the report of the political parties getting corporate donations will be released in march as per the order of supreme court dgtl
Electoral Bonds
অধ্যাদেশ জারি করে কি সুপ্রিম কোর্টের রায় উল্টে দেওয়ার চেষ্টা করতে পারে বিজেপি?
প্রশ্ন উঠেছে, মোদী সরকার কি অধ্যাদেশ জারি করে সুপ্রিম কোর্টের এই রায় উল্টে দেওয়ার চেষ্টা করতে পারে? বিজেপি নেতৃত্ব তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১২:২০
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২৪
মোদী সরকারের নির্বাচনী বন্ড চালু হয়ে থেকে বিজেপির রমরমা যারপরনাই বেড়েছে— এমনটাই দাবি বিরোধীদের। তাই মার্চ মাসে অনুদানের আসন্ন হিসাব নিয়ে বিশেষ উৎসাহী তারা।
০২২৪
প্রসঙ্গত, কোন রাজনৈতিক দল গত পাঁচ বছরে কোন শিল্প সংস্থার থেকে কত টাকা চাঁদা পেয়েছে, তা মার্চ মাসেই প্রকাশ্যে আসতে চলেছে। সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের পরে বিজেপি-বিরোধী শিবিরের মত, প্রচুর ফায়দা তোলার ফলে এতে বিজেপিই সব থেকে অসুবিধায় পড়বে।
০৩২৪
প্রশ্ন উঠেছে, মোদী সরকার কি অধ্যাদেশ জারি করে সুপ্রিম কোর্টের এই রায় উল্টে দেওয়ার চেষ্টা করতে পারে? বিজেপি নেতৃত্ব তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। দলের বক্তব্য, রায় পড়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।
০৪২৪
যদিও ঘরোয়া ভাবে বিজেপির অনেক নেতাই স্বীকার করে নিচ্ছেন, সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত তাঁদের খুশি করেনি।
০৫২৪
বিজেপি নেতাদের একাংশের মতে, সরকারের উচিত, শীর্ষ আদালতের ওই সিদ্ধান্ত খারিজ করে অধ্যাদেশ আনা। যাতে আগের ব্যবস্থা বহাল থাকে।
০৬২৪
বিজেপি নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদ যুক্তি দিয়েছেন, ‘‘সংস্কারমুখী পদক্ষেপ হিসেবে নির্বাচনী বন্ড এনেছিল সরকার। মূলত নির্বাচন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনতে এবং নির্বাচনে নগদ টাকার ব্যবহার রুখতে ওই পদক্ষেপ করা হয়েছিল।’’
০৭২৪
তিনি আরও বলেন, ‘‘তা ছাড়া, কিছু দাতা নিজেদের পরিচয় গোপন করার পক্ষে ছিলেন, তাঁদের কথা ভেবেই বন্ড নিয়ে এসেছিল সরকার।’’
০৮২৪
মোদী সরকার নির্বাচনী বন্ড চালু করার পরে বিরোধী শিবির থেকে অভিযোগ উঠেছিল, সরকারে থাকার সুবাদে বিজেপি কর্পোরেট সংস্থাগুলিকে নানা সুবিধা পাইয়ে দিয়ে গোপনে তাদের থেকে চাঁদা আদায় করছে।
০৯২৪
আর শাসকদলের বেশি অর্থ পাওয়া নিয়ে বিজেপির ব্যাখ্যা, যে রাজ্যে যে দলের সরকার থাকে, তারাই অনুদান বেশি পায়। তেমনি কেন্দ্রে যে দল ক্ষমতায় থাকে, তারাই অনুদান বেশি পাবে, সেটাই স্বাভাবিক।
১০২৪
বিজেপি নেতৃত্বের মতে, স্বাধীনতার পর থেকে গত পঞ্চাশ বছর ক্ষমতায় ছিল কংগ্রেস। সে সময়ে সব অনুদান তো কংগ্রেস পেয়েছিল। তখন তো সব দলের জন্য সমান রাজনৈতিক চাঁদার কথা কারও মনে পড়েনি।
১১২৪
২০১৭ সালের বাজেটে নির্বাচনী বন্ডের ঘোষণা হয়েছিল। ২০১৮-র জানুয়ারি মাসে নির্বাচনী বন্ড চালুর বিজ্ঞপ্তি জারি হয়।
১২২৪
২০১৭-১৮ থেকে ২০২২-২৩-এর মধ্যে মোট ১২,০০৮ কোটি টাকার নির্বাচনী বন্ড বিক্রি হয়েছে। এর প্রায় ৫৫ শতাংশ বা ৬,৫৬৪ কোটি টাকা বিজেপির সিন্দুকে ঢুকেছে।
১৩২৪
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, বিজেপি-সহ সব দলকে এই কোটি কোটি টাকা চাঁদা কে দিয়েছে, ১৩ মার্চের মধ্যেই তা প্রকাশ্যে আনবে নির্বাচন কমিশন।
১৪২৪
নির্বাচনী বন্ডের বিরুদ্ধে মামলার অন্যতম আইনজীবী কপিল সিব্বলের দাবি, এতে বিজেপির মুখোশ খুলে যাবে। কারণ, কেউ বিনা কারণে বিজেপিকে কোটি কোটি টাকা দেয়নি। একই মত পি চিদম্বরমের।
১৫২৪
তাঁর বক্তব্য, ‘‘বিজেপি কর্পোরেট এবং বড়লোকদের চাঁদার ৯০ শতাংশ নিজের ঝুলিতে পুরেছিল। সবাই জানুক, কবে, কাকে চাঁদা দেওয়া হয়েছে। তার পরে মানুষ জানতে চাইবেন, কেন এই চাঁদা দেওয়া হয়েছে। তার পরে মানুষই সিদ্ধান্ত নেবেন।’’
১৬২৪
তবে নির্বাচনী বন্ড তুলে দেওয়ার পরেও সব রাজনৈতিক দলের কাছে সমান চাঁদা পাওয়ার সুযোগ তৈরি হল কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। সব দল লড়াইয়ের ময়দানে সমান সুযোগ পেল কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
১৭২৪
প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী, কংগ্রেসের রাজ্যসভা সাংসদ চিদম্বরমের মতে, এত দিন শাসকদল বাড়তি সুবিধা পাচ্ছিল। এ বার সব দল সমান সুযোগ পাবে।
১৮২৪
কিন্তু তাঁর ছেলে, লোকসভা সাংসদ কার্তি চিদম্বরমের মতে, বিজেপি নির্বাচনী বন্ডের চাঁদার বেশির ভাগই পকেটে পুরে ফেলল। তা হলে আর সমান সুযোগ কোথায় হল!
১৯২৪
২০১৭-১৮ থেকে ২০২২-২৩-এর মধ্যে যত টাকার নির্বাচনী বন্ড বিক্রি হয়েছে, তার মাত্র ৯.৫ শতাংশ, বা ১,১৩৫ কোটি টাকা কংগ্রেস পেয়েছে। আঞ্চলিক দল হলেও তৃণমূল পেয়েছে ১,০৯৬ কোটি টাকা।
২০২৪
সুপ্রিম কোর্টে অন্যতম মামলাকারী সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির বক্তব্য, ‘‘কে বন্ডের মাধ্যমে কাকে কত টাকা চাঁদা দিয়েছে, তা প্রকাশ্যে এলে শাসকদলগুলির গোপন আঁতাঁত প্রকাশ্যে আসবে।’’
২১২৪
তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের বক্তব্য, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার বার নির্বাচনী সংস্কারের দাবি করেছেন। কোথা থেকে টাকা আসছে, দলের অর্থের উৎস কী, তা মানুষকে জানাতে হবে।’’
২২২৪
আজ সুপ্রিম কোর্ট রায় ঘোষণার পরেই মামলার অন্যতম আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ এজলাসের মধ্যেই রায়কে সাধুবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘‘এতে দেশের রাজনীতিতে স্বচ্ছতা আসবে।’’
২৩২৪
নির্বাচনী বন্ডের পক্ষে সওয়ালকারী কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, এ সবের জন্য বাইরে সংবাদমাধ্যম রয়েছে।
২৪২৪
তবে ভূষণ মনে করছেন, নির্বাচনী বন্ড তুলে দিলেও ভোটে কালো টাকার খেলা দূর হবে না। তার জন্য রাজনৈতিক দল এবং প্রার্থীদের নগদে লেনদেন বন্ধ করতে হবে। ভোটের খরচে ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দিতে হবে।