Shraddha Walker Murder Mystry: Shraddha was subject to regular physical abuse, father said he was warned by Aftab Amin Poonawalla’s Family to never visit his daughter again dgtl
Shraddha Walker murder case
শ্রদ্ধাকে মারধর করা হচ্ছে শুনেই ছুটে যান বাবা, আফতাবের পরিবার হুমকি দিয়ে তাড়িয়ে দেয় তাঁকে!
বন্ধুকে শ্রদ্ধা নিজের শারীরিক অবস্থার খবর দিয়ে লিখেছিলেন, ‘‘আমার সারা শরীরে যন্ত্রণা হচ্ছে। বিছানা থেকে নামার ক্ষমতা টুকুও নেই।’’ সেই চ্যাটেই নিজের মুখের ছবিও পাঠিয়েছিলেন শ্রদ্ধা।
সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লিশেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২২ ১৩:১৭
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২১
মেয়ের উপর অত্যাচার চলছে জেনেও তাঁর বাড়ির দরজা থেকে ফিরে আসতে হয়েছিল বাবা বিকাশ ওয়ালকরকে। মেয়ে শ্রদ্ধা ওয়ালকরের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি তাঁকে। পুলিশকে সম্প্রতিই বিকাশ জানিয়েছেন, তাঁর সেই সময়ের মানসিক যন্ত্রণা আর অপারগতার কথা।
০২২১
বিকাশ বলেছেন, শ্রদ্ধাকে যে তাঁর একত্রবাস সঙ্গী আফতাব আমিন পুনাওয়ালা যথেচ্ছ মারধর করছেন, তা নানা সূত্রে জানতে পারছিলেন বিকাশ। মেয়ে তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক না রাখলেও তিনি শ্রদ্ধার বন্ধুদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন। তাঁদের কাছ থেকে শ্রদ্ধার খবর পেয়েছিলেন তিনি।
০৩২১
শ্রদ্ধা তখন আফতাবের সঙ্গে তাঁদের মুম্বইয়ের ভাসাইয়ের ফ্ল্যাটে থাকছিলেন। মেয়ের খবর পেয়ে বিকাশ তাঁকে দেখতে গিয়েছিলেন ভাসাইয়ে, কিন্তু শ্রদ্ধার দেখা পাওয়া তো দূর, তাঁকে বাড়ির চৌকাঠই পেরোতে দেননি আফতাবের পরিবার।
০৪২১
শ্রদ্ধার বাবার এই বয়ানের সত্যতা যাচাই করতে পারেনি পুলিশ, কারণ আফতাবের পরিবারের খোঁজ এখনও পাননি তদন্তকারীরা। তবে শ্রদ্ধার উপর যে নিয়মিত শারীরিক নিগ্রহ চলছিল, তার যথেষ্ট প্রমাণ এসেছে পুলিশের হাতে।
০৫২১
সেই সব প্রমাণ থেকেই পুলিশ জানতে পেরেছে শ্রদ্ধা আর আফতাবের সম্পর্কে প্রথম থেকেই ছিল হিংসা। প্রথম থেকেই আফতাবের অত্যাচার সহ্য করে এসেছেন তিনি। শুধু একদিনের ঝগড়া বা দিন কয়েকের মনোমালিন্য থেকেই খুনের সিদ্ধান্ত নেননি আফতাব।
০৬২১
পুলিশের কাছে স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে, শ্রদ্ধার উপর আফতাবের অত্যাচার মাঝে মধ্যে এমন পর্যায়ে পৌঁছত যে তার জের কখনও টানা বেশ কয়েকদিন বিছানা থেকেই উঠতে দেয়নি শ্রদ্ধাকে। কখনও আবার তাঁকে এনে ফেলেছে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে। শ্রদ্ধার হোয়াটঅ্যাপে আর ইনস্টাগ্রাম ম্যাসেঞ্জারের চ্যাট ঘেঁটেই এই তথ্যের পাকা পোক্ত প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ।
০৭২১
সম্প্রতিই সেই সব চ্যাটের স্ক্রিনশট প্রকাশ্যেও এনেছে পুলিশ। যেখানে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, আফতাবের সঙ্গে অশান্তি নিয়ে বার বার মুখ খুলেছেন শ্রদ্ধা। এমনকি সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতেও চেয়েছেন।
০৮২১
পরিস্থিতি কখনও সখনও এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে কর্মক্ষেত্রে ম্যানেজারকেও বলতে হয়েছে আফতাবের হাতে মার খাওয়ার কথা। আবার কখনও বন্ধুকে ক্ষত বিক্ষত মুখের ছবি পাঠিয়েও গোপন করে গিয়েছেন আসল কারণ।
০৯২১
শ্রদ্ধার মুখের সেই ছবি দেখে চমকে গিয়েছেন বন্ধু। আঁতকে উঠেছেন ম্যানেজারও।
১০২১
শ্রদ্ধা অবশ্য তার পরও নির্বিকার ভাবেই বলেছেন, ‘‘কাল সব ঠিক হয়ে গিয়েছে। আফতাবের বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা হয়েছে আমার। আফতাব কালই এখান থেকে চলে যাবে।’’
১১২১
এটা সেই সময়কার কথা, যখন আফতাব এবং শ্রদ্ধা দু’জনেই তাঁদের মুম্বইয়ের ভাসাইয়ের বাড়িতে এক সঙ্গে থাকছিলেন। সেই সময়েই আফতাবের বাড়িতে এসে পৌঁছেছিলেন বিকাশ।
১২২১
চ্যাটের স্ক্রিনশট বলছে, সেই সময় শ্রদ্ধা নিজেও চেয়েছিলেন আফতাবের থেকে সরে যেতে। কারণ ম্যানেজারকে তিনি লিখেছেন, ‘‘ওকে চলে যেতেই হবে। আমাকেই দেখতে হবে যাতে ও চলে যায়।’’
১৩২১
মার খেয়ে সেবার শ্রদ্ধার অবস্থা কতটা খারাপ হয়েছিল, তারও প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে ম্যানেজারের সঙ্গে তাঁর কথোপকথনে। কারণ শ্রদ্ধা তাঁকে স্পষ্ট করে লিখেছেন, ‘‘গত কালের মারধরে আমি বড্ড কাহিল হয়ে পড়েছি। শরীরটাকে তুলতেই পারছি না। রক্তচাপও বেশ কম। বিছানা থেকে ওঠার শক্তিও নেই আমার।’’
১৪২১
সেটা ২০২০ সাল। তার কিছু দিন পরের আরও একটি চ্যাট হাতে এসেছে পুলিশের। সেটি শ্রদ্ধার সঙ্গে তাঁর এক বন্ধুর কথোপকথনের। বন্ধুকে নিজের নতুন চুলের স্টাইলের ছবি পাঠিয়েছিলেন শ্রদ্ধা। কিন্তু ছোট করে ছাঁটা চুলের আড়ালে শ্রদ্ধার মুখ ছিল বিধ্বস্ত। যা দেখে চমকে যান শ্রদ্ধার সেই বন্ধু।
১৫২১
চোখেমুখে ক্লান্তির ছাপ। নাকের মাঝখানেও গভীর ক্ষত। ছবিতে বিধ্বস্ত শ্রদ্ধার ডান গালে এমনকি ঘাড়েও আঘাতের চিহ্ন স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল। বন্ধু শ্রদ্ধার কাছে ওই ক্ষত চিহ্নগুলির কারণ জানতে চান। তবে শ্রদ্ধা তাঁকে আফতাবের অত্যাচার নিয়ে কিছু বলেননি।
১৬২১
বরং শ্রদ্ধা লিখেছিলেন সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে। লিখেছিলেন, ‘‘সিঁড়িতে আছাড় খেয়ে পড়েছি। তাই লেগে গিয়েছে। বিশেষ কিছু নয়।’’ যদিও সিঁড়িতে পড়ে একই সঙ্গে ঘাড়ের পিছনে এবং নাকের সামনে কী করে আঘাত লাগল, তা জানতে চাননি বন্ধু। ব্যাখ্যায় যাননি শ্রদ্ধাও।
১৭২১
এর ঠিক দিন কয়েক পরেই শ্রদ্ধাকে ভর্তি হতে হয় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে। শ্রদ্ধার ওই বন্ধু জানিয়েছেন, সে বার ঘাড় নাড়াতেই পারছিলেন না শ্রদ্ধা। গলা এবং ঘাড়ে মারাত্মক চোট ছিল। দেখে মনে হচ্ছিল, কেউ জোর করে ওর শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করেছে।
১৮২১
ওই বন্ধু এ-ও জানিয়েছেন যে, শ্রদ্ধার চিকিৎসার পর যখন তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দিচ্ছিলেন চিকিৎসক, তখন শ্রদ্ধা কিছুতেই বাড়িতে ফিরতে চাইছিলেন না। তাঁর মুখে চোখে ফুটে উঠেছিল গভীর আতঙ্কের ছাপ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি বাড়ি যেতে রাজি হন।
১৯২১
বিকাশ জানিয়েছেন, মেয়েকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে শুনেই আফতাবের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে ভাসাইয়ের ফ্ল্যাটে গিয়েছিলেন তিনি।
২০২১
পুলিশকে বিকাশ জানিয়েছেন, তিনি চেয়েছিলেন আফতাব আর শ্রদ্ধার সম্পর্কের সমস্যা আফতাবের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে মিটিয়ে দিতে। কিন্তু তাঁকে বাড়িতে ঢুকতে দেখেই আফতাবের বাবা-মা তেড়ে আসেন। শ্রদ্ধার বাবার দাবি, মেয়ের সঙ্গে তাঁকে দেখা করতে দেওয়া তো হয়ইনি। তাঁর কোনও কথা শুনতে চাননি আফতাবের বাবা-মা-ভাই।
২১২১
বিকাশকে বলে দেওয়া হয়, মেয়ের ভাল চাইলে, তিনি যেন আর কখনও ওঁদের জীবনে হস্তক্ষেপ না করেন। এমনকি তিনি আবার ভাসাইয়ের বাড়িতে এলেও ফল ভাল হবে না বলে হুমকি দেওয়া হয় তাঁকে।