Trailer of The Diary of West Bengal sparks news controversy dgtl
The Diary of West Bengal
বাংলা নিয়েও ‘ডায়েরি’! কেন এত বিতর্ক? কী আছে ‘দ্য ডায়েরি অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল’-এ?
পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে নতুন ছবি তৈরি করেছেন পরিচালক সানোজ মিশ্র। ছবির নাম দেওয়া হয়েছে ‘দ্য ডায়েরি অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল’। ছবির ট্রেলার নিয়েই বিতর্ক শুরু হয়ে গিয়েছে।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ২৭ মে ২০২৩ ১৬:৪৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৮
কাশ্মীরের ‘ফাইল্স, কেরলের ‘স্টোরি’র পর এ বার বড় পর্দায় পশ্চিমবঙ্গ। তবে বাংলার জন্য কোনও ‘ফাইল’ বা ‘স্টোরি’ নয়, প্রস্তুত একেবারে আস্ত ডায়েরি। ‘দ্য ডায়েরি অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল’।
০২১৮
সানোজ মিশ্রের পরিচালনায় তৈরি করা হয়েছে এই ছবি। বাংলার রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে ছবির পর্দায় তুলে ধরা হয়েছে। ট্রেলার মুক্তির সঙ্গে সঙ্গে দানা বেঁধেছে বিতর্কও।
০৩১৮
‘দ্য ডায়েরি অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল’-এর ট্রেলার ইউটিউবে মুক্তি পেয়েছে মাস খানেক আগে। ইতিমধ্যে ট্রেলারটি দেখেছেন সাড়ে চার লক্ষ মানুষ। ৪০ হাজার জন ভিডিয়োটি পছন্দও করেছেন।
০৪১৮
ছবিটিকে ঘিরে বিতর্ক এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছে যে, পরিচালক সানোজকে তলব করেছে পুলিশ। আগামী ৩০ মে তাঁকে তদন্তকারী অফিসারের সামনে হাজির হতে হবে।
০৫১৮
ছবির মাধ্যমে বাংলার ভাবমূর্তি এবং সম্প্রীতি নষ্ট করা হচ্ছে, এই মর্মে গত ১১ মে কলকাতার আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন জনৈক ব্যক্তি। অভিযোগে নাম রয়েছে ছবির প্রযোজক জিতেন্দ্র নারায়ণ সিংহেরও। তার পরেই পরিচালককে তলব করা হল।
০৬১৮
পুলিশ সূত্রে খবর, যে সমাজমাধ্যমে ট্রেলার প্রকাশ করা হয়েছে, তার মালিককেও ডাকা হয়েছে থানায়। ছবিটিকে ঘিরে বিজেপি এবং রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের তরজা জমে উঠেছে।
০৭১৮
কিন্তু কী আছে ‘দ্য ডায়েরি অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল’-এর ট্রেলারে? কেন তা নিয়ে এত বিতর্ক? সত্যিই কি এতে রাজ্যের ভাবমূর্তি নষ্ট হতে পারে? এই প্রতিবেদনে খোঁজা হল তারই উত্তর।
০৮১৮
হিন্দি ভাষায় তৈরি ছবি ‘দ্য ডায়েরি অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল’। ট্রেলারের দৈর্ঘ্য ২ মিনিট ১২ সেকেন্ড। ট্রেলারের শুরুতেই সংখ্যালঘুদের প্রতি তোষণের চিরাচরিত রাজনীতির ইঙ্গিত দিয়েছেন পরিচালক।
০৯১৮
বাংলায় সিএএ, এনআরসি প্রয়োগের বিরুদ্ধে কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ছবির ট্রেলারেও তাঁর সেই বক্তৃতা দেখানো হয়েছে। মমতার চরিত্রে অবশ্য অভিনয় করেছেন অন্য কেউ।
১০১৮
এই ছবিতে মূলত বার্তা দেওয়া হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের একটি সম্প্রদায়কে ‘তোষণ’ নীতির বিরুদ্ধে। অভিযোগ, সংখ্যালঘুদের সুবিধার্থে সরকারের একের পর এক নীতি সমস্যায় ফেলেছে অন্য সম্প্রদায়কে।
১১১৮
বাংলাকে ‘দ্বিতীয় কাশ্মীর’ বলেও উল্লেখ করা হয়েছে এই ছবিতে। ট্রেলারে শোনা গিয়েছে মমতার নাম এবং বহুল প্রচলিত ‘খেলা হবে’ স্লোগান।
১২১৮
দুর্গাপুজোর বিসর্জন মহরমের পর হবে বলে যে নির্দেশ এক বার দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী, তা-ও ট্রেলারে দেখিয়ে ‘তোষণ’-এর ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
১৩১৮
নির্মাতারা দেখিয়েছেন, বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গারা কাঁটাতার পেরিয়ে পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করেছেন। এর ফলে এ পারের একটি সম্প্রদায়ের মানুষ হচ্ছেন ঘরছাড়া। ওই সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে কোনও রকম হিংসায় কোনও ব্যবস্থা সরকার নেয়নি বলেও অভিযোগ।
১৪১৮
ছবির ট্রেলারে একের পর এক ইস্যু তুলে ধরে বাংলায় অশান্তি এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি দেখিয়েছেন পরিচালক। অনেকেই যা ভাল চোখে দেখছেন না।
১৫১৮
এই ছবির বিরুদ্ধে সরব হয়েছে তৃণমূল। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেছেন, ‘‘জেনেই বলছি, এটা বিকৃত, প্ররোচনামূলক ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বাংলার ডায়েরি হলে তাতে সাম্প্রতিক অতীতে রাজ্য ‘দুয়ারে সরকার’, ‘কন্যাশ্রী’র মতো যে সব বিষয়ে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে, তার উল্লেখ নেই কেন?’’
১৬১৮
কুণালের আরও দাবি, ‘‘আসলে সিপিএমের সাহায্যে বিজেপি একটা অসত্য রাজনৈতিক প্রচারে উদ্যোগী হয়েছে। তাই আমরা এটা নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবি করছি।’’
১৭১৮
রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের দাবি, ‘‘বিভিন্ন সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের নাম জড়িয়ে যাচ্ছে। বাংলা থেকে জঙ্গি ধরা পড়ছে। এই বাস্তবতাকে কেউ যদি চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরতে চান, সেটা তো সাধারণ মানুষকে সচেতন করার জন্য। সেটা কতটা সত্য, কতটা আংশিক সত্য, তা নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে। কিন্তু সিনেমাকে নিষিদ্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত চরম অগণতান্ত্রিক, অসহিষ্ণু এবং স্বৈরতান্ত্রিক মানসিকতার প্রকাশ।’’
১৮১৮
ছবির পরিচালক সানোজের কথায়, ‘‘রাজ্যের ভাবমূর্তি নষ্ট করা কখনওই আমাদের উদ্দেশ্য নয়। গবেষণা ও অনুসন্ধান করে পাওয়া তথ্যই ছবিতে ব্যবহার করা হয়েছে।’’ কিন্তু তাতেও বিতর্ক থামছে না।