Timeline from Babri Masjid to Ram Mandir and Controversy related to Ayodhya dgtl
Ram Mandir Inauguration
১৫২৮-২০২৪: বাবরি মসজিদ থেকে রামমন্দির! এক নজরে ৪৯৬ বছরের ইতিহাস এবং বিতর্ক
অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ তৈরি হওয়ার ৪৯১ বছর পরে শীর্ষ আদালতের বিচারকেরা জানান, হিন্দুদের বিশ্বাসের ‘রামজন্মভূমি’তে মন্দিরই হবে।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:২১
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১৩১
বছরের পর বছর ধরে আইনি লড়াই। দীর্ঘ লড়াই নিয়ে রাজনৈতিক জট। এ সব কাটিয়ে অবশেষে সোমবার অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধন। সোমবার দুপুরে মন্দিরের গর্ভগৃহে ‘রামলালা’র মূর্তিতে ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’ করবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
০২৩১
আইনি লড়াইয়ের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে রামমন্দিরের। আইনি লড়াই শুরু হয়েছিল ১৩৯ বছর আগে। আর দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে টানাপড়েনটা চলছিল তারও অনেক আগে থেকে। পাঁচ শতক ধরে চলতে থাকা এই টানাপড়েনের পর আসে সুপ্রিম কোর্টের রায়। অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ তৈরি হওয়ার ৪৯১ বছর পরে শীর্ষ আদালতের বিচারকেরা জানান, হিন্দুদের বিশ্বাসের ‘রামজন্মভূমি’তে মন্দিরই হবে। গত পাঁচ শতাব্দীতে কত বার কত রকম বাঁক নিল রামজন্মভূমি-বাবরি মসজিদ বিতর্ক? কোন পথ ধরে তা পৌঁছল রামমন্দিরের উদ্বোধন পর্যন্ত? দেখে নেওয়া যাক এক ঝলকে:
০৩৩১
১৫২৮: অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ তৈরি করালেন মুঘল সম্রাট বাবরের সেনাপতি মির বাকি। বছর দুয়েক আগেই ভারতে মুঘল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছেন জহিরুদ্দিন মহম্মদ বাবর।
০৪৩১
১৮৮৫: মুঘল যুগ শেষ হয়ে গিয়েছে। ঘটে গিয়েছে সিপাহি বিদ্রোহও। ভারতে ব্রিটিশ রাজ সুপ্রতিষ্ঠিত। ফৈজাবাদের জেলা আদালতের দ্বারস্থ হয়ে রামজন্মভূমি-বাবরি মসজিদের বিতর্কিত কাঠামোর বাইরে শামিয়ানা তৈরি করে রামলালার মূর্তি স্থাপনের আবেদন জানালেন মহন্ত রঘুবীর দাস। আর্জি খারিজ করল ব্রিটিশ আদালত।
০৫৩১
১৯৪৯: বছর দেড়েক আগে ভারত স্বাধীন হয়েছে। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ, শীতের রাত। বিতর্কিত কাঠামোর মূল গম্বুজের নীচে রামলালার মূর্তি স্থাপিত হল। মন্দিরপন্থীরা দাবি করলেন, ‘রামলালা প্রকট হয়েছেন’।
০৬৩১
১৯৫০: গোপাল সিমলা এবং মহন্ত রামচন্দ্র দাস ফৈজাবাদ আদালতে আলাদা আলাদা মামলা করে বিতর্কিত স্থানে রামলালার পুজোর অনুমতি চাইলেন।
০৭৩১
১৯৫৯: বিতর্কিত জমির মালিকানা দাবি করে মামলা করল নির্মোহী আখড়া।
০৮৩১
১৯৮১: উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পদে বিশ্বনাথপ্রতাপ সিংহ। বিতর্কিত জমির মালিকানা দাবি করে আদালতের দ্বারস্থ হল উত্তরপ্রদেশ সেন্ট্রাল সুন্নি ওয়াক্ফ বোর্ড।
০৯৩১
১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৬: বিতর্কিত কাঠামোর দরজা হিন্দুদের উপাসনার জন্য খুলে দিতে বলল ফৈজাবাদের আদালত।
১০৩১
১৪ অগস্ট, ১৯৮৯: বিতর্কিত জমিতে স্থিতাবস্থা বহাল রাখার নির্দেশ দিল ইলাহাবাদ হাইকোর্ট।
১১৩১
৬ ডিসেম্বর, ১৯৯২: স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে বিতর্কিত তারিখগুলোর অন্যতম। করসেবকদের হামলায় ধূলিসাৎ হল বাবরি মসজিদ।
১২৩১
৩ এপ্রিল, ১৯৯৩: সংসদে আইন পাশ করিয়ে অযোধ্যার বিতর্কিত জমির দখল নিল কেন্দ্রীয় সরকার।
১৩৩১
২৪ অক্টোবর, ১৯৯৪: ইতিহাসবিদ ইসমাইল ফারুকির মামলায় ভারতের সর্বোচ্চ আদালত জানাল, কোনও একটা মসজিদকে ইসলামের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হিসেবে ধরা হবে না।
১৪৩১
৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১০: অযোধ্যা মামলার রায় দিল ইলাহাবাদ হাইকোর্ট। তিন বিচারকের বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের উপর দাঁড়িয়ে জানাল, বিতর্কিত জমি তিন ভাগে ভাগ করে দেওয়া হচ্ছে সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড, নির্মোহী আখড়া এবং রামলালা বিরাজমানের মধ্যে।
২১ মার্চ, ২০১৭: দেশের প্রধান বিচারপতি জে এস খেহর বললেন, আদালতের বাইরেই মীমাংসা করে নেওয়া হোক অযোধ্যা বিতর্কের।
১৭৩১
৭ অগস্ট, ২০১৭: অযোধ্যা মামলার শুনানির জন্য তিন বিচারপতির বেঞ্চ গঠন করল সুপ্রিম কোর্ট।
১৮৩১
২০ নভেম্বর, ২০১৭: উত্তরপ্রদেশ শিয়া সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ড জানাল, অযোধ্যায় মন্দির বানালে আপত্তি নেই। পরিবর্তে লখনউতে মসজিদ বানিয়ে দেওয়া হোক।
১৯৩১
৫ ডিসেম্বর, ২০১৭: প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র, বিচারপতি অশোক ভূষণ এবং বিচারপতি এস আবদুল নাজিরের বেঞ্চে নতুন করে শুরু অযোধ্যা মামলার শুনানি।
২০৩১
২৯ অক্টোবর, ২০১৮: নয়া প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বে আবার নতুন করে তিন বিচারপতির বেঞ্চ গঠিত হল।
২১৩১
৮ জানুয়ারি, ২০১৯: প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বে এ বার তৈরি হল পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ। কারও সরে দাঁড়ানো, কারও অসুস্থতার কারণে সেই বেঞ্চে পরে কিছু পরিবর্তনও হল।
২২৩১
৮ মার্চ, ২০১৯: বিচারপতি এফএম কলিফুল্লা, আধ্যাত্মিক গুরু শ্রী শ্রী রবিশঙ্কর এবং আইনজীবী শ্রীরাম পঞ্চুকে নিয়ে মধ্যস্থতা প্যানেল তৈরি করে দিল সুপ্রিম কোর্ট।
২৩৩১
২ অগস্ট, ২০১৯: মধ্যস্থতার চেষ্টা ব্যর্থ। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জানালেন, ৬ অগস্ট থেকে রোজ শুনানি হবে অযোধ্যা মামলার।
২৪৩১
১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯: মধ্যস্থতা কমিটিকে আবার আলোচনা শুরু করতে বলল সুপ্রিম কোর্ট। এক মাসের মধ্যে আলোচনা শেষ করার সময় বেঁধে দেওয়া হল।
২৫৩১
১৬ অক্টোবর, ২০১৯: প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ বললেন— অনেক হয়েছে, আজই শেষ করতে হবে অযোধ্যা মামলার শুনানি ।
২৬৩১
৯ নভেম্বর, ২০১৯: সুপ্রিম কোর্ট রায় দিল, অযোধ্যায় বিতর্কিত জমিতে হিন্দুদের মন্দির তৈরি হবে। বিকল্প পাঁচ একর জমি দেওয়া হবে মুসলিম সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে।
২৭৩১
১২ ডিসেম্বর, ২০১৯: অযোধ্যায় জমি বিবাদ মামলার রায় নিয়ে একাধিক আবেদন খারিজ করল সুপ্রিম কোর্ট।
২৮৩১
৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২০: শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্ট গঠনে কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেটের অনুমোদন। রামমন্দির নির্মাণে তদারকি করছে ওই ট্রাস্ট। লোকসভায় অনুমোদনের কথা ঘোষণা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর।
২৯৩১
২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২০: অযোধ্যার সোহাওয়াল তহশিলে পাঁচ একর জমিতে মসজিদ গড়ার জন্য উত্তরপ্রদেশ সরকার প্রদত্ত জমি গ্রহণ উত্তরপ্রদেশ সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ডের।
৩০৩১
৫ অগস্ট, ২০২০: অযোধ্যায় রামমন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের আগে ভূমিপূজা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। এর পর রুপোর ইট দিয়ে হল রামমন্দিরের আনুষ্ঠানিক শিলান্যাস।
৩১৩১
২২ জানুয়ারি, ২০২৪: বহু বিতর্ক এবং আইনি লড়াইয়ের পর অবশেষে উদ্বোধন হচ্ছে রামমন্দিরের। ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’ হল রামলালার বিগ্রহে। মন্দিরের উদ্বোধন উপলক্ষে অযোধ্যায় হাজির লক্ষ লক্ষ মানুষ। তাঁরাও সাক্ষী থাকলেন ইতিহাস এবং পরিবর্তনের।