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে সেই সব বাজারে চলে বাজি ধরার খেলা। মনে করা হয়, দেশ জুড়ে থাকা মোট ছ’টা বাজার সারা দেশের সাট্টা বাজারকে নিয়ন্ত্রণ করে। নিজের নিয়মেই চলে এই সব বাজার। এবং সে সব নাকি চলে প্রশাসনের নাকের ডগায়।
০৪১৯
তবে পূর্বাভাস মিলিয়ে দেওয়ার কারণে প্রায়ই সংবাদের শিরোনামে উঠে আসে রাজস্থানের ফলোদী। লোকমুখে এমন প্রচার রয়েছে যে, দিল্লি-মুম্বইয়ের রাজনীতিক, ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে গোটা দেশে এই সাট্টা বাজারের কারবারিদের জাল ছড়িয়ে রয়েছে।
০৫১৯
সাট্টার কারবারে আইনের সিলমোহর না-থাকলেও, ফলোদীর সাট্টা বাজারের ভবিষ্যদ্বাণী সব সময়ই মিলে যায়। অনেক কারবারির দাবি, আমেরিকার ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ও মিলিয়ে দিয়েছিলেন তাঁরা। শুধু নির্বাচনের ফলাফল নয়, এই বাজারে যে কোনও কিছু নিয়েই নাকি বাজি ধরা যায়।
০৬১৯
রাজস্থানের জোধপুরের কাছে একটি ছোট শহর ফলোদী। বাইরে থেকে আর পাঁচটা শহরের মতো হলেও এই শহরের মধ্যেই রয়েছে বিখ্যাত সাট্টা বাজার। ভারতীয় আইনের চোখে সাট্টা বা বাজি ধরা বেআইনি। তাই ফলোদী বাজারের কারবার চলে অন্তরালে। চাইলেই এই বাজারে ঢুকতে পারা যাবে না।
০৭১৯
ফলোদীর সাট্টা বাজার হল এক খোলা রহস্য, যা সব সময়ই শহরটিকে লাইমলাইটে নিয়ে আসে। কিন্তু এই সাট্টা বাজারকে বাইরে থেকে দেখলে বোঝার উপায় নেই যে, সেখানে প্রতি দিন কোটি কোটি টাকার ব্যবসা চলে!
০৮১৯
টিনের চালের কয়েক ডজন ছোট ছোট কিয়স্ক। চার-পাঁচ জনের বেশি এক একটা কিয়স্কে থাকার উপায় নেই। তবুও সেখানেই জুয়ার বাজার সাজিয়ে বসেছেন কারবারিরা। কিয়স্কের বাইরে উৎসাহী লোকের ভিড় থাকে সব সময়ই। বিভিন্ন বিষয়ে চলে বাজি ধরা।
০৯১৯
এই বাজারে জেতা-হারা নিয়ে বহু গল্প প্রচলিত। জেতার স্বপ্ন নিয়ে বাজারে আসা মানুষগুলির স্বপ্ন ভাঙার গল্পও অনেক রয়েছে। আবার শূন্য থেকে লাখপতি হওয়ার কথাও শোনা যায় এই বাজারে কান পাতলেই। শতাব্দীপ্রাচীন ফলোদীর সাট্টা বাজার নিজের রঙেই রঙিন।
১০১৯
১৯ শতকের শেষের দিকে ফলোদীর এই সাট্টা বাজার আরও সংগঠিত হয়েছে। স্থানীয়েরা যে কোনও বিষয়ে এই বাজারে জুয়া ধরতে পারেন। আগে এই বাজারের মূল ভরসা ছিল রেডিয়ো। ক্রিকেট হোক বা ফুটবল, ধারাভাষ্যের উপর নির্ভর করেই বাজি ধরা হত।
১১১৯
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে সাট্টা বাজারে। টিভি পেরিয়ে এখন কম্পিউটারের পর্দায় চোখ রাখছেন কারবারিরা।
১২১৯
লোকসভা নির্বাচনের পাশাপাশি ফলোদী সাট্টা বাজারে এখন অন্যতম আলোচনার বিষয় আইপিএল। কোন দল জিতবে, কোন ক্রিকেটার কেমন খেলবেন, কোন বলে চার-ছয় হবে বা উইকেট পড়বে, ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতম বিষয়েও বাজি ধরা হয় এই বাজারে।
১৩১৯
ফলোদীর সাট্টা বাজারের প্রভাব রাজ্যের সীমানা ফেরিয়ে মুম্বইয়ের স্টক মার্কেটেও বিস্তৃত। স্টক মার্কেটে প্রতি ঘণ্টায় শেয়ারের দাম ওঠানামার উপরেও ফলোদীর বাজার নির্ভর করে বলে শোনা যায়।
১৪১৯
ফলোদী বাজারে কান পাতলে প্রধানত শোনা যায় দু’টি শব্দ। ‘খানা’ এবং ‘লাগানা’। আপনি যদি এই বাজারের বাইরের লোক হন, তবে এই দুই শব্দ আপনার কাছে অপরিচিত। কিন্তু ফলোদী বাজারের লোকেরা শুধু এই দু’টি শব্দের উপর নির্ভর করেই বাজি ধরেন।
১৫১৯
‘খানা’ শব্দ বলতে বোঝায় জয়ের সম্ভাবনা ক্ষীণ। তার উপর ভিত্তি করে জুয়ো ধরেন লোকেরা। আর ‘লাগানা’ শব্দের অর্থ জয়ের সম্ভাবনা ভাল।
১৬১৯
আপনি যদি ফলোদী বাজারে নিয়মিত যাতায়াত করেন কিংবা স্থানীয় হন বা বুকিদের পরিচিত হন, তবে আগে থেকে টাকা জমা দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। তবে আপনি যদি বাইরের লোক হন অবশ্যই নগদ জমা রাখতে হবে।
১৭১৯
বলা হয়, এই ফলোদীর সাট্টা বাজারের পূর্বাভাস মিলিয়ে দেওয়ায় সাফল্যের হার ৮০ শতাংশের বেশি, যা কোনও নামী সেফোলোজিস্ট বা রিসার্চ সংস্থার কাছেও ঈর্ষা করার মতো পরিসংখ্যান।
১৮১৯
২০১৪ ও ২০১৯ সালে দেশ জুড়ে ৭০ আসনের গণ্ডি পেরোবে না কংগ্রেস— সাট্টা বাজারের এই পূর্বাভাস মিলে গিয়েছিল। লোকসভা হোক বা বিধানসভা— সাট্টা বাজারের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে যে কোনও নির্বাচনই।
১৯১৯
তবে যে কোনও বুথফেরত সমীক্ষার মতোই সাট্টা বাজারের পূর্বাভাস কখনও মেলে, আবার কখনও মেলে না। এই বাজারের ফলাফলের কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তিও নেই। কোনও ভাবেই কোনও জনমত সমীক্ষা নয়। এই বাজারের ফলাফলের সঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনের কোনও সম্পর্ক নেই।