Things to know about Violence in Sudan, Death toll crosses 100 dgtl
Sudan Violence
আকরিকের দখল না ক্ষমতার লড়াই, কেন সংঘাতে সুদানের দুই বাহিনী? নেপথ্যে লুকিয়ে কোন ইতিহাস
খারতুমের বাসিন্দাদের দাবি, এখন তাঁদের বাতাসে বারুদের গন্ধ রয়েছে। কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে গোলাগুলির আওয়াজ এবং বিস্ফোরণের শব্দ। দাউ দাউ করে পুড়ছে বাড়ি, দোকান।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২৩ ১৭:১৭
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৭
সুদানের গৃহযুদ্ধে লাফ দিয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে মৃতের সংখ্যা। তবে সেই মৃত্যু তুরস্ক বা সিরিয়ার মতো কোনও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে নয়। দেশের সেনা এবং আধাসেনার গৃহযুদ্ধের কারণেই সঙ্কট নেমে এসেছে সে দেশের জনগণের জীবনে।
০২১৭
সুদানের গৃহযুদ্ধে লাফ দিয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে মৃতের সংখ্যা। তবে সেই মৃত্যু তুরস্ক বা সিরিয়ার মতো কোনও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে নয়। দেশের সেনা এবং আধাসেনার গৃহযুদ্ধের কারণেই সঙ্কট নেমে এসেছে সে দেশের জনগণের জীবনে।
০৩১৭
খারতুমের বাসিন্দাদের দাবি, দেশের বাতাসে এখন শুধুই বারুদের গন্ধ। কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে গোলাগুলির আওয়াজ আর বিস্ফোরণের শব্দ। দাউ দাউ করে জ্বলছে বাড়ি, দোকান। আতঙ্কে বাড়ির বাইরে পা রাখতে পারছেন না সাধারণ মানুষ।
০৪১৭
খারতুমের বাসিন্দাদের দাবি, দেশের বাতাসে এখন শুধুই বারুদের গন্ধ। কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে গোলাগুলির আওয়াজ আর বিস্ফোরণের শব্দ। দাউ দাউ করে জ্বলছে বাড়ি, দোকান। আতঙ্কে বাড়ির বাইরে পা রাখতে পারছেন না সাধারণ মানুষ।
০৫১৭
সুদানের সেনাবাহিনী সে দেশের বর্তমান শাসক বা ‘ডি-ফ্যাক্টো রুলার’ জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহানের প্রতি অনুগত। অন্য দিকে, আধা সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)-এর সদস্যরা প্রাক্তন সেনাপ্রধান জেনারেল মহম্মদ হামদান দাগালোকে অনুসরণ করেন। যিনি হেমেদতি নামেও পরিচিত।
০৬১৭
ক্ষমতার লড়াইয়ের অন্যতম শিকড় লুকিয়ে রয়েছে ২০১৯ সালে। ২০১৯ সালের এপ্রিলে সুদানে সেনা অভ্যুত্থানে গদিচ্যুত হয়েছিলেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট তথা স্বৈরাচারী শাসক হিসাবে পরিচিত ওমর আল বশির।
০৭১৭
প্রায় দু’দশক আগে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রান্তিকতার কারণে দারফুরে একটি বিদ্রোহ দমন করার জন্য আরএসএফ তৈরি করেন বশির। লক্ষ্য ছিল, সেনাবাহিনীর সমান্তরাল আর একটি বাহিনী তৈরি করা, যা কড়া হাতে সরকারের বিরুদ্ধে হওয়া বিদ্রোহীদের দমন করবে। আগে ‘জানজাওয়েদ’ নামেও পরিচিত ছিল বশিরের তৈরি এই বাহিনী।
০৮১৭
২০১৩ সালে, ‘জানজাওয়েদ’-কে একটি আধা সামরিক বাহিনীতে রূপান্তরিত করেন বশির। ইয়েমেন এবং পরে লিবিয়ায় যুদ্ধের জন্যও এই বাহিনীকে পাঠিয়েছিল বশির। এই সব যুদ্ধে গণহত্যা এবং ধর্ষণ-সহ একাধিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে আরএসএফের বিরুদ্ধে।
০৯১৭
২০১৯ সালে হেমেদতির নেতৃত্বে সেই আরএসএফ-ই বুরহানের নেতৃত্বাধীন সেনাবাহিনীকে সাহায্য করে বশিরকে ক্ষমতাচ্যুত করতে। বশির পদচ্যূত হওয়ার পর খারতুমের সামরিক সদর দফতরের সামনে অনুষ্ঠিত একটি শান্তিপূর্ণ অবস্থানকে ছত্রভঙ্গ করে দেয় আরএসএফ। তবে সেই অবস্থানকে ছত্রভঙ্গ করতে শতাধিক মানুষকে খুন করার এবং অনেক মহিলাকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে।
১০১৭
বশিরকে ক্ষমতা থেকে সরানোর পর সেনা এবং আধাসেনার মধ্যে চুক্তি হয়। সেনা এবং গণতন্ত্রপন্থী রাজনৈতিক দলগুলির প্রতিনিধিদের নিয়ে তৈরি হয় অন্তর্বর্তিকালীন সরকার।
১১১৭
কিন্তু ২০২১-এর অক্টোবরে প্রধানমন্ত্রী আবদুল্লা হামদকের নেতৃত্বাধীন সেই অন্তর্বর্তিকালীন সরকারকেও উৎখাত করে সেনা। ক্ষমতা চলে যায় সেনার হাতে। আর তা নিয়েই আবার দূরত্ব বাড়ে সেনা এবং আধাসেনার। সংঘাত শুরু হয় হেমদতি এবং বুরহানের সহযোগীদের মধ্যে।
১২১৭
অবৈধ খনি থেকে সোনা রফতানি করে হেমেদতির সম্পদের পরিমাণ বিপুল। আর সেই টাকার জোরেই আরএসএফকে আরও শক্তিশালী করেন তিনি। বিভিন্ন জায়গায় আধা সামরিক বাহিনীর জওয়ানদের অত্যাচারের অভিযোগও উঠে আসতে থাকে।
১৩১৭
এর পর থেকেই দেশের সাধারণ মানুষ ‘এক দেশ এক সেনা’র দাবিতে সরব হন। আরএসএফকে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একত্রীকরণ করার দাবিও তোলেন অনেকে। পাশাপাশি কৃষি, বাণিজ্য এবং অন্যান্য শিল্পে আরএসএফের হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করেও সরব হন সাধারণ মানুষ।
১৪১৭
এর পর থেকেই দেশে দুই বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছিলেন কূটনীতিকরা। হলও তাই। পাশাপাশি সূত্রের খবর, আরএসএফের বড় অংশের আনুগত্য রয়েছে পূর্বতন সরকারের প্রতি। আর সেই কারণেও এই সংঘাত।
১৫১৭
সব মিলিয়ে জ্বলছে সুদান। প্রাণ হারাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। কবে এই অশান্তি শেষ হবে, তা কেউই বলতে পারছেন না।
১৬১৭
সুদানে শুরু হওয়া সংঘাতের কারণে লোহিত সাগর, সাহেল অঞ্চল এবং আফ্রিকার হর্নের সীমান্তবর্তী এলাকায় অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। সুদানের প্রতিবেশী ইথিওপিয়া, চাদ এবং দক্ষিণ সুদানও এই সংঘাতের কারণে প্রভাবিত হচ্ছে।
১৭১৭
বহুমূল্য আকরিকের কারণে অনেক দিন ধরেই রাশিয়া, আমেরিকা, সৌদি আরবের মতো দেশগুলির ‘নেকনজরে’ রয়েছে সুদান। সুদানে প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টায় অনেক রকম ফন্দিফিকির করছে দেশগুলি। কিন্তু বিশেষ কোনও লাভ হয়নি।