Speculation of China’s new invention that may compete American Navy’s dominance in ocean dgtl
America-China
সমুদ্রে বাড়তে পারে চিনের ‘দাদাগিরি’! টেক্কা দিতে পারে আমেরিকাকে, নেপথ্যে কি নতুন প্রযুক্তি?
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চিনের এই আবিষ্কার যদি দূরে থাকা ডুবোজাহাজের গতিবিধি শনাক্ত করতে পারে, তা হলে সমুদ্রপথে চিনের নজর এড়িয়ে চলে যাওয়ার দিন শেষ হতে পারে।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০২৩ ০৮:৩২
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
সমুদ্রে আমেরিকার নৌবাহিনীর আধিপত্যকে টেক্কা দিতে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল চিন! প্রযুক্তির হাত ধরে নিজেদের নৌবহর অনেক দিন ধরেই শক্তিশালী করার পথ প্রশস্ত করতে শুরু করেছে শি জিনপিং সরকার। তার মধ্যেই এক নতুন প্রযুক্তি আবিষ্কার করে নিজেদের লক্ষ্যপূরণে আরও এক ধাপ এগোল চিন।
০২২০
সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, ‘চাইনিজ একাডেমি অফ সায়েন্সেস (সিএএস)’-এর গবেষকরা সম্প্রতি একটি অতি-সংবেদনশীল ‘ম্যাগনেটিক ডিটেক্টর’ (চুম্বকীয় পদার্থ যা ধাতু চিহ্নিত করতে পারে।) আবিষ্কার করেছে। আর এই আবিষ্কারকে নাকি ‘যুগান্তকারী’ বলে মনে করছেন সিএএস-এর গবেষকেরা।
০৩২০
দাবি করা হয়েছে, এই শক্তিশালী ‘ম্যাগনেটিক ডিটেক্টর’ অনেক দূরে থাকা উন্নত ডুবোজাহাজকে সহজেই শনাক্ত করতে পারবে।
০৪২০
চিনা গবেষকদের এই ‘যুগান্তকারী’ আবিষ্কারের কথা সম্প্রতি ‘জার্নাল অফ শিপ রিসার্চ (জেএসআর)’ নামে এক গবেষণা সংক্রান্ত গবেষণাপত্রে প্রকাশিত হয়েছে।
০৫২০
ওই গবেষণাপত্র অনুযায়ী, চিনের নতুন এই ‘ম্যাগনেটিক ডিটেক্টর’ ডুবোজাহাজ শনাক্ত করতে পারবে সহজেই। ডুবোজাহাজের গতিবিধিতেও নজর রাখবে এই নতুন যন্ত্র।
০৬২০
অর্থাৎ, চিনা গবেষকদের এই গবেষণা যদি ফলপ্রসূ হয়, তা হলে সমুদ্রে অন্য দেশের জাহাজ, ডুবোজাহাজে চিনা নজরদারি অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
০৭২০
পাশাপাশি বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চিনের এই আবিষ্কার যদি দূরে থাকা ডুবোজাহাজের গতিবিধি শনাক্ত করতে পারে, তা হলে সমুদ্রপথে চিনের নজর এড়িয়ে চলে যাওয়ার দিন শেষ হতে পারে।
০৮২০
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সিএএস-এর গবেষকরা কিন্তু তাঁদের আবিষ্কার নিয়ে অত্যন্ত আশাবাদী। তাঁদের আবিষ্কারেই সমুদ্রপথে চিনের চরম সাফল্যের বীজ লুকিয়ে রয়েছে বলে মনে করছেন তাঁরা।
০৯২০
কিন্তু কী ভাবে অন্য দেশের ডুবোজাহাজ শনাক্ত করতে পারে চিনের এই ম্যাগনেটিক ডিটেক্টর? পরমাণু চালিত ডুবোজাহাজগুলি দ্রুত গতিতে চলার সময় এক ধরনের প্রায় অদৃশ্য বুদবুদ তৈরি হয়। যা খালি চোখে চেনা কঠিন। ডুবোজাহাজ গতি বাড়ালে বুদবুদের সংখ্যাও বাড়ে।
১০২০
গবেষণাপত্র অনুযায়ী, এই বুদবুদকেই চিনে ফেলার ক্ষমতা রয়েছে ম্যাগনেটিক ডিটেক্টরটির।
১১২০
ডুবোজাহাজ শনাক্তকরণের মূলত দু’টি পদ্ধতি রয়েছে— ‘ক্যাভিটেশন’ এবং ‘ম্যাগনেটিক অ্যানোমালি ডিটেকশন (এমএডি)’।
১২২০
‘ক্যাভিটেশন’ কাজ করে জলের মধ্যে দিয়ে যাওয়ার সময় ডুবোজাহাজের প্রপেলার এবং মধ্যবর্তী অংশ দ্বারা বুদবুদগুলি তৈরি এবং ভেঙে যাওয়ার উপর ভিত্তি করে।
১৩২০
ডুবোজাহাজ চলার ফলে জলে উৎপন্ন বুদবুদগুলি স্বতন্ত্র সঙ্কেত তৈরি করে, যা দেখে প্রতিপক্ষ ডুবোজাহাজের অবস্থান চিহ্নিত করা যায়। তবে ডুবোজাহাজ খুব দূরে থাকলে সেই সঙ্কেত চেনা সহজ নয়।
১৪২০
অন্য দিকে, এমএডি ডুবোজাহাজ শনাক্তকরণের আর একটি কৌশল। ডুবোজাহাজের ‘ফেরোম্যাগনেটিক’ পদার্থ (মূলত ইস্পাত) পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রে যে বাধার সৃষ্টি করে, তা চিনে নিয়ে ডুবোজাহাজ শনাক্ত করার পদ্ধতিই হল এমএডি।
১৫২০
এমএডি পদ্ধতি ব্যবহার করে ‘অ্যান্টি-সাবমেরিন ওয়ারফেয়ার (এএসডব্লিউ)’ বিমানের সাহায্যে ডুবোজাহাজগুলি শনাক্ত করা হয়।
১৬২০
তবে এ বার ডুবোজাহাজ চিহ্নিত করার আরও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি চিন আবিষ্কার করে ফেলেছে বলে ওই গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়েছে। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডুবোজাহাজের গতিবিধিতে তৈরি হওয়া বুদবুদগুলি একটি কৃত্রিম বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রের মধ্যে একটি অতি নিম্ন কম্পাঙ্কের সঙ্কেত তৈরি করে। আর এই সঙ্কেতকে কাজে লাগিয়েই অত্যাধুনিক ‘ম্যাগনেটিক ডিটেক্টর’ তৈরি করে ফেলেছেন চিনা গবেষকরা।
১৭২০
এমনিতেই দক্ষিণ চিন সাগর এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের ‘দাদাগিরি’ নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে দীর্ঘ টানাপড়েন চলছে দু’দেশের মধ্যে। ওই অঞ্চলে আমেরিকার প্রতিটি পদক্ষেপের উপর চিন নজরদারির চালাচ্ছে বলে বার বার অভিযোগ এনেছে জো বাইডেনের সরকার।
১৮২০
তাইওয়ানে চিনের সাম্প্রতিক আগ্রাসী নীতিকেও ভাল চোখে দেখছে না আমেরিকা। তা ছাড়া ফিলিপিন্স, ব্রুনেই, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনামে যে ভাবে চিন আধিপত্য বিস্তার করেছে, তার বিরোধিতা করে ওই দেশগুলির পাশে দাঁড়িয়েছে ওয়াশিংটন। ফলে দু’দেশের মধ্যে উত্তেজনা তুঙ্গেই রয়েছে বহু দিন যাবৎ।
১৯২০
মনে করা হয়, চিন যুদ্ধজাহাজ এবং ডুবোজাহাজের সংখ্যার নিরিখে আমেরিকার থেকে এগিয়ে থাকলেও বিশ্বের ‘সবচেয়ে শক্তিশালী’ নৌ-শক্তির অধিকারী আমেরিকা। তাই সমুদ্রপথে আমেরিকাকে টেক্কা দেওয়া তো দূরের কথা, তা ভাবতেও অনেক দেশেরই বুক কাঁপতে পারে। তবে চিন অনেক দিন ধরেই আমেরিকাকে নৌ-শক্তিতে টেক্কা দেওয়ার চেষ্টা করে চলেছে বলে বিভিন্ন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
২০২০
মনে করা হচ্ছে, এমন পরিস্থিতিতে চিনের এই নতুন আবিষ্কার আরও চিন্তায় ফেলতে পারে আমেরিকার নৌবাহিনীকে। সমুদ্রপথে ওয়াশিংটনকে সহজেই নাকি টেক্কা দিয়ে দিতে পারে বেজিং। যদিও চিনের জিনপিং সরকার বা নৌবাহিনী এখনও পর্যন্ত এই নয়া প্রযুক্তি নিয়ে মুখ খোলেনি।