story of Bibha Chowdhuri, This Brilliant Woman Could Have Won a Physics Nobel for India dgtl
Nobel Prize
Bibha Chowdhuri: অল্পের জন্য হাতছাড়া নোবেল! এই বাঙালি মহিলা বিজ্ঞানীর নামে রয়েছে নক্ষত্রও
বাঙালি মহিলা বিজ্ঞানী বিভা চৌধুরীকে সম্মান জানাতে প্যারিসের ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিয়ন তাঁর নামে একটি নক্ষত্রের নাম রেখেছে।
সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০২২ ১৪:৪৪
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
ভারতের অন্যতম উল্লেখযোগ্য এক মহিলা বাঙালি পদার্থবিজ্ঞানী বিভা চৌধুরী। অল্পের জন্য নোবেল পুরস্কার হাতছাড়া হয়েছিল তাঁর।
০২১৬
১৯১৩ সালে কলকাতায় জন্ম বিভার। বাবা ছিলেন প্রখ্যাত চিকিৎসক বঙ্কুবিহারী চৌধুরী। তাঁর মাসি নির্মলা দেবী নামী চিকিৎসক স্যার নীলরতন সরকারকে বিয়ে করেছিলেন। জগদীশচন্দ্র বসুর দূর সম্পর্কের আত্মীয় ছিলেন বিভা।
০৩১৬
বেথুন স্কুলে পড়াশোনার প্রারম্ভিক পাঠ শেষে সিটি কলেজ থেকে পদার্থবিদ্যায় স্নাতক হন তিনি। এর পর ১৯৩৬ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর।
০৪১৬
১৯৩৪-৩৬ বর্ষে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক মাত্র মহিলা ছাত্রী ছিলেন বিভা, যিনি এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন।
০৫১৬
বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ শেষে যোগ দিয়েছিলেন বসু বিজ্ঞান মন্দিরে। সেখানে দেবেন্দ্রমোহন বসুর সঙ্গে কাজ শুরু করেন।
০৬১৬
বসু বিজ্ঞান মন্দিরেই মহাজাগতিক রশ্মি সম্পর্কে গবেষণা শুরু করেন বিভা। ক্লাউড চেম্বার বা মেঘকক্ষের সাহায্যে মহাজাগতিক কণার ভর নির্ণয়ে সমস্যা হয়েছিল, তাই এই যন্ত্র বেশি ব্যবহার করা যেত না। যে কারণে বিকল্প উপায় খোঁজার চেষ্টায় ছিলেন বিভা।
০৭১৬
বস্তুত, বিকল্প পথের সন্ধান পেয়েছিলেন মারিয়েটা ব্লাউ নামে এক পদার্থবিজ্ঞানী। সেই উপায়টি ভারতে এসে সায়েন্স কংগ্রেসে বলেছিলেন বোথে ও টেলর। তা শুনে এই কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বিভাকে বলেন ডিএম বসু। তার পরই ফটোগ্রাফিক প্লেট ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেন বিভা ও বসু। এই প্লেটে মহাজাগতিক রশ্মি এসে পড়লে প্লেটে থাকা আয়োডাইড সিলভার অর্থাৎ রুপো ও আয়োডিনে ভেঙে তা রুপোর প্লেটে আটকে যায়। এই বিন্দুগুলো দেখলে বোঝা যায় যে, মৌলিক কণা কোন পথ দিয়ে গিয়েছে।
০৮১৬
১৯৪১ সালে বিভা ও বসুর ভর নির্ণয় সংক্রান্ত গবেষণাপত্র বিখ্যাত পত্রিকা ‘নেচার’-এ প্রকাশিত হয়।
০৯১৬
গবেষণার জন্য ফটোগ্রাফিক প্লেটগুলিকে তাঁরা দার্জিলিং, সান্দাকফু ও ভুটান সীমান্তের কাছে ফারি জং নামে এক এলাকায় নিয়ে গিয়েছিলেন।
১০১৬
দুই ধরনের কণা ‘মিউয়ন’ আর ‘পায়ন’-এর ভরের তফাত করতে পারেননি বিভারা। কিন্তু হাফটোন প্লেট ব্যবহার করায় ভর নির্ণয় সঠিক ছিল না। সঠিক ভর পরিমাপের জন্য দরকার ছিল ফুলটোন প্লেট।
১১১৬
কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে ওই প্লেট ব্যবহার করতে পারেননি বিভারা। পরবর্তী কালে গবেষকরা জানতে পারেন, বিভারা পায়নের কথা ভেবেছিলেন। সেই পায়ন প্লেটে ধরা দিলেও বিভাদের পরীক্ষায় ভর এক এক রকম আসছিল। ফলে আলাদা করে চিনতে পারেননি তাঁরা। যে কারণে প্রকাশিত প্রবন্ধে পায়নের কথা তাঁরা লেখেননি। পরে ১৯৪৭ সালে ব্রিটেনের সেসিল পাওয়েল ফুলটোন ফটোগ্রাফিক প্লেট ব্যবহার করে সাফল্য পান।
১২১৬
বিভাদের পদ্ধতি ব্যবহার করে আরও উন্নত গবেষণা চালিয়ে ১৯৫০ সালে পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার পান পাওয়েল। তাঁর নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পিছনে আরও অনেক আবিষ্কার ছিল, তবে বিভাদের অসমাপ্ত কাজও তার মধ্যে ছিল।
১৩১৬
এর ঠিক আগের বছর, অর্থাৎ ১৯৪৯ সালে সদ্য প্রতিষ্ঠিত টাটা মৌলিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানে যোগদানের জন্য বিভাকে বাছেন হোমি জাহাঙ্গির ভাবা। ওই বছর সেখানে যোগ দেন বিভা। ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত সেখানে কর্মরত ছিলেন তিনি।
১৪১৬
সাহা ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার ফিজিক্স ও দ্য ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কাল্টিভিশেন অব সায়েন্সেও গবেষণার কাজে যুক্ত ছিলেন বিভা।
১৫১৬
বাঙালি মহিলা বিজ্ঞানী বিভা চৌধুরীকে সম্মান জানাতে প্যারিসের ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিয়ন তাঁর নামে একটি নক্ষত্রের নাম রেখেছে। নক্ষত্রটির আগের নাম ছিল এইচডি ৮৬০৮১। নক্ষত্রের নামকরণের জন্য সব দেশকে আহ্বান জানানো হয়েছিল। ভারতের দেওয়া ‘বিভা’ নাম অনুমোদন পায়।
১৬১৬
নোবেল পুরস্কার হয়তো পাননি বিভা। সব কিছু ঠিক ঠাক থাকলেও তিনি কি নোবেল পেতেন? কারণ, গবেষকদের মতে নোবেল পেলে ডিএম বসুই পেতেন, কারণ পরিকল্পনাটা ছিল তাঁরই। তবে পদার্থবিদ্যায় বিভার অবদান যে অপরিসীম, তা ইতিহাসের পাতা ওল্টালেই টের পাওয়া যায়।