Some iconic construction works done by Shapoorji Palonji group dgtl
Cyrus Mistry
কলকাতার মেট্রো টানেল থেকে উচ্চতম রেল সেতু বহু নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত সাইরাসদের সাপুরজি গোষ্ঠী
মুম্বইয়ে আরব সাগরের তীরে বিখ্যাত তাজমহল প্যালেসেরও প্রধান স্থপতি সাপুরজি পালোনজি গোষ্ঠী। নির্মাণ কৌশলের কারণে তাজমহল প্যালেসকে প্যারিসের আইফেল টাওয়ারের সঙ্গে তুলনা করা হয়।
নিজস্ব প্রতিবেদন
মুম্বইশেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৮:৫৫
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
গত রবিবার দুপুর সওয়া ৩টে নাগাদ নাগাদ মুম্বই থেকে ১৩৫ কিলোমিটার দূরে পালঘরের চারোটি এলাকায় সূর্য নদীর সেতুর উপর থাকা ডিভাইডারে ধাক্কা মেরে উল্টে যায় শিল্পপতি সাইরাস মিস্ত্রির গাড়ি। ঘটনাস্থল থেকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় সাইরাসকে। মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৪।
০২১৯
২০১২ সালে টাটা গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন সাইরাস। ২০১৬ সালের ২৪ অক্টোবর টাটা সন্সের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরানো হয় সাপুরজি পালোনজি শিল্পগোষ্ঠীর এই শীর্ষকর্তাকে।
০৩১৯
১৮৬৫ সালে প্রতিষ্ঠিত সাপুরজি পালোনজি গোষ্ঠী ভোগ্যপণ্য থেকে সৌরশক্তি— বিভিন্ন ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে আধিপত্য বিস্তার করলেও সর্বাধিক খ্যাতিলাভ করেছে রিয়েল এস্টেটের ব্যবসায়। ‘অ্যাফকন’ নামে এক নির্মাণ সংস্থাও রয়েছে এই গোষ্ঠীর অধীনে। দেশের বড় বড় বহুতল নির্মাণের ক্ষেত্রে এই সংস্থা নিজেদের দক্ষতা প্রমাণ করেছে।
০৪১৯
মুম্বইয়ের মালাবার হিলসের জলাধার তৈরির মধ্য দিয়ে পথ চলা শুরু এই শিল্পগোষ্ঠীর। তার পর দেশে-বিদেশে একাধিক স্থাপত্যকীর্তি নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত থেকেছে সাপুরজি পালোনজি গোষ্ঠী।
০৫১৯
জলের তলায় ভারতের প্রথম রেলপথ তৈরির সঙ্গেও যুক্ত থেকেছে সাপুরজি পালোনজি গোষ্ঠী। কলকাতার ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোতে গঙ্গার তলা দিয়ে যে সুড়ঙ্গপথ তৈরি হয়েছে, তা তৈরি করেছে সাপুরজি পালোনজি গোষ্ঠী।
০৬১৯
ভারতে এই প্রথম কোনও রেলপথ নদীর ২০ মিটার নীচ দিয়ে গিয়েছে। কলকাতা ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর এই কাজ ছাড়াও দিল্লি মেট্রো তৈরির সঙ্গেও যুক্ত থেকেছে সাপুরজি পালোনজি গোষ্ঠী।
০৭১৯
বিশ্বের উচ্চতম রেলওয়ে ব্রিজ তৈরির সঙ্গে যুক্ত সাপুরজি পালোনজি গোষ্ঠী। জম্মু ও কাশ্মীরের মধ্যে সংযাগরক্ষাকারী খিলান আকৃতির চেনাব রেল ব্রিজের উচ্চতা ৩৫৯ মিটার। উচ্চতায় এটি আইফেল টাওয়ারের চেয়েও উঁচু।
০৮১৯
সাপুরজি পালোনজি গোষ্ঠীর অধীনস্ত সংস্থা ‘অ্যাফকন’ চেনাব রেল ব্রিজ নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত ছিল। এই কাজে ভারতের তৃতীয় বৃহত্তম এই নির্মাণ সংস্থা ‘অ্যাফকন’কে সাহায্য করেছিল বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স।
০৯১৯
১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দে মুম্বইয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সদর দফতরটি তৈরি করেছিল সাপুরজি পালোনজি গোষ্ঠী। স্বাধীনতার আগে তৈরি হওয়া এই বাড়ি থেকে এখনও দেশের অর্থনীতি পরিচালিত হয়।
১০১৯
১৯৮০ খ্রিস্টাব্দে তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকার ব্যয়সঙ্কোচ করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার ফলে বহুমূল্য স্থাপত্যকর্মগুলি তৈরির কাজ স্থগিত করে দেওয়া হয়। সেই সময়েও রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পুরনো ভবনের পাশেই নতুন ভবন তৈরি করার দায়িত্ব দেওয়া হয় সাপুরজি পালোনজি গোষ্ঠীকে।
১১১৯
মুম্বইয়ে আরব সাগরের তীরে বিখ্যাত এবং সুউচ্চ তাজমহল প্যালেসেরও প্রধান স্থপতি সাপুরজি পালোনজি গোষ্ঠী। নির্মাণ কৌশল এবং স্থাপত্যরীতির কারণে তাজমহলকে প্যালেসকে প্যারিসের আইফেল টাওয়ার কিংবা সিডনির অপেরা হাউসের সঙ্গে তুলনা করা হয়।
১২১৯
তাজমহল প্যালেসের ক্রমবর্ধমান চাহিদা এবং গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধির কথা মাথায় রেখে সেটিকে আড়ে এবং বহরে বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। ১৯৭০ সালে এই সম্প্রসারণের দায়িত্ব নিয়ে সাপুরজি পালোনজি গোষ্ঠী মাত্র তিন বছরের মধ্যে সাফল্যের সঙ্গে এই কাজ সম্পূর্ণ করে।
১৩১৯
মহাত্মা গাঁধীর জীবন এবং কাজকে স্মরণীয় রাখতে গুজরাতের গাঁধীনগরে যে ডান্ডি কুটির নির্মিত হয়, সেটিরও নির্মাণের দায়িত্বে ছিল সাপুরজি পালোনজি গোষ্ঠী।
১৪১৯
গাঁধীনগরে নুনের ঢিপিসদৃশ এই গাঁধী সংগ্রহশালায় উন্নত অডিয়ো-ভিস্যুয়াল প্রযুক্তির সাহায্যে গাঁধীর বাণী ও রচনা দর্শকদের সামনে আনা হয়। এই সংগ্রহশালার প্রযুক্তিগত প্রকৌশল গোটা বিশ্বে সমাদৃত হয়েছে।
১৫১৯
২০০৯ সালে সাপুরজি পালোনজি গোষ্ঠী ঘানার রাজধানী আক্রায় সে দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের জন্য সুবর্ণ জয়ন্তী স্মারক সচিবালয় তৈরি করে। ওই সংস্থা এই সুদৃশ্য ভবনটির মাধ্যমেই আফ্রিকা মহাদেশে তাদের কাজ শুরু করে।
১৬১৯
একটি সংস্থার বিচারে বিশ্বের সেরা দশটি প্রধান সচিবালয়ের তালিকায় স্থান পেয়েছে ঘানার এই সুরম্য ভবনটি। মাত্র ৩০ মাসের মধ্যে এই ভবন নির্মাণের কাজ শেষ করেছিল সাপুরজি পালোনজি গোষ্ঠী।
১৭১৯
১৯৭১ সালে বিশ্বের বিভিন্ন তাবড় নির্মাণ সংস্থাকে সরিয়ে ওমানের সুলতানের প্রাসাদ নির্মাণের দায়িত্ব পায় এই সংস্থা। ইসলামিক স্থাপত্যরীতি অনুসরণ করেই বানানো হয় এই প্রাসাদ।
১৮১৯
১৯৭০ সালে সাপুরজি পালোনজি গোষ্ঠীর হাত ধরেই প্রথম কোনও ভারতীয় সংস্থা মধ্য এশিয়ায় নির্মাণশিল্পের সঙ্গে যুক্ত হয়। বর্তমানে এই প্রাসাদটি সে দেশের অন্যতম দ্রষ্টব্য স্থান।
১৯১৯
সাইরাস মিস্ত্রির অকালপ্রয়াণের পর সাপুরজি পালোনজি গোষ্ঠীর উত্তরাধিকারী কে হবেন, তা নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা চলছে। এই গোষ্ঠীর প্রায় আড়াই লক্ষ কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে। দেশে-বিদেশে এখনও বহু নির্মাণশিল্পের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে এই সংস্থা।