২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

Anandabazar
Photogallery
ssc scam: Who is Anamika Biswas Roy, the ssc candidate who chalanged the school teacher’s job of Babita Sarkar dgtl

Anamika Roy

মন্ত্রীকন্যা অঙ্কিতাকে সরিয়ে চাকরি, ববিতাও এ বার প্রশ্নের মুখে, কে এই ‘নবাগতা’ অনামিকা

খুব বেশি দিন আগের কথা নয়। এসএসসির স্কুলশিক্ষিকা পদে এই একটি চাকরিই মুখোশ খুলে দিয়েছিল নিয়োগ দুর্নীতির। যা প্রকাশ্যে এনেছিলেন শিলিগুড়ির ববিতা সরকার।

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা

শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০২৩ ১৫:৩৬

Share: Save:

০১ ২২

তিনি অনামিকা। তবে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি বিতর্কে ইতিমধ্যেই বাংলার মানুষ জেনে গিয়েছে তাঁর নাম। কারণ তিনি সেই ববিতা সরকারের প্রতিদ্বন্দ্বী, যাঁর জন্য খুলে গিয়েছিল শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির মুখোশ।

০২ ২২

শিলিগুড়ির ববিতার শহরেরই মেয়ে। তবে সম্প্রতি যে দাবি তিনি করেছে তাতে দেখা যাচ্ছে, সর্ষের মধ্যেই ভূত! শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির ‘শুদ্ধকরণে’ নেমে যোগ্য প্রার্থীকে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার যে সূচনা করেছিল হাই কোর্ট, তার গোড়াতেই রয়েছে গন্ডগোল।

০৩ ২২

রাজ্যের হাই কোর্ট নিয়োগ দুর্নীতির ‘শুদ্ধকরণের’ সূচনা করেছিল ববিতাকে চাকরি দেওয়ার মাধ্যমে। তবে সাম্প্রতিক বিতর্ক মানলে, সেই চাকরির আসল দাবিদার ববিতা নন! বরং শিলিগুড়ির এসএসসি পরীক্ষার্থী অনামিকা রায়।

০৪ ২২

মঙ্গলবার হাই কোর্টে একটি মামলা করে অনামিকা দাবি করেছেন, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর কন্যা অঙ্কিতা অধিকারীর পাওয়া যে স্কুলশিক্ষিকার চাকরি আদালত ববিতা সরকারকে দিয়েছিল, সেটি আদতে তাঁর প্রাপ্য। অনামিকার আবেদন, আদালত এ বার তাঁর প্রতি সুবিচার করুক। ববিতার চাকরি বাতিল করে ওই চাকরি দেওয়া হোক তাঁকে।

০৫ ২২

কে এই অনামিকা? শিলিগুড়ির দুধমোড় সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা অনামিকাও এক জন এসএসসি পরীক্ষার্থী। তিনি এখন একটি বেসরকারি স্কুলের শিক্ষিকা।

০৬ ২২

এসএসসির প্রার্থীর যোগ্যতার নিরিখে ববিতার থেকে র‌্যাঙ্কিংয়ে এক ধাপ পিছিয়ে ছিলেন অনামিকা। ফলে অঙ্কিতার চাকরি পান ববিতা। কিন্তু সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি তথ্য বলছে সেই র‌্যাঙ্কিংয়ে ভুল ছিল।

০৭ ২২

কী ভুল? গত ২৬ ডিসেম্বর ভাইরাল হয় একটি ছবি। ছবিটি এসএসসির কাছে জমা দেওয়া ববিতার আবেদনপত্রের। তাতে দেখা যাচ্ছে, স্নাতক স্তরে ৮০০ নম্বরের মধ্যে ৪৪০ নম্বর পেয়েছেন ববিতা। অর্থাৎ, শতকরা হিসাবে ৫৫ শতাংশ। অথচ আবেদনপত্রে স্নাতক স্তরের প্রাপ্ত নম্বরের শতকরা হিসাবে লেখা রয়েছে ৬০ শতাংশ বা তার বেশি নম্বরের কথা।

০৮ ২২

অনামিকার দাবি, এই ভুল তথ্য ঠিক করা হলে র‌্যাঙ্কিংয়ে অন্তত আট ধাপ পিছিয়ে যাবেন ববিতা। আর যোগ্য প্রার্থী হিসাবে ২০ জনের তালিকার ২০ নম্বরে উঠে আসবে তাঁর নাম। ফলে চাকরিটা তাঁরই পাওয়ার কথা।

০৯ ২২

খুব বেশি দিন আগের কথা নয়। এসএসসির স্কুলশিক্ষিকা পদে এই একটি চাকরিই প্রকাশ্যে এনেছিল শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি। যা নিয়ে মুখ খুলেছিলেন এসএসসি উত্তীর্ণ ববিতা। অনামিকারা তখন টেট পরীক্ষার্থীদের আন্দোলনে সামিল। কলকাতায় সব সময় যেতে না পারলেও সমর্থন করছেন। আর দেখছেন শিলিগুড়ির ববিতার লড়াই, যিনি নিজের অধিকারের দাবিতে রুখে দাঁড়িয়েছেন রাজ্যের তৎকালীন মন্ত্রীর মেয়ের বিরুদ্ধে।

১০ ২২

ববিতার অভিযোগ ছিল, স্কুলশিক্ষিকার চাকরি পাওয়ার যোগ্য প্রার্থী হিসাবে ২০ নম্বরের র‌্যাঙ্কিংয়ে নাম রয়েছে তাঁর। কিন্তু অঙ্কিতার নাম তালিকার অনেক পিছন থেকে এনে এক নম্বরে বসিয়ে দেওয়ায় তিনি যোগ্যদের তালিকা থেকে ছিটকে গিয়েছেন। এই দাবি নিয়েই লড়াইয়ের শুরু যা ধীরে ধীরে প্রকাশ্যে আনে শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির জালকে।

১১ ২২

২০ মে ববিতার লড়াইয়ের ফল হাতে আসে। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, বেআইনি ভাবে পাওয়া অঙ্কিতার চাকরি দিতে হবে ববিতাকে।

১২ ২২

গত ২৭ জুন কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে স্কুলে নিয়োগের সুপারিশপত্র হাতে পান ববিতা। ৩০ জুন পান স্কুলের চাকরির নিয়োগপত্র। চাকরিতে যোগ দেন ৪ জুলাই। ঠিক তার ছ’মাসের মাথায় প্রকাশ্যে এল ববিতার চাকরিতে অনিয়মের অভিযোগ।

১৩ ২২

ইতিমধ্যে বেআইনি ভাবে পাওয়া অঙ্কিতার চাকরির বেতনের সমস্ত অর্থও ববিতার হাতে তুলে দিয়েছে আদালত। ১২ অগস্ট সেই অর্থ হাতে পেয়ে ববিতা জানিয়েছিলেন অঙ্কিতার জন্য খারাপ লাগছে। এ বার নিজের চাকরিতেও অনিয়মের অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার ববিতা জানিয়েছেন, তাঁর লড়াই ছিল দুর্নীতির বিরুদ্ধে। তাই তাঁর নিয়োগের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে তিনি নিজেই আদালতে যাবেন।

১৪ ২২

সোমবারই নিজের কথা রেখে তাঁর নিয়োগ সংক্রান্ত জটিলতার কথা জানিয়ে আদালতে যান ববিতা। তার পরেই ববিতার চাকরি বাতিলের আবেদন জানান অনামিকা। বুধবার শিলিগুড়ির দুই কন্যার শুনানি আদালতে। যদিও অনামিকা জানিয়েছেন, ববিতার বিরুদ্ধে তাঁর কোনও ব্যক্তিগত বিরোধ নেই। তিনি শুধু নিজের অধিকারের কথা জানিয়েছেন।

১৫ ২২

প্রসঙ্গত, বেসরকারি স্কুলের শিক্ষিকা অনামিকা এখন যমজ সন্তানের মা। স্বামী শুভজিৎ বিশ্বাস বেসরকারি সংস্থার কর্মী।

১৬ ২২

ববিতার মতো শিলিগুড়িতে কেটেছে তাঁর ছোটবেলাও। থাকতেন সুকান্তপল্লির গোটাবাজার এলাকায়।

১৭ ২২

হাকিমপাড়া বালিকা বিদ্যালয় থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর শিলিগুড়ি কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে সাম্মানিক-সহ স্নাতক হন।

১৮ ২২

পরে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর করার পর মাথাভাঙায় বিএড প্রশিক্ষণ নেন অনামিকা।

১৯ ২২

ববিতার থেকে এক বছরের ছোট অনামিকা জানিয়েছেন, ওই আবেদনপত্রের ছবিটি সত্যি হলে ববিতার অ্যাকাডেমিক স্কোর ৩৩-এর বদলে কমে ৩১ হবে।

২০ ২২

ববিতা অবশ্য অনামিকার দাবি প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, উচ্চ মাধ্যমিকে ৬০ শতাংশ নম্বর পেয়েছিলেন তিনি। হয়তো ভুলবশতই স্নাতক স্তরের নম্বরের জায়গাতেও ৬০ শতাংশের ব্র্যাকেটে টিক পড়ে গিয়েছিল তাঁর।

২১ ২২