Solar Storm can cause internet connectivity disruption around the world on 2 December 2023 dgtl
Solar Storm on Earth Today
ভয়ঙ্কর সৌরঝড় আঘাত হানতে চলেছে! বিশ্ব জুড়ে শঙ্কা ইন্টারনেট যোগাযোগ ভেঙে পড়ার
এই ধরনের সৌরঝড়কে বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলা হয়, ‘করোনাল মাস ইজেকশান (সিএমই)’। একাধিক মাঝারি প্রাবল্যের সিএমই মিলে গিয়ে সৌরমণ্ডলের পক্ষে বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
ওয়াশিংটনশেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৩:৩৭
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৫
ভয়াবহ সৌরঝড় (‘সোলার স্টর্ম’) ধেয়ে আসছে পৃথিবীর দিকে। শুক্রবারই তা আঘাত হানতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আমেরিকার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘ন্যাশনাল ওসিয়ানিক অ্যান্ড অ্যাটমোসফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (নোয়া)।
০২১৫
সৌরঝড়ের অভিঘাতে গোটা বিশ্বের যাবতীয় ইন্টারনেট যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে ওই পূর্বাভাসে। ওই সৌরঝড় শক্তিশালী ভূ-চৌম্বকীয় ঝাপটায় পরিণত হলে তার প্রভাব বেশ কিছু দিন স্থায়ী হতে পারে।
০৩১৫
এই ধরনের সৌরঝড়কে বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলা হয়, ‘করোনাল মাস ইজেকশান (সিএমই)’। একাধিক মাঝারি মাত্রার সিএমই মিলে গিয়ে গোটা সৌরমণ্ডলের পক্ষেই বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে বলে মহাকাশ আবহাওয়া পদার্থবিদ তমিথা স্কোভের দাবি।
০৪১৫
‘নোয়া’র গবেষক তমিথা এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে জানিয়েছেন, শুক্রবারেও তেমনটা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। একাধিক জি-২ মাত্রার (মাঝারি শক্তির) সিএমই মিলে গিয়ে শক্তিশালী জি-৩ মাত্রায় সৌরঝড়ে পরিণত হয়ে আঘাত হানতে পারে পৃথিবীতে।
০৫১৫
সিএমই হল, সূর্যের করোনা থেকে নিঃসৃত বিপুল পরিমাণ প্লাজ়মা (আয়নিত কণা ও ইলেকট্রন) ও চৌম্বকক্ষেত্র। সিএমই-র গতি কমবেশি হতে পারে। কখনও ১৫-১৮ ঘণ্টা লাগে পৃথিবীতে পৌঁছতে। কখনও কয়েক দিন।
০৬১৫
সিএমই এবং পৃথিবীর ম্যাগনেটোস্ফিয়ারের সঙ্গে প্রতিক্রিয়া ঘটিয়ে বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটাতে পারে। কৃত্রিম উপগ্রহের সঙ্গে যোগাযোগে বিঘ্ন ঘটতে পারে। যার প্রভাব পড়তে পারে জিপিএস যোগাযোগ এবং ইন্টারনেট যোগাযোগে।
০৭১৫
সেপ্টেম্বরের গোড়ায় নয়াদিল্লির হাওয়া অফিসের ‘স্পেস ওয়েদার প্রেডিকশন সেন্টার’ (এসডব্লিউপিসি) একটি সতর্কবার্তা জারি করেছিল। বলা হয়েছিল জি১ স্তরের (১ থেকে ৫ মাত্রার মধ্যে মৃদুতম) ভূচৌম্বকীয় ঝড়ের মুখোমুখি হতে পারে পৃথিবী।
০৮১৫
সৌরঝড়ের প্রভাবে মেরুপ্রদেশের আকাশে মেরুজ্যোতি (অরোরা) তৈরি হতে পারে, বিদ্যুৎ পরিষেবায় সমস্যা দেখা দিতে পারে, জিপিএস নেভিগেশন এবং বেতার ও ইন্টারনেট যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটতে পারে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছিল এসডব্লিউপিসি।
০৯১৫
কার্যক্ষেত্রে প্রভাব আরও ভয়াবহ হতে চলেছে বলে আমেরিকার গবেষণা সংস্থাটির পূর্বাভাস। তাদের ইঙ্গিত, এমন ভয়ঙ্কর সৌরঝড়ের ঝাপটা আধুনিক পৃথিবীকে এর আগে সইতে হয়েছিল ১৮৫৯ আর ১৯২১ সালে।
১০১৫
১৯২১ সালে সৌরঝড়ের ঝাপটায় বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল (বিজ্ঞানের পরিভাষায় যার নাম ‘ক্যারিংটন এফেক্ট’)। পৃথিবীকে ঘিরে থাকা বিশাল চৌম্বক ক্ষেত্রে বড় বড় ফাটল ধরেছিল। তার ফাঁক গলে ঢুকেছিল অত্যন্ত বিষাক্ত সৌরকণা আর মহাজাগতিক রশ্মি।
১১১৫
মেরুজ্যোতি (অরোরা) সাধারণ ভাবে শুধু পৃথিবীর দুই মেরুতেই দেখা যায়। কিন্তু ১৮৫৯ সালে সৌরঝড়ের প্রবল ঝাপটায় সে বার তা বিষুবরেখার ঠিক নীচে দক্ষিণ গোলার্ধের দেশ কলাম্বিয়াতেও খুব উজ্জ্বল ভাবে দেখা গিয়েছিল।
১২১৫
তবে ইন্টারনেট পরিষেবার উপর সিএমই-র আঘাত কতটা ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে সে ব্যাপারে কোনও নির্দিষ্ট তথ্য বিজ্ঞানীদের হাতে নেই। কারণ, এর আগে যখন (১৯২১) ভয়ঙ্কর সৌরঝড় পৃথিবীতে আছড়ে পড়েছিল, তখন ডিজিটাল দুনিয়াই গড়ে ওঠেনি।
১৩১৫
তবে সমুদ্রের নীচে বিছিয়ে রাখা ইন্টারনেট কেব্ল সৌরঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে বিজ্ঞানীদের অনুমান। বার্তার গতি বাড়াতে কেব্লগুলিতে কয়েক মাইল অন্তর বসানো থাকে ‘রিপিটার’। পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্র স্বাভাবিক না থাকলে যেগুলি বিগড়ে যায়।
১৪১৫
পৃথিবীকে ঘিরে থাকা চৌম্বকক্ষেত্র সৌরঝড়-সহ নানা মহাজাগতিক হানাদারকে প্রতিহত করে। দুই মেরুতে চৌম্বকক্ষেত্র বেশি শক্তিশালী থাকে বলে সৌরকণারা ধেয়ে এলে তাদের বেশির ভাগকেই ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়। আর তা না হলেই বিপর্যয়ের শঙ্কা বাড়ে।
১৫১৫
উনবিংশ শতকে সৌরঝড়ে আমেরিকায় টেলিগ্রাফ স্টেশনে আগুন লেগে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল। ১৯৮৯ সালের মার্চে যে সৌরঝড়ের ঝাপটায় কানাডার কুইবেক প্রদেশে টানা ন’ঘণ্টা ‘ব্ল্যাক আউট’ হয়ে গিয়েছিল। এ বারও কি তেমনটাই হতে চলেছে?