Television actor Samir Soni’s struggle as an actor dgtl
Samir Soni
Samir Soni: অভিনেতা হতে গিয়ে প্রায় সর্বস্ব খুইয়েছেন, জড়িয়েছেন বহু সম্পর্কে, অবসাদেও চলে যান সমীর
‘জস্সি জ্যায়সি কোই নেহি’ নামক হিন্দি ধারাবাহিকের মুখ্য চরিত্র সমীর সোনি মুম্বইয়ে নিজের স্বপ্নপূরণের উদ্দেশ্যে এসে অবসাদের শিকার হন।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ২৬ মে ২০২২ ১৪:৪৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
হাডসন নদীর মুখোমুখি বাড়ি। নিউ ইয়র্কে প্রভাবশালী বিনিয়োগকারী হিসাবে সফল জীবন কাটাচ্ছিলেন। কিন্তু মুম্বইয়ে নিজের স্বপ্নপূরণের উদ্দেশ্যে এসে অবসাদের শিকার হন।
০২১৯
তিনি আর কেউ নন, ‘জস্সি জ্যায়সি কোই নেহি’ নামক হিন্দি ধারাবাহিকের মুখ্য চরিত্র সমীর সোনি। এক পঞ্জাবি হিন্দু পরিবারে তাঁর জন্ম।
০৩১৯
দিল্লির সেন্ট জেভিয়ার্স থেকে সোজা পাড়ি দেন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানেই অর্থনীতিতে স্নাতকস্তরের পাঠ শেষ করে নিউ ইয়র্কে এক সফল বিনিয়োগকারী হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন।
০৪১৯
নিউ ইয়র্কে থাকাকালীন থিয়েটারের প্রতি তাঁর আগ্রহ জাগতে শুরু করে। তাই অভিনয় শেখার একটি কোর্সে ভর্তি হন। ধীরে ধীরে নিজের কর্মজীবনের প্রতি ভালবাসা হারিয়ে যায় তাঁর। অভিনয় জগতে খ্যাতি অর্জন করবেন ভেবে সুদূর আমেরিকা থেকে মুম্বই পাড়ি দেন সমীর।
০৫১৯
ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে বিন্দুমাত্র ধারণা না থাকায় কেরিয়ারের প্রথম দিকে ভয়াবহ কঠিন সময় কাটাতে হয়েছে তাঁকে। কম বাজেটের বিজ্ঞাপন শ্যুটের সঙ্গে সঙ্গে মডেলিং করতে শুরু করেন তিনি।
০৬১৯
মডেলিং-সূত্রেই তাঁর আলাপ হয় রাজলক্ষ্মী খানভিলকরের সঙ্গে। দীর্ঘ দিন সম্পর্কে থাকার পর তাঁরা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তবে, তাঁদের সুখের সংসার খুব বেশি দিন টেকেনি। মাত্র ছ’মাসের ব্যবধানেই তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়।
০৭১৯
পরবর্তী কালে রাজলক্ষ্মী বলিউড অভিনেতা রাহুল রায়কে বিয়ে করলেও সমীর আর কোনও সম্পর্কে জড়াননি। কাকতালীয় ভাবে, সেই সময়েই পরিচালক রাজকুমার সন্তোষীর কাছ থেকে একটি ছবিতে অভিনয় করার প্রস্তাব পান সমীর।
০৮১৯
১৯৯৮ সালে মুক্তি পাওয়া ‘চায়না গেট’ ছবিতে ওম পুরী, অমরীশ পুরী, নাসিরুদ্দিন শাহের মতো বড় মাপের অভিনেতাদের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ মিললেও দুর্ভাগ্যবশত ছবিটি ফ্লপ হয়। মানুষের মনে থেকে যায় এই সিনেমার একটি গান— ঊর্মিলা মাতোন্ডকরের ‘ছম্মা ছম্মা’।
০৯১৯
এর পর প্রায় তিন বছর কোনও কাজ ছাড়া বাড়িতে বসেছিলেন তিনি। ধীরে ধীরে মানসিক অবসাদ ঘিরে ধরে তাঁকে। মাঝে মাঝে আত্মহত্যার চিন্তাও আসত মাথায়। তখনই মনোবিদের পরামর্শ নেন।
১০১৯
২০০১ সালে ফের তাঁকে দেখা যায় বড় পর্দায়। ‘লজ্জা’, ‘বাগবান’ –এর মতো সুপারহিট ছবি ছাড়াও অন্যান্য ছবিতে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করেন সমীর। তার পর টেলিভিশনের পর্দায় ‘জস্সি জ্যায়সি কোই নেহি’ ধারাবাহিকে অভিনয়ের মাধ্যমে নজর কাড়েন।
১১১৯
ধারাবাহিকে কাজ চলাকালীন, সহ-অভিনেত্রী মোনা সিংহের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক রয়েছে, এই নিয়ে চর্চা শুরু হলে সমীর তা পুরোপুরি গুজব বলে উড়িয়ে দেন।
১২১৯
সেই সময় এক সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় বিজয়ী এবং নামকরা বিনোদন চ্যানেলের ভিডিয়ো জকি নাফিসা জোসেফের সঙ্গে সম্পর্কে ছিলেন সমীর। কিন্তু এই সম্পর্কের আয়ুও বেশি দিন ছিল না। নাফিসা নিজের ফ্ল্যাটে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
১৩১৯
প্রাক্তন প্রেমিক হিসাবে সমীরের দিকে আঙুল উঠলেও তদন্তে জানা যায়, সমীরের সঙ্গে ছাড়াছাড়ির পর গৌতম খান্দুজা নামে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয় নাফিসার। বিয়ের কার্ড ছাপানোর পর নাফিসা জানতে পারেন, গৌতম আগে থেকেই বিবাহিত। এই ধাক্কা আর সামলে উঠতে না পেরে শেষে আত্মহননের পথ বেছে নেন নাফিসা।
১৪১৯
এই ঘটনা সমীরের জীবনেও প্রভাব ফেলে। কাজে সম্পূর্ণ ডুবে থাকতে চাইলেও কোনও হিন্দি ধারাবাহিক অথবা ছবিতে অভিনয় করার সুযোগ পাচ্ছিলেন না সমীর। তাই তিনি আবার থিয়েটারের দিকে ঝুঁকতে থাকেন।
১৫১৯
মন্দিরা বেদীর সঙ্গে সমীর ‘এনিথিং বাট লাভ’ নামে একটি নাটকে অভিনয় করেন। দর্শক মহলে প্রশংসা পায় নাটকটি। ঘটনাচক্রে, অভিনেত্রী নীলম কোঠারি এই নাটকটি দেখেন। তখন থেকেই সমীরের সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব নিবিড় হতে থাকে।
১৬১৯
পরে এই বন্ধুত্বই ভালবাসায় পরিণত হয় এবং ২০১১ সালে তাঁরা বিয়ে করেন। বিয়ের দু’বছর পরে এক কন্যাসন্তানকে তাঁরা দত্তক নেন।
১৭১৯
এক সময় এই জুটি অভিনয় জগতে মোটামুটি সফল হলেও ধীরে ধীরে বলিউড থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিতে থাকেন। মুম্বইয়ে নীলম তাঁর গয়নার ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
১৮১৯
সমীরও ‘বত্তি গুল মিটার চালু’, ‘মুম্বই সাগা’, ‘স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার ২’-এর মতো বিভিন্ন ছবিতে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করেন।
১৯১৯
সম্প্রতি ‘ফ্যাবুলাস লাইভস অব বলিউড ওয়াইভস’ নামের একটি ওয়েব সিরিজে এই জুটিকে এক সঙ্গে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে। নেটফ্লিক্সে এই সিরিজটি বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।