The spooky stories of Lohaghat, the most terrifying place in Uttarakhand dgtl
Haunted Place In Uttarakhand
রোগী দেখে ‘বলে দিতেন মৃত্যুর তারিখ’, চলত ‘সাধনা’! উত্তরাখণ্ডের হাসপাতাল এখন ‘প্রেতাত্মা’র ঠেক
হাসপাতালে কোনও রোগীকে ভর্তি করানো হলেও তাঁর সঙ্গে আলাদা ভাবে দেখা করতেন মরিসন। রোগীকে দেখামাত্রই তিনি কবে, কোন সময়ে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করবেন, সে কথাও জানিয়ে দিতেন চিকিৎসক।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২৪ ১০:১০
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৮
চারদিকে হিমালয়ের সৌন্দর্য, আর তারই মাঝে ছোট্ট পাহাড়ি গ্রাম। সারা দিন আর পাঁচটা সাধারণ লোকালয়ের মতোই থাকে এই গ্রাম। কিন্তু বিকেল গড়াতেই একটি বাংলো এড়িয়ে চলেন গ্রামবাসীরা। স্থানীয়দের মতে, এই বাংলোর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে অলৌকিক ঘটনা। সন্ধ্যার পর নাকি এই বাংলোর আশপাশে শোনা যায় প্রেতাত্মাদের চিৎকার।
০২১৮
উত্তরাখণ্ডের চম্পাবত জেলায় পাহাড়ের কোলে রয়েছে অ্যাবট হিল। সেখানেই বহু বছর আগে ছিল অ্যাবট সাহেবের একটি বিলাসবহুল বাংলো। অন্দরমহল তো বটেই, বাইরে থেকেও বাংলোটি ছিল নজরকাড়া।
০৩১৮
স্থানীয়দের মতে, অ্যাবট সাহেব নাকি এক সেবা প্রতিষ্ঠানকে তাঁর বাংলোটি দান করেছিলেন। অ্যাবট সাহেবের মৃত্যুর পর সেবা প্রতিষ্ঠানের তরফে সেই বাংলোয় একটি হাসপাতাল গড়ে তোলা হয়।
০৪১৮
১৯২০ সালে হাসপাতাল তৈরি হওয়ার পর অল্প সময়ের মধ্যেই এলাকায় নাম ছড়িয়ে পড়ে। দ্রুত চিকিৎসা করা হত বলে স্থানীয় বাসিন্দারা কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লেই ওই হাসপাতালে ছুটতেন।
০৫১৮
স্থানীয়দের দাবি, মরিস নামে এক চিকিৎসক উত্তরাখণ্ডের ওই হাসপাতালে আসার পরেই রহস্যজনক ঘটনা ঘটতে শুরু করে। অধিকাংশের দাবি, কোনও রোগীকে দেখার পরেই তাঁর মৃত্যুর দিনক্ষণ নির্ধারণ করে ফেলতেন তিনি।
০৬১৮
মরিস যে তারিখগুলি নির্ধারণ করতেন ঠিক সেই দিনগুলিতেই মারা যেতেন ওই রোগীরা। চিকিৎসকের এই অদ্ভুত ক্ষমতার কথা জানাজানি হওয়ার পর হাসপাতালে রোগীদের ভিড় আরও বাড়তে থাকে।
০৭১৮
হাসপাতালে কোনও রোগীকে ভর্তি করানো হলেও তাঁর সঙ্গে আলাদা ভাবে দেখা করতেন মরিস। রোগীকে দেখামাত্রই তিনি কবে, কোন সময়ে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করবেন সে কথা নাকি জানিয়ে দিতেন।
০৮১৮
স্থানীয়দের অধিকাংশের দাবি, মৃত্যুর নির্দিষ্ট তারিখের কয়েক দিন আগে রোগীকে একটি বিশেষ ওয়ার্ডে নিয়ে চলে যেতেন মরিস। সেই বিশেষ ওয়ার্ডের নাম ছিল ‘মুক্তি কোঠি’ অথবা ‘মুক্তির ঘর’।
০৯১৮
বিশেষ ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়ার দুই থেকে তিন দিনের মাথায় মারা যেতেন ওই রোগী। স্থানীয়দের একাংশের দাবি, সকলের চোখের আড়ালে ওই ওয়ার্ডের ভিতর রোগীদের উপর নানা রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতেন মরিস। পরীক্ষা করতে গিয়েই মরিসের হাতে মারা পড়তেন রোগীরা।
১০১৮
আবার স্থানীয়দের কেউ কেউ দাবি করেন, মরিস নাকি নিজের হাতেই রোগীদের মেরে ফেলতেন। আবার অনেকের মতে, মরিস তন্ত্রসাধনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
১১১৮
স্থানীয়দের দাবি, বিশেষ ওয়ার্ডের ভিতরে মরিস তন্ত্রবিদ্যার সঙ্গে জড়িত এমন কিছু প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতেন যা ভয়াবহ। রোগীদের সেই প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে হত। তার ফলেই প্রাণ হারাতেন তাঁরা।
১২১৮
পূর্বনির্ধারিত তারিখেই রোগীর মৃতদেহ বিশেষ ওয়ার্ড থেকে বার করে দিতেন মরিস। সকলের কাছে নিজেকে ‘ভগবান’ হিসাবে পরিচয় দিতে শুরু করেন তিনি।
১৩১৮
তবে মরিস যে ভুয়ো পরিচয় নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন সে দাবিও করেন স্থানীয়দের একাংশ। তাঁদের মতে নিজের সম্পর্কে এই রকম ধারণা তৈরি করার জন্য আগে থেকেই ছক কষেছিলেন মরিস।
১৪১৮
পরিকল্পনামাফিক রোগীদের সঙ্গে দেখা করার পর নিজের ইচ্ছামতো একটি তারিখের উল্লেখ করতেন মরিস। তার পর সেই তারিখেই রোগীদের হত্যা করতেন তিনি।
১৫১৮
লোকেরা যেন তাঁকে অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী ভাবেন, সে কারণে নাকি বিশেষ ওয়ার্ডে রোগীদের নিয়ে যেতেন মরিস। লোকচক্ষুর আড়ালে সেখানেই রোগীদের খুন করতেন তিনি।
১৬১৮
মরিসের মৃত্যুর পর বন্ধ হয়ে যায় অ্যাবট সাহেবের সেই হাসপাতাল। ধীরে ধীরে পাহাড়ি জঙ্গল গ্রাস করে হাসপাতালটিকে। আর তার পরেই শুরু হয় ‘ভূতের’ তাণ্ডব।
১৭১৮
স্থানীয়দের দাবি, অন্ধকার নামলে এখনও হাসপাতালের ভিতর থেকে নানা রকম শব্দ ভেসে আসে। কখনও কান্নার আওয়াজ শোনা যায়, তো কখনও বা শোনা যায় কানফাটানো চিৎকার।
১৮১৮
স্থানীয়দের একাংশ মনে করেন, মরিসের হাতে যে রোগীরা প্রাণ হারিয়েছিলেন, দিন ফুরোলেই তাঁদের ‘প্রেতাত্মা’ হাসপাতালে ঘুরে বেড়ায়। সেই ভয়েই হাসপাতাল চত্বর নির্দিষ্ট সময়ের পর এড়িয়ে চলেন সেখানকার বাসিন্দারা।