পৃথিবীর ইতিহাসে তিনি সবচেয়ে ধনী মহিলা ছিলেন যাঁর কার্পণ্য এখনও সংবাদের শিরোনামে উঠে আসে।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২৪ ১৬:২৬
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৩
ইতিহাসে তিনি পরিচিত ‘ওয়াল স্ট্রিটের রানি’ নামে। মৃত্যুর পর তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ ছিল তাক লাগানোর মতো। ১৯১৬ সালে তাঁর যা সম্পত্তি ছিল, আজকের দিনে তার মূল্য ৮৪৩ কোটি টাকারও বেশি। হেটি গ্রিন সেই সময়ে ছিলেন আমেরিকার অন্যতম ধনী মহিলা।
০২১৩
বিপুল সম্পত্তির মালিকানা হাতে থাকলেও তাঁর জীবনযাত্রা নিয়ে কম চর্চা হয়নি। পৃথিবীর ইতিহাসে তিনিই সবচেয়ে ধনী মহিলা যিনি কার্পণ্যের জন্য সংবাদের শিরোনামে উঠে এসেছিলেন।
০৩১৩
বিশাল সম্পত্তির মালিক হয়েও অত্যন্ত নিম্নমানের জীবনযাপন করতেন হেটি। পরতেন ছেঁড়া, নোংরা পোশাক। প্রতি দিনের খাবারের জন্য ব্যয় করতেন সামান্যই। নিউ ইয়র্কে তিনি বাড়ি ভাড়া করে থাকতেন।
০৪১৩
কর দেওয়ার ভয়ে তিনি বাড়ি কেনেননি। সস্তা বাড়ি খুঁজে খুঁজে তিনি সেখানে বসবাস করতেন। কর ফাঁকি দেওয়ার জন্য তিনি প্রায়ই বাড়ি বদলাতেন বলে সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে।
০৫১৩
কথিত আছে, ১৬ বছর বয়সে কেনা অন্তর্বাস সেলাই করে মৃত্যুর দিন পর্যন্ত ব্যবহার করেছেন হেটি। তিনি যে কালো পোশাকটি পরতেন, তা পুরোপুরি জীর্ণ না হওয়া পর্যন্ত পরিবর্তন করেননি। এই সব কারণে তাঁকে আড়ালে ‘কালো ডাইনি’ নামে ডাকা হত।
০৬১৩
১৮৩৫ সালে আমেরিকায় জন্মগ্রহণ করেন হেটি। তিনি এক সম্ভ্রান্ত ধনী ব্যবসায়ী পরিবারের একমাত্র কন্যা ছিলেন। তিনি তাঁর পিতার থেকে আনুমানিক ৬৩ কোটি টাকার সম্পত্তি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছিলেন।
০৭১৩
যখন তাঁর ২১ বছর বয়স, তখন তিনি সেই টাকা ওয়াল স্ট্রিটে বিনিয়োগ করার জন্য নিউ ইয়র্কে বসবাস করতে শুরু করেন। সেই সময়েই হেটির আয় ছিল ঘণ্টায় ৩০০ ডলার।
০৮১৩
তাঁর বাবা ও দাদুর তত্ত্বাবধানে ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয়ে হাতেখড়ি হয় হেটির। ১৮৬৭ সালের জুলাই মাসে কোটিপতি এডওয়ার্ড এইচ গ্রিনকে বিয়ে করেছিলেন তিনি। তবে বিয়ের পর হেটি ও তাঁর স্বামীর দু’জনের সম্পত্তি পৃথক ভাবেই রাখা হয়েছিল।
০৯১৩
কয়েক দিনের মধ্যে পুরুষপ্রধান ওয়াল স্ট্রিটের বাণিজ্যের রাশ নিজের হাতে নিয়ে ফেলেন হেটি। তিনি ওয়াল স্ট্রিটের অন্যতম পরিচালক হয়ে ওঠেন অল্প সময়ের মধ্যেই। সেই সময় আমেরিকার প্রায় প্রত্যেকটা রেলপথে তাঁর অংশীদারি ছিল। রেলপথের মালকিন হলেও রেলগাড়িতে ভ্রমণের সময় সাধারণ কামরাই পছন্দ ছিল তাঁর।
১০১৩
এ ছাড়া অন্যান্য স্টক এবং সরকারি বন্ডেও যথেষ্ট আধিপত্য ছিল তাঁর। ঋণ দেওয়ার জন্য মোটা তহবিল তৈরি করেন হেটি। বহু বিনিয়োগকারীকে ঋণ দিয়ে সাহায্য করেছিলেন তিনি।
১১১৩
বন্ধকী এবং রিয়্যাল এস্টেটেও প্রচুর বিনিয়োগ করেছিলেন হেটি। যাঁর ফলে তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর উত্তরাধিকারীরা লাভবান হয়েছিলেন।
১২১৩
বিপুল অর্থের মালিকানা সত্ত্বেও তিনি নিজের সন্তানের চিকিৎসা পর্যন্ত করাতে চাননি বলে কানাঘুষো শোনা যায়। সমালোচকদের দাবি, হেটির কার্পণ্যের জন্য তাঁর ছেলের একটি পা কেটে ফেলতে হয়েছিল। ছেলেটির পা ভেঙে গেলেও চিকিৎসা না করিয়ে বিনামূল্যে চিকিৎসার খোঁজ করছিলেন হেটি।
১৩১৩
সারা জীবন বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি অর্জন করলেও তাঁর শেষ জীবনের বেশির ভাগ সময় নিউ জার্সির হোবোকেনে একটি ছোট আবাসনে বসবাস করেছিলেন। ১৯৬১ সালে ৮১ বছর বয়সে মারা যান তিনি। তাঁর সম্পত্তি সন্তানদের মধ্যে সমান ভাগে ভাগ করা হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে।