The mystery of Veerabhadra Temple in Lepakshi dgtl
Lepakshi
Veerabhadra Temple: ঝুলন্ত থাম! নীচ দিয়ে গলে যায় এক টুকরো কাপড়, এখনও বিস্ময় লেপাক্ষী মন্দিরের স্থাপত্য
মন্দিরটি কুর্মা সৈল নামে একটি নিচু পাহাড়ের ওপর তৈরি। তেলুগুতে কুর্মা সৈল-এর অর্থ কচ্ছপ। পাহাড়টির আকৃতি অনেকটা কচ্ছপের মতো।
শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২২ ১১:৩৭
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৪
অন্ধ্রপ্রদেশের অনন্তপুর জেলার লেপাক্ষীতে অবস্থিত বীরভদ্র মন্দির বা লেপাক্ষী মন্দির ষোড়শ শতকে ভারতীয় ভাস্কর্যের এক অপরূপ নিদর্শন। স্কন্দ পুরাণ মতে, শিবের ১০৮ পীঠের অন্যতম এই বীরভদ্র মন্দির।
০২১৪
এই মন্দিরে রয়েছে একটি ২৪ ফুট বাই ১৪ ফুটের বীরভদ্রের মূর্তি। একটি বড় পাথর কেটে বানানো শিবের বাহন নন্দীর মূর্তি এবং একটি পাথরের উপর খোদাই খরে আঁকা চিত্র। পুরাণ মতে ঋষি অগস্ত্য তৈরি করেছিলেন এই মন্দির।
০৩১৪
মন্দিরটি কুর্মা সৈল নামে একটি নিচু পাহাড়ের ওপর তৈরি। তেলুগুতে কুর্মা সৈল-এর অর্থ কচ্ছপ। পাহাড়টির আকৃতি অনেকটা কচ্ছপের মতো। ভক্তরা এই মন্দিরে শিবের তাণ্ডব রূপ বীরভদ্রের পুজো করেন।
০৪১৪
মন্দিরের দেওয়াল এবং থামে শিবের ১৪টি অবতারের চিত্র আঁকা রয়েছে। মন্দিরের মধ্যে তিনটি মণ্ডপ রয়েছে। একটি মুখ্য মণ্ডপ বা নাট্য বা রঙ্গ মণ্ডপ। দ্বিতীয়টি হল অর্থ মণ্ডপ বা গর্ভ গৃহ। তৃতীয়টির নাম কল্যাণ মণ্ডপ। তৃতীয় মণ্ডপটি অসমাপ্ত অবস্থায় রয়েছে।
০৫১৪
প্রবেশ করলেই দেখা যাবে মন্দিরটি ৭০টি স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে রয়েছে। এই স্তম্ভের উপর চোখ রাখলেই বোঝা যাবে, এর মধ্যে একটি স্তম্ভের মাটির সঙ্গে কোনও সংস্পর্শ নেই! খালি চোখে দেখলে মালুম হবে সেটি ওপর থেকে ঝুলছে। এই স্তম্ভই মন্দিরের অন্যতম রহস্য। এই ঝুলন্ত স্তম্ভের নাম ‘আকাশ স্তম্ভ’।
০৬১৪
স্তম্ভের নীচের দিকের খুব সামান্য অংশ মাটির সংস্পর্শে রয়েছে। যে কোনও পাতলা কাপড় বা রুমাল খুব সহজেই ওই স্তম্ভের নীচ দিয়ে এক পাশ থেকে অন্য পাশে নিয়ে যাওয়া সম্ভব।
০৭১৪
অনেকের মতে, স্তম্ভটি তার আসল জায়গা থেকে খানিকটা সরে গিয়েছে। এক ব্রিটিশ ইঞ্জিনিয়ার অনেক চেষ্টা করেছিলেন স্তম্ভটির রহস্য ভেদ করার। কিন্তু তিনি শেষে পর্যন্ত ব্যর্থ হন।
০৮১৪
কৌতূহলী ব্রিটিশ ইঞ্জিনিয়ার (পরিচয় অজানা) বা তার পরে কেউই লেপাক্ষী মন্দিরের ঝুলন্ত স্তম্ভটি কী ভাবে তৈরি হয়েছিল, তার রহস্য ব্যাখ্যা করতে সক্ষম হননি।
০৯১৪
পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণ এই মন্দির। ঘুরতে এসে সকলেই এক বার ওই স্তম্ভের নীচ দিয়ে কাপড় এক পাশ থেকে অন্য পাশে নিয়ে গিয়ে এই ভাস্কর্যের রহস্যে মুগ্ধ হয়ে যান।
১০১৪
এই স্তম্ভটি একটি আশ্চর্যজনক স্থাপত্য বিস্ময় যা, বেশ কয়েক জন বিশেষজ্ঞকে বিভ্রান্ত করেছে এবং বিশ্বাস করা হয় যে বিজয়নগর নির্মাতাদের স্থাপত্যের প্রতিভা প্রদর্শনের জন্য এই স্তম্ভটি ইচ্ছাকৃতভাবে নির্মিত হয়েছিল।
১১১৪
মন্দিরের ছাদে রামায়ণ, মহাভারত, পুরাণের আদলে অসংখ্য ছবি চিত্রিত রয়েছে। ভেষজ এবং খনিজের সংমিশ্রণে তৈরি রঙ দিয়ে আঁকা ছবিগুলোই লেপাক্ষী মন্দিরের স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখেছে।
১২১৪
রামায়ণে লেপাক্ষী গ্রামের বিশেষ উল্লেখ রয়েছে। লোক মতে, সীতা হরণের সময় তাঁকে উদ্ধার করতে গেলে জটায়ুর সঙ্গে রাবণের সংঘর্ষ হয়। রাবণের আঘাতে আহত হয়ে জটায়ু এই গ্রামেই এসে পড়েছিল। জনশ্রুতি, রাম যখন জটায়ুর কাছে পৌঁছন, তখন তাঁকে দেখে বলে ওঠেন ‘লে পাক্ষী’। তেলুগুতে যার অর্থ ‘ওঠো পাখি’।
১৩১৪
আবার অনেকের মতে, যে কোষাধ্যক্ষ এই মন্দির নির্মাণে রাজকোষ থেকে অর্থ ব্যবহার করার জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন, রাজা তাঁকে অন্ধ করার আদেশ দিয়েছিলেন। কোষাধ্যক্ষ রাজার প্রতি অনুগত হওয়ায় নিজের হাতেই নিজেকে শাস্তি প্রদান করেছিলেন। এই ভাবে গ্রামটির নামকরণ করা হয়েছে ‘লেপা-অক্ষী’ বা লেপাক্ষী যার অর্থ অন্ধের গ্রাম।
১৪১৪
এই মন্দির প্রাচীন এবং মধ্যযুগীয় ভারতীয় মন্দির নির্মাতাদের প্রতিভার প্রতি এক শ্রদ্ধাঞ্জলি। এই মন্দিরের প্রাচুর্য বিজয়নগর সাম্রাজ্যের রাজকীয়তার প্রতীক হিসেবে রয়ে গিয়েছে।