The farewell rituals of IIT kanpur includes marriage between two male students dgtl
IIT Farewell Ritual
ভোট দিয়ে নির্বাচিত হন পাত্র-‘পাত্রী’! প্রতি বছর দুই ছাত্রের অভিনব বিয়ের সাক্ষী থাকে আইআইটি
ভোট দিয়ে বিয়ে! ভোটের মরসুমে এমন কাণ্ড শুনলে অদ্ভুত লাগতেই পারে। কিন্তু আইআইটির দুই ছাত্রের এই বিয়েতে কোনও আচার এ দিক থেকে ও দিক হওয়ার জো নেই।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ০১ জুন ২০২৪ ১৩:০১
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
আইআইটির হস্টেলে প্রতি বছর দুই সিনিয়র ছাত্রের বিয়ে দেওয়া হয় ধুমধাম করে!
০২১৯
না, তাঁদের সমকামী ভাবলে ভুল হবে। এমন নয়, ছাত্রদের মধ্যে থেকে দু’জন সমকামীকে বেছে নিয়ে এই বিয়ের আয়োজন করা হয়। বরং এই বিয়ের সঙ্গে যৌনতার সম্পর্কই নেই।
০৩১৯
দুই ছাত্রের বিয়ে দেওয়া হয় তাঁদের সঙ্গী সংক্রান্ত পছন্দ-অপছন্দের পরোয়া না করেই। এ ব্যাপারে বর বা ‘কনে’র ইচ্ছার কোনও গুরুত্বই নেই। বিয়ে ঠিক হয় বরপক্ষ এবং ‘কনে’পক্ষের সিদ্ধান্ত মেনে।
০৪১৯
আইআইটি হস্টেলের ছাত্র-ছাত্রীরাই এখানে পাত্র-‘পাত্রী’পক্ষ। কোন দুই ছাত্রের বিয়ে হবে তা ভোট দিয়ে ঠিক করেন তাঁরাই।
০৫১৯
ভোট দিয়ে বিয়ে! ভোটের মরসুমে এমন কাণ্ড শুনলে অদ্ভুত লাগতেই পারে। কিন্তু আইআইটির দুই ছাত্রের এই বিয়েতে কোনও আচার এ দিক থেকে ও দিক হওয়ার জো নেই।
০৬১৯
দুই ছাত্রের এক জন পাত্র, অন্য জন ‘পাত্রী’ সেজে বিয়ে করতে আসেন। তার আগে তাঁদের বাগ্দান থেকে শুরু করে মেহন্দি, সঙ্গীত, গায়েহলুদ— সমস্ত আচারই নিয়ম মেনে পালন করা হয়।
০৭১৯
ভারতের যে প্রতিষ্ঠানকে মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের পীঠস্থান মনে করা হয়, সেই আইআইটির এমন সংস্কৃতির কথা শুনে বিস্ময় জাগতেই পারে। কিন্তু তাতে বাস্তব পাল্টায় না।
০৮১৯
দেশে মোট ১০টি আইআইটি রয়েছে। তবে সর্বত্র এমন বিয়ের রেওয়াজ নেই। এই বিয়ের আসর বসে শুধুমাত্র কানপুর আইআইটিতে। বিশেষ এই ঐতিহ্যের কথা কানপুর আইআইটি কর্তৃপক্ষও ফলাও করে প্রচার করেন।
০৯১৯
তাঁদের ব্যাখ্যা, প্রতি বছর এই বিয়ের অনুষ্ঠান করা হয় চূড়ান্ত বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান হিসাবে।
১০১৯
সিনিয়র ছাত্রদের মধ্যে থেকে ভোট দিয়ে বেছে নেওয়া হয় পাত্র-‘পাত্রী’। তার পরে নির্দিষ্ট দিনে সামরোহে হয় অনুষ্ঠান।
১১১৯
যে ছাত্র ‘পাত্রী’ হিসাবে মনোনীত হন, তাঁর পোশাক থেকে সাজগোজের দায়িত্ব নেন কলেজের ছাত্রীরা।
১২১৯
ঘাঘরা-চোলি পরিয়ে মাথায় ওড়না দিয়ে সাজিয়ে ‘পাত্রী’কে মেহন্দি পরাতে বসেন ছাত্রীরা। সেই অনুষ্ঠান হয় ছাত্রীদের হোস্টেলে। মেহন্দির পর সঙ্গীত হয়। তার আসর অবশ্য বসে আইআইটির বাস্কেটবল কোর্টে বাঁধা মঞ্চে।
১৩১৯
মঞ্চে মেয়েলি পোশাকেই নাচেন পাত্রী সাজা ছাত্র। লাজুক দৃষ্টি ছুড়ে দেন সামনে দাঁড়িয়ে থাকা পাত্রের দিকে। বন্ধুবান্ধব নিয়ে মঞ্চে পাল্টা ‘পারফরম্যান্স’ দেন পাত্রও। জমজমাট এই অনুষ্ঠান পর্বের পরের দিন হয় বিয়ে।
১৪১৯
ঘোড়ায় চড়ে শেরওয়ানি পরে তলোয়ার উঁচিয়ে পাত্র আসেন বাস্কেটবল কোর্টের মঞ্চে বিয়ে করতে। পাত্রী সাজা ছাত্রও ঝলমলে পোশাকে নাক পর্যন্ত ঘোমটা টেনে টুকটুকে লাল ওষ্ঠরঞ্জনীতে হয়ে ওঠেন কনে।
১৫১৯
বিয়ের পিঁড়ি থেকে অগ্নিসাক্ষী, বাদ যায় না কিছুই। তবে বিয়ের মন্ত্র তৈরি করেন আইআইটির পড়ুয়ারা। সংস্কৃত মন্ত্রে নয়, আইআইটির বিয়ে সম্পন্ন হয় প্রেমে গদগদ কবিতায়।
১৬১৯
কখনও সেই কবিতায় বলা থাকে ‘তুমহিকো পানা হ্যায় তুমহিকো খোনা হ্যায়’ জাতীয় ভাবাবেগের কথা। আবার কখনও ‘হর রাত তুমহারি হি বাহোঁ মে রহেঙ্গে’ জাতীয় প্রতিশ্রুতির কথাও।
১৭১৯
তবে ক্লাইম্যাক্স তখনও বাকি। পাত্র-‘পাত্রী’ যখন অগ্নিসাক্ষী রেখে কবিতায় একে অপরকে প্রতিশ্রুতি দিতে ব্যস্ত, তখন আগমন ঘটে ‘ভিলেনের’। যিনি কিনা কনের প্রাক্তন প্রেমিক (আদতে এক সিনিয়র ছাত্র এবং তিনিও ভোটে নির্বাচিত)!
১৮১৯
এর পর যা হওয়ার তাই হয়। লড়াই- ঝগড়া-সংঘর্ষ। রক্তক্ষয়ী নয় অবশ্য। নকল যুদ্ধে যে পক্ষ জেতে ‘পাত্রী’ তার। ভোটে মনোনীত পাত্রকে সরিয়ে প্রেমিকের এন্ট্রিও হয় মঞ্চে।
১৯১৯
হুল্লোড়ে শেষ হয় বছর কয়েকের আইআইটির স্মৃতির অন্তিম পর্ব। যেখানে মনখারাপের কোনও জায়গা নেই। আছে শুধু উদ্যাপনের আনন্দ।