Things to know about Bengaluru CEO Mother who killed her 4 year old son in Goa dgtl
Suchana Seth
ঠান্ডা মাথায় খুন করে চার বছরের ছেলের দেহ নিয়ে পালাচ্ছিলেন, ‘মেধাবী’ সূচনার পড়াশোনা কলকাতায়
বরাবর দারুণ ছাত্রী। কেরিয়ারেও সফল। সেই সূচনা কী ভাবে ঠান্ডা মাথায় এই ভয়ঙ্কর কাণ্ড ঘটালেন? কেন করলেন? পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের মামলা চলছিল। সেই ‘তিক্ততা’-র কারণেই সম্ভবত নিজের সন্তানকে খুন করেছেন মা।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২৪ ১৯:১৮
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
গোয়ায় সার্ভিস অ্যাপার্টমেন্টে চার বছরের ছেলেকে খুন করার অভিযোগে গ্রেফতার সূচনা শেঠ। শিশুর দেহ ব্যাগে ভরে পালাচ্ছিলেন। চালকের তৎপরতায় গ্রেফতার উদ্যোগপতি। এই সূচনার কিন্তু কলকাতা-যোগও রয়েছে।
০২২০
কর্নাটকের চিত্রদুর্গ থেকে তাঁকে আটক করে পুলিশ। ক্যাবে চেপে গোয়া থেকে বেঙ্গালুরু ফিরছিলেন। পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। ব্যাগ থেকে মেলে চার বছরের শিশুর দেহ।
০৩২০
বরাবর দারুণ ছাত্রী। কেরিয়ারেও সফল। সেই সূচনা কী ভাবে ঠান্ডা মাথায় এই ভয়ঙ্কর কাণ্ড ঘটালেন? কেন করলেন? পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের মামলা চলছিল। সেই ‘তিক্ততা’-র কারণেই সম্ভবত নিজের সন্তানকে খুন করেছেন মা।
০৪২০
সূচনার স্বামী এখন ইন্দোনেশিয়ায় থাকেন। তিনি এআই (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স) ডেভলপার। শিশুটির খুনের বিষয়ে তাঁকে জানিয়েছে পুলিশ। দেশে ফিরে আসতেও বলা হয়েছে।
০৫২০
গত শনিবার উত্তর গোয়ার ক্যান্ডোলিমে একটি সার্ভিস অ্যাপার্টমেন্টে উঠেছিলেন তিনি। সঙ্গে ছিল ছেলে। সোমবার সকালে সেই হোটেল ছাড়েন। তখন যদিও একা। তাতেই সন্দেহ হয় হোটেলকর্মীদের।
০৬২০
হোটেলকর্মীদের বেঙ্গালুরু পর্যন্ত যাওয়ার জন্য একটি ক্যাব বুক করে দিতে বলেন সূচনা। কর্মীরা তাঁকে বিমান ধরার পরামর্শ দেন। কিন্তু সূচনা নাছোড়। তিনি ব্যাগ নিয়ে ক্যাবে চাপেন।
০৭২০
সূচনা সার্ভিস অ্যাপার্টমেন্টের ঘর ছেড়ে বার হওয়ার পর কর্মীরা সেখানে রক্তের দাগ দেখতে পান। কর্মীরা গোয়া পুলিশকে খবর দেন। ওই ক্যাবের চালকের সঙ্গে যোগাযোগ করে পুলিশ। তাঁর মাধ্যমে সূচনার সঙ্গে কথা বলে।
০৮২০
সূচনাকে ছেলের বিষয়ে জিজ্ঞেস করে পুলিশ। তিনি জানান, ছেলে এক বন্ধুর সঙ্গে রয়েছে। সেই ব্যক্তির ঠিকানাও দেন। পুলিশ খোঁজ নিয়ে দেখে, ওই ঠিকানার কোনও অস্তিত্ব নেই।
০৯২০
এর পর আবার চালককে ফোন করে পুলিশ। তাঁকে গোটা ঘটনা পুলিশ জানায়। চালক পুলিশকে জানান, তিনি কর্নাটকের চিত্রদুর্গ জেলায় প্রবেশ করেছেন। সূচনা যাতে বুঝতে না পারেন, তাই চালকের সঙ্গে স্থানীয় কঙ্কণী ভাষায় কথা বলা শুরু করেন।
১০২০
কঙ্কণী ভাষায় চালককে নিকটবর্তী থানায় গাড়ি নিয়ে যেতে বলে পুলিশ। সেই মতো সূচনাকে টের পেতে না দিয়ে চালক সোজা আইমঙ্গলা থানায় গাড়ি নিয়ে চলে যান। সেখানে প্রস্তুত ছিল পুলিশ।
১১২০
সূচনাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রথমে তেমন কিছুই জানতে পারেনি পুলিশ। এর পর তাঁর ব্যাগ তল্লাশি করা হয়। ব্যাগ খুলতেই দেখা যায়, সেখানে রয়েছে চার বছরের শিশুর রক্তাক্ত দেহ। এর পরেই সূচনাকে গ্রেফতার করা হয়।
১২২০
কিন্তু হঠাৎ কেন এই কাণ্ড বাধালেন সূচনা? উত্তর গোয়ার পুলিশ সুপার নিধিন ভালসান জানিয়েছেন, স্বামীর সঙ্গে তাঁর বিচ্ছেদের প্রক্রিয়া শেষের পথে। আদালতের নির্দেশে অখুশি ছিলেন সূচনা। মনে করা হচ্ছে, ছেলে হাতছাড়া হতে পারে আশঙ্কাতেই তিনি খুন করেন।
১৩২০
তিন মাস আগে সমাজমাধ্যমে ছেলেকে নিয়ে একটি পোস্টও করেছিলেন। হ্যাশট্যাগ দিয়ে লিখেছিলেন, ‘কী হবে’। তখন থেকেই কি আশঙ্কা ছিল সূচনার মনে, কী হবে?
১৪২০
এই সূচনার সঙ্গে যোগ রয়েছে কলকাতার। ছেলেবেলা কেটেছে চেন্নাইয়ে। সেখানে গোপালপুরমের ডিএভি গার্লস সিনিয়র সেকেন্ডারি স্কুলে পড়াশোনা করতেন তিনি।
১৫২০
এর পরেই সূচনার পরিবার চলে আসে কলকাতায়। কেন, তা অবশ্য জানা যায়নি। ২০০৩ সালে তিনি ভবানীপুর এডুকেশন সোসাইটি কলেজে পদার্থবিদ্যা নিয়ে স্নাতকস্তরে ভর্তি হয়েছিলেন। ২০০৬ সালে সেখান থেকেই স্নাতক পাশ করেন। প্রথম বিভাগে।
১৬২০
এর পর সূচনা ভর্তি হন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্লাজ়মা ফিজিক্স এবং অ্যাস্ট্রোফিজিক্সে স্পেশালাইজেশন ছিল তাঁর। ২০০৮ সালে স্নাতকোত্তর পাশ করেন। প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন।
১৭২০
পদার্থবিদ্যার পাশাপাশি সংস্কৃতেও দারুণ আগ্রহ সূচনার। গোলপার্কের রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট অফ কালচার থেকে সংস্কৃতে স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা পাশ করেন সূচনা। প্রথম হয়েছিলেন তিনি।
১৮২০
ইংরেজি, বাংলা, তামিল, হিন্দি, সংস্কৃত, ফরাসি— ছ’টি ভাষায় পারদর্শী সূচনা। কম্পিউটারেও বিশেষ ডিগ্রি পাশ করেছিলেন। আমেরিকার বস্টনে এআই নিয়ে পড়াশোনা করেন। তার পর চাকরিও করেন। দু’বছর একটি সংস্থায় কাজ করেন সেখানে।
১৯২০
এর পর বেঙ্গালুরুর একটি সংস্থায় সিনিয়র ডেটা সায়েন্টিস্ট হিসাবে কাজ করেন। চার বছর আগে নিজের সংস্থা শুরু করেন— ‘দ্য মাইন্ডফুল এআই ল্যাব’।
২০২০
বেশ কয়েক বছর ধরে স্বামীর সঙ্গে সমস্যা চলছিল সূচনার। দু’জনে আইনি বিচ্ছেদের পথে হেঁটেছেন। বিচ্ছেদের প্রক্রিয়া যখন প্রায় শেষের পথে, তখনই ছেলেকে খুন করলেন সূচনা। কেন, সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। ছবি: ইনস্টাগ্রাম, প্রতিনিধিত্বমূলক।