Twelve projects that will revolutionise Saudi Arabia world’ largest floating structure dgtl
Neom in Saudi Arabia
সারা বছর থাকবে চাঁদের আলো, চাইলেই নামবে বৃষ্টি, মরুভূমিতে ‘জাদু’নগরী গড়ছে সৌদি
সৌদির যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমনের স্বপ্ন, মরুভূমির মাঝে আস্ত একটা ‘জাদু’শহর গড়ে তোলার। সেখানে থাকবে বিলাসবহুল রিসর্ট, হোটেল, ভাসমান পরিকাঠামো, কৃত্রিম সমুদ্রের মাঝে আস্ত দ্বীপ।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০২৪ ০৭:৫৯
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৮
দেশের এক কোণে বিস্তৃত অনুর্বর জমি। চারপাশে ধূ ধূ মরুভূমি। বালি, কড়া রোদ আর নোনা জল ছাড়া কিছুই ছিল না সেই জমিতে। এ বার সেই জমিরই ভোলবদল করতে চলেছেন সৌদি আরবের যুবরাজ। প্রকল্পের পরিকল্পনা প্রকাশ করা হয়েছে। দেখে বিস্মিত হতে হয়।
০২১৮
সৌদির যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমনের স্বপ্ন, মরুভূমির মাঝে আস্ত একটা ‘জাদু’শহর গড়ে তোলার। সেখানে থাকবে বিলাসবহুল রিসর্ট, হোটেল, ভাসমান পরিকাঠামো, কৃত্রিম সমুদ্রের মাঝে আস্ত দ্বীপ। পশ্চিম এশিয়ায় মরুভূমির মাঝে এ রকম জনপদ গঠন যদিও নতুন নয়।
০৩১৮
মরুভূমির মাঝে এই ‘ইউটোপিয়া’-র নাম দেওয়া হয়েছে নিওম। ১৪ হাজার ২০০ বর্গমাইল জুড়ে গড়ে উঠতে চলেছে সেই আধুনিক শহর। তার মধ্যে থাকছে ১২টি প্রকল্প।
০৪১৮
কী নেই নিওমে! দুনিয়ার সব থেকে বড় ভাসমান পরিকাঠামো, সিহর্স আকৃতির দ্বীপ, যেখানে থাকবে বিলাসবহুল রিসর্ট, বন্দর, পাহাড়ের খাঁজে হোটেল, বহুতল। তৈরি হবে প্রযুক্তি হাব।
০৫১৮
সৌদির যুবরাজের আশা, এর ফলে দেশে পর্যটকের আগমন বৃদ্ধি পাবে, অর্থনীতি মজবুত হবে। রিপোর্ট বলছে, প্রকল্পগুলির খরচ ৫০,০০০ কোটি ডলার থেকে এক লক্ষ কোটি ডলার হতে পারে। ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ৪১ লক্ষ কোটি টাকা থেকে ৮২ লক্ষ কোটি টাকা।
০৬১৮
২০২১ সালে ‘দ্য লাইন’ প্রকল্পের ঘোষণা করে সৌদি সরকার। এই প্রকল্পে দু’টি সমান্তরাল বহতল তৈরি হবে যাদের দৈর্ঘ্য ১৭০ কিলোমিটার। একটির উচ্চতা ২৭৫ মিটার, দ্বিতীয়টির ২২৫ মিটার। দু’টি বহতলের মধ্যে সংযোগ রক্ষার জন্য থাকবে ঝুলন্ত সেতু।
০৭১৮
সেই ঝুলন্ত সেতু দিয়ে যাতায়াত করবে ট্রেনও। একসঙ্গে এই জোড়া টাওয়ারে ৯০ লক্ষ মানুষ বাস করতে পারবেন। আবাসনের পাশাপাশি বহু দফতর থাকবে দুই বহুতলে।
০৮১৮
জনপদে কোনও রাস্তা থাকবে না। চলবে না গাড়ি। দোকান, বাজার থাকবে পাঁচ মিনিটের দূরত্বে। ড্রোন, রোবট, ভোলোকপ্টার জিনিসপত্র পৌঁছে দেবে। গোটা জনপদে আলো জ্বলবে, যান, যন্ত্র চলবে পুনর্ব্যবহারযোগ্য শক্তির মাধ্যমে।
০৯১৮
মরুভূমিতে এমনিতে বৃষ্টির দেখা মেলে না। তবে নিওমে মেঘ তৈরির জন্য যন্ত্র থাকবে। প্রয়োজন মতো বৃষ্টি উৎপন্ন করানো হবে। আকাশে সব সময়ই থাকবে কৃত্রিম চাঁদের আলো।
১০১৮
বহুতলের বাসিন্দাদের জিনের উন্নয়ন ঘটানোর জন্যও গবেষণা চলবে নিওমে। সেই মতো চিকিৎসকেরা পদক্ষেপ করবেন। একাধিক মিশেলিন স্টার রেস্তরাঁ থাকবে, যেখানে নানা রকম পদ চেখে দেখার সুযোগ পাবেন বাসিন্দারা।
১১১৮
নিওমে রয়েছে বহুতল ‘অ্যাকোয়েলাম’। ওয়েবসাইট থেকে জানা গিয়েছে, পাহাড় কেটে তৈরি করা হচ্ছে এই বিলাসবহুল বহুতল। বাইরে থেকে দেখে মনে হবে, আস্ত একটা পাহাড় দাঁড়িয়ে রয়েছে। লোহিত সাগরের আকাবা উপকূলে থাকছে প্রবেশপথ। সেখান দিয়ে বাসিন্দারা প্রবেশ করবেন অ্যারোয়েলামে।
১২১৮
সি হর্স আকৃতি বিশিষ্ট কৃত্রিম দ্বীপও তৈরি করা হচ্ছে নিওমে। নাম ‘সিন্দালাহ’। আয়তন আট লক্ষ ৪০ হাজার বর্গমিটার। এখানে থাকবে বিলাসবহুল কিছু রিসর্ট। সেখানে থাকা সকলের সাধ্যে কুলোবে না। ২০২৫ সাল নাগাদ শেষ হবে প্রকল্পের কাজ।
১৩১৮
দ্বীপে সমুদ্রের ধারে থাকবে একটি ক্লাব। নাম ‘জেনর’। চারপাশে থাকবে কৃত্রিম জঙ্গল।
১৪১৮
২০২৬ নাগাদ শেষ হবে ‘ট্রোজেনা’ প্রকল্পের কাজ। তাবুক অঞ্চলের উচ্চতম পাহাড়ের মাথায় তৈরি হবে প্রকল্প। সেখানে থাকবে স্কি করার জায়গা। ২০২৯ সালের এশিয়ান উইন্টার গেমস হবে এখানেই।
১৫১৮
নিওমে থাকবে অভয়ারণ্য। তার চারপাশে থাকবে তিনটি বিলাসবহুল হোটেল। এই প্রকল্পের নাম ‘জারদুন’।
১৬১৮
পরিবেশবিদেরা এই প্রকল্প নিয়ে ইতিমধ্যেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, নিওমের কারণে স্থানীয় বাস্তুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। মরুভূমির এই পথ দিয়ে যাতায়াত করে পরিযায়ী পাখিরা। বহুতল গড়ে উঠলে তারা পথ ভুল করতে পারে।
১৭১৮
রিপোর্ট বলছে, প্রতি বছর শরৎকালে ইউরোপ থেকে আফ্রিকা যায় প্রায় ১০০ প্রজাতির ২১০ কোটি পরিযায়ী পাখি। সৌদির তাবুক অঞ্চল দিয়েই আফ্রিকা যায় তারা। নিওম তৈরি হলে পরিযায়ী পাখিদের পথে বাধা আসতে পারে। বহুতলে ধাক্কা খেয়ে বিপত্তিও ঘটতে পারে। এমনটাই আশঙ্কা করছেন পক্ষীবিদেরা।
১৮১৮
মানবাধিকার সংগঠগুলির দাবি, ওই প্রকল্প তৈরির জন্য হোয়েইতাত জনজাতিদের ঘরছাড়া করা হয়েছে। তাঁদের সংখ্যা প্রায় ২০ হাজার। একটি মানবাধিকার সংগঠনের দাবি, হোয়েইতাত জনজাতির তিন জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে সে দেশের প্রশাসন।