পুলিশের কাছে এমন তথ্যও উঠে এসেছে যে, শ্রদ্ধাকে খুন করার পর পরই তাঁর দেহের বেশ কিছু অঙ্গপ্রত্যঙ্গ জঙ্গলে ছুড়ে দিয়ে আসেন আফতাব। তার মধ্যে বেশ কিছু অংশ জঙ্গলের জন্তুরা খেয়ে ফেলেছে বলেও মনে করা হচ্ছে।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২২ ১৪:১২
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
শ্রদ্ধার পরিচয় যাতে প্রকাশ্যে না আসে তার জন্য দেহ টুকরো টুকরো করার পর কাটা মুন্ডুর মুখ পুড়িয়ে দিয়েছিলেন আফতাব!
০২২০
পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের সময় আফতাব এমনটাই জানিয়েছেন বলে সূত্রের খবর। পুলিশ সূত্রে খবর, আফতাব জানিয়েছেন, তিনি চাইতেন না যে শ্রদ্ধার কাটা মুন্ডু কখনও খুঁজে পাওয়া যাক।
০৩২০
একই সঙ্গে ভেবেছিলেন, যদি কোনও ভাবে মুন্ডু উদ্ধার করা হয়, তাতেও যেন সেই মুন্ডু কার, তা প্রকাশ্যে না আসে।
০৪২০
আর সেই কারণেই তিনি শ্রদ্ধার দেহ টুকরো টুকরো করার পর মুখের সামনের অংশ আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছিলেন বলে তদন্তকারীদের জানিয়েছেন।
০৫২০
সূত্রের খবর, পুলিশকে অভিযুক্ত এ-ও জানিয়েছেন, শ্রদ্ধাকে খুনের পরে মৃতদেহের টুকরোগুলি কী ভাবে ফেলা যায়, তা তিনি ইন্টারনেট ঘেঁটে বার করার চেষ্টা করেন।
০৬২০
পুলিশের কাছে নাকি এমন তথ্যও উঠে এসেছে যে, শ্রদ্ধাকে খুন করার পর পরই তাঁর দেহের বেশ কিছু অঙ্গপ্রত্যঙ্গ জঙ্গলে ফেলে দিয়ে আসেন আফতাব।
০৭২০
তার মধ্যে বেশ কিছু অংশ জঙ্গলের জন্তুরা খেয়ে ফেলেছে বলেও মনে করা হচ্ছে। আর সেই কারণেই দেহের ১৩ টুকরো উদ্ধার করা গেলেও এখনও বেশ কিছু দেহের টুকরো উদ্ধার করা যায়নি।
০৮২০
প্রসঙ্গত, ক্রমেই খুলছে শ্রদ্ধা হত্যাকাণ্ডের জট। তদন্তে নেমে পুলিশের হাতে বেশ পিছু প্রমাণ উঠে এলেও এখনও বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর পাচ্ছেন না তদন্তকারী অফিসাররা।
০৯২০
খুনে ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্রই বা কোথায়, তা নিয়েও ধন্দে পড়েছে পুলিশ। বেশ কিছু সিসিটিভি ফুটেজ এখনও খতিয়ে দেখেছেন বলে পুলিশ আধিকারিকরা জানিয়েছেন।
১০২০
গত ১৮ মে দিল্লির মেহরৌলীতে একত্রবাসে থাকা প্রেমিকা শ্রদ্ধা ওয়ালকরকে খুন করার অভিযোগ রয়েছে প্রেমিক আফতাব আমিন পুনাওয়ালার বিরুদ্ধে।
১১২০
খুনের পর শ্রদ্ধার মৃতদেহ ৩৫ টুকরো করার অভিযোগও রয়েছে তাঁর ধৃত প্রেমিকের বিরুদ্ধে। সেই মৃতদেহ সংরক্ষণ করে রাখতে কিনে আনা হয় নতুন ফ্রিজ।
১২২০
এর পর ১৮ দিন ধরে কাছের জঙ্গলের বিভিন্ন জায়গায় শ্রদ্ধার দেহের টুকরোগুলি ছড়িয়ে দিয়ে আসেন অভিযুক্ত আফতাব।
১৩২০
সন্দেহ এড়াতে আফতাব রোজ রাত ২টো নাগাদ একটি পলিব্যাগে করে শ্রদ্ধার দেহের টুকরো নিয়ে বাড়ি থেকে বেরোতেন বলেও পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে।
১৪২০
শ্রদ্ধার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করার পর দিল্লি পুলিশ গত শনিবার আফতাবকে গ্রেফতার করে। তার পর থেকেই অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। প্রমাণ খুঁজে বার করতেও তৎপর দিল্লি পুলিশ।
১৫২০
আফতাব পুলিশকে জানিয়েছেন, আমেরিকার জনপ্রিয় ওয়েব সিরিজ ‘ডেক্সটার’ দেখে তিনি অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। একই সঙ্গে তাঁর গুগ্ল সার্চে উঠে এসেছে, মৃতদেহ নিকেশ করা সম্পর্কে নানা বিধ তথ্য সার্চ করার ইতিবৃত্ত।
১৬২০
দিল্লি পুলিশের একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, শ্রদ্ধার মোবাইল ফোনের ‘ডেটা’ হাতাতে চেয়েছিলেন আফতাব। সেই চেষ্টা গত বছর থেকেই শুরু করেন তিনি। শ্রদ্ধা ও আফতাব গত বছর বেড়াতে গিয়েছিলেন। সে সময় থেকেই তাঁর মোবাইল ফোনের যাবতীয় তথ্য হাতে পেতে চেয়েছিলেন আফতাব। সন্দেহ না অন্য কোনও কারণ, ঠিক কী কারণ আফতাব এমনটা করতে চেয়েছিলেন, তা তদন্ত করে দেখতে চাইছে পুলিশ।
১৭২০
মেহরৌলীর জঙ্গল থেকে উদ্ধার হওয়া দেহাংশগুলি শ্রদ্ধারই কি না, সে বিষয়ে সুনিশ্চিত হতে শ্রদ্ধার বাবাকে দিল্লিতে ডেকে পাঠিয়েছে পুলিশ। সূত্রের খবর, শ্রদ্ধার বাবার ডিএনএ টেস্ট করে, সেই ডিএনএ-র সঙ্গে দেহাংশগুলির ডিএনএ মিলিয়ে দেখা হবে।
১৮২০
বেশ কিছু তথ্যপ্রমাণ হাতে পেলেও এখনও বেশ কিছু বিষয়ে তদন্ত রিপোর্ট হাতে পায়নি পুলিশ। যেমন আফতাব এবং শ্রদ্ধার ব্যবহৃত জিনিসপত্রের ফরেন্সিক পরীক্ষার রিপোর্ট এখনও হাতে আসেনি। দিল্লি পুলিশ সূত্রে খবর, ওই রিপোর্ট হাতে এলে অনেক রহস্যের কিনারা হতে পারে।
১৯২০
তবে তদন্তে কোনও ফাঁক রাখতে চাইছে না দিল্লি পুলিশ। আফতাবকে পুলিশের হেফাজতে রেখে কেন জেরা করা প্রয়োজন, সে বিষয়ে যুক্তিজাল সাজিয়ে আদালতে সওয়াল করতে প্রস্তুত দিল্লি পুলিশ।
২০২০
শ্রদ্ধা এবং আফতাব দিল্লির যে বাড়িতে থাকতেন, মে মাসে সেই বাড়ির জলের বিল এসেছিল অত্যধিক বেশি! অর্থাৎ শ্রদ্ধা খুনের মাসে মেহরৌলীর ওই তিন তলা বাড়ির জলের বিল অনেকটাই বেশি এসেছিল। তা হলে কি শ্রদ্ধার রক্ত ধুতে অতিরিক্ত জল ব্যবহার করতেন আফতাব? আর সেই কারণেই বেড়ে গিয়েছিল জলের বিল? জলের বিলটি ইতিমধ্যেই পৌঁছেছে তদন্তকারী পুলিশকর্তাদের হাতে। আর এই জলের বিল অভিযুক্ত আফতাব আমিন পুনাওয়ালার বিরুদ্ধে অন্যতম প্রমাণ হয়ে দাঁড়াতে পারে বলেও সূত্রের খবর।