সম্প্রতি গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র পটেল গুজরাতের রাজ্য মাছ হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছেন একটি মাছকে। মাছটি আকারে বিশাল, বিরলও বটে। এই মাছ মদ তৈরিতে কাজে লাগে।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২৩ ১৫:৪২
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৫
আরব সাগরের বুকে উথালপাথাল ঢেউয়ে ঢুঁ মারলে মাঝেমাঝে তার দেখা মেলে। তার খোঁজে সমুদ্রে জাল বিছিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়ে দেন মাঝিরা। যদি এক বার জল থেকে সে উঁকি মারে, যদি কপাল ফেরে..!
০২১৫
রূপকথার পরি বা জলদেবতা নয়, কথা হচ্ছে একটি মাছকে নিয়ে। আরব সাগরের ওই মাছ যে কোনও সময়, যে কোনও মৎস্যজীবীর ভাগ্য ফিরিয়ে দিতে পারে একাই। একটি মাছে লাখপতি হতে পারেন যে কেউ।
০৩১৫
মাছটির নাম ঘোল। নামের বাহার নেই। তবে কার্যক্ষেত্রে মাছের দর ঘোল খাইয়ে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট। রূপে নয়, গুণেই সকলের মন জয় করে নেয় এই মাছ। সম্প্রতি গুণের স্বীকৃতিও পেয়েছে সেটি।
০৪১৫
গুজরাতের রাজ্য মাছ হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে ঘোল মাছকে। আমদাবাদে গ্লোবাল ফিশারিজ় কনফারেন্স ইন্ডিয়া ২০২৩-এর মঞ্চে ঘোল মাছকে রাজ্য মাছের স্বীকৃতি দিয়েছেন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র পটেল।
০৫১৫
ভারতে যে সব মাছ পাওয়া যায়, তার মধ্যে অন্যতম বড় এই মাছ। এক থেকে দেড় মিটার পর্যন্ত লম্বা হয় এই মাছ। মাছ আকারে যত বড় হবে, তার দামও হবে তত বেশি। বাজারেও বড় মাছের কদর, চাহিদা দুই-ই বেশি।
০৬১৫
ভারতের পশ্চিম উপকূলে আরব সাগরের তীরে ঘোল মাছ অত্যন্ত জনপ্রিয়। মাছটি ওই এলাকার মানুষ খেতে ভালবাসেন। সেই সঙ্গে এই মাছের অন্য ব্যবহারও আছে। তবে মাছটি বেশ বিরল।
০৭১৫
এক একটি পূর্ণ দৈর্ঘ্যের ঘোল মাছের দাম পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত উঠতে পারে। ফলে এই মাছ হাতে পেলে মৎস্য ব্যবসায়ীদের কপাল খুলে যেতে বাধ্য। গুজরাত, মহারাষ্ট্র, গোয়ার বিভিন্ন বন্দরে ঘোল মাছ নিলামে ওঠে।
০৮১৫
কিছু দিন আগে মহারাষ্ট্রের এক মৎস্যজীবী ১৫৭টি ঘোল মাছ ধরেছিলেন। রাতারাতি কোটিপতি হয়ে যান তিনি। ওই মাছগুলির মোট দাম ওঠে ১,৩৩,০০০০০ টাকা।
০৯১৫
ঘোল মাছের মাথার দিকটি সাধারণত সরু হয়। পেট তুলনায় মোটা। সারা দেহ ঢাকা থাকে হালকা বাদামি রঙের আঁশে। মাছটির গায়ে সোনালি আভাও চোখ এড়ায় না।
১০১৫
কেন এত দাম, কেনই বা এত কদর ঘোল মাছের? মাছটি সুস্বাদু। কিন্তু শুধুমাত্র স্বাদের জন্য নয়, তার চাহিদার রহস্য লুকিয়ে আছে অন্যত্র। খাওয়া ছাড়াও এই মাছ অন্য অনেক কাজে লাগে। সেই কারণেই দাম এত বেশি।
১১১৫
ঘোল মাছের রহস্য লুকিয়ে আছে তার পেটের ভিতর। এই মাছের পটকা অত্যন্ত কার্যকরী। পটকার গুণেই দাম বেড়েছে ঘোলের। মাছটি জালে ধরা পড়লে আগে পেট কেটে পটকা বার করা হয়। মাছ এবং পটকা আলাদা ভাবে বাজারে বিক্রি হয়।
১২১৫
ঘোল মাছের পটকাটির ঔষধিগুণ রয়েছে। অনেক জটিল, বিরল রোগের ওষুধ তৈরিতে এই পটকা কাজে লাগে। এটি মুম্বই বন্দর থেকে বিদেশে রফতানিও করা হয়। অর্থাৎ, দেশে বিদেশি মুদ্রাও এনে দেয় ঘোল।
১৩১৫
ঘোল মাছের সবচেয়ে জরুরি কার্যকারিতা হল মদ। মদ তৈরিতে এই মাছ কাজে লাগে। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিয়ার এবং ওয়াইন এই মাছ দিয়ে তৈরি করা হয়। ঘোল মাছের ওয়াইন বা বিয়ারের দামও তুলনায় বেশি। ওয়াইন তৈরিতে অধিক কার্যকরী ঘোলের পটকা।
১৪১৫
ঘোল মাছের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন এবং ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। যেগুলি কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। এ ছাড়া, হৃদ্রোগের আশঙ্কা কম হয় এই মাছ খেলে। মাছটিতে রয়েছে দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধির ওষুধও।
১৫১৫
ত্বকের পক্ষেও ঘোল মাছ উপকারী। এটি ত্বকের ঔজ্জ্বল্য, পুষ্টি বৃদ্ধি করে এবং ত্বককে সুন্দর করে তোলে। তাই প্রসাধন সামগ্রীর বাজারেও এই মাছের কদর রয়েছে। ঘোল মাছের ফুলকা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।